নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কংক্রিটের জঞ্জালে একজন সাধারণ মানুষ।

অগ্নিপাখি

প্রতিদিন হাজারো মানুষ হারিয়ে যায়, আমি সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষদেরই একজন। ভালবাসি বই পড়তে, বই সংগ্রহ করতে, স্ট্যাম্প জমাতে, ভাল চলচ্চিত্র দেখতে, মাঝে মাঝে লেখালেখি করতে, ভালবাসি কবিতা আর ভালবাসি একা একা পুরনো ঢাকায় ঘুরে বেড়াতে। হুমায়ুন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক। এছাড়া অন্যান্য লেখকদের বইও ভালো লাগে। অন্যান্য লেখকদের মধ্যেঃ আহমদ ছফা, রশিদ করিম, মুনতাসির মামুন, মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, নিমাই ভট্টাচার্য, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জাহানারা ইমাম, সৈয়দ মুজতবা আলী, শহীদ জহির রায়হান, সত্যজিৎ রায়, তারাশঙ্কর, বিভূতিভূষণ, সুনীল, সমরেশ , খূশবন্ত সিং, এলান পো, এরিখ মারিয়া রেমার্ক, মার্ক টোয়েন, ম্যাক্সিম গোর্কি, ভিক্টর হুগো, ফ্রাঞ্জ কাফকা, পাওলো কোয়েলহো, হারুকি মুরাকামির লেখাও অনেক বেশী ভালো লাগে। মন খারাপ থাকলে কবিতায় ডুবে যাই। আবুল হাসান, শহীদ কাদরি এবং জীবনানন্দ আমার খুব প্রিয় কবি। মুক্তিযুদ্ধ আমার অন্যতম পছন্দের একটা বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা যে কোন বই পেলে কিনে পড়ি। ঘৃণা করি যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের। এইতো এই আমি।

অগ্নিপাখি › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭১ এ ঢাকার গেরিলা অপারেশনগুলো। ১৩ তম এবং শেষ পর্ব - অপারেশন “মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক” এবং “বায়তুল মোকাররম”

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২১

অপারেশন “মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক”ঃ

এই অপারেশনে অংশ নিয়েছিল ক্র্যাক প্লাটুন এর ৬ জন গেরিলাঃ আসাদ, মুনির, ফিরোজ, জন, ফেরদৌস এবং আরিফ।

মুক্তিবাহিনীর শিমুলিয়া ক্যাম্প থেকে ঢাকার গেরিলাদের কাছে ক্যাম্প এর জন্য টাকা প্রয়োজন বলে চিঠি এলো। এই চিঠি পাবার পরেই আদমজী গ্রুপ এর “মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক” থেকে টাকা ছিনিয়ে আনবার সিদ্ধান্ত নেয় গেরিলারা। অপারেশনের সময় ঠিক হয় ৩ নভেম্বর বেলা ১১-১১.৩০ এর মধ্যে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার ২ নভেম্বর রেকি কাজ শেষ করে গেরিলারা। এই অপারেশনে আরিফের “মরিস মাইনর” গাড়ির নম্বর প্লেট বদলে তা অপারেশনের কাজে ব্যাবহার করা হয়েছিল।

৩ নভেম্বর বুধবার বেলা ১১ টা। জন জোনাকি সিনেমা হল এর পাশে পল ওয়েল মার্কেট এর কাছে চলে এলো। ওর দায়িত্ব ছিল পর্যবেক্ষণ ও মূল দলকে গ্রিন সিগনাল দেয়া। গাড়িতে আসাদ এর হাতে ছিল স্টেনগান, ফেরদৌস এর হাতে রিভলবার, মুনিরের হাতে ডামি রিভলবার এবং মুনিরের পাশে ছিল ফিরোজ।

জন এর সিগনাল পেয়ে আরিফ গাড়ি নিয়ে ব্যাংক এর সামনে আসে এবং ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে গাড়িতেই বসে থাকে। ফিরোজ গাড়ি থেকে নেমে দারোয়ানকে ঘাড়ে আঘাত করে গেট এর সামনে পজিশন নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। ব্যাংক এর ভেতরে ঢুকে যায় আসাদ, ফেরদৌস এবং মুনির।

ব্যাংক এ ছিল ৭ জন কর্মচারী এবং ৪ জন ক্লায়েন্ট। আসাদ স্টেনগান উচিয়ে সবাইকে হ্যান্ডস আপ করায় আর মুনির ম্যানেজার এর সামনে ডামি রিভলবার উচিয়ে ধরে। ব্যাংক এর একজন তখন জিজ্ঞাসা করে- “আপনারা কিসে টাকা নিবেন?” ফিরোজ তখন ক্যাশ কাউনটার এ গিয়ে ওর শার্ট খুলে দেয় এবং টাকা নিয়ে গেরিলারা হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।

ওই একই দিনে মৌচাক এর “ইউনিয়ন ব্যাংক” এও তিন-চার জন গেরিলা সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়।

অপারেশন “বায়তুল মোকাররম”ঃ

এই অপারেশনে অংশ নিয়েছিল ঃ আসাদ, ফিরোজ, ফেরদৌস, আরিফ, জন, বাবু, সহর, মুনির এবং জাহেদুল।

এই অপারেশনের জন্য সিদ্ধেশ্বরী থেকে একটি গাড়ি হাইজ্যাক করা হয়। গেরিলাদের প্ল্যান অনুযায়ী চার্জ ব্লাসট এবং অন্যান্য কাজের জন্য আসাদ, জন, সহর, আরিফ এবং অন্যান্যরা আগেই বায়তুল মোকাররম এ আসে। এর কিছুক্ষণ পরে গাড়ি এবং বিস্ফোরক নিয়ে আসে ফিরোজ, ফেরদৌস এবং বাবু। বেলা ১২-৩০ মিনিট এ গেরিলাদের গাড়ি থামে ফ্যান্সি হাউজ এর সামনে ফুটপাথের পাশে। কিন্তু প্রথম বার ইগনাইট করবার পরেও বিস্ফোরণ না ঘটলে ওরা বেলা ২-৩০ এ আবার তৈরি হয়ে আসে।

ফ্যান্সি হাউজ এ তখন ঈদ কেনাকাটা করছিল পাকি গোয়েন্দা বিভাগের মেজর ফতেহ মোহাম্মাদ মালিক এবং তার সাথে ছিল আরও কয়েকজন অফিসার এবং তাদের পরিবারের লোকজন। ফিউজ ওয়্যার এ ইগনাইট করে আসাদ।

১১ নভেম্বর বেলা ২-৩০, ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে বিপণীকেন্দ্র এবং বিস্ফোরণ ঘটিয়েই গেরিলারা বিদ্যুৎ গতিতে মিলিয়ে যায়।

এই অপারেশনে ৩ জন পাকি সেনা নিহত হয়। [শেষ]

তথ্যসূত্রঃ সেলিনা হোসেন, "একাত্তরের ঢাকা", আহমদ পাবলিশিং হাউস, ঢাকা, ১৯৮৯।



আমার এই সিরিজ এর সব পর্বে যে সকল গেরিলা অপারেশন এর কথা বলা হল এগুলা ছাড়াও সারা দেশে অনেক ছোট-বড় গেরিলা অপারেশনের মাধ্যমেই পাকি জানোয়ারদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের বাংলাদেশ বিশ্ব এ আবির্ভূত হয়।

সবাইকে সাথে থাকবার জন্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:১৪

গোলক ধাঁধা বলেছেন: সুপার সিরিজ পড়া হল আপনার উছিলায়,অসংখ্য ধন্যবাদ অগ্নিপাখি

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮

অগ্নিপাখি বলেছেন: ধন্যবাদ গোলকধাঁধা ।

৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: চমৎকার একটা সিরিজ, শেষ করায় আপানাকে অভিনন্দন । একটা পরামর্শ, এই পোস্টে যদি সিরিজের আগের পোস্টগুলার লিঙ্ক দিয়ে দিতেন তাহলে আরও ভালো হতো ।

শুভেচ্ছা জানবেন ।

৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

অগ্নিপাখি বলেছেন: ধন্যবাদ আদনান শাহরিয়ার

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.