নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলে গেলে- তবু কিছু থাকবে আমার : আমি রেখে যাবোআমার একলা ছায়া, হারানো চিবুক, চোখ, আমার নিয়তি

মনিরা সুলতানা

সামু র বয় বৃদ্ধার ব্লগ

মনিরা সুলতানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:৩৪

অসময়ে কদম ফোটা, বৃষ্টিধোয়া শরত সময়! এমন’ই একটা দিনে আপনার প্রয়াণের খবর এলো! সন্ধ্যা ছুঁইছুঁই বেলায় আপনাকে নিয়ে লিখছি মেঘভার নত হৃদয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আপনাকে আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে পাওয়ার পরম মুহূর্তটুকু যে কতটা যত্নে লালন করি সেটুকু লেখায় তুলে আনার ঋদ্ধতা হয়ত কখনোই অর্জন করতে পারবো না। আমাদের বেড়ে উঠা আমাদের আমি হয়ে উঠার সময়টুকু যে আপনারা প্রভাবিত করতে পেরেছেন সেটুকু সমস্ত জীবন উন্নত চিত্তে স্মরণ করবো।

আপনার কবিতা যতটা পড়েছি, শুনেছি তার চাইতে অধিক, মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে যখন দেশে গণহত্যা চলছিলো সেই কঠিন সময়ে লেখা " বারবারা বিডলার কে " কবিতা আমাদের কণ্ঠ ছুঁয়ে বিপ্লব স্পন্দন এনেছে হৃদয়ে। একজন বিপ্লবী ! একজন পরিপূর্ণ আধুনিক মানুষ ! যাদের হৃদয়ের সুবাতাস অনুরণিত করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।

আপনাদের কবিতা লেখালিখির তবক দেয়া যে পান আমার অমৃত ভেবে আত্মস্থ করেছি, হয়ত সেটুকুর জন্যেই জলের মাঝে লেখাজোখা করার সাহসটুকু পেয়েছি। নাহ, যার লেখা অমরত্ব লাভ করে, তাদের মৃত্যু নেই। আপনার লেখালিখি আপনার হাসিমাখা মুখটুকু মনে করিয়ে দেবে। আপনাকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন এইটুকু দোয়া !


আসাদ চৌধুরী (জন্ম: ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৩- মৃত্যু: ৫ অক্টোবর ২০২৩) বাংলাদেশের একজন কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন। কবিতা ছাড়াও তিনি বেশ কিছু শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ইত্যাদি রচনা করেছেন। কিছু অনুবাদকর্মও তিনি সম্পাদন করেছেন। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তার রচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
তিনি ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন। তার কবিতা গীতিময় এবং ছন্দোদ্ভাসিত। তার ব্যঙ্গার্থক কবিতা 'কোথায় পালালো সত্য' একটি জনপ্রিয় পদ্য। সভ্যতার প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি গত কয়েক দশকে মানবিক মূল্যবোধের যে করুণ অধোগতি, তারই প্রেক্ষাপটে একটি কবিতায় তিনি আক্ষেপ করেছেন[১] -
তখন সত্যি মানুষ ছিলাম
এখন আছি অল্প ( তথ্যসূত্রঃ উইকি পিডিয়া)

কবি আসাদ চৌধুরীর লেখা তিনটা কবিতা




তখন সত্যি মানুষ ছিলাম
– আসাদ চৌধুরী

নদীর জলে আগুন ছিলো
আগুন ছিলো বৃষ্টিতে
আগুন ছিলো বীরাঙ্গনার
উদাস-করা দৃষ্টিতে।
আগুন ছিলো গানের সুরে
আগুন ছিলো কাব্যে,
মরার চোখে আগুন ছিলো
এ-কথা কে ভাববে?
কুকুর-বেড়াল থাবা হাঁকায়
ফোসে সাপের ফণা
শিং কৈ মাছ রুখে দাঁড়ায়
জ্বলে বালির কণা।
আগুন ছিলো মুক্তি সেনার
স্বপ্ন-ঢলের বন্যায়-
প্রতিবাদের প্রবল ঝড়ে
কাঁপছিলো সব-অন্যায়।
এখন এ-সব স্বপ্নকথা
দূরের শোনা গল্প,
তখন সত্যি মানুষ ছিলাম
এখন আছি অল্প।


রিপোর্ট ১৯৭১
- আসাদ চৌধুরী


প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল
বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম
আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।
এ—সব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে
বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়—
বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে
তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে
শুধু মুখ টিপে হাসে।
প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে
কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা—
সূর্য্যকেও পর্দা করে এ—সব রমণী।
অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার
সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা
সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে—
আমি তার সুরকার— তার রক্তে স্বরলিপি লিখি।
মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী
গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়
মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে—ঝিয়ে
খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো,
অস্ফুট গোলাপ—কলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে
কার কী বা আসে যায়।
বিপন্ন বিস্ময়ে কোরানের বাঁকা—বাঁকা পবিত্র হরফ
বোবা হ’য়ে চেয়ে দ্যাখে লম্পটেরক্ষুধা,
মায়ের স্নেহার্ত দেহ ঢেকে রাখে পশুদের পাপ।
পোষা বেড়ালের বাচ্চা চেয়ে—চেয়ে নিবিড় আদর
সারারাত কেঁদেছিলো তাহাদের লাশের ওপর।
এদেশে যে ঈশ্বর আছেন তিনি নাকি
অন্ধ আর বোবা
এই ব’লে তিন কোটি মহিলারা বেচারাকে গালাগালি করে।
জনাব ফ্রয়েড,
এমন কি খোয়াবেও প্রেমিকারা আসে না সহজ পায়ে চপল চরণে।
জনাব ফ্রয়েড, মহিলারা
কামুকের, প্রেমিকের, শৃঙ্গারের সংজ্ঞা ভুলে গ্যাছে।
রকেটের প্রেমে পড়ে ঝ’রে গ্যাছে
ভিক্টোরিয়া পার্কের গীর্জার ঘড়ি,
মুসল্লীর সেজদায় আনত মাথা
নিরপেক্ষ বুলেটের অন্তিম আজানে স্থবির হয়েছে।
বুদ্ধের ক্ষমার মূর্তি ভাঁড়ের মতন
ভ্যাবাচেকা খেয়ে প’ড়ে আছে, তাঁর
মাথার ওপরে
এক ডজন শকুন মৈত্রী মৈত্রী ক’রে
হয়তো বা উঠেছিলো কেঁদে।


বারবারা বিডলারকে
- আসাদ চৌধুরী


বারবারা
ভিয়েতনামের উপর তোমার অনুভূতির তরজমা আমি পড়েছি—
তোমার হৃদয়ের সুবাতাস
আমার গিলে—করা পাঞ্জাবিকে মিছিলে নামিয়েছিল
প্রাচ্যের নির্যাতিত মানুষগুলোরজন্যে অসীম দরদ ছিল সে লেখায়
আমি তোমার ওই একটি লেখাই পড়েছি
আশীর্বাদ করেছিলাম, তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক।
আমার বড়ো জানতে ইচ্ছে করে বারবারা, তুমি এখন কেমন আছ ?
নিশ্চয়ই তুমি ডেট করতে শিখে গেছ।
গাউনের রঙ আর হ্যাট নিয়ে কি চায়ের টেবিলে মার সঙ্গে ঝগড়া হয়?
অনভ্যস্ত ব্রেসিয়ারের নিচে তোমার হৃদয়কে কি চিরদিন ঢেকে দিলে।
আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে বারবারা।
তোমাদের কাগজে নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খাঁর ছবি ছাপা হয়—
বিবেকের বোতামগুলো খুলে হৃদয় দিয়ে দেখো
ওটা একটা জল্লাদের ছবি
পনেরো লক্ষ নিরস্ত্র লোককে ঠাণ্ডা মাথায় সে হ্ত্যা করেছে
মানুষের কষ্টার্জিত সভ্যতাকে সেগলা টিপে হত্যা করেছে
অদ্ভুত জাদুকরকে দেখ
বিংশ শতাব্দীকে সে কৌশলে টেনে হিঁচড়ে মধ্যযুগে নিয়ে যায়।
দেশলাইয়ের বাক্সর মতো সহজে ভাঙে
গ্রন্থাগার, উপাসনালয়, ছাত্রাবাস,
মানুষের সাধ্যমত ঘরবাড়ি
সাত কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের ফুলকে সে বুট জুতোয়
থেতলে দেয়।

টু উইমেন ছবিটা দেখেছ বারবারা ?
গির্জার ধর্ষিতা সোফিয়া লোরেনকেদেখে নিশ্চয়ই কেঁদেছিলে
আমি কাঁদিনি, বুকটা শুধু খাঁ খাঁ করেছিল—
সোফিয়া লোরেনকে পাঠিয়ে দিয়ো বাংলাদেশে
তিরিশ হাজার রমণীর নির্মম অভিজ্ঞতা শুনে
তিনি শিউরে উঠবেন।
অভিধান থেকে নয়
আশি লক্ষ শরণার্থীর কাছে জেনে নাও, নির্বাসনের অর্থ কী ?
জর্জ ওয়াশিংটনের ছবিওলা ডাকটিকেটে খোঁজ থাকবে না স্বাধীনতার
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কাছে এসো—
সাধু অ্যাবের মর্মর মূর্তিকে গণতন্ত্র আর মানবতার জন্য
মালির ঘামে ভেজা ফুলের তোড়া দিয়োনা—
নিহত লোকটি লজ্জায় ঘৃণায় আবার আত্মহত্যা করবে।
বারবারা এসো,
রবিশঙ্করের সুরে সুরে মুমূর্ষু মানবতাকে গাই
বিবেকের জংধরা দরোজায় প্রবল করাঘাত করি
অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই, সংগঠিত হই
জল্লাদের শাণিত অস্ত্র
সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
দর্শন ও সাহিত্যকে হত্যা করার পূর্বে
এসো বারবারা বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:১১

ঢাবিয়ান বলেছেন: ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন । কবির রুহের মাগফিরাত কামনা করি।

সদা হাস্য মুখের কবি ছিলেন ।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:২৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হ্যাঁ ভীষণ মিশুক, মিষ্টিভাষী, সদা হাস্যময়। ঠিক লেখায় ততটুকুই স্ফুলিঙ্গ তুলে আনতেন।
আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করুন।

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:১২

জনারণ্যে একজন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে, কবি আসাদ চৌধুরীকে নিয়ে লেখার জন্য।

আপনার লেখার টাইটেল মনে করিয়ে দিলো আমার অতি প্রিয় কবিতার (বিস্মৃতপ্রায়) কয়েকটা লাইন ....

‘আমাকে খোঁজো না তুমি বহুদিন - কতদিন আমিও তোমাকে
খুঁজি নাকো, - এক নক্ষত্রের নিচে তবু - একই আলো পৃথিবীর পারে
আমরা দুজনে আছি; পৃথিবীর পুরনাে পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,
হয় নাকি?’

(জীবনানন্দ দাশ)

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:২৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমার ও মনে হলো একজন কবির প্রতি শ্রদ্ধা একজন কবির লেখাই যথার্থ হতে পারে। কবি আসাদ চৌধুরী মননে যেভাবে প্রভাব রেখেছেন, না লিখে উপায় ছিল না। আপনাকে ও ধন্যবাদ " জনারণ্যে একজন" আমার লেখা মন্তব্য করার জন্যে, আমার পাতায় স্বাগত !
জীবনানন্দের অনেক লেখায় প্রিয় তালিকায় আমাদের।

শুভেচ্ছা সতত।

৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:২২

শায়মা বলেছেন: ভালো থাকুন কবি ওপারের দেশে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৩০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সেটুকুই কামনা শায়মা।

৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৩৯

সোনাগাজী বলেছেন:



মুক্তিযুদ্ধের সময় কবি কোথায় ছিলেন, কোন ধারণা?

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৪৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হ্যাঁ উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। " বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ " শিরোনামে উনার একটা বই আছে।

৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৫৯

সোনাগাজী বলেছেন:



উনি ঠিক কাজ করেছিলেন; উনার জন্য অনেক শ্রদ্ধা রলো।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ধন্যবাদ!

৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:৩১

ইসলামী জ্ঞান বলেছেন: ভালো থাকুন কবি ওপারের দেশে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:১০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার দোয়া আল্লাহ কবুল করে নিন।

৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:৫২

আহমেদ জী এস বলেছেন: মনিরা সুলতানা ,




একদিন মরে গিয়ে নক্ষত্রেরাও "কৃষ্ণগহ্বর" হয়! সে তার মরন নয়, তার রুপান্তর। সে "কৃষ্ণগহ্বর" টেনে নেয় সবকিছু, এমনকি আলোকেও।
যেমন টেনেছে মনিরা সুলতানাকে, তেমনি টানবে "আসাদ কাল"এর মানুষদেরও। সে একটা "কাল" ছিলো যখন মানুষ "মানুষ" ছিলো, লজ্জাবতী রহস্যময়ী নারীরা ছিলো, ছিলো একজন কবি আসাদ চৌধুরী।

খুব হৃদয়গ্রাহী একটি লেখা হয়েছে। যোগ্য পাত্রে যোগ্যতর অর্ঘ্যের মতো নির্মল একটি নিবেদন।
প্রার্থনা, কবি আসাদ চৌধুরী পরপারেও তার চিরায়ত হাস্যোজ্বল মুখখানি নিয়ে নক্ষত্রের মতোই জ্বলজ্বলে হয়ে থাকুন।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সত্যি নিজের চিহ্ন রেখে যেতে, নিজেদের সময় কে নিজেদের কালে রূপান্তর করতে পারে ক' জন ? এভাবে বিপ্লবের পতাকা নিজের লেখায় তুলে ধরতে পারতে ক'জন। লেখার আবেশে বুঁদ করে রাখতে পারে কালজয়ীরা।
কবি' র জন্য আপনার প্রার্থনা কবুল হোক।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমার লেখায় আপনার পদচিহ্ন রাখার জন্য।

৮| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: কতদিন বাদে ব্লগে আপনাকে পেলাম!
এমন এক দুর্দিনে, দুর্যোগের দিনে, কষ্টের দিনে দুদণ্ড গল্প করার সুযোগ পাচ্ছিনা।
কবি আসাদ চৌধুরির মত চমৎকার কবি, লেখক সাহিত্যিক, উপস্থাপক, নিপাট ভদ্রলোকের মৃত্যুতে আমি ভীষণ শোকাহত!

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমিও মনে হয় কত যুগ পর ব্লগে, লেখায় ফিরলাম !!
ভালো লাগছে ব্লগারদের সাথে মিথস্ক্রিয়া। মনে হচ্ছে খুব কাছের কোথাও ফিরলাম।

৯| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৩৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: একজন নিরহংকার মানুষ নীরবে চলে গেলেন, হয়তো মুখে মিষ্টি হাসির রেখাটি ধরে রেখেই। তার সাথে কয়েকবার আমার ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হয়েছিল। প্রতিবারই এই সদালাপী মানুষ আর কোমল হৃদয়ের কবির সাথে আলাপচারিতায় মুগ্ধ হয়েছিলাম।

কবির প্রতি অন্তর থেকে নিঃসৃত ভালোবাসা দিয়ে রচিত এ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। কবির তিনটে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা এখানে প্রকাশ করার জন্যেও। কবির মাগফিরাত কামনা করছি।

০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ পাঠে এবং চমৎকার মন্তব্যের জন্যে। আপনার সাথে আমি ও কবির জন্য মাগফিরাত কামনা করছি।

১০| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:১৪

রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেকদিন খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন তার সমাপ্তী হলো চির নিদ্রায়।
তাঁর হারিয়ে যাওয়ার শোক রয়ে যাবে মনে। শান্তিতে ঘুমান অন্যলোকে।

০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমাদের সবার চাওয়া এটুকুই, আমাদের সবার শুভ কামনা কবির জন্যে।

১১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:৪৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



নক্ষত্র মরে গিয়েও উজ্জল আলো ছড়ায় ।
সুপারনোভার মত নক্ষত্ররা যেমনি নিজ জীবনের শেষ পর্যায়ে
তার ভিতরের সমস্ত শক্তির মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যে উজ্জ্বল
আলো জন্ম দিয়ে যায় কবি আসাদ চৌধুরীও তাঁর জীবনাবসানে
উজ্জল অলো ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন আমাদের বাংলা সাহিত্য ভুবনে ।
এই নক্ষত্রেই মহাপ্রয়ানে আমরা সকলেই শোকাহত ।
তাঁর মহপ্রয়ানে তাঁর জিবনালেক্ষ নিয়ে মুল্যবান পোষ্ট ,
অল্প কথায় তাকে তুলে ধরেছেন সামুর পাতায় ।

এখানে উল্লেখ্য তিনি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন বরিশালের
ব্রজমোহন কলেজ থেকে, আমিও কিছুদিন সে অধ্যয়ন করায় নীজকে
সৌভাগ্যমান মনে করছি।তাঁর কবিতার সাথে সেই ছাত্রাবস্থাতেই
পরিচিতি লাভ করি ।

শব্দের রহস্য আর জীবনের বিচিত্র রসিকতাকে লালন করে গেছেন এই কবি ।
তার কবিতায় আছে নতুন সুর। দেশ, দেশের ঐতিহ্য, লোকায়ত জীবন,
মুক্তিযুদ্ধ, প্রেম, সহজিয়া ভাব তার কবিতার উজ্জ্বলতা।

১৯৭৫ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তবক দেওয়া পান’ প্রকাশের পর সবাই
বুঝতে পেরেছিলেন, বাংলা সাহিত্যে একজন শক্তিমান কবি যুক্ত হলো।
‘সত্যফেরারী’ কবিতায় তিনি লিখেছেন-
কোথায় পালাল সত্য?/সাংবাদিকের কাঠের ডেস্কে,
কাগজে, কেতাবে, পুঁথিতে, কলমে,/ইনজেকশনে, দাঁদের মলমে,
ভ্যানিটি ব্যাগে বা পকেটে, আঁচলে/ড্রয়ারে, ব্যাংকে, আয়রণ সেফে
সত্য নামক মহান বস্তু নেই তো!

তাঁর কবিতায় থাকা কথামালা এখনো মুর্তীমান আমাদের দেশ ও সমাজে।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায়
ভূষিত হয়েছেন কবি আসাদ চৌধুরী।

বাংলা সাহিত্যের তুমুল জনপ্রিয় এই কবির মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য হারাল
জ্বলজ্বলে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর প্রতি রইল শ্রদ্ধাঞ্জলী ।

আপনার প্রতি রইল শুভেচ্ছা

০৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: পোষ্ট এর সাথে আপনার মন্তব্য বরাবরের মত পোষ্ট এ ঋদ্ধ করছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ অসাধারণ মন্তব্যের জন্যে।
শুভ কামনা সতত।

১২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খুব ভালো মানুষ ছিলেন। এখন থেকে ১ বা দেড় বছর আগে ওনাকে সামনাসামনি দেখেছিলাম এবং এক সাথে ছবি তুলেছিলাম একটা কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠানে। উনি বিশিষ্ট সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ভাতিজা হন। আল্লাহ ওনাকে বেহেশত নসিব করুন।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:০১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: নিশ্চয়ই কবি আসাদ চৌধুরীর সাথে পরিচয় আর আলাপ এক অনন্য অভিজ্ঞতা ! এত চমৎকার গুছিয়ে কথা বলেন আড্ডা দেন যে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। আল্লাহ ওনাকে বেহেশত নসিব করুন।

১৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সরি, উনি আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ভাতিজা না চাচাতো ভাই হন। দুইজনেই বরিশালের মেহেদিগঞ্জের উলানিয়ার জমিদার পরিবারের সন্তান ছিলেন।

০৯ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:০৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: পোষ্ট লেখার আগে আমি উইকি এবং কয়েক সাইটে জীবনী পড়েছিলাম,তাঁর পূর্বপুরুষ শায়খ মহম্মদ আসাদ আলী পারস্য থেকে ভারতবর্ষের অযোধ্যা শহরে আসেন। এমন বেশ কিছু তথ্য আছে। গাফফার চৌধুরী কে খেয়াল করি নাই। ব্যাপারনা সরির কিছু নাই।

১৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪

এম ডি মুসা বলেছেন: বরিশালের কবি, তিনি ও বরিশাল এর নক্ষত্র হয়ে থাকবেন, আমার বাসা ভোলা , বরিশাল বিভাগ আমাদের, সেই জন্য তার প্রতি অন্য রকম একটা আবেগ আছে ,,
নদীর জলে/ আগুন ছিলো /আগুন ছিলো/ বৃষ্টিতে
আগুন ছিলো /বীরাঙ্গনার/ উদাস-করা /দৃষ্টিতে।
আগুন ছিলো /গানের সুরে/ আগুন ছিলো/ কাব্যে,
মরার চোখে /আগুন ছিলো /এ-কথা কে ভাববে? ৪ করে স্বরবৃত্ত

তার কবিতায় ছন্দ ছিল এটা কিন্তুু তার আমার কাছে ভালো লাগার বিষয় বস্তু
একজন কবি গদ্য পদ্য দুটোকে নিয়ে পথ চলতে হয়.।

প্রাচ্যের গানের মতো/ শোকাহত, কমপিত/
, চঞ্চল বেগবতী/ তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, /
মনোরম আমাদের /নারীদের কথা বলি, শোনো।/ ৮্=৮

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হ্যাঁ আপনাদের গর্ব করার মত , ভালোলাগার মত অনেক কিছুই আছে। আমাদের জীবদ্দশায় কাছে থেকে দেখা কিছু লেখকের মাঝে উনি অন্যতম !!!
ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

১৫| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২

এম ডি মুসা বলেছেন: আমি বরিশাইল্যা না আপা আমাদের ভোলা এক সময় খুলনার সাথে ছিল, তারপর আবার পটুয়াখলি ছিল, কখনো, তবে আমরা বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠি হলে আমাদের িএখানে নানা জেলার লোক বাস করে,, ভাষার ও বৈচিত্র অনেক , আমাদের বাসার পাশের বাসার ধরন আমাদের কথা পার্থক্য আছে তবে কিন্তু আমাদের ভাষা বেশির ভাগ ঢাকা িএবং যশোর জেলার সাথে মিলে

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আচ্ছা ঠিক আছে দেশীয় লেখক হিসেবে তো গর্ব করতেই পারি :)

১৬| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৬:৩৮

সোহানী বলেছেন: যখনই বাংলা পাড়ায় যেতাম উনার সাথে দেখা হতো। আর কোন বাংলা অনুষ্ঠান মিস করতেন না। সবার অনুষ্ঠানে যেতেন, হাসিমুখে ছবি তুলতেন, দাঁড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে কথা শুনতেন। অনেক স্মৃতি, অনেক ছবি...........

০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: জি আপু নিশ্চয়ই আমার চাইতে আপনার স্মৃতি আরও অনেক বেশি। সময় করে আমাদের জন্য লিখবেন।
ধন্যবাদ আপু পাঠে এবং মন্তব্যে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.