![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূঁই-চাঁপাতে ভরে গেছে শিউলী গাছের তল,
মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল |
ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে
বুলবুলিটা লুকিয়ে থাকে,
উড়িয়ে তুমি দিও না মা ছিঁড়তে গিয়ে ফল,
দিদি যখন শুনবে এসে বলবি কি মা বল্ |'
যতীন্দ্রমোহন বাগচী'র এই কবিতাটা পড়তে পড়তে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
এই ছোট শিশুটির পরম সৌভাগ্য যে,কোন না কোন সময় সে তার দিদিকে দেখতে পেরেছে।
এবং দিদির প্রয়াণে,সে তার সমস্ত ব্যাথার সঞ্চালন মায়ের কাছে প্রকাশ করছে।
আমার সৌভাগ্য হয়নি,আমার দিদিকে দেখার।সেই ছোট বেলায় পৃথিবীতে এসেই,আবার চলেও গেছেন সাথে সাথে।
পারিবারিক সূত্রে শুনেছিলাম,আমার দাদী ওনার জন্মের পরে নাভী কাটতে ভুল করেছেন
ও সময়ে নাভী কাটতে বাঁশের লীলা (ধারালো ব্লেড-এর পরিবর্তে) ব্যাবহৃত হতো
যা জীবাণু সংক্রামক ছিলো। সে ভুলেই,আসার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই আবার পৃথিবীর মায়া ছেঁড়ে চলে গেলেন।
অনেকটাই কাজলা দিদি'র মতো,আমার দিদি'র কবরটাও
আমাদের বাড়ির পাশের ছোট একটা পুকুর পাঁড়েই দেয়া হয়েছে।
তবে,কাজলা দিদির মতো এতো সৌভাগ্য হয়তো আমার দিদিরও হয়নি যে
তার কবরের চারপাশটা শিউলি কিংবা চাঁপা'র ঘ্রানে-ঘ্রানে ভরে থাকবে।
জোনাকিরা নিঃস্বার্থে আলো বিলিয়ে যাবে!
দিদি তুমি আমার কোলের কাছের ছিলে না,তোমাকে আমি বাঁশ বাগানের উপরেও দেখিনি।
আমি কখনো,তোমাকে খেতে আসার জন্য ডাকি নি।
আমার কোন উপলক্ষ,তোমার জন্য ফেলে রাখিনি।
শুধু,প্রতি ঈদ/উৎযাপনগুলোতে মসজিদের হুজুর কিংবা মুয়াজ্জিনকে সাথে নিয়ে
জিয়ারত করে আসি।আর মাঝে মাঝে মনে পড়লেই,মনকে বলি
পৃথিবীর সব ভাইদের আপুরা মাটির উপরে থাকে না।
কিছু কিছু ভাই থাকে আপু ছাড়া,কিছু কিছু মা-বাবা থাকে,যারা শুধু ছেলেদের বাবা-মা হয়।
আপু বিশ্বাস করবি,ছোট বেলায় কতো ভাবতাম কবে আমাদের আরেকটা আপু আসবে।
ভাইদের সাথে শুধু ঝগড়াই হয়,আপুরা হয়তো অনেক ভালো।
আরেকটু বড় হয়ে,কতোজনকে দেখেছি নানাবাড়ী'র সাথে
আরেকটা বর্ধিত বাড়ীতে বেড়াতে যায় যার নাম,ভুভু'র বাড়ী।
এ বর্ধিত বাড়ী,দেখা হয়নি কোনদিন।অনেক ইচ্ছে ছিলো,তুই বড় হবি,তোর বিয়ে হবে!
তোর জামাই'র বাড়ীতে অনিয়ন্ত্রিত দস্যিপনা করে বেড়াবো।বালক মনের কতো আশা আজও অপূর্ণ।
দাদী,আমরা এই শীতে মাটির উপরে থেকেই কেমন কষ্ট হচ্ছে,তুই জানি না কেমন আছিস।
বিশ্বাস করবি দাদী,আজই প্রথম তোর ভাইটা বুঝতে শিখলো,
প্রিয় হারা কান্না,ইচ্ছে করে আসে না।চোখও যে আপুকে আমার চেয়ে ঢের বেশীই ভালবাসে।
আমি না বললেও ও কাদবেই।
এই ক্ষণজন্মা মানুষটারও একটা নাম রাখা হয়েছিল,বেহেস্তের মহিলাদের সর্দানীর নামে 'আয়েশা'।
আয়েশা দিদি আমি তোর কাছে একসময় আসবোই।
আমিও তোর মতো একসময় লুকিয়ে যাবো।
তুই ভালো থাক।আর আমায় অন্তত আকাশের ঠিকানায় হলেও একটা চিঠি পাঠাস।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৬
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কথামালায় ভালোলাগা ভ্রাতা।
ভালো থাকবেন