নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে চাই না, তবু লিখে যাই..

মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন

লিখতে চাই না, তবু লিখে যাই..

মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

‎মুরুব্বী আপনাকে বলছি‬

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

প্রথম কিস্তিঃ
আমার বয়সী অনেকেই আজকাল শুনে থাকে- হুম,'ইয়ং এনার্জিটিক' তোমরা পাশে থাকলে অনেক কিছুই হবে।কম-বেশী ৫০০ থানার পরিবর্তন তোমাদের দ্বারাই সম্ভব।অথচ বিকৃত,ভুল পরিবেশে যাদের জন্ম,আমরা তারাই।

ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের মুরুব্বীদের তার মেয়েটা ফর্সা হওয়া নিয়ে খুব মাথা ব্যাথা থাকে,যৌতুক যেন কম দেয়া লাগে।তার মানে শুধু ঐ মুরুব্বীই নন,আরও অনেকেই আছেন যারা কালো মেয়ের ভাই,বাপ,মা কিংবা বর হতে আগ্রহী নন।টাকা পেলে ভেবে দেখবেন হয়তো।এক্ষেত্রে,ছেলেটা যেমনই হয় চালিয়ে নেয়া যাবে,তার ফর্সা হওয়া না হওয়া নিয়ে বিয়ের যোগ্যতা,অযোগ্যতা বিবেচিত হয় না।

ভুল ভাবে শিক্ষা,ভুল শিক্ষা আমাদের কে শুধু নম্র নয় নিচুও করেছে কিছুটা।
বইতে বলা হয়ঃ
'আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর
থাকি সেথা সবে মিলে,নাহি কেহ পর।'
এসব কবিতা আজ যুগের তালে,শতভাগ মিথ্যা কথায় পরিনত হয়ে গেছে।সবাই আপন হওয়াতো দূরের কথা ঘরের মানুষই আমাদের আপন লোক হয় না।না হয় কি কেও আপন সংস্কৃতি ছেঁড়ে বেশিরভাগ শহুরে মানুষদের মতো পশ্চিমা ঢং,পশ্চিমা সংস্কৃতির স্রোতে সন্তানকে (আমাদেরকে) ভাসিয়ে দেয়?আপন হলে কেও চাইতো না,তার ছেলে (আমি) টা বিদেশী বাচ্চাদের মতো ফটর-ফটর ইংরেজি বলুক।ঐসব ইংরেজি বাচ্চারাইতো ইংরেজিতেই ফটর-ফটর করবে,বাংলাতেতো করবে না!আমরাইতো প্রমিত বাংলায় ফটর-ফটর করবো।সবাই আপন হলে,বাচ্চাদের (আমাদের) হাতে বার্বি ডল তুলে দিয়ে কেও বলতো না,খেলো।সবাই আপন হলে বিনা বেতনে অধ্যায়নের জন্য কিভাবে আবেদন পত্র লিখতে হয়,শিক্ষকরা সেটা শিখাতেন না কিংবা শিক্ষার্থীদেরকে (আমাদেরকে) পরীক্ষার হলে নকলে সহায়তা করতেন না।আপন যদি সবাই হতো,তবে প্রশ্ন ফাঁসে উপর মহলের কারো হাত থাকতো না,মেধা আজ গ্রেডিং সিস্টেমে বন্ধী হতো না।এসব কথা সত্যি হলে,যে জেলার জি.পি.এ যতো ভালো,পাশের হার যতো ভালো কিংবা এ+ যে জেলায় যতো বেশী সে জেলাকেই ততো ভালো বলা হতো না।এডিসন যথার্থই বলেছেন,শুধুমাত্র পরীক্ষার ফলাফলই কারো (আমাদের) ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারে না। আমাদেরকে পড়িয়েছেঃ
'আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।'
অথচ দেশের বেশির ভাগ নদীতেই আজ-কাল বার মাস 'হাঁটু জল থাকে' অবস্থা।মানব গোষ্ঠীর অত্যাচারেই নদী আজ ধর্ষিতা,নোংরা,ক্ষীণ প্রায়।
আমরা পড়েছিঃ
'আম পাতা জোড়া-জোড়া,মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া
ওরে বুবু সড়ে দাঁড়া,আসছে আমার পাগলা ঘোড়া।
পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে,চাবুক ছুঁড়ে মেরেছে।'
পরিবার,সমাজ আমাদেরকে পাগলা ঘোড়া হতে দেয় নি।আমাদের ইচ্ছেশক্তিকে ছোট বেলা থেকেই তিলে তিলে মেরে ফেলা হয়েছে।ইচ্ছে শক্তি যেখানে অনুপস্থিত সেখানে কল্পনাশক্তি,কল্পনা মাত্র।যেমনঃ
ছেলে 'আমার (তোমার কি?) যেতে ইচ্ছে করে নদীটির ওই পারে',না না যাওয়া হবে না।তোমাকে প্রথাগত বিদ্যায় শিক্ষিত হতেই হবে। তাই বিকৃত,ভুল পরিবেশে যাদের জন্ম,আমরা তারাই।

দ্বিতীয় কিস্তিঃ
কেও আই.টি সেবাকে প্যাকেজ করে তরুনদেরকে (আমাদেরকে) বলছেন নাও,ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে দেখাও।আমরাও অনেপ্রেরনায় আবেগ তাড়িত হয়ে বলছি,'আকাশ কে একটু সড়তে বলেন,আমরা আরোও উপরে উঠবো।'
কেওবা এসে স্বাস্থ্য পণ্যকে সেবার উদ্দেশ্যে বিতরন করতে বলছেন।যতোটুকু না উপার্জনের উদ্দেশ্য থাকে,তার চেয়ে বেশী আমরা সেবার মনোভাবেই কাজটা করে থাকি।আমাদের তখন মনে হয়,ওরা (যাদের কাছে আমরা পণ্যকে সেবা হিসেবে দিতে চাই) এই বস্তুর মর্ম বুঝতেছে না।একবার বুঝিয়ে দিতে পারলেই হবে,সে আকাশ-পাতাল কাপিয়ে দিবে।তাদের (মুরুব্বীদের) পুঁজি কিন্তু আমরাই।কিছুদিন পর,আর ঐসব কোম্পানির স্বপ্নদ্রষ্টাকেই খুঁজে পাওয়া যায় না।দেশের কিছু কিছু ক্ষ্যাপাটে মুরুব্বী আছেন,যারা বোধ হয় প্রচুর পরিমানে সময় নষ্ট করতে করতে জীবনের একেবারে শেষ সময়ে এসে পৌঁছেছেন।এখন শুধু অর্থ-কড়ি দরকার,তাও সেটা এসময়ের ছেলে-পেলেদেরকে কাজে লাগিয়ে।এতোক্ষণ বাংলাদেশে বর্তমানে বিলীন প্রায় দুটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির কথা বলেছি।এরকম আরোও ছিলো,হয়তো এখনও আছে।তবে একই ভাবে নয়,ভিন্নভাবে হয়তো।ভিন্নভাবে,ভিন্ন কোন মার্কেটিং কৌশল নিয়ে বাজার দখল করে আছে।তবে সবার (ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের) উদ্দেশ্য এক হয় না।

এবার একটু আমাদের চারপাশের কথা বলি।একটা নও জোওয়ান ছেলে/মেয়ে (আমি) সে কি বিষয়ে পড়ছে আর কি বিষয় নিয়ে কাজ করছে তার চাকুরী ক্ষেত্রে?দেখা গেলো সে পড়ছে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ আর জব করছে কোন প্রতিষ্ঠানের এম.আই.এস ডিপার্টমেন্টে।এমনও হয়,বিশ্বব্যাপী নির্ধারিত আট ঘণ্টা কর্মদিবস থাকলেও বাংলাদেশে এমন বহু রেকর্ড আছে যে,শুধু পড়া-শুনা,ঘুমের জন্য একটু সময় বাঁচিয়ে ১৩-১৪ ঘণ্টা ডিউটি করেও মাসে ৫-৬ হাজার টাকাও উপার্জন করতে পারে না।তার উপর আবার সেই সীমিত বেতনের উপরে,বিভিন্ন অজুহাতে বেতন কর্তনের অত্যাচারতো আছেই।এইসব বিষয়ে কিছু গুণী অধ্যাপকরা কথা বলতে গেলেই উনাদের হাতেও পরিসংখ্যান তুলে দিবে,কোন কোন অর্থবছরে কি কি উন্নয়ন হয়েছে। আমি বলছি,আমাদের কি হয়েছে?তার পরিসংখ্যান হাজির করুন,আমরা মেনে নিবো।আপনাদের পরিসংখ্যানমাপিক বরাদ্ধ শুধুমাত্র মুরুব্বীদের বিলাসিতার কাজেই লাগে।কিছু বিষয় আজকাল এতোটাই ফালতু হয়ে গেছে যে,ওগুলার নাম নিলে কয়েকবার গোসল করতে ইচ্ছে হয়।ঘুষ,সুদ,চালবাজী,মিথ্যাচার এইসব পাপ কর্ম এমন বিস্তার লাভ করেছে যে,পাপী লোকদের ভাবটাই এমন থাকে যে,মনে হয় এগুলো কোন পাপ কর্মই না।তাদের আত্মবিশ্বাস দেখে আমরাও মাঝে মাঝে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাই!অথচ বিকৃত,ভুল পরিবেশে যাদের জন্ম,আমরা তারাই।তাও আমাদের আরও কতো দোষ থাকে!

একটু রিলাক্স হওয়ার জন্য যদি তরুন-তরুণীরা গ্রামে যায়,এবারতো সেড়েছে। 'শিক্ষিতরা বেয়াদব হয়,মুরুব্বীদের দেখলে সালাম দেয় না'এজাতীয় বহু অপবাদ তাদেরকে (আমাদেরকে) মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়।আমরা জানি,গ্রামের মানুষগুলোও এই ভদ্র মুখোশধারী মানুষদের কে কতো কষ্টে মুরব্বী স্বীকারে বাধ্য হয়। তাও ওদের কেন সম্মান করবো,আমরা?তারপরও করতে হয়!গতানুগতির বাহিরে কিছু করতে গেলেই,মুরুব্বীরা আমাদের কে আবার ঢেলে সাজাতে আসবে।তেড়ে এসে বলবে,আমরা তো আছি।তোমাদের যেকোন প্রয়োজনে স্মরণ করো!অথচ,একটি নৈশ বিদ্যালয় কয়েকজন তরুনের স্বপ্ন আর একজন মুরব্বীর জন্য একটা হাতের তুড়ি।পাড়ায় একটা লাইব্রেরি কয়েক শত তরুনের কল্পনা,একজন মুরব্বীর হাতের ইশারা। হাজার হাজার শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো,বেকারদের জন্য মেলা কষ্টের কাজ।তবুও আজ বেকার ছাত্র-ছাত্রীদেরকেই পুঁজি করে গুণীজনরা শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সেবার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। অথচ বিকৃত,ভুল পরিবেশে যাদের জন্ম,আমরা তারাই।

তৃতীয় কিস্তিঃ
আমারা সবার পুঁজি,আমরা দেশের পুঁজি।আমরা কি ঠিকভাবে ব্যাবহার হচ্ছি?হ্যাঁ,ঐ যে বলেছি কিছু গুণীজন আমাদেরকে পুঁজি করে শীতার্তদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন কখনো ফেসবুক ইভেন্টে,গ্রুপে কখনো তাদের পোস্টে মানবতার গল্প করতে করতে একসময় দেশব্যাপী ঝড় তুলে দেন।তাদের মতো কিছু মানুষ ছাড়া আমাদেরকে সবাই তাদের মতো করে ব্যাবহার করার চেষ্টা করছে।আমাদেরকে ধ্বংস করছে-করছে,দেশকেও নিজের স্বার্থের জন্যে বিপদে ঠেলে দিচ্ছেন।তাও তারা আমাদেরকে সাহায্য করবেন না,পথ বাতলে দিবে না।স্বপ্ন আমাদেরকেই দেখে যেতে হবে,বাস্তব বহু দূরে। তাও আমাদের আরও কতো দোষ থাকে!দেশে আজ অনিয়মই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।আমাদের অবস্থা আজ এরকমঃ
'পায়ে ছাতা দিয়ে লোকে
হাতে হেঁটে চলে !'

খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি আমাদেরকে কেও ব্যাবহারের জন্য বসে থাকে,শুধুমাত্র তাদের স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যে। তারা ভবে না,মাসের পর মাস যে তরুন (আমি) প্রানটাকে দিয়ে আমি কমপক্ষে দশ জনের কাজ করিয়ে নিচ্ছি
যাদের (আমাদের) দিয়ে সেবার নামে দুর্নীতি করিয়ে নিচ্ছি,বিনিময়ে তাদের কি দিতে পেরেছি?
এই প্রশ্নতো অনেক পরের বিষয়!তাদের কি দেবার চেষ্টা করেছি?মুরুব্বী,এটাই আপনাদের বিবেকের কাছে আমাদের জিজ্ঞাসা?আমরা তোমাদের কাছ থেকে তরুণদের বহুমুখী বিশ্রী ব্যাবহার থেকে মুক্তি চাই।
আমরা কোনকালে,দেশকে কি না দিয়েছি?একটি তর্জনী,একটি ভাষা,একটি মানচিত্র।আজোও আমরা কি না দিচ্ছি? অথচ বিকৃত,ভুল পরিবেশে যাদের জন্ম,আমরা তারাই।এভাবে তরুনের বৈশিষ্ট্য কতোদিন ধরে রাখা যায়,আমরা জানি না।কবে না আবার আমাদের উদ্যম থেমে যায়,কবে না আমাদের প্রান চাঞ্চল্য উবে যায়!আজ আমরা তোমাদেরকে অনেক ভয় পাই।ভেবো না এভাবে আরোও বহুদূর আমরা যেতে পারবো!আমাদেরও প্রান আছে,বেঁচে থাকার চাহিদা আছে।ভাই (পুরো লেখাতে বর্ণিত আমি বা আমরা) আর কি বলি?কিভাবে বলি!
চল,আর কি করবি?স্বপ্ন সাজাই,স্বপ্ন দেখি (তুই,আমি পাশাপাশি)
'ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত.. আমরা আনিব রাঙা প্রভাত..
আমরা টুটিব তিমির রাত.. বাঁধার বিন্ধ্যা চল'

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৪২

খেলাঘর বলেছেন:

কি লিখেছেন?

এবার সারমর্ম লিখুন

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৮

মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন বলেছেন: ভাইয়া যদি কিছু মনে না করেনঃ
আবার একটু পড়ুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.