নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে চাই না, তবু লিখে যাই..

মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন

লিখতে চাই না, তবু লিখে যাই..

মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বয়োঃ+সন্ধি

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৪৭

ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলাম একশ ত্রিশ নাম্বার সিরিয়ালে,সপ্তম শ্রেণীতে উঠে রোলনং হলো তিন আবার সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উঠার সময় রোল নং হয় চার,আর এই সময়ই স্কুলের হোস্টেলে চলে আসি।পরে আমার রোল নম্বরেরও একটা ছোট রেভুলেশান ঘটলো এবং আরোও উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ক্লাস এইটে সাধারণ গ্রেডে স্কলারশিপও পেয়ে যাই।সেসময়ে হোস্টেলে ছাত্রদের মাঝে 'হু,কিতা রে..!','ঐ,কে..?' কিংবা 'জোরে পড়রে..' এই কথাগুলো অনেকটাই শ্লোগানে পরিনত হয়ে গেছিলো,এই কথাগুলো ছিল আমাদের হোস্টেল পরিচালক বি.এস.সি স্যারের কমন কিছু ডায়ালগ।স্যার আমাদেরকে অংক,বিজ্ঞান আবার মাঝে মাঝে ইংরেজী ও পড়াতেন।ক্লাসের পড়া ক্লাসের হিসেবে আদায় করতেন,প্রাইভেটের পড়া প্রাইভেটে।স্যারের সবচেয়ে বড় গুন ছিলো এটা যে,আমি রুহুল আমীন (স্যারের নাম) যদি এই বিষয়টা বুঝি,তবে তোকেও বুঝতেই হবে।আমার এখনো মনে পড়ে স্যার প্রেজেন্ট পারফেক্ট টেন্স বুঝাতে গিয়ে উদাহরন হিসেবে বলেছিলেনঃআমি এই মাত্র ভাত খেয়েছি,যার ফল এখনো বর্তমান এবং ক্রিয়াপদও নিষ্পন্ন যেমন-তারপর হাতটা নাকের কাছে নিয়ে বলতেন,দেখ এখনো গন্ধ পাওয়া যায়।আরেকবার অংক করাতে গিয়ে শিখিয়েছিলেন 'সাগরে লবণ আছে,কবরে ভয় আছে,টেমসে লাশ ভাসে' অর্থাৎ সাইন থিটা = লম্ব/অতিভুজ,কট থিটা = ভূমি/অতিভুজ,টেন থিটা = লম্ব/ভূমি।এইসব টার্মগুলো অনেকদিন ধরে মনে গেঁথে ছিলো,এখনো আছে।বলছিলাম আমার রোলনম্বর রেভুলেশানের কথা,অষ্টম শ্রেণীতে উঠার পড় হোস্টেলে চলে আসি।এখানে এসে বি.এস.সি স্যারের ভয়ংকর রুপটা দেখে আঁতকে উঠি।স্যার রুটিন মাপিক সকাল-সন্ধ্যা হোস্টেলের সব-কয়টারেই পিটুনির উপর রাখতেন কারনে-অকারনে।এসময়ে অনেকটা স্যারের চাপাচাপিতে আর রোজ রোজ গালাগাল কাম পিটুনির ভয়ে আস্তে আস্তে পড়া-শুনা শুরু করলাম।নিয়ম করে সপ্তাহে একবার (শুক্রবার দিন) করে সব বিষয় যতোটুকু পড়ানো হতো,রিভিশন দিতাম।বিকেল বেলা সবাই যখন খেলতে নামতো,আমি তখনও উপপাদ্য মুখস্ত করতাম।মনে মনে ভাবতাম,নবম আর দশম শ্রেণীতে উঠার পর আমি মজা করবো,কারন স্যার বলেছেন অষ্টম শ্রেণীতে পড়া-শুনা করলে তার উপরের ক্লাস গুলোতে আর কষ্ট করা লাগে না।এভাবে,নিয়মমাপিক পড়া-শুনায় নবম শ্রেণীতে রোলনং দুই নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলার ম্যাডাম লক্ষ্মী রানী একদিন ক্লাসে বলেছিলেনঃ আমাদের স্কুলের রেকর্ড বলছে নবম শ্রেণীতে উঠেই আমাদের কোমলমতি ছাত্র/ছাত্রীরা আবেগে নরম হতে শুরু করে।এই সময়টাতে তোমরা আবেগের কাছে বড় অসহায়,একটু সাবধানে চলবে।কেবল মাত্র এই বয়োঃসন্ধি কাল সফল ভাবে (অযথা সময় নষ্ট না করে) পেরুতে পারলেই,তোমরা শেষ হাসি হাঁসতে পারবে,বিজয়ের পদচিহ্ন এঁকে যেতে পারবে,না হয় ছিটকে যাবে বহুদূরে! বলে রাখি বাংলা আমার মারাত্মক প্রথম প্রিয় একটা বিষয় ছিলো,ইংরেজি সে তালিকায় দুই নম্বরে ছিল।বাংলা ব্যাকরণ খুব পছন্দ করতাম,মাঝে মাঝে ঘুমের ঘোরেও নাকি ব্যাকরন পড়তাম (সমাস ও কারক-বিভক্তি),সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলেই দুই নাম্বার হলের (আমার হোস্টেল রুম) সবাই জিজ্ঞেস করতো,কিরে রাতে এমন করলি কেন?অসীম স্যার (যাকে নিরামিষ ভোজী দয়াল নামে আমরা নিজেরা নিজেরা আড়ালে সম্বোধন করতাম) ছিলো আমাদের বাংলা,ইংরেজী দুই বিষয়েরই শিক্ষক।গঠনগত নিয়ম ধরে ধরে ইংরেজী গ্রামার,বাংলা ব্যাকরণ পড়াতেন আর শিট দিতেন,আমরা দেখে দেখে খাতায় তুলে নিয়ে সেই শিট আবার স্যারকে ফেরৎ দিতাম।তো একবার অসীম স্যার এক কথায় প্রকাশ পড়াচ্ছিলেন।অগত্যা সবজীকে(ভালো নাম মাহফুজুর রহমান,প্রতিদিন সকালে যার নাস্তা হিসেবে প্রায় তেলে-ভাজা বিরিয়ানি ধরনের খাবার আসতো তার বাড়ী থেকে।ঐ খাবারটা আমার ভীষণ পছন্দের ছিলো।মাঝে মাঝে খাবার অদল-বদল করতাম,কিংবা ওকে না বলেও খেয়ে ফেলতাম।) জিজ্ঞেস করে বসলেন,এই বল তোঃ প্রিয় কথা বলে যে নারী-এর এক কথায় প্রকাশ কি হবে?সবজী বললো,স্যার বধা।স্যার বললেন,গতকাল পড়ালাম আর আজই ভুলে গেলি রে বধা।বধারে..এটা বধা না শুধু,প্রিয়ং বধা।একটু জানিয়ে রাখি,ওকে আমরা এই নামটা ধরেই (বধা) বেশির ভাগ সময় ডাকতাম,আজও ডাকি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১৪

মহান অতন্দ্র বলেছেন: বেশ মজার হোস্টেল লাইফ আপনার।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩২

মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন বলেছেন: সময়গুলোকে আজও মিস করছি।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.