![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক রহমান এখন লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। এদিকে তারেক রহমানকে ২০০৭ সালে বেদম পিটুনি দেওয়া ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে রিলিফের নারিকেল তেল চোর খ্যাত জেনারেল মাসুদও দেশে নেই। আরো মজার ব্যাপার হলো তারেক রহমানের নাম ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ৩ জুলাই গ্রেনেড হামলা মামলায় আরো ৩০ জনকে যুক্ত করে সম্পূর্ণ অভিযোগপত্রে দেন কাহার আকন্দ সাহেবও এখন পলাতক।
এতে করে রাজনৈতিক মাঠে দুষ্ট গরুরা ঘাস খেয়ে বেড়াচ্ছে। জেনারেল মাসুদ বিএনপির আমলে গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যুক্ত হন। কথিত আছে তারেক রহমান উনার সাথে একবার বেয়াদবি করেছিলেন। মনের জ্বালা মেটানোর সুযোগ যখন এসেছিল তখন জেনারেল মাসুদ সে সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলেন না। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত গিতা পাসির কাছে তারেক রহমান জেনারেল মাসুদকে নিয়ে অভিযোগ জানালে তিনি অবাক হয়ে বলেছিলেন সে তো তোমাদের খুব আস্থাভাজন লোক ছিল। কিন্তু লবণ খেয়েছে বিএনপির আর গুণ গেয়েছে মাসুদ আওয়ামী লীগের।
তারেক রহমানকে বেদম পিটুনি দেওয়ার কারণে উনাকে পুরস্কৃত করা হয় দেশে ও বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন করে। সবশেষে আওয়ামী লীগের কাছে এই তেল চোরা আর্জি জানায় উনি নাকি এমপি হবেন। আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা উনার শখ পূরণ করলেন। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের পরামর্শে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হন নারিকেল তেল চোরা মাসুদ।
মাসুদ সাহেবের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালে মামলা হয়েছিল। রক্ষীবাহিনীতে ঢুকে সেটা সামাল দেন তিনি। ২০১৮ ও ২০২৪ সালে ফেনী-৩ আসন (সোনাগাজী-দাগনভূঁইয়া) থেকে এমপি হন মাসুদ। এমপি হয়েই ফেনী-২ আসনের ভূমিদস্যু নিজাম হাজারীর সাথে হাত মিলিয়ে শত শত কোটি টাকা বিদেশগামী লোকজনের মেরে দিলেন। লুটপাটের সঙ্গী হলেন। Once a chor always a chor এই কথা আবার প্রমাণিত হলো। যাই হোক ছাত্র জনতা উনাকে ধাওয়া দিয়ে হয়তো দেশ ছাড়া করেছিল। তারেক রহমান নিশ্চয়ই ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট খোঁজ নিয়েছিলেন তেল চোরা এলাকায় আছে না পালিয়েছে।
এবার আসা যাক কাহার আকন্দ নামে আরেক চোরকে নিয়ে। সে আওয়ামী লীগের প্রথমবার হিউজ মাল্লু কামিয়েছে। পরে বিএনপির দ্বিতীয়বার সে বরখাস্ত হয়। বিখ্যাত পুলিশদের লাইফ সাইকেল এভাবেই চলে। ২০০৯ সালে ১০ বছর পর তাকে আওয়ামী লীগ আবার নিয়োগ দেয় এবং নিয়োগের একদিন পর তার অবসর হয়। পরে সে চুক্তিভিত্তিক ভাবে নিয়োগ পেয়ে ২০১৯ সালে পদক পেয়ে চাকরি শেষ করেই শেখ হাসিনার কাছে আর্জি করে এমপি হবেন। ২০২৪ সালে সে আশা তার পূর্ণ করতে নমিনেশন দিলেও ভদ্রলোক পরাজিত হন।
কাহার আকন্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার তদন্ত এবং মনজুর হত্যা মামলার তদন্ত করেছিলেন এই লোক। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মদদে দেশে বিদেশে জায়গা সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রিপোর্ট করতেন এই লোক। ৫ই আগস্টের পর থেকে এই লোকও পলাতক। আওয়ামী লীগ আমলে যারা এসব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছে তারা মামলার ভয় দেখিয়ে কত লোক থেকে টাকা খেয়েছে তার হিসাব নেই। এগুলো এক ধরনের ব্যবসা বলা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের purpose serve করা ছাড়া তারা আর কোনো ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন নাই।
শেখ হাসিনা কিভাবে হাই ভোল্টেজ মামলার জন্য কাহার আকন্দ নামের ভদ্রলোককে choose করলেন সেটা আজব ঘটনা। মনে হয় বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হোক, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার রিয়েল ইনসিডেন্ট সবাই জানুক অথবা সততা বা জবাবদিহিতা না থাকুক সেটা শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন। গ্রেনেড হামলা নিয়ে আমরা জর্জ মিয়া নাটক দেখেছি, আওয়ামী লীগ আমলে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে তদন্ত রিপোর্ট দেখলাম। সামনে আর কি কি দেখা লাগে সেটা নিয়ে ভবিষ্যতে ভাবতে হবে।
কে দোষী, কে নির্দোষ সে তর্কে না গিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়: আপনি ভবিষ্যতের বিএনপি নেতা বলে যাঁকে ভাবছেন, তাঁকে অভিযুক্ত করতে গিয়ে এমন এক লোকের তদন্তের উপর নির্ভর করবেন, যার নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ আছে, যিনি বরখাস্ত হয়েছেন? নতুন করে কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না? নাকি অনুগত হলে তদন্ত রিপোর্ট “ভিন্ন” হয়? তারেক রহমানেরকেন মাজা ভেংগে দেয়া হয় যারা প্রশ্ন তুলছেন তারা কি জেনারেল মাসুদের অতীত জানেন? তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই তো বড় প্রশ্ন আছে। এখন তো কাহার আকন্দ আর জেনারেল মাসুদ দুইজনই প্রমাণিত চোর। তা না হলে কেন দেশ ছেড়ে পলাইলেন ? শেখ হাসিনার হাতে কি ভালো লোকজন ছিল না? নাকি চোরদের নিয়েই তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য ছিল ?
নাকি চোরদের নিয়েই উনার ক্যাবিনেট ছিল ? বাংলাদেশের মানুষ অনেক সময় বুঝতে পারে না অনেক ঘটনা কারণ স্বচ্ছতা নাই জবাবদিহিতা নাই। এইজন্য জাতির জীবনে কোনো খারাপ ইনসিডেন্ট হলেই মানুষ সরকারকে সন্দেহ করে। লাশ গুম করল কিনা, ভবনে কত লোক ছিল, এই হামলা কি সাজানো ছিল কিনা এসব নিয়ে মানুষ সন্দেহ করে। এর জন্য কি তাদের দায় করা যায়?
দেশে চলছে এখন জুলাই আন্দোলনে যারা ছাত্র-জনতার উপরে হামলা করেছে তাদের শুনানি, বিচার হবে সামনে। এদিকে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ব্যক্তি দেখিয়ে নতুন পার্টি শুরু করেছে নয়া ব্যবসা। ইন্টারিমের বিচার ব্যবস্থাকে অনেকে তুলনা করছে ক্যাঙ্গারু কোর্টের সাথে। জাতির জন্য হতাশার বিষয়: যুদ্ধাপরাধের বিচারে অনেক সাক্ষী ছিল ভুয়া। এত গুরুত্বপূর্ণ বিচারে ভুয়া সাক্ষী যোগ করা কি দরকার ছিল? এর ফলে এসব বিচারের রায় হয়ে যায় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সমতুল্য। মনে হচ্ছে, জুলাইয়ের ঘটনাও সেই পথে যাবে ।সরকার খুব তাড়াহুড়া করছে নতুন বিয়ে করেই পাচ মাসে বাচ্চা প্রসবের। এতে যে বাচ্চা তথা রায় নষ্ট হতে পারে, প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে সেদিকে কারো খেয়াল নাই।
তারেক রহমান নিশ্চয়ই দুঃস্বপ্নে জেনারেল মাসুদ এবং কাহার আকন্দকে দেখেন। এদিকে পলাতক দুই আল্লাহর বান্দা রাসূলের উম্মত যখন ভবিষ্যতে তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখবেন টিভিতে গর্ব করে ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলিকে হয়তো বলবেন - "প্রধানমন্ত্রীর মাজা ভেঙে দিয়েছিলাম।" এই উপলক্ষে চিয়ার্স। তারেক রহমানকে হয়তো এইটুকু ভেবে খুশি থাকতে হবে যারা তাকে রাজনীতির মাঠ থেকে মাইনাস করেছিল তারা আজ নিজ গুনে মাইনাস হয়ে গেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই আগস্ট, ২০২৫ ভোর ৪:১১
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনা ।
..................................................................
আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষাও নিতে চাই না ।