নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কংক্রিটের জঞ্জালে একজন সাধারণ মানুষ।

অগ্নিপাখি

প্রতিদিন হাজারো মানুষ হারিয়ে যায়, আমি সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষদেরই একজন। ভালবাসি বই পড়তে, বই সংগ্রহ করতে, স্ট্যাম্প জমাতে, ভাল চলচ্চিত্র দেখতে, মাঝে মাঝে লেখালেখি করতে, ভালবাসি কবিতা আর ভালবাসি একা একা পুরনো ঢাকায় ঘুরে বেড়াতে। হুমায়ুন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক। এছাড়া অন্যান্য লেখকদের বইও ভালো লাগে। অন্যান্য লেখকদের মধ্যেঃ আহমদ ছফা, রশিদ করিম, মুনতাসির মামুন, মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, নিমাই ভট্টাচার্য, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, জাহানারা ইমাম, সৈয়দ মুজতবা আলী, শহীদ জহির রায়হান, সত্যজিৎ রায়, তারাশঙ্কর, বিভূতিভূষণ, সুনীল, সমরেশ , খূশবন্ত সিং, এলান পো, এরিখ মারিয়া রেমার্ক, মার্ক টোয়েন, ম্যাক্সিম গোর্কি, ভিক্টর হুগো, ফ্রাঞ্জ কাফকা, পাওলো কোয়েলহো, হারুকি মুরাকামির লেখাও অনেক বেশী ভালো লাগে। মন খারাপ থাকলে কবিতায় ডুবে যাই। আবুল হাসান, শহীদ কাদরি এবং জীবনানন্দ আমার খুব প্রিয় কবি। মুক্তিযুদ্ধ আমার অন্যতম পছন্দের একটা বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা যে কোন বই পেলে কিনে পড়ি। ঘৃণা করি যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের। এইতো এই আমি।

অগ্নিপাখি › বিস্তারিত পোস্টঃ

থিংস ফল এপার্টঃ এক অনন্য আফ্রিকান ক্লাসিক

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৯





আফ্রিকান সাহিত্যর আলোচনায় প্রথমেই অবধারিতভাবে যে লেখক আর উপন্যাসের নাম এসে যায় তা হল বিখ্যাত “টাইম ম্যাগাজিন” এর দৃষ্টিতে ১৯২৩-২০০৫ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ ইংরেজি উপন্যাসের তালিকায় থাকা বিখ্যাত নাইজেরিয়ান লেখক চিনুয়া আচেবের ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত “থিংস ফল এপার্ট” এর নাম। আচেবের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে ধরা হয় এই উপন্যাসটিকে যা এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৮ মিলিয়ন কপি বিক্রয় হয়েছে এবং ৫০ টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে “আফ্রিকা” বিষয়ক কোর্স গুলোতেও পড়ানো হয় এ উপন্যাসটি। এ বই এ লেখক সনাতন আফ্রিকান ঐতিহ্য সংস্কৃতি এর বিপরীতে দেখিয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের দন্ধ যা এ উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। উপন্যাসটি মোট তিন ভাগে পঁচিশটি অধ্যায়ে বিভক্ত। উপন্যাসটির শিরোনামটি নেয়া হয়েছে ১৯২০ সালে প্রকাশিত আইরিশ কবি “ডব্লিউ. বি. ইয়েটস” এর “দ্যা সেকেন্ড কামিং” কবিতাটি থেকে।









লেখক চিনুয়া আচেবে ১৯৩০ সালের ১৬ ই নভেম্বর নাইজেরিয়ায় জন্মগ্রহন করেন। এ সময় নাইজেরিয়া ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। তাঁর বাবা ছিলেন গির্জার প্রতিনিধি যিনি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মিশন স্কুলে পড়াতেন এবং অন্য সময় গ্রামের গির্জায় দায়িত্ব পালন করতেন। চিনুয়া শৈশব ও কৈশোরে এ স্কুলেই পড়াশোনা করেন এবং ১৯৫৩ সালে ইবাদানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি অধ্যাপনা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের ২১ শে মার্চ এ লেখক মৃত্যুবরণ করেন।



এই উপন্যাসে তৎকালীন ঔপনিবেশিক পূর্ব আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়া এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার সমাজচিত্র, কলহবিবাদ, কায়িক শক্তির আধিপত্যবাদ, ধর্মাচরণ, রহস্যময় আদি ভৌতিক শক্তি, জীবনের উত্থান-পতন এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার প্রভাবে পরিবর্তিত সমাজ এর চিত্র ফুটে উঠেছে উজ্জল ভাবে। সেই সময়ের সমাজ, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি ফুটে উঠেছে উপন্যাসের মূল চরিত্র ওকোনকো, এজিনমা, ইকওয়েফি, ইকেমেফুনা, নাউয়ি, ওবিত্ররিকা, উচেন্দু এর মাধ্যমে।



উপন্যাসটি মুলত এর প্রধান চরিত্র ওকোনকোর জীবন, তার উত্থান আর উপন্যাসের শেষে তার করুন পরিনতিকে কেন্দ্র করে এগিয়ে গিয়েছে। চরিত্র হিসেবে আরও এসেছে এজিনমা, ইকওয়েফি, ইকেমেফুনা, নাউয়ি, ওবিত্ররিকা, উচেন্দু, মিস্টার ব্রাউন সহ অনেকে।



আশ্চর্য এক ভয় ওকোনকোর জীবনকে নিয়ন্ত্রন করেছে। সে তার বাবার দুর্ভাগ্য ও অসফলতার প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে। তাই উপন্যাসের শুরু থেকে দেখা যায় সে শক্তিমত্তা প্রকাশে কঠোর থেকেছে তবুও কখনও কখনও ক্ষীণভাবে প্রকাশ পেয়েছে তার মমত্ব এবং স্নেহপ্রবন মন। উপন্যাসের শেষে ওকোনকোর করুন পরিনতি পাঠকের মনে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতার ছায়া রেখে যায়।



বিশ্বসাহিত্য অনন্য অবস্থান করে নেয়া এই উপন্যাসটি আপন মহিমায় সমুজ্জ্বল। উপন্যাসটির শেষে আসলে “ডব্লিউ. বি. ইয়েটস” এর “দ্যা সেকেন্ড কামিং” কবিতাটির যথার্থতাই প্রমানিত হয়ঃ



“Turning and turning in the widening gyre

The falcon cannot hear the falconer;

Things fall apart; the center cannot hold;

Mere anarchy is loosed upon the world.”



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

হিংস্র ঈগল বলেছেন: এই উপন্যাসটা গত সেমিস্টারে পাঠ্য ছিল। আফ্রিকান লেখকরা যতটা গভীর ভাবে বিষয়টা ধরতে পেরেছেন, ততটা আর কোন মহাদেশের লেখক পারেননি। এটা পড়ানর সময় স্যার বলেছিলেন যারা নিজের দেশে ভিক্ষা করারও যোগ্যতা রাখেনা তারা আরেকটা সমৃদ্ধ, প্রাচুর্যে ভরপুর দেশের মানুষকে উদ্ধার করতে যায়। এই মিশনারীদের সাথে আমার কেমন যেন ইযতেমার মাঠে দেখা কিছু পাকিস্তানীর মিল চোখে পড়ে। নিজের দেশে রাস্তায় বের হওয়ার উপায় নাই আর উত্তরায় এসে কি সুন্দরভাবে মাগরিবের নামাজের পর বয়ান করে। আর চার পাশের মানুষও দেখি ওয়াসিম আকরাম, শহীদ আফ্রিদির মত নুরানী চেহারার লোকদের বয়ান মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে।

একানতই নিজস্ব মতামত। আশা করি অন্য কিছু মনে করবেন না।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৩১

অগ্নিপাখি বলেছেন: "আফ্রিকান লেখকরা যতটা গভীর ভাবে বিষয়টা ধরতে পেরেছেন, ততটা আর কোন মহাদেশের লেখক পারেননি ।"/ সহমত আপনার সাথে।
আচেবে নিজেও "“An African Voice” এ যথার্থই বলেছেন ঃ “The last four of five hundred years of European contact with Africa produced a body of literature that presented Africa in a very bad light and African’s in a very lurid terms. The reason for this had to do with the need to justify the slave trade and slavery.”

২| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ২:২৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আচেবের এই বইটা পড়ার ইচ্ছা আছে। রিভিউ ভাল লাগল।

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১:২৩

অগ্নিপাখি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
উপন্যাসটা অসাধারণ।
দেরি না করে পড়ে ফেলুন।
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.