![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেকোন সমালোচনা, আলোচনা, যেকোন কিছু জানাতে পারেন [email protected] ঐক্যবদ্ধ লড়াই ই মুক্তির একমাত্র পথ।
অনেক কিছুই ঠিক বুঝে উঠা যায় না পৃথিবীতে, খুব কনফিউজড লাগে। বিশেষ ভাবে মনের ব্যাপারটা। এত দ্রুত মন বদলে যায়, এত অকারণে , সেলুকাস। আমাদের সময়টা আমাদের জন্য এককথায় বলতে গেলে অসহ্য, বেদনাদায়ক সর্বোপরি অমানবিক। আমরা বেড়ে উঠি একটা চিকন ছোট্টো ফ্লাটে, মা-বাবা বাসার কাজের মেয়েটা আর স্কুলের দু-একটা বন্ধু ছাড়া কারো সাথে কোন কারনে বা অকারনে কথা হয়না। সঙ্গতকারনেই আমাদের অপরের প্রতি কোন বোধ তৈরি হয়না, আত্নীয়স্বজনের সাথে ইন্টার-এক্ট করতে পারিনা কেননা তাদের ধরন তাদের চাওয়ার সাথে আমাদেরটা মে্লে না, ফলে আমাদের আ্ত্মীয়ের বাসায় যেতেও ভাল লাগেনা।
নিজের একটা রুমেই সবচে স্বচ্ছন্দ লাগে, সবচে।
বাবা মার নজরদারিতা, বা নজরহীনতা উভয়টাই খারাপ লাগে,আমরা পড়ে থাকি হাজারো মানুষের একা একটা নগরীতে।
বিমুঢ় বিষন্ন।
পাশাপাশি প্রবল সামাজিক অনিশ্চয়তা, ক্রসফায়ার এর এই সমাজ আমাদেরকে প্রবল ভীত করে তোলে। এগুলো ভাঙ্গতে ইচ্ছে করে, একদম ভাল্লাগে না।
দু-একটা আমার যা বন্ধু আছে তাদের কাছে আলোচনার একটাই বিষয়, নারীদেহ আর প্রেম। এই আলোচনা আমাদের আচ্ছন্ন করে ফেলে, আর কিছু নিয়েই আর ভাবতে পারিনা, মনে হয় একটা প্রেম করা খুব দরকার।
আর ওদিকে আকাশ সংস্কৃতির থাবা আমার চিন্তা ক্ষমতাকে প্রায় অকার্যকর করে, মেয়েদের আর মানুষ মনে হয়: একদল ইচ্ছুক বস্তু সারাক্ষন যৌনকর্ম আকাঙ্খী।
কবিতার কথা, কবির কথা আর দুনিয়ার মানুষের কথা আমার কান অবধি এসে পৌছায় না, স্কুলের পাঠ্যে পাওয়া কয়েকটা লেখাজোখা আমার জানার দুনিয়া। ক্লাসে শিক্ষকের গড়গগড় ইংরেজীতে পড়ানো আমার মানস জগতে অভিঘাত ফেলে না বিরক্ত লাগে, ক্লাস শেষে বাংলায় দু-চারটা কথা বলতে পারলেই খুব আরাম লাগে।
বন্ধুরা ক্লাসের পর বিড়ি টানে,এটা যেন এক প্রবল স্মার্টনেস আমাকে কোমর অবধি আচ্ছন্ন করে ফেলে;বেনসন এন্ড হেজেস।
ক্লাসের একটা মেয়েকে প্রথম ভাললাগে কিন্তু সে আমার মতো ইন্ট্রোভার্টকে কেন পছন্দ করবে, ক্লাসের পরে একদিন তাকে আমার এক বন্ধুর সাথে হাসাহাসি করতে দেখি:; ফাকিং শিট।
আমাদের তো কেউ নাই, বাবা মার কথা বলার সময় কম বন্ধু বান্ধব আন্তরিক না, করার কিছু নাই, কি করি তাহলে বিড়ি খাই আম্মা একদিন দেখে ফেলে তারপর.......
দুনিয়াটা বু্ঝতে পারিনা, এমন কেন সব?
পাশের বাসার লোকটা আমাকে চেনেনা, তাকে এ্কদিন সালাম দেই সে কেমন করে যেন তাকায়।
ওইদিকে একটা সমগ্র থেকে বিচ্ছিন্ন একজন মানুষ ধীরে ধীরে টিন এজ শেষ করে যুবক হয়ে উঠে, যে কোন জিনিস ভাল করে ম্যানেজ করতে পারেনা, আত্মীয় স্বজনের সাথে ব্যাবহার বোঝে না, ডাকতে খুব শরম লাগে তাদের নিজের অভ্যাস নাই যে। ইতোমধ্যে সামাজিকীকরণের অভাব সে বুঝে উঠতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়েও বন্ধু হয় কিন্তু তাদের আপন মনে হয়না, একটুও না। ও এসময়ে একজনের সাথে প্রেম হয় কিন্তু টেকেনা, ঠিক যায়না, মেলে না। এরকম একজনকেন্দ্রীকতা কোনদিন ভাল লাগেনাই এবারও লাগে না, সে আমাকে তার মতো করে চায় কিন্তু আমি আমার মতোই থাকি অবশেষে আমার ভাবনা হয় - এই দুনিয়ায় প্রেম করা সঠিকনা, আমার সমগ্রকে ভাল লাগে , এককেন্দ্রীক দুনিয়া ভাল লাগে কিন্তু প্রেম কেন আরো একা করে দেয় আমাদের? কেন?
আমাদের এই সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আমাদের প্রজাতির ধ্বংসনিনাদ বাজাচ্ছে, মানসিক ভাবে আমরা পঙ্গুত্ব বরণ করছি ধীরে ধীরে সভ্যতার বিকাশ আমাদের জীবন সহজ করলেও এর অপব্যবহার আমাদের ক্ষয় করে দিচ্ছে।
আমি যদি মেয়ে হতাম, বলিউডের ওই ইচ্ছে নারীর মতো করে সবাই আমাকে পেতে চাইত। আমার প্রবল অনিরাপত্তা আমাকে পুরুষের প্রতি অবিশ্বাসী করে তুলত আর উল্টাদিকে প্রবল বন্ধুত্বের অভাবে আমি জীবনের যেকোন সময়ে ভুল মানুষের সাথে জড়িয়ে পড়াতে পারতাম।
এ দুনিয়ায় মেয়ে হওয়া তো প্রায় অভিশাপের পর্যায়ে চলে গেছে, গরীব হওয়া সংখ্যালঘু হওয়া, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া অপরাধ এখানে। মানুষের দুনিয়ায় মানুষই এখন পন্য, পন্যের জন্য আজকের মানুষ মানুষের জন্য পন্য নয়।
সব ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছে করে কিন্তু আমি তো প্রবল একা, একা আমি কি করতে পারব। ওই ফ্লাটের জীবনই তো আমাকে একা করে দিয়েছে, মানুষকে ভালবাসার ভাষা তো আমি জানিনা, আমি তো জন্ম থেকে স্বার্থপর হতে শিখেছি........
পৃথিবীর আলো বাতাস দেখার সময় সেই হাসপাতালের স্পেশাল কেবিন থেকে আজকের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যন্ত।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৫৩
সপ্নময় নীলাকাশ বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।