নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিবর্তন চাই

আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে

হোরাস

যেকোন সমালোচনা, আলোচনা, যেকোন কিছু জানাতে পারেন [email protected] ঐক্যবদ্ধ লড়াই ই মুক্তির একমাত্র পথ।

হোরাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিন সম্পদের বহুজাতিক ব্যাবসায়

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫৪

"জিন সাম্রাজ্যবাদ” শব্দটা শুনলে অনেকে খটমট বিষয় কিংবা ভুতপ্রেত স্থানীয় কোন বস্তু ভাবতে পারেন। তবে বিষয়টা অত্যন্ত চমকপ্রদ তৎসঙ্গে ভয়াবহ। প্রত্যেকটা প্রাণের গুনাবলী, ধর্ম নির্ধারিত হয় তার জিন দ্বারা। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং শব্দটার সাথে আমরা কমবেশী পরিচিত, সহজে বললে একই প্রজাতির প্রানের জিনকে অদল বদল করার যে বিজ্ঞান তাই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। ধরা যাক, কোন প্রজাতির ধান খুব ভাল পতঙ্গ নিরোধী এবং আরেক প্রজাতির ধান খরার সময় টিকে থাকার ক্ষমতা ভাল। তো এখন কি করা সম্ভব? দুই প্রজাতির ধানের জিনের সমন্বয়ে এমন একটা জাত তৈরী করা সম্ভব যা উপরোক্ত দুইটা ক্ষমতাই একসাথে ধারণ করে।শুনতে খুব ভালো লাগছে...

গত শতাব্দীর ৬০ এর দশক থেকে সবুজ বিপ্লবের স্লোগান ওঠে দুনিয়াজুড়ে,উচ্চফলনশীল(High Yielding variety) জাতের তোড়ে হারিয়ে যেতে শুরু করে দেশীয় জাতের ফসল।কৃষকের হাতছাড়া হতে শুরু করে দেশী জাতের বীজ। কিন্তু হাতছাড়া হয়না বহুজাতিকের কাছ থেকে।

৭০ এর দশকে এই বহুজাতিকদের উদ্যোগে গঠিত হয় IBPGR. জিন সম্পদ কে সংরক্ষণ করার কেন্দ্র। ভারত কিংবা দক্ষিন এশিয়ার হারিয়ে যাওয়া অনেক ফসলের জিন সংরক্ষিত আছে সেখানে,স্বত্ব বহুজাতিকের।

উচ্চফলনশীল জাতের মধ্যে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যাবহার করে আমাদের দেশের হারিয়ে যাওয়া ধানগুলোর আশ্চর্য গুণাবলী প্রতিস্থাপিত করে বিপুল মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে বহুজাতিক বীজ কোম্পানিগুলো।

একটা ফসলের প্রজাতিকে কে প্রত্যেক পদে পদে নিয়ন্ত্রন করার দানবীয় ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।আর এই বিজ্ঞানকে মুনাফা অর্জনের বিপুল হাতিয়ারে পরিনত করেছে বহুজাতিক বীজ কোম্পানি। বহুজাতিক চাইলে আপনার উচ্চফলনশীল ধানে ফুল আসবে কিন্তু দানা আর আসবেনা, আসবে যখন আপনি তাদের প্রস্তাবিত সার দিবেন। আপনি বীজ সংগ্রহ করবেন কিন্তু বীজ থেকে ধানগাছ হবে না,হবে যদি আপনি তাদের প্রস্তাবিত রাসায়নিক দেন (টার্মিনেটর বীজ) ... পোকার আক্রমনে এবার ফসল শেষ, আপনার হারিয়ে যাওয়া ধানের পোকানিরোধী জিন প্রতিস্থাপন করে পুনরায় নতুন বীজ কিনতে বাধ্য করা হবে... চমকপ্রদ এবং ভয়ংকর।



দেশী জাতগুলো গড়ে উঠেছিল হাজার বছর ধরে প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতে খাওয়াতে। আর উচ্চফলনশীলগুলো প্রকৃতির সাথে সেই সখ্যতা না থাকায় প্রায়শই নতুন নতুন কীট আর রোগে আক্রান্ত হয়। এদের পানির চাহিদা মেটাতে গিয়ে অবাধে ডিপ টিউবওয়েল বসাতে হয়েছে যত্রতত্র। যা আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ভয়ংকর রকম ঝুকির মধ্যে ফেলছে। প্রচুর রাসায়নিক সারের ব্যাবহারের ফলে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে আর অনুখাদ্যের অভাব দেখা দিচ্ছে।অনুখাদ্য ও আপনার বহুজাতিকের কাছ থেকে কিনতে হবে। আগে জলমগ্ন ধান ক্ষেতে মাছ পাওয়া যেত সেই মাছেরা রাসায়নিকের চোটে বহু আগেই ইহলোক ত্যাগ করেছেন।



ভবিষ্যতের বহু ক্ষতির মাধ্যমে স্বল্পকালীন কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি আমাদের জন্য ভয়াবহ ফল ডেকে আনছে এটা সুনিশ্চিত। উৎপাদনশীলতার পশ্চাদমুখী বিকাশ হতে পারে না ,আমাদের দেশীয় জাত নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করলে আমরা বহুগুণে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতে পারতাম প্রাণ প্রকৃতির কোন ক্ষতি না করেই( সোনি ভাদই জাতের ধান) অল্প কথায় এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সত্যিই কঠিন।আগ্রহী মাত্রেই এ বিষয়ে অনেক আটির্কেল খুজে পাবেন।

অতএব এটা আমাদের দাবি হওয়া উচিৎ যে,অবিলম্বে বহুজাতিকের হাতে কব্জা করা জিন সম্পদকে আমাদের দেশের কৃষকের স্বত্তাধিকারে নিয়ে আসতে হবে এবং বহুজাতিক বীজ কোম্পানিগুলোকে বিনা শর্তে দেশ থেকে বহিস্কার করতে হবে।লাতিন আমেরিকাতে বহুজাতিক বীজ কোম্পানি মনসান্টোর বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা কৃষক বিদ্রোহ আমাদের লড়াইয়ের প্রেরণা ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:২২

দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: লেখার মূল বক্তব্যটা গুছিয়ে বলতে পারেন নি। আপনি নিজেই বহুজাতিক কোম্পানীর উচ্চফলনশীল জাত আর দেশীয় জাতের পাথর্ক্য দেখিয়েছেন যেখানে স্পষ্টত, কি কারণে বহুজাতিক কোম্পানীর উচ্চফলনশীল জাত বাজারে টিকে আছে আর দেশীয় জাত মার খাচ্ছে। এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হচ্ছে যে, দেশীয় জাতকে মডিফাই করা। কিন্তু তা হলে তো সেই একই হয়ে যাচ্ছে। লেখাটা আরেকটু গোছালো হয়ে ভাল হত।

আমি নিজেও সল্ট টলারেন্ট ও উচ্চফলন শীল ধানের জিন দেশীয় জাতে ঢোকানোর সাথে যুক্ত ছিলাম। প্রজেন্টটি ঢাবির প্রাণরসায় বিভাগের প্রফেসর জেবা সেরাজ ও বাংলাদেশ ধান গবেষণার ইস্টিটিউটের সাথে সংযুক্ত ছিল।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৬

হোরাস বলেছেন: বস্তুত নিয়তের উপরে কাজের ভালমন্দ নির্ভর করে।বহুজাতিক বীজকোম্পানিগুলোর অতিকায় মুনাফার লোভ প্রান প্রকৃতি পরিবেশের ক্ষতি করে চলেছে। এদেশের কৃষকরাও কিন্তু ''জিন" এর ধারণার বহু পূর্বেই বিভিন্ন জাতের ধানের সাথে ঐক্যবন্ধন ঘটিয়ে ধানের জাতের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে যা প্রকৃতির সাথে ধীরে ধীরে খাপ খেয়েছে।

১.এদের নাম উচ্চফলনশীল, কিন্তু এর ফলে কৃষক কি অর্থনৈতিক ভাবে উচ্চ লাভবান হতে পারছে?
২.কৃষি কাজ কি এদেশে লাভজনক পেশা?
৩. উচ্চফলনশীল জাত এদেশের মাটির উর্বরতা শক্তি ধ্বংস করেছে না বৃদ্ধি ঘটিয়েছে?
এর সবগুলো উত্তর নেতিবাচক হবে। আপনারা যারা হাইব্রীড নিয়ে কাজ করেন তাদেরকে অনুসন্ধানে অনুৎসাহিত করা আমার পোস্টের উদ্দেশ্য নয়, সম্পুর্ণ ব্যাবসায়ী স্বার্থে জিন সম্পদকে কব্জা করার বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান প্রয়োজন। কম সার কম রাসায়নিক ব্যাবহার করে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে কিভাবে দেশী জাতের উন্নয়ন সাধন করা যায় সেটা আপনারা ভেবে দেখবেন। ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

জনাব মাহাবুব বলেছেন: ইয়াহু! ভাই এই মাত্র সেফ (জেনারেল) হইলাম। এখন মন ভরে লিখতে পারবো। !:#P !:#P !:#P !:#P !:#P !:#P

সবাইকে শুভেচ্ছা। !:#P !:#P !:#P !:#P !:#P !:#P

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ‘জিন সাম্রাজ্যবাদ’ সত্যিই চমকপ্রদ কিন্তু ভয়ঙ্কর। সুন্দর লিখেছেন। বক্তব্যের সাথে একমত।

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১২

হোরাস বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪০

দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: এবারো আপনার কথা বুঝতে ব্যর্থ হলাম। আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।

১. একই পরিমাণ জমিতে বেশী ফলন হলে লাভ কার? কৃষকের এবং দেশের। অধিক জনসংখ্যার অন্ন কিভাবে আপনি যোগাবেন?

২. যে লোকটি শহরে চাকরি করে, তাকে আমরা বলি চাকরীজীবি। এটাই তার পেশা। গ্রামের যে লোকটি চাষী, জমির ফসল বিক্রি করে যার সংসার চলে, তার জন্য কৃষিকাজ তাহলে কি?

৩. হাইব্রীড এবং জিন টেকনোলজির মধ্যে পার্থক্য কোথায় জানা আছে কি? আপনি কোন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন জানলে ভাল হত। কোন কোম্পানী যদি দেশীয় জাতের মাঝে জিন টেকনোলজি দিয়ে উন্নয়ন করতে পারে, তখন কি সেটা গ্রহণ করবেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.