নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'এম এল গনি\' cut & paste করে Google-এ search করলে আমার সম্পর্কে জানা যাবে। https://www.facebook.com/moh.l.gani

এমএলজি

এমএলজি › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'ডু ইউ নো, আই এম এ ম্যাজিস্ট্রেট?\'

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:২৪

= 'ডু ইউ নো, আই এম এ ম্যাজিস্ট্রেট?' =

পড়াশোনা শেষে নেদারল্যান্ড থেকে দেশে ফেরার সময় আমার সাথে প্রশাসন ক্যাডারের এক তরুণ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনিও আমাদের একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেদারল্যান্ড সরকারের বৃত্তির সুযোগ নিয়ে পড়ালেখা করতে গেছেন।

ছাত্র হোস্টেল ছেড়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বেরুলাম আমরা দুজন। আমি ওজন চেক করেই ব্যাগ তৈরী করেছি। সম্ভবত প্রতি ব্যাগে সর্বোচ্চ ২৩ কেজি নেয়া যেত। অথচ, আপা নিয়েছেন ২৮/২৯ কেজি করে। ফলে, ব্যাগগুলো নাড়াচাড়া করতেও কষ্ট হচ্ছিলো।

এ অবস্থায় আপাকে বললাম, 'আপা, আপনার ব্যাগ কিন্তু অনেক ভারী, এয়ারপোর্টে ঝামেলা হতে পারে।'

আপা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললেন, 'কি যে বলেন গনি? ঝামেলা হবে কেন? প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেব। ব্যাটারা না নিয়ে যাবে কোথায়?'

আমস্টারডামের শিফল এয়ারপোর্টে আমরা পৌঁছুলাম। প্রথমে আমার ব্যাগগুলো চেক-ইন হলো। ওজন যথাযথ ছিল বলে সমস্যা হয়নি। তারপর, ম্যাজিস্ট্রেট আপার ব্যাগ'এর ওজন নিতেই সমস্যা দেখা দিলো। এতবেশি ওজন তাঁরা নিতে চাচ্ছেন না। ২৩ এর স্থলে ২৪ হলেও হয়তোবা সমস্যা হতো না, কিন্তু তাঁর প্রতিটি ব্যাগ ৬/৭ কেজি করে বেশি। প্রতি কেজির জন্য মোটা দাগের ফি চাচ্ছে তারা।

এ পরিস্থিতিতে রাগে-ক্ষোভে আপার মুখ লাল হয়ে গেলো। একসময় আমার দিকে তাকিয়ে বাংলায় বললেন, 'গনি, বলেন না, আমি একজন ম্যাজিস্ট্রেট।'

আপার অনুরোধ শুনেও আমি না শোনার ভান করলাম। কারণ, আপা হয়তো ভুলে গেছেন, ওটা নেদারল্যান্ড, বাংলাদেশ না; মানসিক চাপে থাকলেও আমি কিন্তু হুঁশ হারাইনি।

শেষমেষ আপা নিজেই 'ডু ইউ নো, আই এম এ ম্যাজিস্ট্রেট?' বলে বারবার তাঁর পরিচয় দিতে লাগলেন । আর, ওজন যিনি চেক করছিলেন তিনিও বলে চলেছেন, 'সো হোয়াট?'

কি আর করা? শেষতক, এয়ারপোর্ট থেকে আরেকটা ব্যাগ কিনে নির্ধারিত ওজনের অতিরিক্ত মালামালগুলো তাতে নিয়ে সমস্যার সমাধান করা হলো। একটা পুরো ব্যাগের আলাদা ফি দিতে হলো আপাকে।

মালামাল চেক-ইন করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আপা আমাকে বললেন, 'গনি, এরা কেমন বেয়াদবীটা করলো দেখলেন? বাংলাদেশে হলে সব কটাকে এতক্ষনে জেলের ভাত খাওয়াতাম!'

আপার টেনশন কমাতে আমি তাঁকে আশ্বস্থ করে বললাম, 'মন খারাপ করবেন না আপা, এসব দেশের মানুষগুলো মুখের উপরে ভদ্রতার মুখোশ নিলেও ভেতরে কিন্তু চরম বেয়াদব। আপনার মর্যাদা এরা বুঝবে কি করে?'

ML Gani, RCIC, on FaceBook

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৫৬

এপোলো বলেছেন: বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় কিন্তু আমি জানি এরকম গায়ের জোর দেখানো লোকজনের অভাব নাই। আরকানসা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করার সময় আমাদের সাথে বাংলাদেশের এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নতুন লেকচারার এর সাথে পরিচয় হয়েছিল. তিনিও মাস্টার্স করতে এসেছেন। কথায় কথায় খুব ভাব, বাংলাদেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তিনি, আমাদের উচিত তাকে আলাদা সম্মান দেয়া। কথা প্রসঙ্গে বলেই দিলেন একদিন, আমার প্রফেসর নাকি উক্ত দেশি ভাইকে প্রাপ্য সম্মান দেন না। বলে রাখা ভালো, আমার প্রফেসর জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। দেশি ভাই বলেন, আমিও তো প্রফেসর, আমাকে কেন সম্মান দেখাবে না?
এইরকম ভাব মনে হয় দেশি ভাই তার প্রফেসরকেও দেখাইছিলো। আমার দেখা যত দেশি-বিদেশী ভাইবোন আমেরিকাতে মাস্টার্স পিএইচডি করতে আসছে, তাদের মধ্যে খালি এই একমাত্র দেশি "প্রফেসর" ভাই মাস্টার্স ডিফেন্স এ ফেল করছিলো। তাকে নাকি তার advisor বলছিলো তুমি ডিফেন্স এর জন্য রেডি না, সে তারপর ও ডিফেন্স এ দাড়াইসে থিসিস কমিটিকে কনভিন্স করতে পারবে দেখে।
মাঝে মাঝে দেশি জোর খাটানোর অভ্যাস দেশের বাইরেও চর্চা করে ফেলে এরা।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৪৯

গরল বলেছেন: গনি ভাই, আর একটা মজার তথ্য দেই। আমি যখন দুই বছর আগে সাস্কাটুন এ আসি ওয়ালমার্ট এ যাই ঘরের জিনিষপত্র কিনতে। ওখানকার সিকিউরিটি গার্ড এর সাথে কথাবার্তা হয়, বাংলাদেশি পরিচয় পাওয়ার পর একটু আগ্রহ নিয়েই কথা বলি কারণ অনেক কিছু জানার ছিল। প্রথেই উনি উনার পরিচয় দেয় যে উনি সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রানিং ডিএস, পিআর স্ট্যাটাস ধরে রাখার জন্যই উনি বছরে ৩-৬ মাস করে এখানে থাকেন। উনার ছেলে বুয়েট থেকে পাশ করে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করে এখন একটা মোবাইল শপে জব করে আর মেয়েও এখানঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনীয়ারিং পড়ে।

উনার ভাষ্যমতে বাংলাদেশীদের মধ্যে নাকি উনি একটু বেটার জব করে কারণ সিকিউরিটি জব করতে হলে পরীক্ষা দিয়ে লাইসেন্স নিতে হয়। বাকিরা নাকি কামলা খাটে। উনার ছেলেও ভালো জব করে মানে হচ্ছে শারিরীক পরিশ্রম করতে হয় না। এখানে বাড়ি কিনেছে, বুঝতেই পারছেন দেশ থেকে আনা টাকা। উনি আমাকে পরামর্শ হল দেশে আমরা যেসব জব করেছি ওগুলোর কোন মূল্য নাই, তাই কামলা খাটার জন্য যেন প্রস্তুত হই আর। যদি একটু মেধা থাকে তাহলে যেন কোর্স করে উনার মত সিকিউরিটির লাইসেন্স নিতে পারি।

যাই হোক আমি ৪-৫ মাসের মাথায় জব পেয়ে যাই কানাডার একমাত্র ইউরেনিয়াম উৎপাদন ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানে আইটির একটা মধ্যম সারির পদবিতে। এর পরে পরিচয় হয় অনেকের সাথেই যারা ব্যাংকে, ইনস্যুরেন্স, ইটি ফার্মে বা অনেক সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো ভালো পদবিতেই কর্মরত। এখানকার ব্যাংকগুলোর প্রতিটা শাখাতেই ২-১ জন করে বাংলাদেশি জব করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন উল্ল্যেখ করার মত। অথচ উনার কাছে মনে হয়েছে উনি একটু বেটার জব করে, কারণ উনার মেধা আছে, কারণ উনি ডিএস। আর একজন নতুন আগতকে কিভাবে ভূল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত ও আশাহত করেছেন শুধুমাত্র নিজেকে উপরে রাখার জন্য।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:০১

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১২

জহির ডিজিপি বলেছেন: বাংলাদেশ সহ ভারতীয় উপমহাদেশে এই রকম টেনডেন্সি বেশি। কিন্ত অন্যদেশে সেই রকম নাই বললেই চলে।

৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:১৭

বিটপি বলেছেন: তাই নাকি? বাংলাদেশে একজন তরুণ ম্যাজিস্ট্রেট চাইলেই একজন কাস্টমস স্টাফকে জেলের ভাত খাওয়াতে পারে? সত্যিই সম্ভব? এতটা সম্ভব?

ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছে দেশ বিদেশের জ্ঞান বিজ্ঞান হাসিল করে। আর এটুকু জ্ঞান নেই যে এদেশের ক্ষমতা নেদারল্যান্ড তো দূরে থাক, পার্শবর্তী দেশ নেপালে দেখাতে গেলেও অপমানিত হবার সম্ভাবনা থাকে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.