নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কংক্রিটের জঞ্জালে একজন সাধারণ মানুষ।

অগ্নিপাখি

প্রতিদিন হাজারো মানুষ হারিয়ে যায়, আমি সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষদেরই একজন। ভালবাসি বই পড়তে, বই সংগ্রহ করতে, স্ট্যাম্প জমাতে, ভাল চলচ্চিত্র দেখতে, মাঝে মাঝে লেখালেখি করতে, ভালবাসি কবিতা আর ভালবাসি একা একা পুরনো ঢাকায় ঘুরে বেড়াতে। হুমায়ুন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক। এছাড়া অন্যান্য লেখকদের বইও ভালো লাগে। অন্যান্য লেখকদের মধ্যেঃ আহমদ ছফা, রশিদ করিম, মুনতাসির মামুন, মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, নিমাই ভট্টাচার্য, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জাহানারা ইমাম, সৈয়দ মুজতবা আলী, শহীদ জহির রায়হান, সত্যজিৎ রায়, তারাশঙ্কর, বিভূতিভূষণ, সুনীল, সমরেশ , খূশবন্ত সিং, এলান পো, এরিখ মারিয়া রেমার্ক, মার্ক টোয়েন, ম্যাক্সিম গোর্কি, ভিক্টর হুগো, ফ্রাঞ্জ কাফকা, পাওলো কোয়েলহো, হারুকি মুরাকামির লেখাও অনেক বেশী ভালো লাগে। মন খারাপ থাকলে কবিতায় ডুবে যাই। আবুল হাসান, শহীদ কাদরি এবং জীবনানন্দ আমার খুব প্রিয় কবি। মুক্তিযুদ্ধ আমার অন্যতম পছন্দের একটা বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা যে কোন বই পেলে কিনে পড়ি। ঘৃণা করি যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের। এইতো এই আমি।

অগ্নিপাখি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষণ্ণ বিকেলে কিছু পুরনো স্মৃতি খুঁজে ফেরাঃ

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২

আজ আমার চারদেয়ালে বন্দী ঘরে বসে শুধু সেই পুরনো দিনগুলোর কথা মনে পরছে। পুরনো ঢাকাতে আমাদের বিশাল যৌথ পরিবারের প্রতিটা দিনই যেন হৈ হুল্লোড়ে ভরা থাকত। বাসার একটু সামনেই স্কুল। ক্লাস শেষ করে বিকেলবেলা হাঁটতে হাঁটতে বাসায় আসতাম। তেমন কোন বন্ধু ছিল না আমার, যেমনটা এখনো নেই। বাসায় ফিরে ছাদে ঘুরে বেড়ানো। মাগরিবের আজানের আগ পর্যন্ত ঘুড়ি ওড়ানো সব যেন আজ স্বপ্নের মতো ভাসছে এই মুহূর্তে আমার ভাঙাচোরা মনে। ছুটির দিনের বিকেল মানেই ছিল অন্য কিছু। সকাল বেলা পড়াশোনার কোন চাপ নেই। নাস্তা করেই তিন গোয়েন্দা না হয় চাচা চৌধুরীর কমিকস সারাদিন আবার বিকেলে ছাদে ক্রিকেট খেলা এই রুটিন কাজ ছিল।

আর অন্য দশটা মুসলিম পরিবারের মতো আমাদেরও আরবি পড়বার জন্য হুজুর ঠিক করা হয়। তখন ঢাকার একটা নামকরা মিশনারি স্কুলে মাত্র প্রাইমারী শ্রেণীতে পড়ি। তখনই একটা বিভেদ ঢুকিয়ে দেয়া হয় আমার অল্প বয়সী মনে- সাম্প্রদায়িক বিভেদ। হুজুর যখন শুনলেন আমি মিশনারি স্কুলে পড়ি- তার প্রথম উক্তি- “তুই তো খ্রিষ্টান হয়ে গেসস।“/ “ওদের দেয়া কোন খাবার খাবি না।“/ “মুসলমান ছাড়া কারো সাথে কথা বলবি না।“/ “হিন্দুদের সাথে কথা বলবি না”। আমার কেন জানি মনে হয় এই অভিজ্ঞতা শুধু আমার না মনে হয় সবারই আছে। তখনও আমি বুঝতাম না – কি সমস্যা ওদের সাথে কথা বললে? হুজুর কেন এইসব বলে? আমরা সবাই তো একই রকম। তখন এত কিছু বুঝতাম না- মাত্র স্কুলে পড়ি সম্ভবত চতুর্থ/ পঞ্চম শ্রেণীতে।

ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হলাম সাইন্স ল্যাব এর একটা হাই স্কুলে। ওখানে ছিলাম ক্লাস এইট পর্যন্ত। ক্লাস সিক্স এর প্রথম ক্লাসটার কথা এখনো মনে পরে। সেই ক্লাস এই প্রথম পরিচয় হয় আমার স্কুল জীবনের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু সুফল সরকার পলাশ এর সাথে। বন্ধুর সাথে টিফিন খাওয়া। সাইন্সল্যাব কলোনির পিছনের হোটেলে বড় পুরি আর হজমি পানিতে গুলে খাওয়া সব কিছু ওর সাথে করতাম। তখন হিন্দু-মুসলমান কোন ভেদাভেদ কখনই করি নাই। যদিও হুজুর শুনলে বলত- “ছি ছি মুসলমান হয়ে হিন্দুর সাথে মিশতেসশ” – আমি তখনও অবাক হতাম এই লোক কেন এগুলো কথা বলে? আমার আম্মা কে বললে আম্মা আমাকে বোঝালেন- “এরকম ভেদাভেদ কখনও করবা না। মুসলমান হিন্দু বলে কোন কথা নাই। সবাই মানুষ। তোমার হাত কাটলে যেমন লাল রক্ত পড়বে তেমনি একজন হিন্দু বা খ্রিষ্টান মানুষের হাত কাটলেও লাল রক্ত পড়বে। সবাইকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করবা। কখনও ধর্ম দিয়ে মানুষ বিবেচনা করবা না।“ আমার ওই চৌদ্দ বছরের মনে কথা গুলো দাগ কেটে গিয়েছিল। বলাই বাহুল্য এরপর সেই হুজুর এর সাথে আমার আরবি পড়া বন্ধ করে দেয়া হয়।

ক্লাস এইট পাস করবার পরেই সুফল কে হারিয়ে ফেলি। আমি চলে আসি পুরনো ঢাকার একটা স্কুলে ক্লাস নাইন এ আর সুফল চলে যায় একটা বোর্ডিং স্কুলে। এরপর প্রায় ১১ বছর সুফল এর কোন খোঁজ পাই নি। ২০১২ সালে আমি ওর পুরনো একটা চিঠি খুজে পেয়ে ওই ঠিকানায় চিঠি পাঠানোর পরে আবার যোগাযোগ হয় যা এখনো আছে।

এস.এস.সি পাশ করবার পরে ভর্তি হলাম ঢাকা সিটি কলেজ এ । স্কুলেও যেমন কোন বন্ধু ছিল না কলেজেও তেমনি। দুই তিনজন ছাড়া কারো সাথেই কখনও ভালো মতো মিশতে পারি নি। প্রাইভেট পড়তে যাওয়া আসার সময়েই খালি কথা বার্তা হতো। কলেজের দু বছরও কেমন জানি দেখতে দেখতে কেটে গেলো। অবশ্য একদম যে একঘেয়ে কেটেছিল তা অবশ্য বলা যাবে না। এখনও মনে পরে বিকেলে ক্লাস শেষ করে ধানমণ্ডি লেক এর ভেতর দিয়ে হেটে হেটে কলাবাগান যেতাম হিসাববিজ্ঞান প্রাইভেট পড়তে। সপ্তাহে তিনদিন ইংলিশ পড়তে যেতাম ঝিগাতলাতে এলহাম স্যার এর বাসায়- যেখানে পড়ার চেয়ে মজাটাই বেশি হতো। কলাবাগান থেকে “কুইক ১৪” বাস এর পেছনের সিট এ সন্ধ্যার আধো অন্ধকারে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে বাসায় ফেরা সব কিছু আজ মনে পড়ছে। কিভাবে যেন দুটা বছর কেটে গেলো। এইচ.এস.সি দিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম।

২০০৭-২০০৮ ব্যাচ এ আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সুযোগ পেলাম মেধা স্থান এ থেকে। এইখানেও নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া তেমন কোন বন্ধু ছিল না আমার। তবে আমার জীবনের সেরা ৫ বছর ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে কাটানো সময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানেই নতুন কিছু। বিশাল ক্যাম্পাস, সুবিশাল ক্লাসরুম। গুরুগম্ভীর প্রফেসর। বই পড়বার অভ্যাস স্কুল থেকেই ছিল তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির পরে তা কয়েকগুন বেড়ে গেলো। ক্লাস এর পরেই নীলক্ষেত, পুরনো বই এভাবেই তো চলে গেলো দিনগুলো।

এখনও মনে পড়ে আব্দুল মান্নান স্যার এর ক্লাস। এই ভদ্রলোক আমাদের পড়িয়েছিলেন “ইডিওলজি”, “পলিটিকাল থটস” , “স্ত্রাটেজিক স্টাডিজ”। কোন এক অদ্ভুত কারনে এই ভদ্রলোক প্রতিটা ক্লাস ইচ্ছে করে সকাল ৮ টায় নিতো এবং কেউ ১ মিনিট দেরি করে ক্লাস এ আসলে তাকে বের করে দিতো। আমাকে যে কতবার বের করে দিয়েছে এভাবে, সকালের ঘুম মাটি আবার ক্লাসও মাটি। প্রায় ১.৩০ ঘণ্টার ক্লান্তিকর লেকচার শুনতে শুনতে একসময় পিছনের বেঞ্চের সবার ঘুমিয়ে পড়ার দৃশ্যটা এখনও মনে পড়ে। ডক্টর দেলোয়ার আমাদের অনার্স এ পড়িয়েছিলেন “গ্লোবাল ইস্যুজ” আর মাস্টার্স এ “জাপান স্টাডিজ”। অসাধারণ একজন শিক্ষক। আরও মনে পড়ছে ডক্টর শাহিদুজ্জামান এর কথা। এই ভদ্রলোক আমাদের অনার্স এ পড়িয়েছিলেন “ফরেন পলিসি এনালিসিস”। স্যার এত সুন্দর ভাবে লেকচার দিতেন যে একদম একঘেয়ে লাগতো না। উনিই একমাত্র শিক্ষক যিনি নির্ধারিত সময় এর বেশি সময় ক্লাস নিলেও কারও খারাপ লাগতো না। বরং আমরা চাইতাম যাতে উনি আরেকটু বেশি সময় আমাদের ক্লাস নিক। এছাড়াও আশেকা ম্যাডাম, তাওহিদ স্যার, নিলয় স্যার, রোজানা ম্যাডাম, প্রফেসর রমজুল হক স্যার এর ক্লাস ও অনেক ভালো লাগতো। আধুনিক ভাষা ইন্সিটিউট এর শিক্ষক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ স্যার আমাদের “বাধ্যতামূলক ভাষা শিক্ষা” কোর্স এ পড়াতেন “ফ্রেঞ্চ ১” এবং “ফ্রেঞ্চ ২”। অসাধারণ মজার আর হাশিখুশি একজন মানুষ। উনার ক্লাসে রোল কল এর সময় ফ্রেঞ্চ এ বলতে হতো –“উই মসিউ” অর্থ “উপস্থিত স্যার”। এছাড়াও কেউ নির্দিষ্ট পড়া পারলে স্যার এর মজার কণ্ঠে বলা- “উ লা লা, ম্যাক্সি মাক্সি” এখনও মনে পড়ে।

প্রফেসর রমজুল হক আমাদের অনার্স এর তৃতীয় আর চতুর্থ বর্ষে “আন্তর্জাতিক আইন” আর “সমুদ্র আইন” পড়িয়েছিলেন। ওনার পড়ানো অনেক ভালো লাগতো বিশেষ করে উনি পড়ানোর মাঝখানে মজার মজার গল্প বলতেন এটাও ভালো লাগতো।

প্রফেসর আব্দুল হাকিম মাস্টার্স এ পড়াতেন আমাদের “এডভান্স থিওরি অফ আই.আর”। ভদ্রলোক অত্যন্ত রাশভারী আর কঠোর হলেও বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় তার লেকচার ভালো লাগতো। ডক্টর আশরাফ স্যার এর “সিকিউরিটি স্টাডিজ” কোর্স টা আমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল। অসাধারণ ভাবে পড়াতেন এই ভদ্রলোক। এছাড়াও রুখসানা ম্যাডাম এর অনার্স এর “ডিপ্লোম্যাসি” আর মাস্টার্স এর “নর্থ আমেরিকান এফেয়ারস” কোর্স দুটোও ভালো লাগতো।

আই.বি.এ ক্যাফেটেরিয়া এর কথা এখন মনে পড়ছে ভীষণ। সকাল ৮ টার ক্লাস শেষ করেই আমাদের সার্কেল এর সবাই চলে যেতাম আই.বি.এ তে নাস্তা করতে। আমি, বিভু, মুস্তাইন, রাকিব, সোহাগ, মশিউর, অর্থী, দিপু সবাই একসাথে যেতাম। ক্যান্টিন এর পরটা/ভাজি আর চা টা ছিল অসাধারণ। নিমেষেই দেড় ঘণ্টার ক্লান্তি এক পলকে শেষ করে দিতো। এরপর ক্লাস থাকলে আবার ক্লাস। আর মাঝখানে গ্যাপ থাকলে সোজা টি. এস. সি তে চলে যেতাম মোক্তার এর দোকানে। দেয়ালে বসে সিগারেট টানতে টানতে আর আড্ডা দিতে দিতে কখন যে সময় চলে যেত বুঝতেও পারতাম না।

ক্লাস এর মাঝখানে বেশি গ্যাপ না থাকলে চলে আসতাম “ক্যাম্পাস শ্যাডও” তে। এক কাপ চা আর একটা গোল্ডলিফ নিয়ে বসে পড়তাম সাইকেল স্ট্যান্ড এর পিছনে। “ক্যাম্পাস শ্যাডও” এর এক নম্বর ফটোকপির দোকান তো কখনই ভুলবো না। সকল স্টাডি মেটেরিয়াল কই পাবো? সবাই চল “সুমন মামা” এর দোকানে। অবশ্য মিড টার্ম আর টার্ম ফাইনাল এর রুটিন এর পরেই

তার দোকানে ভিড় বেশি হতো।

কত বিকেল যে কলা ভবনের সামনে “মল চত্তর” এর সবুজ ঘাসে মাথা রেখে কাটিয়ে দিয়েছি সেই কথা কে জানে। এরপর ঝুপ করে সন্ধ্যা নামত। সবাই যে যার যার গন্তব্য এর জন্য রওনা হতাম।

টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার কথা এখন মনে পড়ছে। পুরো সেমিস্টার ফাঁকিবাজি করে টার্ম ফাইনাল এর রুটিন দেবার পরেই এক একজনের মহা সিরিয়াসনেস। বিশেষ করে কিছু কথা এখনও কানে বাজে। যেমনঃ সোহাগ এর –“সীট ম্যান, কিচ্ছু পড়ি নাই, এই কয়েকদিন পড়ে কি পরীক্ষা দিমু? সীট।“ রাকিব এর –“দোস্ত আমি কিচ্ছু পড়ি নাই সত্যি। প্লিজ হেল্প মি।“ বিভুর- “আমার সমস্যা নাই, আমার পিছে বন্ধু অর্থী আসে, ওই হালায় দেখাইব আমারে।“ দিপুর-“শালা এত পইড়া কি বড়লোক হবি নাকি?” অথবা মসিউর এর –“হা হা কি হবে পইড়া। একটা ওয়ার্ড ও দেখি নাই। মনের মাধুরি মিশায়া পরীক্ষা দিমু।“ টার্ম ফাইনাল এর শেষ পরীক্ষার পরেই সবাই সন্ধ্যা পর্যন্ত টি. এস.সি তে থাকা হতো রিলাক্স মুড এ। আমরা বলতাম –“ফ্রি টিল দ্যা নেক্সট সেমিস্টার ফাইনাল কামস।“ কোন কোনদিন দিপুর সাথে ধানমণ্ডি ৮ রবীন্দ্র সরোবর এ চলে যেতাম গান শুনতে রাত পর্যন্ত থাকতাম।

আমার আরেকটা ছোট সার্কেল ছিল সোশিওলজি ডিপার্টমেন্ট এর। আমার ডিপার্টমেন্ট এর আলী সিদ্দিকির মাধ্যমে ওদের সাথে পরিচয়। অসম্ভব মেধাবী কয়েকজন। রিশাদ, রনি, মিতুল, হিরন, মিশু, কলি ওদের সাথেও মাঝে মাঝে হাকিম চত্বরে একসাথে লাঞ্চ করা হতো আর সাথে চলতো হয়তো নতুন কোন বই, মুভি, সিরিয়াল, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা।

এভাবে দেখতে দেখতেই যেন কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এর ৫ টা বছর কেটে গেলো। গত বছরের মে মাসে মাস্টার্স ফাইনাল শেষ করি। এরপর এই ৮ মাসে ক্যাম্পাসে মাত্র ৪ বার গিয়েছি। এখন কেন যেন আর প্রয়োজন ছাড়া যাওয়া হয় না আর যেতেও ইচ্ছা করে না। কেমন খারাপ লাগে যেন। বিশাল ক্যাম্পাস এ তখন একা মনে হয় নিজেকে। স্মৃতিগুলো ছেকে ধরে চারপাশ হতে।

যদিও তেমন একটা বন্ধু ছিল না, তবুও যারা ছিল, যাদের কথা বললাম তারাও আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। কেউ এখন নতুন চাকরি নিয়ে ব্যাস্ত, কেউ চাকরি খুঁজছে, কেউ কেউ ব্যস্ততায় মিশে গিয়েছে হয়তবা। এই প্রায় আট মাসে কারও সাথেই তেমন একটা দেখা হয়নি। কারও সাথে এখন আর মুঠোফোনেও কথা বলা হয় না। আমিও আস্তে আস্তে যেন গুটিয়ে নিচ্ছি নিজেকে সবার কাছ থেকে। কথা বলতেও এখন আর ভালো লাগে না। আমার চার দেয়ালের কারাগারে বিষণ্ণতার জালে চারপাশ আচ্ছন্ন। হঠাৎ কোনদিন গভীর রাতে মুখবই এর ওপাশে কেউ হয়তো জিজ্ঞাসা করে- “বন্ধু কেমন আছিস”? ঘোলা ঘোলা চোখে তখন একটি কথাই আমার হাত থেকে বেরিয়ে আসে- “আমি ভালো নেই বন্ধু, তুমি ভালো থেকো।“



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.