নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন ইউরোপ প্রবাসী, জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পার করে আজকের এই আমি। ব্লগে আবেগ অনুভূতি শেয়ার করি যেগুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়না। আমি একজন অনুভূতির ফেরিওয়ালা......

আমিই সাইফুল

চলতে চলতে হবে পরিচয়.....

আমিই সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ডাংকি" যেন আমার, তাহার, আমাদের গল্প!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫৫

আমার এক বছর বয়সী ছেলেটার জন্মের পর থেকে খুব মনোযোগ দিয়ে কোন মুভি দেখা হয়নি। ছেলেটার সাথে খেলাদুলা করা আর নিজের কাজ করে মুভি দেখার মত টাইম হয়ে ওঠেনা। তারপরও আজ ডাংকি দেখে ফেললাম এক বসায়। মাঝে ছেলে আর ছেলের মা অনেকবার মনযোগ ভাঙার চেষ্টা করলেও পারেনি।

মুভিটা দেখে আমার কিছু পুরোনো স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। ২০১৪ সালে সদ্য ইন্টার পাস করা আমাকে আব্বু ডেকে নিয়ে তার অসহায়ত্বের কথা শোনালেন। জানালেন তার মাথায় ডজন খানেক রাজনৈতিক মামলা। তিনি অর্ধকোটি টাকা ঋণগ্রস্ত, বিরোধী দলের মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনের আগেই তার এক পা ভেঙে অর্ধ পঙ্গু করে দেয়া হয়।

তিনি তার ব্যার্থতা মেনে নিলেন। বললেন, আমি যতই পড়াশোনা করিনা কেন অন্তত বাংলাদেশের সরকারি কোন চাকুরীতে ওনার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে আমার জায়গা হবেনা। তাই উনি চান আমি বিদেশে চলে যাই। ধার দেনা এবং কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতায় উনি আমার উন্নত বিশ্বে যাওয়ার ব্যায় ভার ব্যাবস্থা করবেন।

আমার এখনো মনে আছে আমাদের বেড়ির পাড়ে মাচার উপর বাপ বেটার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আমি দেশ ছাড়বো। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অসহায় বাবা আমাকে বললেন, প্রয়োজনে কোন বিদেশিনী কে বিয়ে করে যেন বিদেশে স্যাটেল হয়ে যাই। উনার ব্যার্থতাযর দ্বায় স্বীকার করে, উনি এটুকু মেনে নিবেন।

নিউজিল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসা এপ্রুভ হয় সেদিন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষটি ছিলো আমার বাবা। যেদিন, বিমান বন্দরে বাবা বিদায় দিয়েছিলো। বলেছিলো, হয়ত আর কোনদিন দেখা হবেনা।

২০১৮ সালে ব্যাচেলর শেষে একবার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আবারও জাতীয় নির্বাচনে নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের মত অত্যাচারীত হয়েছি। তাই ফাইনালি বিদেশে স্যাটেল করার সিদ্ধান্ত নেই। এখনতো বিদেশের নাগরিকত্বই গ্রহণ করেছি।

২০১৫ থেকে এখন পর্যন্ত একবারই দেশে গিয়েছি এবং ৪৬ দিন দেশে ছিলাম। তাও পুলিশের ভয়ে ফেরারি আসামির মত নতুন বউ নিয়ে ভিবিন্ন আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়ে থাকতে হয়েছে।

মুভির চরিত্র গুলোত শেষ বয়সে নিজ দেশে ফিরতে পেরেছিলো। আর আমার গল্পে উল্টো! আমি বাবা,মা, বোন, বউ সবাইকে বিদেশে স্যাটেল করেছি। আর একমাত্র ছেলেত জন্ম সূত্রেই ইউরোপীয়ান।

তাহলে আমি কি ডংকিদের মত কখনো নির্ভয়ে দেশে যেতে পারবো??? সেই সুযোগটা কি দেশের হর্তাকর্তারা আমাদের দিবেন? যেই ঘরটা ছেড়ে এসেছি, সেই ঘরটায়বার কোনদিন কি আরেকটা নির্ভয় রাত ঘুমাতে পারবো?

মজার ব্যাপার হলো, আমার বাবা ইউরোপে অবস্থান করলেও এখনো এলাকার যেকোনো রাজনৈতিক মামলায় আমার বাবা আসামি হয়।

ডাংকিঃ
IMDB: 7.8
Personal retting: 9

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৩৬

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ডাংকির সিনেমা রিভিউ লেখাটি দেখে আসতে পারেন ।
...............................................................................
আপনার অভিজ্ঞতার কথা বলুন ।
জানলাম যে, রাজনীতি ও ডাংকির কথা মনে করিয়ে দিবে ।

২| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২২

বিজন রয় বলেছেন: ডাংকি সিনেমা কি এমন কি?
সবাই খুব ভালো বলছে।

৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মরা মানুষই আসামী হয়, আপনার বাপ তো জীবিত

৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.