নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- মাহমুদুর রহমান।কোন কুসংস্কারে বিশ্বাস করি না।যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদকে ঘৃণা করি।নিজের ধর্ম ইসলামকে খুব ভালোবাসি।ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা মানুষকে মানবিক হতে শিখায়,সহনশীল হতে শিখায়,সামাজিক হতে শিখায়।নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি।

মাহমুদুর রহমান

এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়, পাঠ্য যেসব পাতায় পাতায় শিখছি সে সব কৌতূহলে, নেই দ্বিধা লেশ মাত্র, বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র।

মাহমুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপদার্থের বাস যুগ যুগ ধরে

১৪ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:২৫



জুম্মন,আমার বন্ধু।দৈনিক চির প্রতিবাদী কন্ঠের সাধারণ সম্পাদক।বন্ধু আমার একদিন সকাল বেলা অফিস যাচ্ছিলো।বন্ধু বাসে উঠে লক্ষ্য করলো সকল সিট ফিল্ড আপ।কিন্তু তাতে কি লোকাল পরিবহনে তো দাঁড়িয়ে যাওয়ার অপশন আছে তাই সমস্যা নেই।সে বাসে উঠে দাঁড়িয়ে থাকলো।এমন সময় বাসে বসে থাকা একজন মহিলা যাত্রী ড্রাইভারকে বেশ তুচ্ছ্য তাচ্ছিল্য করছিলো।উনি বলছিলেন, এটা যায় না কেন;চাকা ঘোরে না কেন;বাসের মালিক কি টাকা দেয় না;দুনিয়ার মানুষ অফিস করবে না ব্লা ব্লা ব্লা।জুম্মন খুব মনোযোগ দিয়ে মহিলার কথাগুলো শুনছিলো।হঠাতই সবাই মিলে বাস ড্রাইভারকে ঝাড়ি দিতে শুরু করলো ।জুম্মন বললো,আমি অবাক হয়ে গেলাম।একজন বাস চালক বলে কি তার আত্মমর্যাদা নেই?সেও তো মানুষ।একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে অন্য একজন শিক্ষিত মানুষকে এভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা উচিৎ না।না আমিও মোটেও সহ্য করতে পারছিলাম না।তারপরও আমি নীরব হয়ে থাকলাম।সকাল সকাল কারই বা ভালো লাগে ঝগড়া,চেঁচা-মেচি করতে?

আমার গন্তব্য আসলে আমি বাস থেকে নেমে যাই।বাস থেকে নামা মাত্রই আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ব্যক্তির চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি পড়ছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে আপনার?তিনি বললেন,বাবারে আমার মনে খুব কষ্ট।আমি বললাম,তাহলে সামনে আসুন।দশক দম সামনে টঙ্গের দোকানে গিয়ে বসলাম।চায়ের অর্ডার দিলাম সেই লোকটা আর আমার জন্য।দোকানদার সাহেব চা তৈরি করলেন আর তারপর চায়ে চুমুক দিতেই লক্ষ্য করলাম একটু দূরে একজন মহিলা কারও অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু তার মধ্যে বেশ অস্থির ভাব।আমি সেদিকে চোখ রেখে লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে এবার বলুন।তিনি বলতে শুরু করলেন,আমার একজন মেয়ে আছে।জন্মের পর থেকে তার জন্য যা যা দরকার বাবা হিসেবে আমি সেসব কর্তব্য পালন করেছি কোন কোন ক্ষেত্রে সাধ্যের বাহিরে গিয়েও।কিন্তু মেয়েটা আমার আমাকে না জানিয়েই বিয়ে করে ফেলেছে।এখন সে যে ছেলেটার সাথে থাকে সে ছেলেটা দুইদিন পরপর তাকে মারে তার সাথে মন্দ আচরন করে।কিন্তু কেন?কারন ছেলেটা একটা ব্যাবসা করতে চায় আর সে জন্য প্রয়োজন দুই লক্ষ টাকা।আমি কষ্ট করে দেড় লক্ষ জোগাড় করেছি কিন্তু বাকি পঞ্চাশ এখনো জোগাড় করতে পারিনি।এখন আমি কি করবো আমাকে একটু সাহায্য করুন না হলে আমার মেয়েকে ও আস্ত রাখবে না।আমি বললাম,এই নিন আমার কার্ড ।আগামীকাল আমার অফিসে এসে দেখা করবেন আমার সাথে।লোকটি চলে গেল।

মুখ ঘুরাতেই চোখের পলকে মেয়েটি কোথায় যেন হারিয়ে গেল কে জানে!আমি অফিসে চলে গেলাম।গেটে প্রবেশ করতেই সিকিউরিটি অফিস্যার নিজাম এসে, আস সালামুয়া'লাইকুম স্যার।আমি চলা অব্যহত রেখে বললাম, অয়া'লাইকুমুস সালাম।কেমন আছেন?আলাহ রাখছে ভালো, স্যার।আমি আমার কক্ষে রওয়ানা হলাম।আমার অফিস সহকারীরা আমাকে দেখে স্বসম্মানে দাঁড়িয়ে গেলেন।আমি সবাইকে বসতে বললাম।সবাই বসে পড়লো।আমি আমার কক্ষে প্রবেশ করলাম।কাঁধে থাকা ব্যাগটি টেবিলের একপাশে রেখে হাত-মুখ ধুয়ে নিলাম।টেবিলের ওপর তাকিয়ে দেখি খাবার পৌঁছে গিয়েছে। পিওন এসে কখন যে কফি রেখে গেল টেরই পেলাম না।আমি জানালার দিকে মুখ করে কফিতে চুমুক দিলাম আর ভাবতে শুরু করলাম, আসার পথে আজ যা যা ঘটেছিলো।

বাসের ঐ মহিলা বাস ড্রাইভারকে কারনে নাকি অকারনে গালমন্দ করছিলো?আমার মনে হলো আচ্ছা ঐ মহিলা যদি এমনভাবে কথা না বলতেন তাহলে কি হতো?সবাই নীরব থাকতো।বেশী সময় ধরে বাস ড্রাইভার বাস থামিয়ে রাখতো।মানুষের অফিসে যেতে দেরী হতো।তাহলে একজন বাসওয়ালা কি কম বয়স্ক মানুষ?না তিনি যথেষ্ট বুঝের কিন্তু তিনি মানুষের কথা না ভেবে শুধু শুধু কেন নিজের কথা ভাবছেন?কারন তিনি কি লোভ করেন,তার মনে কি কৃপণতা বিদ্যামান? কিন্তু তিনি করবেন তো কি করবেন?জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে এছাড়া তো তার কোন উপায়ও নেই।মালিকই বা তাকে কয়টাকা দেয়!অন্যদিকে যাত্রীদের কথা আর কি বলবো, একদিন দুই দিন এভাবে প্রতিদিন অফিসে যতে লেট হলে বসের বকা-ঝকা শুনতে হবে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে তো চাকরিও চলে যাবে।মোটকথা উভয় যদি একটা সমতায় চলে আসে তারপর? তারপর সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে হবে কিন্তু উপায় কি ? উপায় সবারই অজানা।

অন্যদিকে যে লোকটা দুঃখভরাক্রান্তমন নিয়ে আমার কাছে এসেছেন তিনি কি একজন ভালো বাবা?যদি নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে মেয়েটাকে বড় করতেন তবে মেয়েটা বিয়ের আগে বাবার অনুমতি চাওয়ার প্রয়োজন মনে করতো।আর মেয়েটা কত বড় হয়েছে অথচ তার জ্ঞানবুদ্ধি হাঁটুর নীচেই থেকে গেছে।কারন সে আবেগের গোলাম।এই মেয়েটাকে যে ছেলেটা বিয়ে করেছে সে একটা মূর্খ।সেও মেয়েটার মত আবেগের গোলাম।তা না হলে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত হয়ে মেয়েটাকে সে বিয়ে করতো। কিন্তু সে যদি মেয়েটির মাধ্যমে উপযুক্ত হতে চায় তাহলে তার মর্যাদা কিছু থাকলো?টাকা যেমন মানুষের প্রতি সম্মান জোগায় তেমনি অসম্মানও।
সে হয়তো আগে থেকেই এটা ভেবে রেখেছে যে তার সম্মানের প্রয়োজন নেই নতুবা নতুন করে জন্ম নিয়েছে এই বোধ।

একটা মেয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে এতো অস্থির কেন?রাস্তাঘাটে অস্থিরতা নিয়ে চলতে নেই কারন একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।
জুম্মন বললো, এদেশে আমরা ১৬-১৭ কোটি মানুষ।একজন একটি করে ভুল করলে ১৬-১৭ কোটি ভুল হয়ে যায়।এসমস্ত ভুল জনগণকে দিয়ে সংশোধন সম্ভব নয়।কারন যুগ যুগ ধরে কর্তৃত্ব বন্দী হয়ে আছে অপদার্থেদের হাতে।আর একটি দেশের কর্তৃত্ব যখন অপদার্থদের হাতে চলে যায় তখন দেশের উন্নয়নের চেয়ে ক্ষতিই হয় সবচেয়ে বেশী।কারন অপদার্থরা হয় ক্ষমতালোভী, স্বার্থান্বেষী ধরনের।দেশ -জাতি মরে যাক-তাদের মস্তিস্ক কাকে খাক তাতে ন্যূনতমও মাথা ব্যাথা নেই।আর সেজন্য গলা ফাটিয়ে মূল্যবোধের উন্নয়নের কথা বললেও ঘর থেকে বের হলেই দেখা যায় এটা আসলে বেঁচে নেই।

_মাহমুদুর রহমান

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার চিন্তা ভাবনার ভিন্নতা আছে।

১৪ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: শুকরিয়া।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

একনিষ্ঠ অনুগত বলেছেন: আমরা সবাই প্রথমেই কেন যেন পরের দোষটা দেখি কিন্তু নিজেরটা নিয়ে ভাবি না, দায়িত্বকে আমরা বোঝা মনে করি, আর নিজের একটু লাভের আশায় অপরকে বিস্তর লোকসানে ফেলে দেই।।

২১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:১৯

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালো বলেছেন।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: শুকরিয়া।

আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুক।

২১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:১৯

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আমীন।

৪| ১৫ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দারুণ লেখা

২১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:২০

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: শুকরিয়া।

৫| ২১ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

আর. হোসাইন বলেছেন: লেখাটা পড়ে নিজের ভাবনাগুলোর সাথে মিল খুঁজে পেয়েছি!

২১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:২১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আল্লাহ আপনার সহায় হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.