নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজকের এই আমি। ব্লগে আবেগ অনুভূতি শেয়ার করি যেগুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়না। আমি একজন অনুভূতির ফেরিওয়ালা......

আমিই সাইফুল

চলতে চলতে হবে পরিচয়.....

আমিই সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দেখা সংসার এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা। নিউজল্যান্ড টু ইউরোপ (পর্ব - ১০)

১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:৪৩



"সম্ভবত আমরা প্রবাসীরাই বউদের সবচেয়ে বেশি সন্দেহ করি" -অরিত্র দাদা বললেন। অরিত্র রায় চৌধুরী মানে অরিত্র দাদা হচ্ছেন কলকাতার বনেদি পরিবারের সন্তান। রাজ পরিবারের সন্তান সত্যিকার অর্থেই। উইকিতে ওনার পরিবার সম্পর্কে পড়েছি, আর উনার কলকাতার বন্ধুরাও এই একটা কারনে উনাকে একটূ আলাদা প্রায়োরিটির চোখেই দেখতান। উনার সাথে পরিচয় হয় এক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে! উনি সেখানকার ম্যানেজার ছিলেন। আর আমি প্রায়ই ওখানে বাজার করতে যেতাম। ওনার কথাবার্তা আচার আচরন ছিলো এক কথায় অমায়ীক। ওনার বাংলাদেশি বন্ধুর অভাব নেই, বলতে গেলে বাঙলাদেশিদের সাথেই উনার চলাফেরা বেশি। উনার ব্যাবহারের কারনে হয়ত উনার বন্ধুর সংখ্যা অনেক বেশি কিন্তু উনার খারাপ দিক হলো আপনি কাউকে খুন করতে চাইলে উনি তাতেও আপনাকে না করবেননা। সম্ভবত এই একটা কারনেই উনাকে আমার ভালো লাগতোনা। কিন্তু দেখলে হায় হ্যালো হতো।

শুভ্রা মুখার্জী উনার ওয়াইফ এখানকার একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন। উনি আইটির ছাত্রী ছিলেন আমারই বিশ্ববিদ্যালয়ে। সিনিয়র হিসেবে উনাকে সম্মান করতাম, আর আমার সিভিটাও দিয়েছিলাম যদি কোনভাবে আমার একটা ইন্টারভিউ ম্যানেজ করে দেয় উনার রেফারেন্সে। শুভ্রা দি ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টভাষী, ভুলকে ভুল আর খারাপকে খারাপ বলতে উনার জুড়ি নেই। এই জন্যই অরিত্র দা' কে অপছন্দ করলেও উনার ওয়াইফকে আমার যথেষ্ট ভালো লাগতো। উনার ফেসবুক প্রোফাইল দেখলেই বোঝা যায় নারী পুরুষের ডেস্ক্রিমিনেশন ঊনার পছন্দ না। মুখার্জী বংশ সম্ভবত অনেক উচ্চ বংশীয় পদবি তাই উনার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনচেতা ছিলেন। উনাদের একটা মেয়েও আছে যার নাম এখন আমি মনে করতে পারছিনা। সদ্য নিউজিল্যান্ডের রেসিডেন্সি পাওয়া পরিবারটি বলতে গেলে পরিচিতই ছিলো।

অরিত্র দা'কে আমার সত্যিকার অর্থেই ভালো মানুষ মনে হয়। কিন্তু শুভ্রা দি'র অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কিংবা অতিরঞ্জিত নারীবাদী মনোভাব কিংবা ডেম কেয়ার জীবন যাপন অরিত্রদার হয়ত পছন্দ না। বিষয়টা এমন না যে উনি নারী স্বাধীনতার বিপক্ষে, কিন্তু উনি হয়ত চাইতেন যেকোন সিদ্ধান্ত দুজনের পক্ষ থেকেই আসুক। যেমন ধরুন একবার আমাদের ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হলো তো আমরা শুভ্রা দি' কে জানালাম উনি সাথে সাথেই রাজি হয়ে গেলেন। ওখানে আরো কয়েকজন আপু ছিলেন যারা উনাদের হাজব্যন্ডকে কল দিয়ে জানালেন উনার সময় হবে কিনা? বা হাজব্যন্ড যেতে না পারলে উনি একা যাবে কিনা। অনেকেই একা গিয়েছেন একথা মিথ্যে নয়, কিন্তু শুভ্রা দি'র একা যাওয়াটা এভনরমাল ছিলো হয়ত। অরিত্রদার ভ্যাকেশন চলছিলো, উনি হয়ত চেয়েছিলেন শুভ্রা উনাকে যাওয়ার জন্য বলুক অন্তত। কিন্তু শুভ্রা দি যাওয়ার কথাত বললেনই না বরং এই আয়োজনটা যে হলো অরিত্র দা জানতোইনা। আমরা ভেবেছিলাম শুভ্রা উনাকে বলবে তাই আমরা আর উনাকে জানাইনি। এরকম ছোট ছোট বিষয়ে উনাদের দূরত্ব বুঝা যেতো।

একদিন হুট করে অরিত্র দা' আমায় জিজ্ঞেস করে বসলেন এই তুইত আইটিতে পড়িস আমার একটা সিক্রেট কাজ করে দিতে পারবি? আমি বললাম কি কাজ! উনি তখন উনার ওয়াইফের ল্যাপটপ আর মোবাইল মনিটরিং করতে চাইলেন। আমি শুনে পুরাই শকড। আমি জানি শুভ্রা দি' অনেক ভালো ছাত্রী ছিলেন আমার ডিপার্ট্মেন্টের! বাজারে যেসব কী-লগারের মত সস্তা সফটওয়্যার পাওয়া যায় এগুলো ইনিস্টল করলে উনার বুঝতে দু মিনিটও লাগবেনা। আমি না করে দিলাম, তবে হ্যা অনেক হাজব্যান্ডই তখনকার সময়ে আমাদের দিয়ে বউয়ের ফোনে স্পায়িং সফটওয়্যার ইনিস্টল করিয়ে নিতো। স্পাইহিউম্যান এর মত ভিবিন্ন ক্লাউড ভিত্তিক স্পাইং সফটওয়ারের সাবস্ক্রিপশন ১০ ডলার হলেও উনারা ১০০/২০০ ডলার দিতেন শুধু সফটওয়্যার ইনস্টল আর কিভাবে ইউজ করতে হয় সেটা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।

আমি জানিনা অরিত্র দা' পরে অন্য কাউকে দিয়ে শুভ্রার ফোনে কোন স্পাইং করেছিলো কিনা। তবে বেশ কিছুদিন পর উনাদের মাঝে ছাড়া ছাড়ি হয়ে যায়। ফেসবুকে উনাদের ছবি দেখি, অরিত্র দা' নতুন বিয়ে করেছেন। ফেসবুক প্রোফাইল দেখে বোঝা যায় যথেষ্ট ভালো আছেন। যদিও সোশ্যাল মিডীয়া দিয়ে কাউকে বিচার করা ঠিক না। কিন্তু উনার আগের এক্টিভিটি আর এখনকার এক্টিভিটি অনেক ফাড়াক। বাসায় গিয়েছিলাম দু একবার দেখে যতটা মনে হলো উনার ওয়াইফ উনার প্রতি যথেষ্ট কেয়ারিং। দুজনেই কাজ করে তাও কাজ শেষে দুজনে একসাথে রান্না করে, একসাথে খায়। ইউটিউবে নিজেদের শর্ট ভিডিও শেয়ার করে দেখে ভালোই লাগে। শুভ্রা দি'র সাথে থাকা অবস্থায় এমন কখনো দেখিনি। বরং এমনো দেখেছি আমরা সবাই টিভি দেখছি শুভ্রা দি কাজ থেকে এসে বললেন, অরিত্র আমি বাইরে খেয়ে এসেছি। রান্না করে খেয়ে নিও আর নাহয় ম্যাক অর্ডার করে দাও। অরিত্র দা একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, নারীবাদীদের সাথে আর যাইহোক সংসার করা যায়না।

উনাদের ছাড়াছাড়ির পর শুভ্রা দি' অন্য শহরে মুভ করেছেন। উনার সোশ্যাল এক্টিভিটী দেখলেও মনে হয় উনি সুখেই আছেন। উইকেন্ডে ওয়াইনের ছবি, কিংবা নতুন নতুন রান্নার ছবি শেয়ার করেন স্টোরিতে। উনি একজনের সাথে লিভ ইনে আছেন এবং ভালোই আছেন। উনারা দুজনেই দুজনের জীবনে ভালো আছেন কিন্তু উনাদের মেয়েটা কতটুকু ভালো আছেন আমার জানা নেই।

বিঃদ্রঃ আমি এই পোস্টে কোন নারীবাদীকে খোচা দিচ্ছিনা। 'নারীবাদীদের সাথে আর যাইহোক সংসার করা যায়না' - অরিত্র দা'র এই স্টেটমেন্টটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এটা জাস্ট একটা স্টেটমেন্ট যা এই পোস্টের বিষয়বস্তু না।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:২৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: খুবই দুঃখজনক ঘটনা।

১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৩০

আমিই সাইফুল বলেছেন: :(( :(( :(( :(( :((

২| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:০৬

হাবিব বলেছেন:





এরকম সংসার হয়তো অনেক পাওয়া যাবে যেখানে স্ত্রী স্বামীর প্রতি কিংবা স্বামী স্ত্রীর প্রতি উদাসীন। এমন স্ত্রী নিয়ে আর যাই হোক সংসার চলে না। অরিত্র দাদা ঠিক কাজটি করেছেন। তবে উনি স্পাই এর ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেটা সঠিক ছিল না। আমি মনে করি গুপ্তচরবৃত্তি কোন সমাধান নয়। এক সাথে থাকা সম্ভব না হলে আলাদা হয়ে যাওয়ায় উত্তম।

ভালো লাগলো আজকের ব্লগটি। ভালো থাকবেন সাইফুল ভাই।

১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:২৫

আমিই সাইফুল বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার।

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪২

কামাল১৮ বলেছেন: বেশি কিছু আশা করা ভুল।মিল মিশ নাহলে ছাড়াছাড়িই উত্তম।জীবন একটাই

১৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৬

আমিই সাইফুল বলেছেন: চাইলেই কি ছাড়া যায়? অনেক ক্ষেত্রে এটা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে ওঠে।

৪| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

সোহানী বলেছেন: এখানে সুক্ষভাবে ও এককভাবে ভদ্রমহিলাটিকে যেভাবে দোষারোপ করেছেন ডিভোর্সের জন্য কিংবা সংসার অসুখীর জন্য তা আমাদের আর সব পুরুষের মানসিকতাকেই রিপ্রেজেন্ট করে। এবং আরো সুক্ষভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন এ ধরনের মহিলাকে ছেড়ে ভদ্রলোক কত সুখী আছে।...............

শুনেন সাইফুল সাহেব, যে ভদ্রলোক নিজের বউ এর পিছনে স্পাইগিরি করে তার সাথে আর যাই হোক সংসার করা যায় না। এর মানে এ ভদ্রলোক তার বউকে বিশ্বাস করতেন না। আপনি এতো বড় দোষটি দেখলেন না কিন্তু কোথায় যাবে তার আগে স্বামীর পারমিশান নেইনি সেটাকে বড় করে দেখছেন।

সত্যিই সেলুকাস বিচিত্র এ পুরুষকূলের মানসিকতা।

যাইহোক, আপনার লিখা পড়ে এ ধরনের স্পাইগিরির খোঁজ জানলাম। (আর স্বামীদের নতুন দিক এর খোঁজও জানলাম)।

আপনাকে ফলো করছি স্বামীদের নিয়ে আরো কিছু জানার জন্য কারন সংসারের দুই যুগ পার করেও এরকম কাউকে পাইনি চারপাশে এ পর্যন্ত।

১৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৩

আমিই সাইফুল বলেছেন: আপু আমি কাউকেই দোষারোপ করিনি। বলেছি দুজনেই আলাদা ভালো আছে, এখানে অরিত্র দারও ভুল থাকতে পারে। ক৮ংবা তাদের মধ্যে এমন কিছু হয়েছে যেটা আদৌ আমি জানিনা। কিংবা সন্তানের কথা ভেবে ওনারাও কোন বিষয় সামনে আনেননি। এটা মিউচুয়াল ডিসিশনস ছিলো। আমি কাউকেই এখানে জাজ করিনি, ওনারা দুজনেই দুজনের জায়গা থেকে ঠিক। আর এই স্পাইগিরি এমন কঠিন কিছু না! যেকেউ আপনার মোবাইল ৫ মিনিটের জন্য হাতে পেলে এমন সফটওয়্যার ইনস্টল করে দিতে পারে যাতে আপনার সব তথ্য সে দেখতে পাবে।

১৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৩

আমিই সাইফুল বলেছেন: আর বার্মিজ নেয়ার ব্যাপারেও আমি কোন জাজ করিনি। বলেছি অরিত্র দার ভ্যাকেশন চলছিলো উনিও চেয়েছিলেন এটেন্ড করতে কিন্তু ওনাকে জানানোই হয়নি। আমরা জানাইনি ধরে নিয়েছি শুভ্রা তো বলবেই। মোট কথা এখানে কারো ন্যায় অন্যায়ের কথা হচ্ছেনা। আমি জাস্ট আমার দেখা ঘটনা শেয়ার করলাম। ফলো তে রাখার জন্য ধন্যবাদ আপু।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:২০

কামাল১৮ বলেছেন: সেটা বিদেশে।দেশে যে কয় টাকা দিয়ে তার যৌনাঙ্গ হালাল করে সেই কয় টাকা হাতে ধরিয়ে তাকে তালাক বললেই সকল ঝামেলা শেষ , যেটা অমানবিক।কোরান এবং হাদিস তার প্রমান।বললে হাদিস দেখাবো।সকল ধর্মই নারীকে চরম অপমান করেছে।

৬| ১৯ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:২৪

কামাল১৮ বলেছেন: সেটা বিদেশে।দেশে যে কয় টাকা দিয়ে তার যৌনাঙ্গ হালাল করে সেই কয় টাকা হাতে ধরিয়ে তাকে তালাক বললেই সকল ঝামেলা শেষ , যেটা অমানবিক।কোরান এবং হাদিস তার প্রমান।বললে হাদিস দেখাবো।সকল ধর্মই নারীকে চরম অপমান করেছেে।

২০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:১৮

আমিই সাইফুল বলেছেন: বিদেশে ছাড়তে হলে সব কিছুর অর্ধেক দিতে হয়। ব্যাংক ব্যালেন্স থেকে শুরু করে সব কিছু।

৭| ১৯ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৫৩

মেহবুবা বলেছেন: বনেদী এবং রাজ পরিবারের সন্তান অরিত্র! কিছু নতুনত্ব দেখছি না।

২০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:১৬

আমিই সাইফুল বলেছেন: গল্পকে নতুনত্ব জুড়ে দিয়ে নিজের মত করে রঙ্গীন করে লেখা যায়। আমার লেখাটা কোন গল্প না আপু। নিজের দেখা ঘটনা এটা।

৮| ২২ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০৩

নিয়াজ মোর্শেদ বলেছেন: Good story.

৯| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৫৩

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: তার প্রসঙ্গে আরো জানতে চাই। আমি সিলেটের এক এমন জমিদার পরিবারের সন্তানের সাথে অনেক বছর বিদেশে ছিলাম, আমাদের বন্ধুত্ব ছিল। তার অভিজ্ঞতা শুনতাম।

২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৮

আমিই সাইফুল বলেছেন: অরিত্র দা রায় বংশের এক রাজার ৪র্থ জেনারেশন। এখন আর রাজা নেই কিন্তু তাদের ভাবগম্ভীর্য এখনো আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.