নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেশ ক'বছর আগে ছেলে মেয়ে নিয়ে নিউমার্কেটের "Book View" নামের বইয়ের দোকানে বই কিনবো বলে গিয়েছি এবং পছন্দের বই খুঁজে নেবার সময় স্তূপীকৃত বই দেখিয়ে বলা হোল ওগুলো পুরনো এবং কম দামে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। ছেলে মেয়ে যথারীতি ব্যস্ত নতুন বইয়ের সংগ্রহে। আমি পুরোন বইয়ের মাঝে পেয়ে গেলাম বহু আকাঙ্খিত সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের "সত্যেন্দ্র কাব্যগুচ্ছ"। কৌতুহল বেড়ে গেল এবং বেশ কয়েকটি বই সেখান থেকে নিয়ে এলাম। কিছুদিনের মধ্যেই পড়ে শেষ করলাম বইগুলো এবং ধন্য হলাম। তবে "যা দেখেছি" নামে হিরন্ময় বন্দোপাধ্যায়ের লেখা বইটি পড়ে এক অন্য সময়ে চলে গেলাম! ১৯২৭ সনের ১৪ই এপ্রিল থেকে শুরু করে লেখক তাঁর আত্মজীবনীমূলক বইয়ে তৎকালীন বৃটিশ ভারত এবং স্বাধীন ভারতের যে ছবি তুলে ধরেছেন সত্যি অনবদ্য! মনে হলো লেখকের নামে বইটির নাম "হিরন্ময়" হলে বেশী মানাতো। কত কিছু জানতে পারছিলাম এই বই পড়ে, অভিভূত!
আমার এবং আমার দুই ছেলেমেয়ের বই কেনা এবং পড়বার যে রোগ তার সূত্র ধরে অনেক বইয়ের সমাগম, স্থান সংকুলান কঠিন। ঢাকার বাইরে চালান দেওয়া হোল অনেক বই এবং বেশ বড় এক কাঁচের শোকেসে শোভা পেতে লাগল অনেক অনেক বই। বাচ্চারা বড় হচ্ছে, ওদের জন্য সময় বের করা; নিজের পেশায় ব্যস্ততা। সব মিলিয়ে হু হু করে দিন কাটছিলো।
এর পর এলো করোনার মত আজব অসুখ, মানুষের সাথে দূরত্ব সৃষ্টিকারী ভয়াবহ করোনা বদলে দিল জীবন যাপন। তারপর আরো কত ঘটনা জাতির জীবনে ত্যাগের এবং অর্জনের!
নানান পরিস্থিতি পার হয়ে থিতু হতেই মনে পড়লো সেই "যা দেখেছি" বইয়ের কথা। অনেক খোঁজ করা হোল, ঢাকার বাইরে বইয়ের যে সংগ্রহশালা সেখানে খুঁজে লাভ হোল না,সেখানে অনেক বই নষ্ট হয়ে গিয়েছে যা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। নিরুপায় । এখানে বাসায় বইয়ের শোকেস এবং যে তাক আছে সেখানেও পাওয়া গেল না। অনলাইনে খুঁজে বইটি পেলাম না, এমনকি বইটির নামটা কোথাও নেই। কি পরিমাণে কষ্ট পেয়েছি জানি শুধু আমি। মেয়েকে আফসোস নিয়ে বলেছি এ ক্ষতির কথা বই হারানোর বেদনার কথা। কোনভাবেই আর পাবো না বইটি ধরে নিয়েছি। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে পছন্দের এ বইয়ের কথা মনে এলে।
প্রায় বিশ দিন আগে বইয়ের শোকেস এক রুম থেকে অন্য রুমে নেবার সময় সব বই বের করা হোল এবং বিস্মিত হয়ে দেখলাম সেই "যা দেখেছি " বইটি বেরিয়ে এলো। আনন্দে আত্মহারা আমি! বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। যাহোক্ পেলাম বটে। আবার পড়তে শুরু করেছি মলিন জীর্ণ বইখানি, মহামূল্যবান প্রিয় আমার কাছে।
মাঝে মাঝে এমনটা ঘটে যায় জীবনে, অতি প্রিয় আকাঙ্খিত বিষয় বা বস্তু এমনকি মানুষ সহসাই সামনে চলে আসে! অনেকের বেলায় মনে হয় এমনটি ঘটে !
কত কত বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং যাচ্ছে, আজকাল অপাংক্তেয় এরা।
তেমনি বেশ অনেকদিন হোল "Book View" নামের বইয়ের দোকান বন্ধ হয়েছে এবং উঠে গিয়েছে,একেবারে নিরুদ্দেশ! হয়তো ভুলেও যাবো একদিন। মানুষের জীবনও তো এমনি! বন্ধ হয়ে যাবার পর কোথায় হারিয়ে যায়, এমনকি স্মৃতি থেকেও হারিয়ে যায়। এইসব মেনে নিয়ে আমাদের যাপিত জীবন।
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫২
মেহবুবা বলেছেন: আপনি যে পড়েছেন, হয়তো থাকতেও পারে সংগ্রহে! জানতাম না। অনেক মন খারাপ করেছিলাম বইটির জন্য। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ এবং এর ইন্ধনদাতাদের অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত কত মানুষের হাহাকার এবং সর্বনাশ ডেকে এনেছে!
১৪এপ্রিল ১৯২৭ থেকে শুরু করে ICS পরীক্ষা এবং এদেশের অনেক চিত্র ফুটে উঠেছে!
একই সমস্যা আমারো, তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে জাগতিক/ পার্থিব বিষয় এবং বস্তুর প্রতি আগ্রহ কমিয়ে আনবার চেষ্টা করছি।
যেন আসল ঠিকানায় যাবার এবং শান্তিতে থাকবার রসদ গুছিয়ে নিতে পারি।
ভাল থাকবেন।
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:০১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: মন ছুঁয়ে যাওয়া সংগ্রহের প্রতি একজন পাঠকের যে সর্বগ্রাসী আগ্রহ এবং পুনরায় পাঠের যে হাহাকার সেটুকু টের পেলাম লেখায় !
আমার নিজের ও অনেক পছন্দের বই হুট করে নতুন করে পড়তে , বারবার পড়তে ভাললাগে। পাঠের আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হোক আপু।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৪
মেহবুবা বলেছেন: জানো অনেক মন খারাপ হয়েছিল, ছোট একটা বই অথচ তথ্যবহুল! বই পড়ে যে আনন্দ পাওয়া যায়, লেখকের চিন্তায় একাত্ম হওয়া যায় সেকি অন্য কিছুতে মেলে! ঠিক বলেছো বারাবার পড়তেও ভাল লাগে। সব কিছু নিয়ে ভালো থেকো।
৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমার বইটি পড়া হয়নি , দেখি পরেরবার নীলক্ষেতে গেলে চেষ্টা করব সংগ্রহ করার।
নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে
যেভাবে বেড়ে উঠি এই বইগুলো ও আমাকে লেখকের সাথে বেড়ে উঠার আনন্দ দেয়।
অনেক অনেক শুভ কামনা ও ভালোবাসা আপু নতুন বছরের জন্য।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫
মেহবুবা বলেছেন: নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে কি বইয়ের নাম?
নতুন বছর এবং সামনের দিনগুলোতে ভাল থেকো।
৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:২৮
আমি সাজিদ বলেছেন: "যা দেখেছি" পড়ার আগ্রহ রাখি। আপনার প্রিয় বইগুলো সম্বন্ধে ব্লগ পোস্টে আমাদের জানানোর জন্য অনুরোধ রইলো।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:২৬
মেহবুবা বলেছেন: কোনটা ছেড়ে কোনটা নিয়ে বলি। 'সুকুমার সমগ্র ' আমার অতি প্রিয় বই, কতবার পড়েছি মন ভরে না।
৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৪
জুল ভার্ন বলেছেন: "যা দেখেছি" বইয়ের সিকুয়েল হচ্ছে "উদবাস্তু"।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩০
মেহবুবা বলেছেন: যা দেখেছির সিকুয়েল? আসলে পড়া হয়নি উদবাস্তু? কত সন থেকে কত সনের কথা লেখা আছে ওখানে? রকমারী তে উদবাস্তু পাওয়া যায়, সংগ্রহ করতে হবে।
৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: গত পনের বছরে বহু বইয়ের দোকান হয়ে গেছে কাপড় আর ফাস্টফুডের দোকান। লোকজন বই পড়া অনেক কমিয়ে দিয়েছে। টিকটক, ইউটিউব আর ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় এর 'যা দেখেছি' বইটা পড়েছি- অনবদ্য! তবে আমার বেশী ভালো লেগে তাঁর লেখা 'উদবাস্তু' বইটি।
বাড়িতে 'বইয়ের স্থানসংকুলান নিয়ে সমস্যা জর্জরিত' একজন মজলুম পাঠক আমি.....