নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাউল সমাজ বনাম তৌহিদি জনতার সংঘর্ষ নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ !

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৯


"একটা একটা বাউল ধর, ধইরা ধইরা জ*বা*ই কর" - এই স্লোগানে আজকে উত্তাল ছিলো মানিকগঞ্জ। তৌহিদি জনতার বিক্ষোভ মিছিল থেকে বাউল সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ সমাবেশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। মানিকগঞ্জের বাউল সমাজ বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবীতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছিলো। ধর্ম অবমাননার দায়ে বাউল আবুল সরকারকে জেলে ভরে পুলিশ।

বাউলদের উপর মামলা-হামলার ঘটনা এই প্রথম নয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বাউলদের উপর হামলা হয়েছিলো। এটা কেবল তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। যখনই দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে থাকে তখন তৌহিদি জনতার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তবে এবার যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উহাদের মেজাজ খারাপ হয়েছে সেটা নিয়েও আলোচনা করার বিশেষ অবকাশ রয়েছে।

বাউল আবুল সরকার বাংলাদেশের কোন এক জেলায় পালাগানের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি কুরআন-হাদিস, আল্লাহ এবং নবীকে নিয়ে উনার নিজের কিছু দৃষ্টিভংগী ব্যাখ্যা করেছেন। একজন বাউল মানুষ সাধারণত দেহতত্ত্ব নিয়ে ভালো জ্ঞান রাখার সম্ভাবনা আছে। যদি লালন ফকির কিংবা শাহ আবদুল করীমের গানের কথা চিন্তা করি। বাউল আবুল সরকার কোনো হাদিস কুরআন বিশারদ নন। উনার কুরআন-হাদীস বিষয়ক কোনো কিছু জানার আগ্রহ থাকলে কিংবা না বুঝলে একজন বিজ্ঞ আলেমের কাছ থেকে সেটা বুঝে নিতে পারেন। নিজের অজ্ঞতা নিয়ে স্টেজে উঠে এমন কোনো বক্তব্য রাখা উচিত নয় যা অন্যজনের মনে আঘাত করে।

খুব সম্ভবত বাউল আবুল সরকার মানিকগঞ্জের বাহিরে কোথাও পালাগানের জন্য আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আল্লাহ এবং রাসুল কে নিয়ে যে সব কথা বলেছেন উহা খুবই বিভ্রান্তিকর একজন সাধারণ মুসলিমের জন্য। এক্ষেত্রে বাউল আবুল সরকারের আঞ্চলিক কথার টোনও এই বিভ্রান্তি বাড়িয়ে তুলেছে যা নিয়ে সবার অতি সত্ত্বর দৃষ্টিপাত করা উচিত।

একটি ইউটিউব ভিডিওতে দাবী করা হচ্ছে আবুল সরকার উক্ত কথার কারণে তৌহিদি জনতার রোষের স্বীকার হয়েছেন। আবুল সরকার বলেছিলেন, "তিনি নাকি কুরআনে আল্লাহর একেক সময়ে একেক কথার কারণ বুঝতে পারছেন না"। "কখনো আল্লাহ বলেছেন নুরের কথা, আবার কখনো বলেছেন রুহের কথা, আবার কখনো বলেছেন ইশকের কথা"। সম্ভবত সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন "আল্লাহর কথার আগা-গোআ তিনি কিছুই বুঝতে পারেন নি"। এখানেই যত বিপত্তি বেধেছে। তিনি আগা-গোড়া উচ্চারণ না করে আগা-গোআ উচ্চারণ করেছেন। সাধারণ দৃষ্টিতে তিনি আল্লাহকে কটাক্ষ করেছেন। যে কোনো সাধারণ মুসলিম এটা নিয়ে প্রতিবাদ করবেই। তৌহিদি জনতা তো কড়া মুসলিম!

বিগত শেখ হাসিনার আমলে কোন এক ক্লাসের ইসলাম শিক্ষা বইয়ের শেষ পাতায় হিন্দুদের দেবী দূর্গার ছবি ছাপানো ছিলো। বাংলাদেশের বেশিরভাগ পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ তখন ভারত পেত। যারাই ইসলাম শিক্ষা বইতে এমন ছবি দেখেছিলো সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছে। অনেকে বলতে শুরু করে শেখ হাসিনা মোদির হিন্দুত্ববাদের পথে নিয়ে যেতে চায় কোমলমতিদের। ভারত থেকে বই ছাপাবেন ভালো কথা কিন্তু আপনি কেবল ইসলাম শিক্ষা বইয়ের পিছনের পৃষ্ঠায় দেব-দেবীর ছবি রাখবেন উহা দুরভিসন্ধিমূলক বলেই বিবেচিত হবে। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দিপুমনি ভয়ে সেই বই সমস্ত ইশকুল থেকে পুনরায় ফিরিয়ে নেয়। এই ঘটনায় সাধারণ মুসলিমরাই যে পরিমাণ প্যানিক আচরণ দেখিয়েছেন বাউল আবুল সরকারের বক্তব্য তারচেয়ে বেশি প্যানিক এটাক আসার মতো।

আবুল সরকার একই পালাগানের অনুষ্ঠানে দাড়ি কাটা নিয়ে বক্তব্য প্রদান কালে আবারো একই কাজ করলেন। তিনি নবীজীর হাদিস বর্ণনা করলেন এইভাবে, "এক হাদিসে এসেছে নবীজি জনৈক ব্যক্তির থুতনীতে মাত্র একটা দাড়ি দেখে হাসতে লাগলেন, এতে অনেকে ভাবলেন যে নবীজী বুঝি লোকটির উপর নাখোশ হয়েছেন। পরদিন সবাই মিলে জনৈক ব্যক্তির সেই একটি মাত্র দাড়ি কেটে আবার নবীজীর সামনে হাজির করলেন। এবার নবীজীর মুখ বেজার হয়ে গেল। সবাই জিজ্ঞাসা করেছে কি হলো হুজুর? তিনি বললেন লোকটির একটি মাত্র দাড়িতে ৭০ জন ফেরেশতা ঝুলছিলো।"

আবুল সরকার এরপর নিজের দাড়িতে হাত ধরে বলতে শুরু করলেন, "আগে দাড়ি ছিলো না, এখন রাখছি। দাড়ি চাছলে ফেরশেতাদের গোআ কেটে যাবে!" আবার অদ্ভুত এবং বেয়াক্কেল মারকা কথা বলে বসলেন। গোড়া না বলে গোআ বললেন বাউল মিয়া। আবার সেই সময় তিনি হাসছিলেন। ব্যস এরপর শুরু হলো গেঞ্জাম।

আবুল মিয়া আসলে আল্লাহ এবং ফেরেশতাদের নিয়ে কি বলতে চেয়েছিলেন সেটা আরো ভালো করে শোনা দরকার। এক্ষেত্রে উনার আঞ্চলিক টোন কে বিবেচনায় নেয়া উচিত। আমাদের বাংলাদেশে রংপুর অঞ্চলের মানুষ "র" উচ্চারণ সঠিক ভাবে করতে পারেন না। তারা রংপুরকে অনেক সময় অংপুর উচ্চারণ করে থাকেন। গুগলে খোজ খবর করে জানতে পারলাম মানিকগঞ্জের কিছু উপজেলা, যেমন শিবালয়, ঘিওর, সাটুরিয়া ও হরিরামপুরের মানুষ "র" এর স্থলে "অ" ব্যবহার করেন। "রা" কিংবা "ড়া" এর স্থলে তারা যে "আ" ব্যবহার করতে পারেন সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।

কথায় আছে এক দেশের বুলি অন্যদেশের গালি। মানিকগঞ্জের বাহিরে খুব কমসংখ্যক মানুষ বাউল আবুল সরকারের বলা কথার মর্মার্থ বুঝতে পারবেন। আবুল সরকারের দোষ হচ্ছে সে তার অজ্ঞানতার সাথে নিজের জ্ঞান মিলিয়ে জনসাধারণের সামনে কথা বলছেন। উনার কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আগে এলেম আছে এমন মানুষের সাথে কথা বলা উচিত। যে বিষয়ে উনার জ্ঞান নেই তা নিয়ে কথা বলা অনুচিত।

ইন্টেরিম সরকার যাতে তুষের আগুন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সাথে সাথে গ্রেফতার করে বাউল আবুল সরকারকে। কিন্তু এমন ঘটনা বাউল সম্প্রদায়কে ক্ষেপিয়ে তুলেছে যার ফলশ্রতিতে তারা মাঠে নেমেছিলেন। তৌহিদি জনতা ইন্টেরিম সরকার যে আসলে তাল পাতার সেপাই সেটা বুঝে গেছে। আবার সুশীলরা ও গণমাধ্যম যেভাবে বাউলদের পক্ষে লিখছে উহারা তাতে ক্ষিপ্ত হয়েছে। কিন্তু আরেকজনের শান্তিপূর্ণ মিছিলে গিয়ে তারা ছাত্রলীগ স্টাইলে হামলা করে ভুল কাজ করেছে । বাউলদের পাছায় লাথি মেরে পানিতে ফেলে দিয়েছে। সরকার বরাবরের মতো মৌখিক কড়া শাসন করেই দায়িত্ব শেষ করে ফেলবে। তবে বাউল আবুল সরকার মজহার লাইনের লোক বলে বেশ কানাঘুষা আছে বিধায় উনার সরাসরি পক্ষ নিতে পারছি না।

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:০২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যে বক্তব্যের কারণে গ্রেফতার হয়েছে বাউল শিল্পী আবুল সরকার : Click This Link

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৫৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: বেশ তথ্যপূর্ণ লেখা। অনেক কিছুই জানা ছিল না, আপনার লেখা পড়ে জানলাম।

অনেক দিন আগে আউল-বাউলদের নিয়ে ড. আহমেদ শরীফের একটি গবেষণামূলক লেখা পড়েছিলাম। আউল-বাউলদের অসংখ্য বিভিন্ন তরিকা বা মতবাদ, দল-উপদল, ধারা-উপধারা আছে - এটা সেই লেখায় উল্লেখ ছিল। তাদের কিছু প্রথা বা আচরণ যে কোনও স্বাভাবিক, আধুনিক ভাবনা-চিন্তার মানুষের কাছে খুবই অদ্ভুত এমনকি নোংরাও মনে হতে পারে।

কিন্তু তাই বলে তাদের পেটাতে হবে, জবাই করতে হবে, কিংবা লাথি মেরে পানিতে ফেলে দিতে হবে- এটা তো মূলধারার জঙ্গিদের মতবাদ।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সরকারের কুম্ভকর্ণ ঘুম না ভাঙলে কি করনীয়? সবাই তো বলছে ব্যবস্থা নিন সীমা ছাড়ানোর পূর্বে।

৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ২:৩১

কলাবাগান১ বলেছেন:
খালেদা জিয়ার উচিত হয় নাই এমন ওপেন গেদারিং ও জয়েন করা (আর্মি ডে তে)। উনার হাতের/মুখের ছবি দেখুন, উনার কিডনী/লাংস ভালভাবে কাজ করছে না..।সমস্ত হাত পানিতে ফুলে উঠছে...সহজেই ইনফেকশান হবেই যখন ই আপনি এরকম সমাবেশে এত লোকের মাঝে যাবেন

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বিশেষ কিছু বলার নেই।

৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ঘটে যাওয়া একটি বিষয়ের উপর অবল পোস্ট দিয়েছেন। সেই বাউলের কথামালাকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি
তৈরী হয়েছে তা শান্ত হোক, সকলের মাঝে পারসপারিক সহবস্থানের পরিবেশ সৃস্টি হোক সে কামনাই করি।
বাউল বিষযক লেখা একটি পোস্টে যখন কলম ধরেছি তখন সেখানে বাউলদের গুরু আমাদের সকলের কাছে
পরিচিত বাউল, লালন ফকিরের গানেন বিখ্যাত মাত্র দুটি চরণের কথামালার উদৃতি দিয়ে সংক্ষেপে কিছু বলার
জন্য মন্তব্যের ঘরে মনের মধ্যে একটি তাগিধ বোধ করছি ।

বাউল লালনের গানে“দয়াল পার কর আমারে” এই ছোট্ট শব্দ চারটি যে কাউকে নিয়ে যেতে পারে বাউল
তত্ত্বের গভীরে। ঘন্টার পর ঘন্টা, বেশ নামী দামী অনেক বক্তার কানফাটানো ওয়াজ সাথে বিনোদন উদ্রেককারী
চটুল হালকা পাতলা কৌতুক মাখা কথামালা শুনে ঘরে ফিরতে না ফিরতেই অনেক মানুষই ওয়াজের মুল্যবান
কথামালা ভুলে যায় , ডুবে যায় নীজের পুর্ব জীবন চলার পথেই।

আমি দেখেছি ট্রেনে বাসে লঞ্চে স্টিমারে যেখানে কোন গায়ক বা বাসের মিউজিক বাক্সে বেজে উঠে লালনের
গানের কথা ‍”দয়াল পার কর আমারে” মানুষ থমকে যায়, সেটা শুনে ও মনের মধ্যে একটি গভীর
আধ্যাতিক অনুভুতি নিয়ে যায় সাথে করে ।

আমার কাছে মনে হয় বাউল লালন ফকিরের এই ডাকটি যা এখন হাটে ঘাটে মাঠে বিভিন্ন বাউলের গন্ঠে ঘিত হয়
তা শুধু সৃস্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি প্রার্থনা নয় এটি মানুষের আধ্যাত্মিক যাত্রার এক দীর্ঘ আর্তি, যেখানে ভক্ত, সত্তা ও
পরম সত্য এক অদৃশ্য সেতুতে মিলিত হয়।

আমার কাছে মনে হয় বাউল চিন্তায় দয়াল বলতে দয়াময়, করুণার উৎস, পরম সত্তা আল্লা যিনি মানুষের ভেতরের
সেই চৈতন্য, যা সকল ধর্ম সংস্কারের ঊর্ধ্বে। বাউল ফকির লালন বিশ্বাস করতেন “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।”
অর্থাৎ দয়ালকে পাওয়া মানে নিজের অন্তরের সত্য মানুষকে জাগিয়ে তোলা।

এবার দেখা যাক “পার করা” বলতে কিসের পারাপার? বাউল দর্শনে জীবনের যাত্রা একটি নদীর মতো ,
এই পারে অপরূপ জগৎ, ওই পারে পরম স্বাধীনতার ভূমি।“পার করা” বলতে সম্ভবত বোঝানো হয়েছে,অহংকার,
মোহ ও মায়ার নদী পার হওয়া, জন্ম-মৃত্যুর অনন্ত চক্র থেকে মুক্তি,অন্তরের অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণ
মানুষ থেকে ‘মানুষের ভিতরের মানুষ’ এ পরিণত হওয়া, এমন ভাবে চলা যেন শেষ বিচারের দিন পুলসিরাত
পার হয়ে যাওয়া যায় ( সাথে অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে ধর্মের মুল অবশ্যপালনীয় বিধানগুলি)।

বাউল লালনের দৃষ্টিতে মনে হয় ছিল পার হওয়ার জন্য প্রয়োজন অন্তরের সাধনা; দয়া, বিনয়, সহিষ্ণুতা ও সত্যমানবতা।বাউল তত্ত্বে মুক্তি দয়ার আশ্রিত পথ, সেখানে প্রকৃত বাউলগন বলেন;মানুষ আল্লাহকে /ঈশ্বরকে খুঁজে
বেড়ায় মন্দিরে, গীর্জায়, মসজিদে, কিন্তু আল্লহ আছেন মানুষের অতি সন্নিকটে দেহের মধ্যেই “দেহতত্ত্ব”এর মাঝে।

তাই “দয়াল পার কর আমারে” মানে দয়া করুণার শক্তি, মহান আল্লাহ যেন আমাকে নিজের ভিতরের
সত্যদেহে ফিরিয়ে নেয়, অন্তরে দেয় সত্যের আলো ফুটিয়ে , তাই আমিউ একটি পোস্টে বলেছিলাম
কোরানের আয়াত,কিংবা ধর্মবানী কিংবা কোন নীতিকথা(যথা লালন ফকিরের গানের কথা, দয়াল পার কর আমারে)।
তাতেই ফুটবে অন্তরে অলোর বিস্ফোরণ ।বাস আর যায় কোথায়, চাদ গাজী তথা জেনারেশন একাত্তর আমার কথার
অর্থ কিছুই না বুঝে পোস্টের শিরোনাম দেখেই দিয়ে দিল এক বিশাল পোস্ট । যাহোক লাভ তো হল বটেই , আমার
এই কথা জানত কিংবা পড়ত খুব কম লোকেই এখন জানল বহু লোকে ।

যাহোক ফিরে আসি বাউলের কথায় -
দয়াল পার কর আমারে এখানে দয়া মানে কেবল সৃস্টিকর্তার দয়া নয়, বরং নিজের প্রতি দয়া, অন্যের প্রতি দয়া,
সমগ্র সত্তার প্রতি করুণা আর অহম ভেঙে মানবিকতার পথে দাঁড়ানো এগুলোই মুক্তির পথ তৈরি করে।

সত্যিকার সাধক বাউলের অনেক কথাই যেন ধর্মীয় প্রচলিত সীমানা ডিঙ্গিয়ে ধর্মের ভিতরকার মুল আহ্বানটি কি
তা বুঝে নেয়া ।যেমন বাউল ফকির লালন জাত, ধর্ম, বর্ণ সব কিছুর বিভাজনকে অতিক্রম করে প্রকৃত সত্য জেনে
মহান সৃষ্টিকর্তা পরম সত্তা আল্লাহর প্রমে মঝে যাওয়ার দিকটি ঈঙ্গিত করেছেন ।

তাই বাউল লালনের “দয়াল” কোনো এক বিষেষ ধর্মের ঈশ্বর নন তিনি সকল মানুষের অভ্যন্তরের পরম সত্য
তথা মহান সৃস্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা ।তাই বাউল ফকিরের এই প্রার্থনাও সর্বজনীন “দয়াল, তুমি সব প্রাণের প্রাণ,
আমাকে সেই ‘এক’ এর কাছে ( আল্লাহর) নিয়ে যাও।”এটি একাধারে ভক্তির সুর, একই সঙ্গে মুক্তচিন্তার তত্ত্ব।
“দয়াল পার কর আমারে” আসলে বলে মানুষের অন্তর জাগরণ এর কথা, অহমিকেন্দ্রিক ‘আমি’ থেকে মুক্তির কথা,
নিজেকে সত্য করে চেনার কথা, দেহকে পরম সত্তার অস্তিত্বের একটি অবস্থান মনে করে দেহের মধ্যেই তাঁকে
উপলব্ধি করা।দয়ার মাধ্যমে আত্মার নৌকা ভাসিয়ে দেওয়া, বাউল তত্ত্বে দয়া হলো সেই নৌকা,সাধক হলো যাত্রী,
আর দয়াল আল্লাহ হলেন সেই নৌকার মাঝি।যিনি সত্তাকে অন্য পারে পৌঁছে দিয়ে পার করে দেন সেই চরম বাধা
আখিরাতেরপুলসিরাত।

তাই বলা যায় সত্যিকার সাধক বাউলের কথায় থাকে মানবিক ও ধর্মীয় আবেদন, আমাকে নিয়ে চল সেই পথে,
যেখানে মানুষ মানুষকেভালোবাসে, যেখানে ঘৃণা নেই, বিভাজন নেই, শুধু দয়া আছে।কারণ দয়া ছাড়া বাউল পথে
কেউ পার হয় না।সাধনার চূড়ান্ত সুধা হলো করুণা লাভ সে অন্য কারো করুনা নয় পরম সত্তা মহান রাব্বুল
আলামীন আল্লাহর করুনা লাভ । তাই দয়াল পার কর আমারে” পুরোবাউল তত্ত্বের কেন্দ্রবিন্দু।

এখন কোন বাঊল ভেকধারী যারা হাতে একতারা , গলায় মালা ঝুলিয়ে ,বিবিধ ধরনের উদ্দেশ লাভের জন্য বেশ
মোটা একটা অংকের দর্শনীর মিনিময়ে আয়োজিত( আমার মনে পরে আমার বাল্যকালে গ্রামে আয়োজিত বাউল
গানের আসর আয়োজনের সময় আমন্ত্রিত বিশেষ বাউলের জন্য চাদা তোলা হত) বাউল সমাবেশে উল্টা পাল্টা
( যা সহজ প্রাথমিক শ্রবনে তৌহিদি জনতার কাছে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে এমন সব কথা বলে ফেলে মুখ ফসকে
তাহলে পরিবেশ যে কি হতে পারে তা এই পোস্টের লেখায় ফুটে উঠেছে। এমন পরিবেশ সৃস্টি করা কারো কাছেই
কাম্য হতে পারেনা ।

ধন্যবাদ ভাল একটি বিষয়ে পোস্ট দিয়ে বাউল বিষয়ে কিছু কথা বলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

শুভেচ্ছা রইল

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্য।

৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




উপরে প্রথম লাইনে প্রিনটিং মিসটেক অবল কথাটি হবে ভাল
দয়া করে ভুল বুঝবেন না ।
আমার অভ্র কি বোর্ডের নতুন ভারসন ইনস্টল করার কারনে দীর্ঘ দিনের পুরানো অভ্যাসকুত
কি বোর্ডের অনেক কি র বর্ণ পরিবর্তিত হওয়ায় প্রচুর বানান বিভ্রাট ঘটে যা পরে সংশোধন
করে কুলিয়ে উঠতে পারছিনা এখনো ।
শুভরচ্ছা রইল


২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সমস্যা নেই।

৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৫৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



দেখুন একটু অসচেতনতায় আবার
শুভেচ্ছা কথাটি লেখা হয়ে গেছে শুভরচ্ছা
যা অন্যের ঘরে লেখা মন্তব্যের ঘরে
সংশোধনের কোন উপাই নাই ।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৫

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বুঝতে পেরেছি।

৭| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৪

মাথা পাগলা বলেছেন: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে গত ৬ মাসে ৮০টি মাজার ও দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিশ্ব সুফি সংস্থা নামের একটি সংগঠন।

১৮ জানুয়ারি ২০২৫, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, দেশে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে পরবর্তী সাড়ে ৫ মাসে ৪০টি মাজার, সুফি সমাধিস্থল ও দরগাহে ৪৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলাকালে ভাঙচুর, ভক্তদের ওপর আক্রমণ, মাজারের সম্পদ লুটপাট ও আগুন দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ।
(তথ্যসূত্র: প্রথম আলো, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫)

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৬

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এই বিষয়ে ফারুকীর কাছে চিঠি লিখেন।

৮| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৭

মাথা পাগলা বলেছেন: বাউল শিল্পীকে লাথি দেওয়াটা পড়েছে বাংলাদেশের কালচারের উপরে পড়েছে। এমন পাকিস্তান ঘেষা ইন্টিরম সরকার থাকলে বাউল শিল্পীদেরই হাজতেই থাকতে হবে আর পাকিস্তান থেকে শিল্পী এনে ভাতৃত্ব স্থাপন করবে।

ডলার খয়ে মেধার্ছোদরা বিপ্লব করে দেশকে জঙ্গিদের হাতে তুলে দিয়েছে। ইতিহাস তো ক্রিয়েট হয়েছেই, কিন্তু এমন মেধা দুনিয়ার আর কোনো জাতির ইতিহাসে নেই।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনি এবার থামুন। সুযোগ পাইলে ইউনুস স্যারের বদনাম করেন।

৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩১

কলাবাগান১ বলেছেন: উনার মেয়ে হল জুলাই যোদ্ধা.....লাল স্বাধীনতা এখন ভাল লাগছে না......আরেক জুলাই যোদ্ধা শিল্পী ঐশী তৌহিদী জনতার তাড়া খেয়ে মই বেয়ে দেয়াল টপকে পালাতে হল গান গাইতে যেয়ে....।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সব দোষ শেখ হাসিনার । ;)

১০| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই পোস্টে সবচেয়ে মজার মন্তব্যটা উপরে কলাবাগান১ এর।

@কলাবাগান১, শিল্পীরা সচরাচর শাসকগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা ভোগ করেন এবং তাদের গুণগ্রাহীও হন। কিন্তু শাসকদের চুরি-ডাকাতি ধরনের অপকর্ম তারা সচরাচর সহ্য করতে পারলেও, খুন-হত্যার মতো বর্বরতা তারা সহ্য করতে পারেন না। প্রকৃত শিল্পী মানেই মানবতাবাদী। ইন্নিমা, বা আপনি উপরে যাদের কথা বলেছেন- তাদের ক্ষেত্রেও ঠিক এটাই হয়েছে। কি করবেন বলেন! :)

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কলাবাগান১ এর মন ভালো নেই । উনার দল পাওয়ারে নেই তাই ।

১১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৮

জুল ভার্ন বলেছেন: বিষয়টা সম্পুর্ন অনাকাঙ্ক্ষিত।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বিএনপি পাওয়ারে আসলে এসব সামলাতে সামলাতে শেষ হয়ে যাবে সময় ।

১২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৩

অপু তানভীর বলেছেন: এই তৌহিদি জনতার কর্মকান্ডই আওয়ামীলীগকে ফিরিয়ে আনবে আবার! আরো দ্রুত ফিরিয়ে আনবে।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার সাথে সহমত পোষন করছি ।

১৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৮

মাথা পাগলা বলেছেন: @অপু তানভীর

এগুলা সব হাসিনার প্রোডাক্ট। উনাকে কওমী জননী উপাধি শুধু শুধু দেয়া হয় নাই। ধুমাইয়া মাদ্রাসা প্রমোট করেছেন। একমাত্র আপাই এদের কণ্ট্রোল করতে পারবেন। ইউনুসের জন্য ভালো হয়েছে কোন কষ্ট করতে হয়নি। রেডিমেড সব পেয়েছেন যাদের দিয়ে এখন সুন্দরমতো দেশ চালাচ্ছেন। হাসিনা তো তবুও বুঝে শুনে এদের রশি খুলতো, ইউনুস মনে হয় এদের প্রতিদিন এক্সট্রা হরলিক্স খাওয়াচ্ছেন।

লেখক বলেছেন: সুযোগ পাইলে ইউনুস স্যারের বদনাম করেন।

আজহারুলের হাতে যেদিন তিনি চুম্মা দিয়েছেন, পাকিদের সাথে ভাব জমানো শুরু করেছেন সেদিন থেকে উনার মুখোশ খুলে গেছে।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনা কচু সামলাতেন । শেখ হাসিনা জংগিবাদ দমনের নামে ভয়ংকর ধোকা দিয়েছেন । এডুকেশন সিসটেম শেষ করে দিয়েছেন ।

১৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪০

মাথা পাগলা বলেছেন: হাসিনার দীর্ঘ শাসনেও বাংলাদেশ আফগানিস্তান-পাকিস্তান হয়নি। অথচ ইউনুসের আমলে মনে হয় আমরা সেই দিকেই হাঁটছি।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২০

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাউল শরিফ বয়াতি , রিনা এদেরকে লিগের আমলে মাফ চাইতে হয়েছে । ওলামা লিগের কাজ কি ছিলো ?

১৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৭

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

তৌহিদী জনতা আরিচা, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট যৌন্য ব্যবসায়ীদের "আখড়ায়" হামলা করছে না কেন? শরিয়া আইনে এগুলো থাকা জায়েজ আছে?

২৪ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বেশি কিছু না কেবল ভুমি আপিস গুলোয় মব করলেই খুশি হতাম । ঘুষখোরদের পাছায় এভাবে লাথি মেরে পানিতে ফেলে দেলে দাওয়াত করে খাওয়াতাম ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.