নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজকের এই আমি। ব্লগে আবেগ অনুভূতি শেয়ার করি যেগুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়না। আমি একজন অনুভূতির ফেরিওয়ালা......

আমিই সাইফুল

চলতে চলতে হবে পরিচয়.....

আমিই সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিউজিল্যান্ড থাকাকালীন সময়ের সবচেয়ে অপমানজনক একটা অধ্যায়। নিউজল্যান্ড টু ইউরোপ। (পর্ব ৯)

১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৭



নতুন যখন নিউজিল্যান্ডে যাই আমার আত্মীয় স্বজন বলতে কেউই ছিলোনা নিউজিল্যান্ডে। পরবর্তীতে অবশ্য অনেক পরিচিতর খোজ পাই যারা আগে থেকেই নিউজিল্যান্ডে ছিলেন। নতুন অবস্থায় সবচেয়ে বড় যেই ফাপরটাতে পড়ি তা হলো; কমিউনিটির বড় ভাইদের সম্মান করা। জ্বী, ঠিক শুনছেন! বিদেশে এসেও কিছু মানুষের নেতাগিরির স্বভাব যায়না। জেলা ভিত্তিক সংগঠন, রাজনৈতিক দলের ভিবিন্ন শাখার কমিটি, জেলা ভিত্তিক ক্রিকেট টিম আরো কত কি। দেখা গেলো এক এলাকার ৫ জন আছে নিউজিল্যান্ডে তারা মিলে একটা সংগঠন গড়ে তুলছে আর তারাই নেতা। উমক জেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেয় কমিউনিটি ভিবিন্ন অনুষ্ঠানে। অথচ সংগঠনের সদস্য সংখ্যা মোট ৫জন! তারা সবাই আবার নেতা।

প্রথম যখন গেলাম আজাইরা প্রচুর সময় ছিলো তাই কমিউনিটির ভিবিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতাম। ২য় প্রজন্মের বাঙালি বংশোদ্ভূত কিউইরা(নিউজিল্যান্ডের নাগরিক) পারফর্ম করতো আর আমরা মুগ্ধ হতাম। মাঝে মাঝেত বাপকে গালাগাল করতাম কেন তিনি আগে বিদেশে সেটেল হলেননা তাই। তিনি যদি সেটেল্ড হতেন সেক্ষেত্রে আমি ২য় প্রজন্ম হতাম আর সরাসরি নিজেকে কিউই দাবি করতাম। এখন যে অবস্থা লাত্তি গুতা খাইয়া হলেও কালো পাসপোর্ট পাওয়া লাগবে। কালো পাসপোর্ট পাওয়া নিয়ে আমাদের মনে এক ধরনের অবসেশন কাজ করে। শুধু কালো না! বরং এনআরবি হইতে না পারলে যেন জীবনটাই বৃথা এমন মনে হয়। এর কারণ কি আমি জানি না! তবে এখন মনে হয়, অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করা পাব্লিকের দেশে, পিয়ন থেকে শুরু করে সরকারি চাকরিজীবি স্যারেদের দেশে, কিংবা মহিলা হয়েও স্যার শুনতে চাওয়া আপাদের দেশে আমার ঠাই নাই।

বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে হওয়াতে এমনিতেই নিজেকে একা একা লাগে। আবার যখন দেখি পেশি শক্তি দেখিয়ে, লাঠির জোর দিয়ে অসহায়দের সম্বল হারা করা হয় তখন মনেহয় দেশের মাটি চুলোয় যাক! বিদেশে অন্তত এসব সহ্য করতে হবেনা। হয়ত একটা ছোট এপার্টমেন্টে জীবন কাটিয়ে দিবো কিন্তু কেউ অন্তত মারামারি করতে আসবেনা। দেশ নিয়ে আমার তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বিদেশি পাসপোর্টের প্রতি আলাদা একটা অবসেশন সবসময়ই কাজ করে। অন্তত ছেলে মেয়ে গুলো এই নোংরামির মধ্য দিয়ে যেতে হবেনা। এই ধরুন গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বেকারত্ব আর লাগামহীন দূর্নীতি যেই দেশটাতে। যেই দেশটায় আপনার ফ্রীডম অফ স্পীচ নাই সেই দেশটাতে আপনি আমি কেন থাকতে চাইবো??? জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আজ কিছু বললে কাল হয় কাঠমোল্লারা আমার বাড়িতে নাস্তিক বলে হামলা করবে আর নাহলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হবে। তো এরকম একটা দেশে কেন আমি আমার সন্তানকে বড় করবো???

সরি অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলাম! জনসংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট দিবো অন্য কোন সময়। তো কমিউনিটির কি যেন এক মেলা ছিলো সেদিন। হঠাৎ করে এক বড় ভাই ফোন দিলেন উনার গাড়িতে করে অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবেন। এমন অফার সাধারণত এভয়েড করতামনা নতুন অবস্থায়। সেদিনও করিনি! অনুষ্ঠানে গিয়ে যারা পরিচিত ছিলো তাদের সাথে কুশল বিনিময় করে এক পাশে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি আর চারপাশে চোখ রাখছি কোথাও কোন পরীর সাথে ফ্লার্ট করা যায় কিনা। কিন্তু, এসব অনুষ্ঠানে ২য় প্রজন্মের বাঙালি কিউই মেয়ে গুলা সাধারণত এখানকার ছাত্রদের খুব একটা পাত্তা দেয়না। তাই এসব অনুষ্ঠানে নতুন ছাত্ররা যতই টাংকি মারতে যাক ফলাফল শুন্য। অবশ্য খুব বেশি ছ্যাচড়া হতে পারলে আবার বিষয়টা ভিন্ন। নিজের চেহারা সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা থাকায় ছেচড়ামি করে আর নিজের মান ইজ্জত ডুবাই নাই। এর মধ্যে এক আন্টি এসে খোজ খবর নিলেন কিন্তু আড্ডায় ব্যাস্ত থাকায় খুব বেশি একটা পাত্তা দিলামনা। এতে তিনি চরম লেভেলের অপমানবোধ করলেন। উনি তখনকার কমিউনিটির নেতার বউ ছিলেন, আমাদের পাত্তা না দেয়াটা তিনি ভালোভাবে নেননি। ফলে পরবর্তীতে অনেক অনুষ্ঠানে উনাকে দেখলে সালাম দিলেও উনি না শোনার ভান করতেন। রাত গভীর হতে লাগলো, একটা দুটো করে পরী গুলোর পার্ক করা গাড়ি গুলো চলে যাচ্ছিলো। পার্কিং লট মোটামুটি খালি হয়ে যাচ্ছে! আর আমি মনে মনে বলছি সাইফুল, আজকেও পারলানা। তুমি মিয়া একটা হিন্দি চুল!

যাক মোটামুটি সবাই চলে যাওয়ার পর যেই ভাই গাড়িতে করে নিয়ে গিয়েছিলে তিনি এসে বললেন একটু হেল্প করতে। আমরা ৪/৫ জন যারা ছিলাম তারাও খুশি মনে হেলপ করতে চাইলাম। কিন্তু আমরা ভাবিনি উনি আসলে আমাদের দিয়ে হল রুম ক্লিন করাবেন। ড্রিংকের বোতল, ওয়ানটাইম গ্লাসময় হল রুম ক্লিন করতে ২ ঘন্টা লেগেছিল! তখনো যেই পরীরা সেখানে ছিলেন তাদের চাহনী দেখেই নিজেরে মান ইজ্জতের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু কমিউনিটির তরে সদা বিরাজমান সৈনিক হিসেবে নিজেকে জাহির করার অপচেষ্টা চালিয়ে নিজের মান ইজ্জত খানিকটা বাচানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেইটাও সম্ভব হলো না! কিছুদিন পর জানতে পারি যে ভাই আমাদের কাছে হেল্প চেয়েছিলেন তিনি আসলে ঐ হলরুম ক্লিন করার কন্ট্রাক্ট নিয়ে ছিলেন। তিনি যা করেছেন টাকার জন্যই করেছেন! তার মানে পরীরা আমাদের খাটি কামলা হিসেবেই জানলো। আর এই কাজের জন্য আমরা এক সেন্টও পাইনি। এটা ছিলো আমার নিউজিল্যান্ড থাকাকালীন সময়ের সবচেয়ে অপমানজনক একটা অধ্যায়। পরবর্তীতে লজ্জায় আর কখনো আমি পরী দেখতে যাইনি।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:১৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ইদানিং পরীদের কাণ্ড কারখানায় বাংলাদেশের মানুষও বিস্মিত। আশা করি পরবর্তীতে পরী বিষয়ক সমস্যার সমাধান হয়েছে আপনার। আগের কয়েকটা পর্ব পড়া হয় নাই। সময় পেলে পড়বো। ভালো থাকবেন।

১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৫

আমিই সাইফুল বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৩৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ছবিটার কারণে পোস্টে প্লাস দিতে পারলাম না। কেনো এমন ছবি নির্বাচন করেন। দুইনাইত পরীর অভাব আছে কি। অসংখ্য সুন্দর রুচিশীল পরীদের ছবিও নেটে আছে :(

১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৪

আমিই সাইফুল বলেছেন: আপনি বলার পর ছবিটা ভালো করে খেয়াল করলাম। অসাবধনতার জন্য দুঃখিত। চেঞ্জ করে দিয়েছি। :( :( :(

৩| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: নেন পাওনা মিটিয়ে দিলাম সাথে অনেক অনেক ধন্যবাদ
ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন

১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৫২

আমিই সাইফুল বলেছেন: ভালোবাসা নিবেন।

৪| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়তে পড়তে পাঠক হিসেবেও আমি যেন খানিকটা অপমানিত বোধ করলাম!

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৪

আমিই সাইফুল বলেছেন: সহমর্মিতার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৬

জুন বলেছেন: আমার ছেলে যখন এআইটিতে ভর্তি হলো তখন ঐখানের বাংলাদেশী এসোসিয়েশন থেকে ঢাকায় একটা মেইল এসেছিল ওর নামে। তাতে নানা রকম উপদেশ আর সাথে করে সর্ষের তেল আলু ভর্তার জন্য আর বদনা নিয়ে যেতে বলেছিল B-)
ছেলে আমাদের জিজ্ঞেস করে আব্বু বদনা কি ? ঐটা দিয়া কি হবে B:-)
ওখানে গিয়ে আমার ছেলে তাদের সাথে কোন যোগাযোগই রাখে নি কারন তারা নাকি চিপায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট খায় :-&
=p~

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৫

আমিই সাইফুল বলেছেন: :D :D :D :D

৬| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৩৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আহা অভিজ্ঞতা !

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৬

আমিই সাইফুল বলেছেন: অভিজ্ঞতা জীবনের একটা অংশ।

৭| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:১৬

ফুয়াদের বাপ বলেছেন: মজারু ঘটনা কিন্তুক তিক্ত অভিজ্ঞতা...

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৭

আমিই সাইফুল বলেছেন: যার উপর দিয়ে যায় সেই জানে এটা কতটা বিব্রতকর।

৮| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:১০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কি বাজে অভিজ্ঞতা! কমিউনিটির নামে কেউ এত নিচে নামতে পারে ভাবতে পারছি না।

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৮

আমিই সাইফুল বলেছেন: আরো অনেক বেশি নিচে এরা নামে।

৯| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০০

স্প্যানকড বলেছেন: স্বর্গে গেলেও এ জাতি দোযখ বাসীদের সাথে ধান্দা করবে স্বর্গ পাওয়াই দিবে বলে ! ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৮

আমিই সাইফুল বলেছেন: :D :D :D

১০| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৯

শোভন শামস বলেছেন: ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৮

আমিই সাইফুল বলেছেন: আপনিও।

১১| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:০১

ঢাবিয়ান বলেছেন: ঢেকি নাকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। বাঙ্গালিদের অবস্থাও তাই। বিদেশে গিয়েও এক চুল পরিবর্তন হয় না এদের চরিত্র। বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের মেম্বার হয়ে আছি কিন্ত তাদের কোন কর্মকান্ডেই যাই না । শুনেছি কঠিন পলিটিক্স সেখানে। সেই সাথে আছে কে কাকে কত হেয় করবে, কত ছোট করবে তার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা। মানী লোকের সেখানে গেলে মানহানি হবার ব্যপক সম্ভাবনা থাকায় এড়িয়ে চলি এদের।

১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৯

আমিই সাইফুল বলেছেন: কোন দেশে আছেন?

১২| ১৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫১

কামাল১৮ বলেছেন: আমি একবার যেখানে বাংলাদেশী বেশি থাকে ঐ এলাকায় গিয়েছিলাম।মুদি দোকানে ঢুকে দেথি প্রচুর তেলা পোকা ও ইঁদুর ।কয়েক দিন পর দেখি আমাদে বাসায় তেলা পোকা।অনেক সংগ্রাম করে তেলা পোকা দুর করেছি।তার পর থেকে ঐদিকে বাজার করা বাদ।চা খেতে চায়ের দোকানে ঢুকে অবাক।লীগ বিএনপি তুমুল তর্ক।অথচ তারা বহু দিন বিদেশে থাকে।ভালোলাগলো দেশকে ভুলে নাই দেখে।

১৮ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:১০

আমিই সাইফুল বলেছেন: ;) ;) ;) ;) ;)

১৩| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৪:১১

সোহানী বলেছেন: হাহাহা... দেখলেন মিয়া ভাই কেমন বাঙ্গালী বুদ্ধি :P

শুনেন ভাই, দুইখান বাঙ্গালী হইলেই একটা সংগঠন আর পাঁচখান হইলেই সেইটা ভাইগা তিন ভাগ B-)) । আমি এর ভিত্রে নাই। সরকারী ভাতা খাইয়া বাঙ্গালী এরিয়ায় পান্জাবী পইরা ঘুরে আর আওয়ামী বিন্পি করে। .....এক'শ হাত দূরে!!

১৮ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:১১

আমিই সাইফুল বলেছেন: আপনি সম্ভবত লন্ডনের কথা বলছেন ;) ;) ;)

১৪| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:০২

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: খুবই পরিচিত চিত্র !
এদের থেকে আপনি ও আপনার পরিবার সহস্র যোজন দূরে থাকিবেন।

১৮ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:১২

আমিই সাইফুল বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.