![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা'র মিরপুর থেকে মাত্র ৪.৫ কি.মি (প্রায়) দূরে,তুরাগ নদী।ব্ৰহ্মপুত্ৰ থেকে বংশী নদী হয়ে বুড়িগঙ্গার জন্ম,আর বুড়িগঙ্গা থেকেই তুরাগ নদীর জন্ম।চীন,ভারত এবং বাংলাদেশ এই তিন দেশেই এর যাতায়াত বিভিন্ন নামে,বিভিন্ন ভাবে। মিরপুর থেকে অনেকভাবেই যাওয়া যায়।ইস্টার্নহাউজিং থেকে নৌকায় করে নবাবেরবাগ ঘাঁট হয়ে দিয়াবাড়ী পর্যন্ত এসেছিলাম। তুরাগ নাকি,বুড়িগঙ্গা'র সাথে মিলিত হয়েছে কিছুদূরে গিয়ে।আসল কথায় আসি,দশ টাকার ভাড়ায় যে এতো শান্তির আয়োজন,এই মাঝি ভাই করে রেখেছেন!কণ্ঠনালী ধরে বলছি,কেহ না গিয়ে থাকলে বুঝতেই পারবেন না। ভরা মৌসমে না জানি,বেচারি'র যৌবনের কি ঢলটাই না ছিলো! :*
ফুছকা একটা হেল্পারের সাথে কথা বলে ভাড়া ঠিক করেই উঠে পড়লাম,ইঞ্জিনের নৌকায়। সাথে অনেক লোকজন ছিলো,
তবে আমরা তিনজন ছাড়া,আমাদের কাছে বাকী সবাই অপরিচিত ছিলো।'উপরে ফিট-ফাট,ভিতরে সদরঘাঁট' অবস্থার মতোই,করুণ দশা এই নদীর।মনে হয় যেন,অনেক গুলো দীঘি পাশাপাশি কেটে-কেটে রেখেছে,ময়লা ফেলে ভরাট করার জন্য।
কার যেনো বসত-ভিটা বাঁধতে,দয়ালের দুনীয়ায় মাটির আকাল পড়ে গেছে।যাই হউক,নদী বলে কথা!যার ধর্মই মনকে নির্মল করে দেয়া।আপ্লুত আবেগে অজানায়
ছুঁড়ে ফেলা।আমিও আর তার বাহিরের কেও না।বাচ্চাদের মতো পানি দেখলেই খুশি,
তা যেমনি হউক।রওনা হতেই,বাম পাশে এলোপাতারি কিছু ত্যাক্ত-পরিত্যাক্ত কিংবা কোনকারনে আঁটকে থাকা কিছু ছোট-ছোট নৌযানের দেখা পেলাম। এই মৃত প্রায় নদীতেও কেও পণ্য পরিবহণের সুচিন্তা করে থাকেন বলে সত্যিই আমি আনন্দিত। প্রথমেইতো যান চলাচলের রাস্তার জায়গা দরকার,পরেইতো যানের ব্যাপার।নৌযানে করে মাল পাঠাতে চাইলে ঠিকই জায়গা একটা হবেই।কিছুদূরে যাওয়ার পর,মাথাটাই কেমন যেন করলো।হঠাৎ করে,জ্ঞান পেলাম জীবনানন্দ একারনেই কবি।গুনে শেষ করতে পারি নাই,অনেকগুলো হাঁস!ঝাকে-ঝাকে।যেন তারা জানে,আমি আজ তাদের দেখতে এসেছি বলে,কেও আজ খোয়ারে কিংবা আবাসে নেই।সবাই গোসল করে,মেহমানকে বাংলার রুপ দেখাতে নিয়ে যাবে। সময় হয়ে উঠে নাই,সত্যি নৌকাটা কয়েক ঘণ্টার জন্য ভাঁড়া করে উঠলেও এই বুনো হাঁসগুলোর সাথে কিছুক্ষণ মেতে থাকতাম।
এমন লাগে কেন?বুঝি না কিছুই।দূর,আমার মন খারাপ থাকলেই ভালো।কি দরকার
মন এতো ভালো থাকার। এতো অনুভব,অথচ প্রকাশ করার নেই কিছুই।যা প্রকাশ করে,আকাশ-বাতাস মাতিয়ে তুলবো ভেবেছি,তার প্রকাশও সামান্যই।
ডান দিকে কিছু টুকরো-টুকরো পাথরের মতো দেখা যায়।ভালোই লাগছিলো।এতো কাছে,এতো কিছু। এইবার হঠাৎ করে,ঠিক আমার গাঁ ঘেঁসে আমাদেরটার মতো আরেকটা ইঞ্জিনের নৌকা গেলো। হাঁয়!তাদের নৌকা ভ্রমণের আয়োজনটা,আসলে ছোটবেলার 'নৌকা ভ্রমণ' রচনা লিখার মতোই। আমাদের ভ্রমণটা সে তুলনায়,শতভাগ আনাড়ি।যৌবনের ধর্মকে একসময় নদীর নিরবধি বয়ে চলার সাথেও তুলনা করা হতো। আজকাল,মানুষও চায় নদীও তাদের মতোই নির্বাক শকুন হয়ে যাক।অথচ,এ নদীগুলোই একসময় কথা বলতো নারীর মতো। গানে কতো উল্লেখ আছে,তাদের কথা।হ্যাঁ,বলছিলাম যৌবনের ধর্ম নিয়ে।যৌবন যেথায় বিফল,শিশু'র সেথায় শুরু মাত্র। ছোট একটা তিন-চার বৎসরের ছেলে,নদীর দু'ধারে মরা কাশফুল আর সবুজের আবরন দেখে হুট করে হাতে তালি দিয়ে উঠলো। তার তালিতে,এইবার একই তরীর ভাসমান সবার মুখেই হাঁসি।সে হাঁসি দেখে,সে অবুঝ বাচ্চা ভয় পেয়ে গেলো। হাতের কাছের ছোট একটা পানির বোতল ছুঁড়ে ফেললো।এবার সবার হাঁসি বন্ধ।বাচ্চাটাও স্বাভাবিক।পুরো ভ্রমনে,আমি এই একমাত্র ঘটনার নাম দিয়েছি, 'তুরাগের হাঁসি-কান্না'।এক/দুই ঘণ্টার এরকম ভ্রমণ থেকে,এর চেয়ে আর বেশি কি ঘটনা আশা করা যায়।ছেলেটা যেন আমাদের হাঁসি সহ্য করতে পারছিলো না।ও হয়তো ভেবেছে,আমি তুরাগের মতো। ওর সাদা কাশফুল এখন নেই,তো কি হয়েছে!মৃত বলে,সে কি ফুল নয়কো?দু'ধার সবুজে বাঁধা আমিইতো হাসবো।আমার সাথে তুরাগের কোন হিংসে তো নেই,ওর সাথে আমার আপোষ।যতদিন সে বয়ে যাবে,আমি তাকে বইতে দিবো।তুরাগের সাথে যাদের মনের মিল নেই,যাদের মাথায় তুরাগ'কে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র,তারা তুরাগের রুপ দেখে হাসবে কেন?আচ্ছা,ভাবলাম আমার হাত তালি দেখেই যদি,ওরা হেঁসে থাকে!তবে,আমার হাঁসি,তাতে তুরাগের কোনই কৃতিত্ব কি নেইকো?চুপ!হাঁসি থামা।আমি সইতে পারি না আর,আমার গাঁয়ে কতো ক্ষত,কতো জঞ্জাল,কতো বিষাক্ত পদার্থ! আমার বুকে কতো আঁচর!আসুক,এবার বর্ষা!ওকে,বলবো এ সভ্যতা আমি চাই নাকো।চলোনা,দুজনে মিলে ভাসিয়ে দেই,এই সভ্যতার যতো নির্মাণ।আমাদের মাঝি গান গাইতে পারে কি না,জানি না।তবে পেরে থাকলেও হয়তো এখন আর লিরিক্স মনে রাখতে পারে না হয়তো।কিভাবে পারবে?পরিবেশ নেই,গানের কথা মাথায় রাখার।রুক্ষ গলায় বলে উঠলো,এই নবাবেরবাগ!নামেন,নামেন। আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।তার পরের ঘাটে মাঝি ভাই,যখন নোঙর ফেলবে আমাদেরও নামতে হবে।কেহই আর বসে থাকতে পারবে না আর।একসময়,মাঝি ভাই, তার হেল্পারও সন্ধ্যা হলে নেমে যাবেন,বাড়ি যাবেন।
ভাবতে ভাবতেই দেখলাম একটা মধ্যবয়স্ক লোক,কালো করে,নামটা ঠিক জানি না..তবে,এক লাঠি আর চারটা চিকন-পাতলা,নাতিদীর্ঘ বাঁশের কাঠি'র ফ্রেমে কি অদ্ভুত প্রক্রিয়ায় মাছ ধরছে।আমি তাকে মাছ ধরতে দেখি নাই,তবে তার মাছের ঠুলীটা নাড়া দেয়ায় অনুমান করেছিলাম।আরেকটু পর,নৌকা ভর্তি কচুরিপানা নিয়ে,এক বৃদ্ধ ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যেতে দেখলাম।আমাদের নৌকার ফেলা আসা পথের ডেউগুলো পানিতে আঁচড়াতে থাকলো।আমি অপলক তাকিয়ে রইলাম।দিয়াবাড়ি'র ঘাঁটে আসতেই আবারও মাঝি ভাই ডাকলো,নামেন!নামেন!সন্ধ্যা হয়ে পড়ছে!বাসায় যামু।
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৪
মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন বলেছেন: কামরুল ভাই,নিচের লিংকটাতে একটু ঘুরে আসুন..
ছবি,গল্প,কবিতা কিংবা তথ্য সবই পাবেন।
(http://goo.gl/rrRTTR)
উপরের লিংকটা কপি করে,
আপনার ব্রাউজারের অ্যাড্রেসবারে পেস্ট অ্যান্ড গো করুণ।
ধন্যবাদ ভাই,শুভ রাত্রি।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০২
কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: ছবি ছাড়া মাইনাস