২১শে ফেব্রুয়ারি

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী

আমি কি ভুলিতে পারি...



ভুলিতে পারি না মানে???

আমরা তো বাইশে ফেব্রুয়ারি আসতে না আসতে ভুলে যাবো।

আমরা ভুলে যাবো ভাষা শহীদদের কথা, ভুলে যাবো ভাষা সৈনিকদের।

আমরা ভুলে যাই আব্দুল লতিফ, আপেল মাহমুদদের মতো কন্ঠ সৈনিকদের।



ভুলে যাই বলেই আমাদের বিনোদনযন্ত্র গুলোতে উপচে পড়ে জাস্টিন বিবার আর হানি সিংদের গান।

আমরা যে আবেগ দিয়ে জন ডেনভারের গান শুনি, সেই আবেগ নিয়ে কি কখনো মাহমুদ-উন-নবির গান শুনেছি? কিংবা সৈয়দ আব্দুল হাদী? দুদিন পরে তো বোধহয় আমরা আইয়ুব বাচ্চুকেও ভুলে যাবো...



ইংলিশ মিডিয়ামে বাচ্চাকে না পড়ালে স্ট্যাটাস থাকেনা। এই স্ট্যাটাস বজায় রাখতে গিয়ে আমরা বাচ্চাদের বঞ্চিত করছি নিজ দেশের ইতিহাস, ভূগোল এবং সাহিত্য জানা থেকে।



এক্ষেত্রে অনেকে যুক্তি দেখান যে, বাংলা মিডিয়ামে পড়লে পরবর্তীতে উচ্চতর শিক্ষা পর্যায়ে হোচট খেতে হয়। কিন্তু বাইরের দুনিয়ার সাথে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দেশীয় ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি কেন বিসর্জন দিতে হবে এটা আমার মাথায় আসেনা। বরং আমার সাত বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা বলে আমাদের দেশে ইংলিশ মিডিয়ামের স্টুডেন্টদের চাইতে ইংলিশ ভার্সনের স্টুডেন্টরা কিছুটা ভাগ্যবান। তারা অন্তত বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সমাজ ব্যাবস্থা সম্পর্কে পড়ার সুযোগ পায়। আর উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশে এমন অনেক কৃতি সন্তান আছে যারা বাংলা মিডিয়ামে পড়াশুনা করেছে।



তো ডুড প্রজন্মকে বলছি, তোমরা যারা আজ স্পেশাল পোষাক পরে, পার্লার থেকে সেজে, টি এস সিতে গিয়ে সেলফি তুলে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করছো; তারা জেনে রাখো, '৫২ সালে আজকের দিনে খুব বেদনাদায়ক একটা ঘটনা ঘটেছিলো।



তোমার আমার মতই সাধারন কিছু মানুষ অসাধারন একটা কাজ করেছিলো। রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবীতে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে আন্দোলন করেছিল এবং তাঁদের পবিত্র রক্তের বন্যা বইয়ে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে গেছে। ভাষার জন্য এমন জীবনদানের নজির পৃথিবীতে আর নেই।



পারবো আমরা, এখনকার প্রজন্ম এমন সাহস দেখাতে? এখন তো আমরা পেট্রোল বোমার ভয়ে ঘর থেকেই বের হইনা। ভাষার জন্য জীবন দেয়া তো দুরের কথা। তাই অনুরোধ, জীবন না দেই অন্তত সম্মান তো দিতে পারি। নইলে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারদের ঋণ কিভাবে শোধ হবে?



অরিজিৎ সিং তো বহুত শুনলা, এবার একটু আজম খান শুনো...

২ টি +০/-০