![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ সরকারের সকল কাজ খ্রিস্টিয় বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী পরিচালিত হয়। ফলে বেসরকারিভাবেও সকল কাজ এই বর্ষপঞ্জি অনুযায়ীই চলে। তাই আমাদের সকলের কাছেই এই সালের হিসাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আার পাঁচজনের মতো আমার কাছেও এই বর্ষপঞ্জির একটা গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এই সালের প্রথম দিনটিতে আমার পরিচিত জনদের শুধুমাত্র শুভ নববর্ষ জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারে বাবা-মায়ের চতুর্থ সন্তান হিসাবে জন্ম আমার। চরম দারিদ্রের মধ্যে বেড়ে উঠতে হয়েছে আমাকে। আমরা চার ভাই পড়ালেখা করতাম। পিতার সামান্য আয়ে চার ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে সংসার পরিচালনা ছিল প্রচন্ড কষ্টসাধ্য। হার না মানা জীবন সংগ্রাম কাকে বলে তার আমি আমার পিতা-মাতাকে দেখে শিখেছি। তাই খ্রিস্টিয় বর্ষ শেষের কিংবা শুরুর জন্য যে উৎসব করা যায় বা হয় তা আমাদের জানাই ছিল না। আমাদের গ্রামে অবশ্য এমন সংস্কৃতি চালুও ছিল না। দারিদ্র পীড়িত অবস্থার মধ্য দিয়েও হাজার বছরের গ্রামীণ বাঙালী সংস্কৃতিকে ধারণ করেই বেড়ে উঠেছি আমি। ফলে খ্রিস্টিয় বর্ষপঞ্জি আমার কাছে নিতান্ত প্রয়োজন ব্যতীত আর বেশি কিছু নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর প্রথম জানলাম যে, খ্রিস্ট বছরের শেষদিনটাকে হিন্দি/ইংরেজি গান চালিয়ে মদ খেয়ে উদ্দাম নৃত্য করে অন্যকে গালাগালি করে, বমি করে ভাসিয়ে দিয়ে উদযাপন করতে হয়। সেদিন থেকে এই দিন উদযাপনের প্রতি আমার ঘেন্না আরো বেড়ে গেল। এই সংস্কৃতির সাথে একাত্মতা পোষণ করতে পারিনি। আর পারতেও চাই না কোনদিন।
আমার কাছে এই থার্টি ফার্স্ট উদযাপনের কোন গুরুত্ব নেই। আর নতুন বছরের শুরুর দিনটাও পহেলা বৈশাখের মতো গুরুত্বও বহন করে না। তাই বন্ধু-আত্মীয়-পরিজন-সহকর্মী-সহযোদ্ধা-পরিচিতজনদের জন্য শুকনো শুভেচ্ছা ছাড়া আর কিছু দেবার সামর্থ্য-সক্ষমতা এবং ইচ্ছা কোনটাই আমার নেই। তাই সকলের জন্য রইলো নতুন খ্রিস্টিয় বছরের শুকনো শুভেচ্ছা। শুভ হোক আপনাদের প্রতিটি পথ চলা নতুন বছরে। পাশাপাশি চারিদিকে চলতে থাকা নৈরাজ্য, খুন ধর্ষণসহ সকল ধরনের সহিংসতা বন্ধ করে মানুষ উদ্ভাসিত হোক মানবিক চেতনায় এই প্রত্যাশা করি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। মানবতাবোধ জাগ্রত হোক সকলের ভেতর।
সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই। শুভ নববর্ষ ২০১৭।
©somewhere in net ltd.