নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীতে এসেছি একা যেতেও হবে একা তাই আমি মাঝেমাঝে একা একা চলার অভ্যাস করি।

মোজাম্মেল খান রিন

আমি খুবী সাদাসিধে একজন মানুষ অনেকটাই সহজ-সরল।

মোজাম্মেল খান রিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা দিবস স্পেশাল "বসন্ত এসে গেছে"

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩০



গত রাতে অনেকটাই দেরি করে ঘুমিয়েছি, আজ কলেজ বন্ধ তাই তাড়াতাড়ি উঠার কোন প্রয়োজন নেই,তবুও একটু চোখ মেলে ঘড়ির টাইমটা দেখে নিলাম ৯টা বাজে। আবার চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু আর ঘুমাতে পারলাম না কারন কানের পাশেই মোবাইলটি একটু পরপর মেসেজের শব্দে বেজে উঠছে, একএক করে অনেকগুলো মেসেজ আসলো, আমি খানিকটা অবাক হয়ে মোবাইলটি হাতে নিয়ে দেখলাম ১৬টি মেসেজ। রীতিমত শক খেয়ে গেলাম আর ভাবতে লাগলাম এতগুলা মেসেজ কেন আজ কোন বিশেষ দিন নাকি? না তাও তো জানিনা, হ্যা না জানারই কথা কারন অনেকদিন ধরে ফেসবুকে যাইনা, যত্তসব কারেন্ট নিউজতো ফেসবুকেই পাওয়া যাই তারপর আবার আমি হলাম সিংগেল আর সিংগেলদের এতসব ডে এর কথা মনে থাকেনা।
.
আরে ধুড়,,,, এতসব আজিবাজি কেনো ভাবছি, মেসেজগুলা দেখে নিলেই হয়। মেসজ দেখতে লাগলাম, সবাই ১লা ফাগুনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, কিছু পরিচিত আর কিছু অপরিচিত। তারমানে “বসন্ত এসে গেছে”? আমি এখন অনেকটা অবাক হলাম, কারন বসন্ত আমার প্রিয় ঋতু । অপরিচিতদের সবাই শুধু ফাগুনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে, এদের মধ্যে একজন শুভেচ্ছা জানিয়ে আরো একটি কথা বলে আমাকে খোঁচা দিয়েছে। কথাটি হলো, এইযে বসন্ত প্রিয় কবি সাহেব বসন্ত যে এসে গেছে!
আপনার কি সে খোজ আছে? “বসন্ত” নিয়ে ফেসবুকেতো কোন লেখা দেখছিনা। নিছে নাম লিখেছে #অচিন_বালিকা। কথাটি শুনে মাথা পুরাই গরম হয়ে গেছে। কারন আমি কাউকে খোঁচা মারিনা তাই খোঁচা একদম সহ্য করতে পারিনা। তাই রেগে অন্যকাউকে রিপ্লাই না দিয়ে, সোজা এই মেয়েটিকে রিপ্লাই দিলাম, কে আপনি? রিপ্লাই দিয়ে চলে আসলাম ফ্রেশ হতে, ফ্রেশ হয়ে যখন মোবাইলটি হাতে নিয়ে নাস্তা করতে ডাইনিং রোমে এসে চেয়ারটিতে বসলাম এমনি মেয়েটির একটি রিপ্লাই আসলো, আমাকে আপনি চিনবেন্না! আমি রিপ্লাই দিলাম,
– তো আপনি আমাকে চিনেন কেমনে?
– সে অনেক কথা ফোনে বলি?
– না টেক্সটেই বলো,আমি অপরিচিত কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা।
এই টেক্সটা দিতেই মায়ের ঝাড়ি, এই তুই খাবি না মোবাইল টিপবি? সারা রাতদিনইতো টিপিস আফসোস যাইনা? খেতে বসেও টিপতে হবে? খা!!
খাচ্ছি দাও।
খেতে খেতে আরো দুইটি টেক্সট এসেছে মায়ের ভয়ে দেখেনি। নাস্তা শেষ করে রোমে গিয়ে দেখলাম। মেয়েটি বলছে,
– বলবেননাইতো অভিমানী ছেলে বলে কথা!
– তবুও, শুধু একবার সুযোগ দেন প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,,,,,,
তারপর ভাবলাম মেয়েটি এতকরে বলছে যাক দিয়ে একটা সুযোগ। ভাবতে ভাবতেই আরেকটা টেক্সট আসলো।
– প্লিজ গিভ মি এ চান্স প্লিজ।
– অকে, ইউ ক্যান কল মি।
তারপর ফোনে অনেক কথা হলো মেয়েটির সাথে, মেয়েটির নাম বৃষ্টি, আমাদের পাশের একটি ফ্ল্যাটেই ওদের বাসা। ও আর আমার কাজিন বোনটা নাকি একই কলেজে পড়ে এবং তারা বেষ্ট ফ্রেন্ড, তারা নাকি একদিন ফেসবুক জগতের কথা বলতে বলতে হটাৎ মেয়েটি আমার কাজিনকে বলল এই স্মৃতি, কি একটা আজিব বেপার দেখনা। এইযে আইডিটার নাম অভিমানী ছেলে এটাতে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাইছি আজ একমাস হয়ে গেছে এখনো এক্সেপ্ট ও করেনা ডিলিট করেনা। আমার কাজিন উত্তর দিলো, হাহাহা তুই কার কথা বলছিস জানিস? এটা আমার কাজিন বড় ভাইয়ের আইডি আর উনি এরকমি। তারপর ওর কাছ থেকেই নাকি অল ডিটেইল এবং নাম্বার নিয়েছে।
.
তারপর দুপুর দিকে মেয়েটি মেসজ দিলো,
– আচ্ছা, আপনি কি আজ বিকালে ফ্রি আছেন?
– না, আজ বিকালে মায়ের সাথে বসে একটি ফিল্ম দেখবো,আগে থেকেই ঠিক করা আছে।
– তো আগামীকাল বিকালে?
– এখন বলতে পারছিনা পরে জানাবো।
– আমি অপেক্ষায় থাকলাম।
বিকালে মায়ের সাথে ফিল্ম দেখলাম, দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে একটু পড়তে বসলাম। হঠাৎ মোবাইলটি কেপে উঠলো, আমি ভয় পেয়ে গেলাম ভাবলাম ভুমিকম্প বুঝি। কিন্তু না মোবাইলটির লাইট জলে উঠেছে পরে বুঝতে পারলাম একটি মেসেজ এসেছে। আই মিস ইউ” মেসেজটি মেয়েটিই দিয়েছে। আমিতো হা খেয়ে গেলাম মেয়েটিকি পাগল নাকি? আমাকে মিসস করার ই আছে। যাইহোক কিছুক্ষণ এক দুইটা বই ঘাটাঘাটি করতে করতে রাত এগারোটা বেজে গেলো। তারপর খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। রাত যখন ঠিক বারোটা এক তখনি একটা মেসেজের শব্দে ঘুম ভেংগে গেল। আমি প্রতিদিনই মোবাইল সাইলেন্ট করে ঘুমাই বাট আজ কেনো যে ভুল করলাম আর মেসেজটাও ঘুমটা ভেংগে দিয়ে মেজাজটা খারাপ করে দিল। তারপর মেসেজটা দেখে মেজাজটা আরো চওড়া হয়ে গেলো। মেসেজটি মেয়েটিই দিয়েছে এবং লিখেছে , হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে, আরেকটি কথা কিভাবে বলবো বুঝে পাচ্ছিনা, ভাবছিলাম আপনার কাজিন স্মৃতিকে দিয়া বলাবো, তারপর দেখলাম সামনে ভ্যালেন্টাইন ডে তাই ভাবলাম ভ্যালেন্টাইন ডে তেই মেসেজে বলে দিবো। ” আই লাভ ইউ।
.
মেসেজটি দেখে মেয়েটিকে থাবড়াইতে মন চাচ্ছে! এবং বলতে ইচ্ছে করছে, লাভ কাকে বলে জানো? কাউকে না দেখেই ভালোবাসা যাই? কারোর কিঞ্চিৎ ডিটেইলস জেনেই তার প্রেমে পড়া যাই? যাইহোক কিছুই রিপ্লাই দিলাম না ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে উঠে দেখি দুটি মেসেজ একটি গুড মর্নিং আরেকটি আজ বিকালে ফ্রি তো? আমি বললাম ফ্রি হলে কি করবেন? কিছুক্ষণ পর রিপ্লাই আসলো দেখা করবো। আমি তখন ভাবলাম এই সুযোগ দেখা করলে গতকাল রাতের মেসেজের জন্য কষিয়ে একটা থাপ্পড় দিতে পারবো। তাই বলে দিলাম হ্যা ফ্রি। মেয়েটি বললো ঠিক আছে আমি বিকালে টেক্সট করে বলে দিব কোথায় আসতে হবে। ঘড়ির কাটা ঘুরতে ঘুরতে একসময় বিকাল চলে আসলো। বিকাল পাঁচটা বাজে তখন মেয়েটি মেসেজ দিলো চাদে আসেন। আমি হাতটাকে আগে শক্ত করে নিলাম যাতে গিয়েই কষিয়ে থাপ্পড় বসিয়ে দিতে পারি।
.
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছি আর ভাবছি মেয়েটির কত বড় সাহস চিনেনা জানেনা একটি ছেলেকে আই লাভ ইউ বলে ফেলল। যাক শেষমেশ সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেলাম এবং যা দেখলাম পুরাই অবাক আরেএএএএএ এটাতো সেইইইইই বৃষ্টি, সে যখন ফাইভে পড়তো তখন তাকে দেখে ক্রাশ খেয়েছিলাম। তারপর উপরে (আকাশে) তাকিয়ে সুখের একটা শ্বাস ফেলে আল্লাহর নিকট মনে মনে বলতে লাগলাম, হ্যা আল্লাহ আমার প্রেমের বয়সে তিনটি ভ্যালেন্টাইন একা একা কাটিয়েছি, চতুর্থ ভ্যালেন্টাইন এ আমাকে পুর্ণতা দিলে সো থ্যাংকস এ লট থ্যাংকস আ লট। বলছিলাম আর মিটমিট করে হাসছিলাম। তখন পাশের চাদ থেকে ডাক আসলো এইযে অভিমানী????? আকাশে কি দেখেন আমি এই দিকে। আমি কিছুটা লজ্জাবোধ করছি, কারন সে যদি জানতো যে তাকে থাপ্পড় দিতে এসেছি।
.
আরেকটা ডাক আসলো এইযে তাকাবেন, নাকি আমি চলে যাবো? এই কথাটা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়েছি কথাটির উত্তর দেওয়ার জন্য। এবং ঝটপট ওর দিকে ফিরে বলে ফেললাম। এই না শুনো,,, তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। মেয়েটা কিছুটা লজ্জা পেল এবং বলল হয়েছে আর বলতে হবেনা। আমি বললাম হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে এন্ড আই লাভ ইউ টু। এভাবেই তৈরি হয়ে গেলো একটি যুগল। যে অভিমানী মাসেও একদিন চাদে আসতোনা সেই অভিমানী এখন প্রতিদিনই কয়েকবার আসে এবং ভাব আদানপ্রদান করে।


★আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুনঃ

http://www.facebook.com/tumaynea

&

http://www.facebook.com/RjTheRain

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.