![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইরান-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ত্রিমুখী উত্তেজনা এখন নতুন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর পরিচালিত আঘাত এবং তার জবাবে ইরানের প্রতিক্রিয়া—এ দুটি ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা এক গভীর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি: ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে সামরিক হামলার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে থামানো সম্ভব নয়, যদি না সেখানে রেজিম পরিবর্তন ঘটে।
ফোরদোর গহীন ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকার ‘বাংকার বাস্টিং’ বোমা ফেলার পর প্রচার করা হয়েছে যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে “স্থবির করে দেয়া” গেছে। তবে ভেতরের খবর বলছে ভিন্ন কথা। যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা প্রকাশ্যে না এলেও স্পষ্টতই সন্দিহান যে, হামলার প্রকৃত ফলাফল কতটা কার্যকর হয়েছে। হামলায় ফোরদোর ইনফ্রাস্ট্রাকচারে আংশিক ক্ষতি হলেও, মূল প্রযুক্তি এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম হয়তো অক্ষতই রয়ে গেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান শিবির এ বিষয়টিকে নস্যাৎ করে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সন্দেহকে “রাষ্ট্রদ্রোহী প্রচারণা” হিসেবে তুলে ধরছে। ঘটনাটি মার্কিন প্রশাসনের সেই চিরাচরিত প্রবণতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়—গোয়েন্দা তথ্যের জটিল বাস্তবতাকে অস্বীকার করে রাজনৈতিক স্বার্থে কৃত্রিম বিজয়ের গল্প রচনা।
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা ইরানকে অন্তত দুই বছরের জন্য পরমাণু বোমা বানানোর সক্ষমতা থেকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু ইতিহাস বলে, এমন দাবি আগেও করা হয়েছে। বাস্তবে দেখা গেছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বরং আরও গভীরভাবে ভূগর্ভে চলে গেছে, আরও ছায়াযুদ্ধের কৌশলে রূপান্তরিত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় ইরানের কিছু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীর নিহত হওয়া নিঃসন্দেহে বড় ক্ষতি। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—এত বড় ক্ষয়ক্ষতির পরও কীভাবে মোসাদের এজেন্টরা ইরানের ভেতরে এতটা কার্যকরভাবে প্রবেশ করতে পারছে ? ইরানের গোয়েন্দা ব্যর্থতা এখন আর শুধু প্রতিরক্ষার দুর্বলতা নয়, এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতীয় নিরাপত্তার মৌলিক প্রশ্ন।
ইরানের উচিত তার গোয়েন্দা কাঠামোকে পুনর্গঠন করা। রাশিয়ার কেজিবি বা বর্তমান এফএসবি-র মতো দক্ষ, বিশ্বমানের ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। কারণ, যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর মিসাইল প্রতিহত করার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে: শত্রুর আগেই তাদের পরিকল্পনা জেনে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। ইরানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে—বিশেষ করে বিমান বাহিনীর দুর্বলতা ও মিসাইল-নির্ভর প্রতিরক্ষাব্যবস্থার উপর অতিনির্ভরতা। তাই তারা , যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে প্রতীকী প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এটি একধরনের ‘ক্যালকুলেটেড রিট্রিট’, যেখানে ইরান বোঝাতে চায়: যুদ্ধ চাই না, কিন্তু আত্মসমর্পণও নয়।
ইসরায়েলও তুলনামূলক শক্ত অবস্থানে থেকেও যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে। কারণ, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একটানা ইরানি মিসাইল ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছিল এবং প্রথমবারের মতো দেশটির সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে সরাসরি ক্ষতি হয়েছে। এতে করে নেতানিয়াহু সরকারের জনপ্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কৌশলগত পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে চিরতরে নিষ্ক্রিয় করতে হলে শুধু বোমা বা নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট নয়। রেজিম চেঞ্জ, অর্থাৎ রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনই একমাত্র কার্যকর উপায়। একটি তুলনামূলকভাবে পশ্চিমপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই ইরানের প্রকৃত পরমাণু নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বচ্ছতা আসতে পারে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এই রেজিম পরিবর্তন কিভাবে ঘটানো হবে ? ইরাকে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ যেমন ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। তাই ইরানে সরাসরি সামরিক অভিযান একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। বরং, সিরিয়ান মডেল অনুসরণ করে ইন্টারনাল গোষ্ঠী বা ‘প্রক্সি ফোর্স’ গড়ে তুলে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হতে পারে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুধুই সামরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের বিষয় নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা কাঠামোর মৌলিক প্রশ্ন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যতই পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংসের কথা বলুক, বাস্তবতা হচ্ছে— বিনাশ নয়, বরং নিয়ন্ত্রণই এখন তাদের কৌশল। আর এই নিয়ন্ত্রণ অর্জনের জন্য তারা যে কোনো মূল্যে রেজিম চেঞ্জ ঘটাতে আগ্রহী হবে ফিউচারে। এখন দেখার বিষয়—ইরান কি তাদের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা কাটিয়ে একটি প্রতিরোধী, আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের পুনর্গঠিত করতে পারে ? নাকি মোসাদ ও ওয়াশিংটনের নীরব আগ্রাসনের কাছে ধীরে ধীরে অস্ত্র নামিয়ে দেবে?
২৫ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সময়ই বলবে সময় কী করবে ।
২| ২৫ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫২
কামাল১৮ বলেছেন: করিডোর এবং অনেক সুযোগ সুবিধা নেয়ার জন্য যেমন আমাদের এখানে রেজিম চেঞ্জ করতে হলো তেমন আর কি।
২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:০৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কতটা এগিয়েছে ?
৩| ২৫ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮
শাহ আজিজ বলেছেন: ইরানি ইন্তেলিজেন্স সার্থকতার সাথে ১০ ড্রাম পাউডার লুকিয়ে ফেলেছে । আর তাই বিশ্ব শক্তি আমেরিকা তার লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পারেনি । কিন্তু এটাও এখন ইরানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ।
২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:০৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এই রেজিম না সরলে ইরান এগিয়ে যাবে।
৪| ২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:০২
শাহ আজিজ বলেছেন:
২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:০৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইরানের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ দুটোই আছে।
৫| ২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:০৫
Sulaiman hossain বলেছেন: বিশ্লেষণ চমৎকার। তবে ইরানি জনকোনো বৈদেশিক আধিপত্য কে মেনে নিবেনা,তাদের অসাধারন আত্মমর্যাদা বোধের কারনে।ভবিষ্যতে তারা হয়ত উত্তর কোরিয়ার মতো আলাদা হতে পারে,অথবা ভাগ্য তাদের পক্ষে না থাকলে বৈদেশিক আগ্রাসনের শিকারও হতে পারে।তবে খোমেনি যতদিন বাঁচা আছে,ততদিন সে পশ্চিমাদের নিকট আত্মবিসর্জন দিবেনা, এটা অন্তত নিশ্চত।
২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:১১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এই রেজিম না সরলে ইরান এগিয়ে যাবে ।
৬| ২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৯:০৪
ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার খায়েশটা হচ্ছে মুলত ইজরাইলি খায়েশ। রেজিম চেঞ্জ এর ইজরাইলি আহবানে এবার ইরানীরা সারা দেয়াতো দূরে থাক , তারা মৃত্যূকে বেছে নিতে তৈরী হয়ে গেছে। রেজিম যদি চেঞ্জ করতে হয় তবে ইরানিরা সেটা নিজেদের তাগিদেই করবে কিন্তু কোন ইজরাইল মদদপুষ্ট পুতুল সরকার গঠন হতে দেবে না।
২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৯:২৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমার কোনো খায়েশ নেই। বিশ্ব রাজনীতি কোন পথে যেতে পারে সে বিষয়ে আপনাদের চোখ-কান আরও খোলা রাখার জন্যই মূলত লেখা। আর যেহেতু আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাই ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থা আমি পছন্দ করি না। কিন্তু তাদের রেজিম চেঞ্জের পক্ষেও নই। মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশ কঠিন চাপে পড়বে। আবার ইসরায়েলকেও পছন্দ করি না, কারণ তারা যুদ্ধাপরাধ করেছে। সমস্যায় পড়েন আপনারা, কারণ অতীত ভুলে যান দ্রুত। ইরান-সিরিয়ায় যে অপরাধ করেছে, কোনো সুন্নি মুসলিম তাকে সমর্থন করতে পারে না। আর বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারকে সমর্থন দেওয়া বাদ দিলাম। বাংলাদেশিরা সব ভুলে বসে আছে। বাংলাদেশিরা চীন-রাশিয়াকেও সমর্থন করে আমেরিকার বিরুদ্ধে । কিন্তু আমেরিকা বাংলাদেশের রেজিম চেঞ্জে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। দেখেছেন তো? গাজার মার্চে আমেরিকার বিরুদ্ধে কেউ স্লোগান দেয়নি!"
৭| ২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৯:৩৯
কাঁউটাল বলেছেন: রেজিম চেন্জ কে করবে?
এক কাজ করেন, ফারমার ছাগলের নেতৃত্বে আপনি এবং অন্যান্য বাংগু পোগোতিশীলরা ইরানে গিয়ে স্থলযুদ্ধ আরম্ভ করেন। ত্যানানিয়াহু খুশি হয়ে আপনাদেরকে নুবেল প্রাইজ দিবে।
২৫ শে জুন, ২০২৫ রাত ৯:৪৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ফারমার বা আমি কেউ পারবে না। আমেরিকা পারতে পারে । আগে থেকে সাবধান থাকতে হবে আপনাকে ।
৮| ২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ১:৪০
নিমো বলেছেন: আমাদের বেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সঠিক কাজ করেছে, কিন্তু ইরানের বেলায় বেঠিক কাজ করেছে, কতই না বিচিত্র আমাদের ব্লগারকূল!
@ঢাবিয়ান দয়া করে একটু লেখাপড়া করুন। ইরানেও অনেকে সরকারবিরোধী আছে। ইরানিরা এক হিসাবে আমাদের চেয়ে উন্নত। তাদের নওরোজ, শাহনামা, দারিয়াস, ফারসি ভাষা মুসলিম হওয়ার জন্য বাধা হয় না। আপনাদের মত পয়লা বৈশাখ সমস্যা, বাংলা ভাষায় সমস্যা, আরও নানা কিছুতে সমস্যা নিয়ে ছিচকাঁদুনে হয় না।
২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৩২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: "ইরানে সরকারবিরোধী প্রোগ্রাম সামনে আসে না, কারণ মিডিয়া সেন্সর করা হয়। বাংলাদেশের মানুষ এগুলো বুঝে না। তারা শুধু ইসলাম বোঝে, কিন্তু ইরান নিজেই হাজার হাজার মুসলিম মেরেছে।
৯| ২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: নো কমেন্ট।
২৬ শে জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৩৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার গুরু ব্যান। ঠিক আছে, কিছুদিন ব্যান থাক।
১০| ২৬ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ২:১৯
কাঁউটাল বলেছেন: ইরানে রেজিম চেন্জ হচ্ছে:
২৬ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:০৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পশ্চিমা শক্তি আপনার বুদ্ধি অনুযায়ী কাজ করে না।"
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের পরিণতি: ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে এগিয়ে নেওয়ার পথ সহজ করতে পারে।