নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীতে এসেছি একা যেতেও হবে একা তাই আমি মাঝেমাঝে একা একা চলার অভ্যাস করি।

মোজাম্মেল খান রিন

আমি খুবী সাদাসিধে একজন মানুষ অনেকটাই সহজ-সরল।

মোজাম্মেল খান রিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

book

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১০

তারপর থেকে খুব সুন্দরভাবেই চলছে তাদের প্রেমময় জীবন। এখন প্রতিরাতেই তারা মুঠোফোনে প্রেমালাপ করতে থাকে, সারাদিন যেমনই কাটুক রাতটা খুব আনন্দেই কাটে তাদের, দুজনারই আলাদা রোম হওয়ার পরিবারের অন্যকেউ কথা শুনে ফেলবে এরকম কোন ভয় থাকেনা তাই তারা প্রতিরাত ১২টার পর থেকে কথা বলা শুরু করে বেশিরভাগ দিনই সারারাত কাটিয়ে ভোরে এসে শেষ করে। একদিন এভাবে কথা বলতে বলতে নীল অহ এখানে বলে রাখি অভিমানীর নাম নীল আর রাজরানীর নাম নদী। তো নীল একদিন কথা বলতে বলতে খুব বেশি উত্তেজনা ফীল করে এবং ভাবতে লাগে না তাকে বলতে হবে যে আমি তাকে জরিয়ে ধরতে চাই, এবং কথা বলতে বলতে একসময় বলেই ফেলল এই নদী শোন আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই, ঠিক আছে চলে এসো, আরে না এবার একটু অন্যরকমভাবে দেখা করতে চাচ্ছি। কেমনভাবে? না আমরা দেখা করি তুমি খালের উপারে থাকো আর আমি এপারে, এভাবে না। তো কিভাবে? আমি তোমার কাছে আসতে চাই। কিভাবে আসবেন? কেন তোমারা যেভাবে যাও, পুল দিয়ে আসবো। (অর্থাৎ নদীর বাড়ী খালের উপারে আরর তখন ছিল বর্ষাকালের শুরু)। কেনো উপার থেকে কি দেখা যায়না? হ্যা দেখা যায় বাট মন ভরেনা, আসলে নদী আমি তোমাকে একটু জরিয়ে ধরতে চাই! কিইইইইইইইইইহ্ না এটা সম্ভবনা। কেন সম্ভব না? আমিতো তোমাকে ভালবাসি জীবনের চেয়েও বেশি! হ্যা আমিও, কিন্তু এটা বিয়ের আগে সম্ভব না। প্লিজ জান এমন করোনা, একটু বুঝার চেষ্টা করো আমি জাস্ট একটু জড়িয়ে ধরবো নাথিং এলসি। হ্যা, বুঝলাম বাট আমি পারবোনা! কেনো পারবানা? আচ্ছা আপনি বুঝেন্না? সকালে এই রাস্তা দিয়ে কত মানুষ যাই, দেখে ফেলবেননা? হুম বাট আমিতো সকালে আসলতে বলেনি। তো কখন আসবেন? সন্ধ্যার একটু পরে, তুমি তোমাদের বাগানের যেইখানে এসে প্রতিবার দেখা করো সেখানে আসবে আমিও আসবো আজ সন্ধায় ঠিক আছে? না না আপনি আসবেন না, আমি এইসময় বের হতে পারবোনা। কেনো পারবানা? প্লিজ একটু বুঝার চেষ্টা করেন, আমি জীবনেও সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হয়নি, এখন কিভাবে বের হবো? প্লিজ আমার জন্য একটু করো। পারবোনা। কেনো পারবানা তুমি কি আমাকে ভালবাসো না? প্লিজ এমন করে বলবেননা, দেখেন আমি যেই রোমে থাকি সেই রোম থেকে বের হলে মাঝের রোম দিয়ে যেতে হবে সেখানে আম্মু থাকে। তারপর সন্ধার পরপরই আমাদের গেইট লাগিয়ে নেই। তাহলে কিভাবে আসবো বলেন? প্লিজ চেষ্টা করলে পারবা। পারবোনা। তুমি কিন্তু আমাকে ডাইরেক্টলি রিজেক্ট করে দিচ্ছো। না আমি ডাইরেক্টলি রিজেক্ট করছিনা। আপনি একটু বোঝার চেষ্টা করুন আমি এটা পারবোনা। তুমি পারবা কিনা আমি আর বুঝতে চাইনা, আমি আজ সন্ধ্যায় তোমাদের বাগানে আসছি, তুমি এসো আর যদি না আসো তাহলে তোমার রোমের জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে তোমায় ডাকবো। প্লিজ আপনে আইসেননা। না আমি আসবো। আইসেননা আর আমি বাড়িতে থাকবোনা। সেটা তোমার ইচ্ছা, আমি আসবো আর যদি তুমি না আসো তাহলে প্রয়োজনে ধড়া খাবো, তোমাদের বাগানের পেয়ারা গাছ আছেনা? কেউ দেখে ফেললে ভাববো আমি পেয়ারা চুরি করতে এসেছি, যাইহোক কি করার তুমি না আসলে আমি চুর হবো। তারপরতো তুমি দেখতে আসবে? দেইখো এই চন্দ্রমাখা রাতে পেয়ারা চুরটাকে। আপনি যে এখন কি করতেছেন আমি কিছুই বুঝতেছিনা। আপনি যে এরকম আমি আগে ভাবতাম না। এখন ভাবো। আমি আপনাকে ভালোভাবে বলতেছি আপনে আইসেননা আসলে অনেক সমস্যা হবে। না আমি আসবো আর যদি তুমি না বের হও তাহলে আমি যা যা বলছি তাই করবো। আচ্ছা শুনেন আপনি আইসেন না বলতাছি আর যদি আসেন তাহলে আমি আর কোনোদিন....... আপনাকে ফোন দিবোনা। আচ্ছা ফোন দিবানা? আমি জানতাম তুমি এমনি করবে। আচ্ছা দিওনা তুমিও না আসলে আমিও তাই করতাম যদি তুমি না বের হতে,আচ্ছা রাখলাম আর এই মুহুর্তে ফোনটা অফফ করলাম আর খুলবোনা একমাস পরে হয়তো খুলবো কারন ফ্রেন্ডস-টেন্ডস আছে কানেক্টেড রাখতে হবে। আচ্ছা রাখি ভালো থেকো সারাজীবন........ ভালো থেকো।
এই ঝগড়া দিয়েই সম্পর্কটির বিচ্যুত ঘটলো না বিচ্যুত বললে ভুল হবে আসলে ফাটল ধরতে শুরু করলো বিচ্যুত এখনি হয়নি কারন ফোন কেটে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর পরই ছেলেটি অর্থাৎ নীল নদীকে ফোন দিতে লাগলো কিন্তু নদী ফোন উঠাচ্ছেনা বার বার দেওয়ার পর ফোনটি সুইচট-অফফ বলল তখন বুঝে গেছলো ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেছে কারন সারারাত ধরেই ফোনে কথা বলছিলো তারা নীলের ফোন চার্জে লাগানো ছিল বিধায় বন্ধ হয়নি। তাই নীল এখন নদীর আম্মুর ফোনে কল দিতে লাগলো, নীল আবার ওর আম্মুর ফোনে কল দিতে ভয় পায় তাই ছোট ছোট করে ৩টি কল দিলো, দিয়েই মোবাইলটি হাত থেকে চার্জে রেখেই বিছানা থেকে চোখ খোঁচাতে খোঁচাতে উঠতে লাগলো নীল এমনি ফোনটি বেজে উঠলো নীল ফোনটি হাতে নিয়ে দেখলো নদীর আম্মুর ফোন থেকে রিকুয়েস্ট কল আসলো তাই ব্যাক করলো কলটি, ঐপাশ থেকে ফিসফিস করে বলতেছে এই আপনাকে না বলছি এটাতে কখনো ফোন দিবেননা, তোমারটা বন্ধ যে? চার্জ নাই! রাতে চার্জ করে ফোন দিমুনে। দেখছো একটু আগে কি বলছি আর এখন কি করছি? আসলে আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। আচ্ছা শুনেন এটাতে আর ফোন দিয়েননা আমি চার্জ করে রাতে কল দিমুনে। আচ্ছা দিও। এখন রাখি চার্জ দিয়ে রাতে কল দিমুনে। আচ্ছা
যাইহোক শেষমেশ সম্পর্কটা নষ্ট হলোনা, তবুও নীলের অনেক চিন্তা হচ্ছে আর রাতের অপেক্ষা করছে দিনটা যেনো যাচ্ছেইনা নীলেত কারন নীল আজ কোসিংয়েও যাইনি। একটু পর পর মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছে আর নদীর কথা ভাবছে, এভাবেই অনেকটা সময় পার হয়ে রাত না আসলেও সন্ধ্যা এসে গেছে তাই নীল মোবাইলটি নিয়ে নদীর নাম্বারটি ডায়াল করলো, আপনার কাংকিত নম্বরটিতে এই মুহুর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। হ্যা না হওয়ারি কথা কারন নদীর ফোন দিনে কখনো খোলা থাকেনা রাত ১০টার পরে খুলে। বাট নীলেরতো আর অপেক্ষা সহ্য হচ্ছেনা তাই না করা সত্ত্বেও নদীর আম্মারটাই ফোন দিয়ে দিলো ছোট করে। কিছুক্ষণ পর সেটা থেকে একটি মিসড কল আসলো তাই নীল সাহস করে ডাইরেক্ট কল মারলো। একটু বাজতেই কলটি নদীই ধরলো আর বললো এই আপনাকে বলছি এটাতে ফোন দিবেন্না। কই আমি দিতে চাইনিতো ৮টা ১৩না কত বাজে একটা মিসড কল আসলো তাই ফোন দিছি। তুমি মিসড দিছিলা? না। আচ্ছা তোমারটা খুলো। আমি এখন পড়া থেকে উঠলাম, নামাজ পড়বো খান খাবো তারপর শুয়ে আপনাকে ফোন দিবো আচ্ছা তাড়াতাড়ি করো। নদী মনে করছে নীল বুঝি কথাটি শুনতে পাইনি তাই নদীর কথাটি আবার পুনরাবৃত্তি করলো, আমি এখন পড়া থেকে উঠলাম, নামাজ পড়বো খানা খাবো তারপর শুয়ে আপনাকে ফোন দিবো। আইচ্ছা দিও। খুব সুইটভাবে নদী বললো আচ্ছা এখন রাইখা দেই? নীল বলল অকে। এই কিছুক্ষণ কথা বলাই নীল কিছুটা শান্তনা পেল তাই মাথা বালিশে রেখে চোখদুটির পাতা মিলাতেই এক গভীর ঘুম এসে নীলকে গ্রাস করে ফেললো, নীল গভীর ঘুমে মগ্ন। আর এদিকে নীলের ফোনে একের পর এক কল দিয়েই যাচ্ছে নদী। দিতে দিতে নদীও একসময় ঘুমিয়ে গেছে। সকাল হতে আর কিচ্ছুক্ষণ বাকি এমনিতে নীল ঘুম ভাংলো, হাত বারিয়ে মোবাইলটা হাতে আনতেই দেখে নদীর ৪৪টা কল। তখনি নদীকে ফোন দিলো আর এদিকে নদীর ফোন চার্জ শেষ হওয়ায় নীল বন্ধ পেল ফোনটি। তাই আর কিছুক্ষণ পরে নদীদের ঘরের সবগুলো ফোনে কল দিতে লাগলো নীল। কোনোটা থেকেই রেস্পন্স আসছেনা। তাই সবগুলা নাম্বারে বেশ কয়েকবার কল দিয়ে থামলো নীল। আবার দিনশেষে যখন রাত্রির আগমন ঘটলো তখনি নীলের ফোনটি নদীর কলে ক্রিংক্রিং করে বেজে উঠলো নীল কলটা কেটে ব্যাক করলো। প্রাথমিক কথা সেরে অর্থাৎ ভালোমন্দের কথা জিজ্ঞেস করেই নদী ডাইরেক্ট চলে গেলো অন্যপ্রসংগে, আচ্ছা আপনাকে বলছি ঐ নামবারগুলোতে ফোন দিয়েন্না তারপরও আজ এতগুলা কল কেনো দিলেন? তোমারটা বন্ধ ছিল তাই। তাই অন্যের নাম্বারে কল দিবেন? অন্যের নাম্বারে কল দেওয়া এটা আবার কি অভ্যাস? অন্যের বলে কি হয়ছে? সেটাতো তোমার পাশের রোমেরই? আর সেগুলোতে ফোন দেই যাতে তুমি শব্দ শুনে বুঝতে পেরে তোমারটা খুলো। আচ্ছা আমি একটা কথা বলি রাখবেন? হ্যা বলো রাখার হলে অবশ্যই রাখবো। না আগে বলেন রাখবেন! না আগে বলো, অহ কি বলবে ঐ নাম্বারগুলাতে যাতে আর ফোন না দেই? হুম। আচ্ছা তোমারটা খুলা থাকলেতো আমি ঐগুলাতে কল দেওয়ার দরকার পরেনা। না আমারটা খুলা থাকুক বা না থাকুক ঐগুলাতে কল দিবেন্না। না তোমারটা বন্ধ থাকলে ঐগুলাতে কল দিবো। আচ্ছা আপনি এত কিছু বুঝেন আর এটা বুঝেননা? ঐগুলাতো আমার মোবাইলনা। আচ্ছা আমিতো আর বলছিনা যে কল দিবো তোমারটা সবসময় খুলা রাখলে আর কল ঠিকমতো ধরলেইতো দিইনা। আচ্ছা আমি কি সবসময় মোবাইল হাতে নিয়া বসে থাকি? আমিতো বলেনি সবসময় মোবাইল নিয়ে বসে থাকতে শুধু সময়মত নিতে বলেছি। এরকম হাজারো ঝগড়াটে কথা দিয়ে এদের সেদিনকার রাতের ফোনালাপ শেষ হলো। এরপরের দিন রাত্রে নীল ফোন দিল নদীর মোবাইল বন্ধ। এদিকে খুব নিকটে চলে আসছে নীলের এস.এস.সি পরীক্ষা তাই নীল ভাবছে যাক এখন আর নদীর সাথে যোগাযোগ রাখার দরকার নাই পরীক্ষার পরেই করবো। এই কয়টা দিন ভালোভাবে একটু পড়ার চেষ্টা করি। নীলের মনে পুরিপূর্ন আশা সে পরীক্ষার পরে আবার চালিয়ে যাবে সো এখন স্থগিত থাকাই ভালো। এভাবেই চলছিল আর এদিকে নদী আস্তে আস্তে ভুলে যেতে লাগলো নীলকে, না কাউকে পেয়েনা এমনিতেই ভুলে যেতে যেতে একসময় ভুলেই গেলো। এদিকে নীলের পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেলো নীল এখন মহা আনন্দে হ্যা যারা বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন তারা অবশ্যই টের পাবেন কতটা আনন্দের পরীক্ষার শেষের দিনগুলা। হ্যা খানিকটা রেজাল্টের চিন্তা থাকে অবশ্য তবুও দিনগুলা অনেক আনন্দের। তাই নীল ভাবছে এই আনন্দের দিনগুলি আরো দিগুণ করে তুলবে নদীর সাথে যোগাযোগ করে। হ্যা, দীর্ঘ একমাস কঠোর পরিশ্রমের ফলে নদীকে মোবাইলে পেয়েছে নীল, কিভাবে পেয়েছে সেটা বলতে গেলে আরেক ইতিহাস যাইহোক ছোটখাটো করে বলে ফেলি। নীলের যেদিন পরীক্ষা শেষ হলে সেদিন থেকেই নদীকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোন দিনই খুলা পাইনি। পাবেই বা কেনো? নদীর ফোন ইউজ করাতো শুধুই নীলের জন্যই সেই নীলের সাথেই যখন দীর্ঘ ৬মাসের বিরতিতো ফোন খুলে রেখে কি লাভ। তাই নীল নদীর আম্মার প্লাস আরো কয়েকটা নাম্বার জানা ছিলো সেগুলোতে যোগাযোগ করলো কিন্তু নদীর কন্ঠ মিলছেনা এবং একজন কে পেয়েছে সে কে তা নীল জানেনা তবে অনুমান করে নেই সে হয়তো নদীর ছোটবোন নীল আবার নদীর ছোটবোনকে চিনে কারন নীল একসময় তারা দুজনকেই পড়াতো। যাইহোক অপরিচিতজন নীল ধরে নীল সেটা নদীর ছোটবোন হুমা। তাই একদিন নীল ঐ নাম্বারটিতে একটা মেসেজ দেই আপনি কি হুমা? তখন সে রিপ্লাই না দিয়ে ডাইরেক্ট কল করে নীল কলটা ধরলনা। রাতে নাম্বারটিতে কল দিলো পরিচয় নেবার জন্য আসলে হুমা কিনা। হ্যালো, হ্যালো কে বলছেন? জী আমি নীল (ছদ্দনামটাই বললো নীলের সুবিধার্থে ) আপনি কি হুমা? সে বলল হুম। না ডাউট হচ্ছে আপনি হুমা না। এই বলে কলটা কেটে দিল নীল। আর ভাবছে এটা আসলে কে? আর এদিকে অপরিচিত মেয়েটি ভাবছে এখানে অবশ্যই রহস্য আছে। উনি যেহেতু হুমাকে চাচ্ছে হুমা হয়তো কিছু জানে। অপরিচিত মেয়েটি হুমাকে ডেকে অনেক কিছু জেনে নিলো নীলের সম্পর্কে। এখন মেয়েটির সাথে নীলের কিছুকিছু কথা হয়, নীল মেয়েটিকে হুমা হিসেবেই জানে কারন মেয়েটি নীলের সম্পর্কে জানতো। হঠাৎ একদিন মেয়েটি বলে ফেলল আচ্ছা আপনার কি আমার আপ্পুর সাথে রিলেশন ছিলো? আপনার আপ্পুকে? কেনো আমার বড় আপ্পু। নাম কি? নদী। নীল হঠাৎ থমকে গেলো এবং ভাবতে লাগলো হুমা জানলো কি করে, অহ এতদিনের কথাবার্তার ভঙ্গী-ভাঙি তে বুঝে গেছে হয়তো। তাই সব খোলাসা করে বলে দিলো নীল। হ্যা, আমি এখনো নদীকে খুব ভালোবাসি এবং বাসবো। কিন্তু সে যে আর ভালোবাসেনা, হ্যা তাইতো দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু সেতো আমাকে অনেক ভালোবাসতো কিভাবে এতটা পরিবর্তন হয়ে গেলো। আচ্ছা হুমা শুনো তুমি কি পারবে তোমার ফোনটা ওর কাছে দিতে? আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে চাই। হ্যা অবশ্যইই পারবো তবে এর আগে একটা কথা বলতে চাই আমি হুমা না! তাহলে কে আপনি????? আর হুমা না হলে আমার এবাউট এতকিছু জানলেন কিভাবে? আমি হুমার কাছ থেকে জেনেছি, আর আমি হুমার এবং নদীর কাজিন আমি ছোট থেকে বড় ওদের বাসায় হয়েছি তাই এখনো এখানেই থাকি। হুমা আপনাকে এতকিছু বলতোনা নদীত বেপারে। আরর আমার নাম জান্নাত। অহ মাই গড আচ্ছা শুনেন আপ্পি প্লিজ আমি না জেনে আপনার কাছে এতকিছু শেয়ার করে ফেলেছি আপনার কাছে অনুরোধ প্লিজ কাউকে এগুলা বইলেননা। না না আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন আমি কাউকে কিছু বলবোনা। আচ্ছা আপ্পি আপনিতো আমাকে অনেক সাহাহ্যই করেছেন, নদী কখন কি করছে কোথায় যাচ্ছে, এবং নদীকে একটি চিরকুট দিতেও বলেছেন এবং এটাও আপনার সাহায্যেই চিরকুটটি নদীর হাতে পৌঁছেছিল, আরো অনেকভাবেই সাহায্য করেছেন বাট আমার ভাগ্যক্রমে কোথাও কিছু হয়নি। তো এখন শেষমেশ একটা হেল্প করেন প্লিজ ওর সাথে আমাকে একটু কথা বলান। ঠিক আছে আমি সময়বুঝে ফোন দিবো। ঠিক আছে। বাই।
নীল মনে গভীর আসা নিয়ে বসে আছে হয়তো কখনো ফোন আসবে আর মোবাইলটা বেজে উঠবে। হ্যা ঘড়ির কাটা যখন রাত ১১টা ছুঁইতে লাগিল হটাৎ নীলের মোবাইলটি কেপে উঠলো, নীল তখন কি যেন লেখালেখি করতেছিল তাই কলটা কেটে দিয়ে ব্যাক করলো এবং জান্নাতের সাথে কিছু কথা বলার পর জান্নাত মোবাইলটি নদীকে দিয়ে দিলো।
- হ্যালো আসসালামু আলাইকুম (নদী)
- ওয়ালাইকুম আসসালাম(নীল)
- কেমন আছেন?
- তোমাকে ছাড়া কেমন থাকি বলো?
- এ কেমন কথা?
- ভালো নেই জান, খুব কষ্টে আছি তোমাকে ছাড়া।
- কেনো?
- আচ্ছা তুমি কেমন আছো?
- ভালো।
- ভালোইতো থাকবা।
- হ্যা, ভালো না থাকারতো কোন কারন নেই।
- আচ্ছা, তুমি কি এখনো আমার প্রতি রাগ করে আছো?
- নাহ, আপনার প্রতি রাগ করবো কেনো?
- না জান আমি এক্সট্রেমলি সরি, প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর তোমার ফোনটা খুলো, তুমি জানো আমি তোমার ফোনে প্রতিদিন শতবারের চেয়েও বেশি কল দিয়েছি বার বার একই রেজাল্ট বন্ধ বন্ধ।
- না, আপনি সরি বলবেন কেনো? আমি সরি বলছি কারন আমার পক্ষে আর ফোন খুলা সম্ভব না।
- কেনো সম্ভব না?
- আমার বিয়ে হয়ে গেছে।
- প্লিজ জান, এরকম করোনা তোমার বিয়ে হয়নি তুমি এখন সম্পর্কটাকে একেবারে মাটিচাপা দিতে এমনটা বলছো, প্লিজ নদী এমন করোনা আমিতো সরি বলেছি প্লিজ ফিরে এসো, আমাকে ক্ষমা করে দাও।(সবগুলা কথাই কেঁদে কেঁদে বলছে নীল)
- না কোন লাভ হবেনা, আব্ব আর কাকা মিলে আমার বিয়ে ঠিক করে রাখছে।
- না, তুমি মিথ্যা বলছো, তোমার বিয়ে ঠিক হয়নি তুমি আমাকে ফিরানোর জন্য এমনটা বলছো।
- না।
- প্লিজ নদী এমন করোনা, আমি তোমাকে ছাড়া এভাবে থাকতে পারবোনা। আচ্ছা মানলাম তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে বাট হয়নিতো। প্লিজ মোবাইলটি খুলো আগেরমতো কথা বলো আর বিয়ের সময় আমি সেটা দেখবো, নিশ্চিত থাকো বিয়ে হবেনা।
- বিয়ে ঠিক হয়ে আছে হবেই, আর কথা বলে কি লাভ? এখন কথা বলাইতো বাহুল্য।
- প্লিজ নদী আমাকে আর কাদাইওনা কাঁদতে কাঁদতে আমি শেষ, আমি তোমার জন্য কতটা কাঁদছি জান্নাত আপ্পিকে বল সে জানে। (কেঁদে কেঁদেই বলছিল সবগুলো কথা)
- হ্যা, আমিও শুনতে পাচ্ছি, আর কাদিয়েন্না! একটা মেয়ের জন্য এতটা না কেদে আল্লহর জন্য কাঁদেন। অনেক লাভ হবে।
- হ্যা, তা ঠিক আছে বাট আমি যে তোমাকে ছাড়া আর পারবোনা।
- পারবেন চেষ্টা করেন,আর আপনি আমার চেয়ে আরো সুন্দর মেয়ে পাবেন।
- না, আমিতো কোন সুন্দর মেয়ে চাইনি, আমি শুধু তোমাকে চাই!
প্লিজ তোমার মোবাইলটা খুলো, প্লিজ কাম ব্যাক।
এভাবে হাজারো কাকুতিমিনতি করেছে নীল লাস্ট ৯৪মিনিট কথা হয়েছে তবুও কোন হ্যা সম্মতি পেলনা নীল। নদী ফোন রাখার সময় বলেছিল আচ্ছা রাখি পরে ফোন দিমুনে। আজ ৬মাস পার হয়ে গেলো তবুও নদীর এখনো একটাও কল আসেনি, আর আসবে কিনা কে জানে? তবুও নীল ফোনের অপেক্ষা করে, অপেক্ষায় বিভোর থাকতে থাকতে নীল এখন পাগল প্রায়, নীল এখনো নদীর জায়গায় অন্যকাউকে ভাবতে পারেনা। হয়তো আর পারবেওনা। এভাবেই লাইফটাইম পার করে দিবে। আর এদিকে নদীর মনে নীলের কোন অস্তিত্বই নেই! অতচ নীলের সারা কল্পনা জুড়েই নদীকে নিয়ে যতকথা। এভাবেই একটা সুন্দর সম্পর্কের ইতি হয়ে গেলো। আর নীলের মনে মেয়েদের প্রতি এতটাই ঘৃণা জন্মালো যে নীল এখন কোন মেয়েকেই ট্রাস্ট করে না আর করবেই বা কেনো? নদী এতটাই নিষ্ঠাবান ছিলো, এতটাই ভালো ছিল বলে শেষ করা যাবেনা, আর সেই মেয়েটিই ছেলেটিকে ফাকি দিলো। তাহলে কিভাবে আর বিশ্বাস করবে অন্যকাউকে? নদী নীলের জীবন থেকে চলে যাবার পর থেকে নীলের অবস্থা এখন একেবারেই নাজেহাল। আগে কখনো প্রেমের মরা জলে ডুবেনা গানটির #বারো_বছর_বর্শি_বাইলো_তবুও_আধাড়_গিললনা লাইনটি শুনলে খুব হাসি পেতো কারন বারো বছর কে কার জন্য অপেক্ষা করবে? কিন্তু না আজ নীলের অবস্থা দেখে সেই লাইনটি আমার বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে। কারন নীল এখনো সেই মেয়েটিকে ভালোবাসে, যে কেউ নীলকে দেখলে পাগল ভাববে। নীলের চুলগুলো লম্বা লম্বা এলেমেলো, যখনি নদীকে খুব বেশি মিসস করে তখনি গিটারটি কাধে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়, তখন হোক রাত বা দিন হোক সময় অসময়, কিছুক্ষণ রাস্তায় হাটতে হাটতে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় গিয়ে এক দুইটা সিগারেট খায় আর গুনগুন করে গান খায়, বাসায় ফিরে নদীকে নিয়ে কবিতা লিখে আর ছিঁড়ে। এভাবেই মনের কষ্টগুলো চাপা দিয়ে রাখে। কাউকে বুঝতে দেইনা কতটা কষ্টে আছে। শুধু একটি মেয়ের জন্য সারাটাজীবন হয়তো এভাবেই বিফলে কাটিয়ে দিবে নীল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.