![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত দুইদিনে পরপর চারটা সিনেমা দেখলাম।
1. Groundhog Day (1993)
2. Gone Girl (2014)
3. Nebraska (2013)
4. Saltburn (2023)
প্রত্যেকটা সিনেমা সম্পর্কে অল্পকিছু বলি। খুব বেশি স্পয়লার নেই। শুধু সারফেসে কিছু আলোচনা করা হয়েছে।
1. Groundhog Day (1993)
এইটা হলো এক ওয়েদার ব্রডকাস্টার রিপোর্টারের কাহিনী। সে তার চাকরি নিয়ে বিরক্ত এবং সে এই শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার মনস্থ করছে। সারাদিন কাজ শেষে সে তার রুমে যেয়ে ঘুমায়। সকালে আবার অফিসে যায়।
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির দুই তারিখে Groundhog Day অনুষ্ঠিত হয়। এইদিনের প্রোগ্রাম কভার করে এসে সে তার রুমে ঘুমায়। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে গতকাল সকালে রাস্তার পরিবেশ এবং গাড়িগুলো যেভাবে দেখছিলো সেগুলো আজও ঠিক একইভাবে চলছে।
সে কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারে সে একই দিনেই আবার জেগে উঠেছে। অর্থাৎ আজ আবার গ্রাউন্ডহগ ডে।
সে বাইরে বের হয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করে যে একই দিন কিনা। বের হয়ে দেখে একই পরিবেশ, একই লোকজন রাস্তায় যাদের সাথে তার গতকাল দেখা হয়েছিলো।
এভাবেই চলতে থাকে দিনের পর দিন আর সে একই দিনে ঘুম থেকে উঠতে থাকে এবং একই রুটিনে চলতে থাকে।
সে যে একইদিনে জেগে উঠছে এটা সে ছাড়া আর কেউ বুঝতেছে না। এই অবস্থায় একটা মানুষ কী করতে পারে। তার মুখস্ত হয়ে গেছে ওই দিনে কখন কোন জায়গায় কি ঘটবে।
2. Gone Girl (2014)
এই সিনেমার পরিচালক David Fincher. পরিচালকের নাম দেখেই এই সিনেমা দেখতে বসি। ডেভিড ফিনচার নামকরা পরিচালক। তার সব ছবিই অত্যন্ত চমৎকার ও হাইরেটেড।
এক সকালে স্ত্রী অ্যামি হারিয়ে যায়, স্বামী পুলিশে ফোন করে। স্ত্রীর বাবা মা লেখক যারা এমেইজিং অ্যামি নামে এক বই লিখছিলো, ফলে অ্যামির হারিয়ে যাওয়াটা বিরাট মিডিয়া কাভারেজ পায়।
টানটান উত্তেজনাকর অবস্থা।
পুলিশ অ্যামিকে খুঁজতে থাকে। ইনভেস্টিগেশনের এক পর্যায়ে অ্যামির স্বামীকেই তার নিখোঁজ হওয়ার জন্য দায়ী করা হতে থাকে।
এই সিনেমায় মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া কীভাবে স্বামী নিকোলাস ডানকে ভিকটিম বানায় তাতে মিডিয়ার বায়াসনেস স্পষ্ট হয়। মিডিয়ার তৈরী করা ন্যারেটিভই স্বামী নিকোলাসকে দোষী হিসেবে প্রচার করতে সাহায্য করে এবং সে শহরব্যাপী ঘৃণার পাত্র হয়ে যায়।
তারপর অ্যামির কাহিনী ফিরে আসে। ছবিতে তার পরবর্তী সাসপেন্স আসতে থাকে।
এই ছবির অ্যামি চরিত্রে অভিনয় করেছে রোজামন্ড পাইক। যিনি বৃটিশ ও অত্যন্ত সুন্দরী নায়িকা। এই সিনেমায় তার অভিনয় অনবদ্য হয়েছে।
3. Nebraska (2013)
সিনেমার কাহিনী খুব সিম্পল। তবে সিনেমাটিকে আলাদা করেছে Bruce Dern এর অভিনয়। এই সিনেমা যখন রিলিজ হয় তখন তার বয়স ৭৭ বছর। এই বয়সে তার যে অভিনয় তা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।
উডি গ্রান্ট (Bruce Dern) মন্টানায় বসবাস করে। তার স্ত্রী আছে ও দুই ছেলে আছে। সে সম্ভবত ডাকযোগে এক ম্যাগাজিনের সাথে এক মিলিয়ন ডলার প্রাপ্তির সুইপস্টেকস চিঠি পায়। যা মূলত লটারির মত। সে বিশ্বাস করে সে এই এক মিলিয়ন ডলার জিতেছে।
এই মিলিয়ন ডলার কালেক্ট করতে সে মন্টানা থেকে প্রায় নয়শত মাইল দূরে নেব্রাসকায় পায়ে হেটে রওনা দেয়।
পুলিশ তাকে আটক করে। তার ছেলে ও পরিবারের লোকেরা বুঝায় যে সে আসলে কোন ডলার জেতে নাই। এটা একটা স্ক্যাম। কিন্তু সে নাছোড়বান্দা। কোন কথা শুনবে না। তাকে যেতেই হবে নেব্রাসকা ঐ প্রাইজমানি কালেক্ট করার জন্য।
তদুপরি তার ছোট ছেলে তাকে নিয়ে নেব্রাসকার দিকে রওনা দেয়।
সিনেমায় উডি গ্রান্টের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছে জুন স্কুইব যার জন্ম ১৯২৯ সালে অর্থাৎ এই সিনেমায় অভিনয় করার সময় তার বয়স ৮৩ থেকে ৮৪ বছর ছিলো। এই বয়সে কী সাবলিল অভিনয়!
সিনেমাটাও খুব ঠান্ডা টোনের। সাদাকালো ব্যাকগ্রাউন্ডের। সিনেমাটা ভালো লেগেছে।
4. Saltburn (2023)
মধ্যবিত্ত পরিবারের স্কলারশিপ পাওয়া এক ছেলে অলিভার কুইক অক্সফোর্ডে পড়তে গেছে। সেখানে হাই সোসাইটির ছেলেমেয়েদের সাথে তার মেলামেশায় কিছুটা জটিলতা দেখা যাচ্ছে।
দেখলে মনে হয় সে কিছুটা হিনম্মন্যতায় ভুগছে। ইউনিভার্সিটির ধনী, স্মার্ট, সুন্দর এক ছেলে ফেলিক্সের সাথে তার বন্ধুত্ব তৈরী হয়। এ মাধ্যমে সে ইউনিভার্সিটির হাই সোসাইটির ছেলেমেয়েদের মেইনস্ট্রিমে ঢোকে।
অলিভার কুইকের বাবা মরার খবর শুনে ও তার মা বাবার এডিক্টেড জীবনযাপনের কথা শুনে ফেলিক্সের মন তার প্রতি আর্দ্র হয়। ফেলিক্স সামারের ছুটিতে অলিভারকে তার বাড়ি Saltburn এ যাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করে। সে কিছুটা মিউ মিউ করে রাজি হয়ে যায়।
পুরা সিনেমায় অলিভার কুইক আসলে ভালো না মন্দ নাকি তার মনে কী আছে তা বোঝার উপায় নেই। তার মেইন চরিত্র বের হয়ে আসে সিনেমার শেষে।
সিনেমাটা ক্লাসিক হলেও এই সিনেমাটা দেখা খুবই ডিস্টারবিং। কিছু অস্বস্তিকর ও চরম অরুচিকর যৌন দৃশ্য আছে যা খুবই সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু অলিভার কুইককে চেনাতে এই দৃশ্যগুলো সহায়ক হয়েছে। তবে এমন বাজে দৃশ্য দেখা খুবই অস্বস্তিকর।
পাওয়ার অর্জনের নেশা ও যৌনতার আকাংখার সংমিশ্রণের সিনেমা বলা যায় এটাকে। ফ্রেডরিখ নিটশের Will to Power যদি জেনে থাকেন এই সিনেমা তার একটা ভালো উদাহরণ। মানুষ সর্বোচ্চ ক্ষমতা অর্জনের আকংখায় কীভাবে চালিত হয় তা এই সিনেমায় খুব ভালোভাবে দেখানো হয়েছে। "শক্তির পিপাসাই মানুষের আসল চালিক শক্তি" এই কথাটা সত্যি হয়ে উঠেছে এই সিনেমায়।
©somewhere in net ltd.