নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবীর মামুন

কবীর মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্যালেন্টাইন নয়, একুশের চেতনা দীর্ঘজীবী হোক

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৭

পলাশের লালে রাঙা ফাল্গুন কিংবা বাঙ্গালির একুশের চেতনার সাথে ভালবাসা দিবসের ধারণা সাংঘর্ষিক। আগুন লাগা ফাগুনের সাথে বাঙ্গালির নিবিড় সম্পর্ক। এক ফাল্গুনে গর্জে উঠেছিল বাংলার মানুষ। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। সেদিন ছিল ৮ ফাল্গুন। রফিক-শফিক-বরকত-সালামে রক্তে রাঙ্গা হয়েছিল বাংলার মাটি। পলাশের লাল আর শহীদের রক্ত মিলেমিশে একাকার হয়েছিল সেদিন। সেদিনের ঘটনা ৮ ফাল্গুনে হলেও পুরো ফাল্গুন আর ফেব্রুয়ারি জুড়েই বাংলাদেশ ছিল উত্তাল।

স্বাধীন দেশে আরেক ফাল্গুনে গর্জে উঠেছিল বাংলাদেশ আবার। সন ১৯৮৩। স্বৈরাচার সামরিকতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন কেবল দানা বেঁধে উঠছে। সেদিন ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি রোজ সোমবার। সকাল ১০ টায় ছাত্র সমাজ জমায়েত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়। উদ্দেশ্য মজিদ খানের গণবিরোধী শিক্ষানীতির প্রতিবাদ। তাজা খুনে আবার রাঙ্গা হলো স্বাধীন বাংলার মাটি। আবার একাকার হলো খুনে রাঙ্গা সকাল আর পলাশের লাল। জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, কাঞ্চন , দীপালী সাহারা জীবন দিয়েছিল সেদিন। সেই থেকে আজও ছাত্রসমাজ দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন করে আসছে।

কিছু পশ্চিমা পদলেহী অসাধু ব্যক্তি পশ্চিমা আমাদের বাঙ্গালির মন থেকে আগুন রাঙা ফাগুন আর একুশের চেতনাকে সরিয়ে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে পশ্চিমা ভ্যালেন্টাইনের আমদানী ঘটায়। বর্তমান প্রজন্মকে যত তার ইতিহাস থেকে দূরে রাখা যাবে ততই তাদের জন্য সুবিধা। লুটেপুটে খাওয়া সহজ। তাই আমদানী এই অসাধু ভ্যালেন্টাইনের। আমরাও গিলে যাচ্ছি। আমাদের বাঙ্গালিদের চরিত্র হলো অনেকটা সেই প্রবাদের মতো, ‘যে কয় আয় লো, তার সাথে যাই লো।’ তাই আমরা আমাদের ইতিহাসকে ভুলে হাটছি পশ্চিমের পদলেহীদের দেখানো রাস্তায়।

ভাল কিছু গ্রহণ করতে আমাদের নিশ্চয়ই আপত্তি থাকবে না। আমরা তো পশ্চিমের অনেক ভাল গ্রহণ করেছি। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো পশ্চিমা গণতন্ত্রের ধারণা। তবে উদ্দেশ্য সৎ হওয়া চাই।

যারা ভ্যালেন্টাইন পালন করছেন তাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, ভালবাসা বাঙ্গালির সংস্কৃতির সাথে আবহমান কাল থেকে জড়িয়ে রয়েছে। তার প্রমাণ বাঙ্গালি বহুবার দিয়েছে। দেশ মাতৃকার জন্য ভালবাসা, মায়ের জন্য ভালবাসা, প্রেমিক/প্রেমিকা-স্ত্রী/স্বামীর জন্য ভালবাসা, মানুষের জন্য ভালবাসা থেকে শুরু করে আরো অনেক ভালবাসার জন্য বাঙ্গালির দিনক্ষণ ঠিক করে নিতে হয়নি। আর হবেও না।

পশ্চিমারা নিজেদেরই ভালবাসতে জানে না। আর অন্যকে ভালবাসবে কি? কথায় কথায় প্রেমের সম্পর্ক ভাঙ্গা, মাতা-পিতাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখা, পরিবারের সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলা ওদের জন্য স্বাভাবিক। তাই দিনক্ষণ ঠিক করে ওরা একদিনে ভালবাসা প্রদর্শন করে। যা আমাদের সাথে কখনোই যায় না।

আমরা ভালবাসতে জানি সবসময়। দেশমাতা, পিতা-মাতা, পরিবার, ভাই, বন্ধু, আত্মীয় পরিজন এমনকি প্রেমিক/প্রেমিকা কিংবা স্ত্রী/স্বামীর এবং সর্বপরি মানুষের জন্য ভালবাসা আমাদের অন্তহীন-অফুরান। তাই ভালবাসতে আমাদের দিনক্ষণ ঠিক করতে হয় না। আমরা পশ্চিমা নই। আমরা বাঙ্গালি। অসাধু ভ্যালেন্টাইনের চেয়ে আমাদের কাছে পলাশের লালের পবিত্রতার মূল্য অনেক বেশি।

ভ্যালেন্টাইন নয়, একুশের চেতনা দীর্ঘজীবী হোক। পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে মুক্ত হোক আমাদের বাংলাদেশ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১০

মাসুদ_খান বলেছেন: প্রতিটা দিবস শুধুমাত্র পালন করলেই হয় কিন্তু একুশের চেতনা ধারণ না করলে পালন করে এর মর্যদা রক্ষা করা যায় না। তাই আমারা সবাই কেন সাংঘর্ষিক চিন্তা করছি??

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৯

কবীর মামুন বলেছেন: আপনার কথাটা খুবই সত্য @ মাসুদ_খান। আপনাকে ধন্যবাদ। চেতনা অবশ্যই ধারণ করার বিষয়। একুশের চেতনা যারা ধারণ না করেন কিংবা বিরোধী তারা সাংঘর্ষিক চিন্তা করবে এটাই স্বাভাবিক। তারা সেটা সিদ্ধান্ত নিয়েই করে থাকেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.