![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্রাট আকবরের হাত ধরে,ইরানী জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লাহ শিরাজীর সহায়তায় তখনকার সময়ের প্রচলিত হিজরী চান্দ্র পঞ্জিকায়,ঋতু চক্রের অমিল ঘোচাতে (চান্দ্র বৎসর সূর্য বৎসরের চেয়ে ১১-১২ দিন কম হওয়ায় ঋতুচক্রে উলট-পালট লেগে যেতো) বঙ্গাব্দ (অর্থাৎ গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসরনে সৌর বর্ষপঞ্জি) হিসেব করা শুরু হয়। বাংলা মাস সমূহের নামকরনও করা হয়েছিলো বিভিন্ন নক্ষত্রের নামে আবার দিনগুলোর নামও হয়েছে তারকামন্ডলীর নামানুসারে।বঙ্গাব্দে ঋতুভিত্তিক মাস পরিক্রমণ নিশ্চিতকরন এবং পৃথিবী সূর্যকে আবর্তনের সময়ানুযায়ী সৌর বৎসরে অধিবর্ষ সংযুক্ত করে ভাষা বিজ্ঞানী ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বঙ্গাব্দের যথার্থতা রক্ষা করেছেন,বহু আগেই।
যখন থেকে সম্রাট আকবর সৌর বৎসর (গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসরনে সৌর বর্ষপঞ্জি) চালু করেছিলেন তার আগের চান্দ্র বৎসরের হিসেবে,চান্দ্র বৎসর সূর্য বৎসরের চেয়ে ১১-১২ দিন কম হওয়ায় ঋতুচক্রে উলট-পালট লেগে যেতো।সম্রাট আকবরের হাত ধরে ঋতুচক্রের উলট-পালট ঘুছে গেলেও সূর্যের আবর্তনের সময়ের সাথে মানুষের কিছুটা পার্থক্য থেকে গেলো।
একটু হিসেব করি - পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিনে মোট সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট এবং ৪৭ সেকেন্ড।অথচ আমাদের বৎসরের হিসেব হয় শুধু মাত্র ৩৬৫ দিনে,৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড কিন্তু বাকী থেকে যায়।এই ব্যবধান ঘোচাতে গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জীর (ইংরেজি খ্রিস্টাব্দে) প্রতি চার বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয়।কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানের নিয়মানুযায়ী হলেও বাংলা সনে অতিরিক্ত সময়টুকু প্রথম দিকে হিসেব করা হয়নি। তখনকার সময়ে ২৯,৩০,৩১,৩২ দিনেও বাংলা মাস হতো।
ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রস্তাব করেছিলেন যে বাংলা প্রথম পাঁচ মাস (বৈশাখ থেকে ভাদ্র পর্যন্ত) ৩১,বাকী মাস গুলো হবে ৩০ দিনে।আর শুধু ঐ যে,সূর্যের সাথে মানুষের ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট এবং ৪৭ সেকেন্ডের পার্থক্য ঘুচাতে প্রতি চার বছরে (অধিবর্ষে) ফাল্গুন মাসের একটি দিন শুধু ৩১ দিনে হবে।এবার বসে বসে হিসেব করুন,দেখবেন {৪*(৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট এবং ৪৭ সেকেন্ড)}=২৪ ঘণ্টা হয়ে যাবে।অর্থাৎ প্রতি চার বছরে সূর্যের হিসেবের সাথে আমাদের হিসেবের পার্থক্য শূন্য হয়ে যায়।
সনাতন বাংলা বর্ষপঞ্জীর মাসের সংখায় পরিবর্তন এবং অধিবর্ষ সংযুক্তির ফলে,বাংলা ভাষার হিসেবে ৮ই ফাল্গুনও ২০ ফেব্রুয়ারি হয়ে যায়,তাই আন্তর্জাতিকভাবে ভাষা দিবসের ভারসাম্য রক্ষার সুবিধার্থে ৯ই ফাল্গুন মানে ২১ ফেব্রুয়ারিতে ভাষা দিবস উৎযাপনের কোন বিকল্প পথ থাকে না। আর এভাবেই আমাদের ২১ ফেব্রুয়ারিও ৯ ফাল্গুন হয়ে গেলো।
আরেকটা পারিপার্শ্বিক কারনও নাকি ৮ই ফাল্গুনে ভাষা দিবস পালনের অন্তরায়
যেমন- পহেলা বৈশাখকে ১৪ এপ্রিলে উৎযাপন করতে চাইলে,ঠিক ৯ই ফাল্গুনেই ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন করতে হয় বলে আজকালকের অনেক ব্লগারই দাবী করে থাকেন।তবে আমি অন্তত ইংরেজি হিসেবের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে ভাষা দিবসকে বিকৃতভাবে উৎযাপনের পক্ষের লোক নই।তাছাড়া ঠিক ১৪ এপ্রিলে বাংলা নববর্ষ উৎযাপন করতে হলেই যে ভাষা দিবসকে বাংলা ৯ই ফাল্গুনে পালন করতে হবে,এই বিষয়টিরও বিষদ ব্যাখ্যা আমার জানা নেই।
মূল কথা হলো দিন,তারিখ কিংবা বাংলা-ইংরেজি শেষ কথা নয়। শেষ কথা হলো তার মূল বিষয়-বস্তু কিংবা পালন।আর তার চেয়েও বড় বিষয় হলো,নিঃসন্দেহে ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তিনির নিজের প্রয়োজনে কিংবা বঙ্গাব্দকে অবহেলা করে অথবা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জীকে ভালোবেসে বাংলা দিন-মাস কিংবা বছরের পরিবর্তন করেন নি।৯ই ফাল্গুনে ২১শে ফেব্রুয়ারি পড়ে যায় জেনেও,সূর্যের আবর্তনের সময় মাথায় রেখে নির্ভুলভাবে বাংলা সনকে সাজিয়ে গেছেন।আমি আকুল চিত্তে সেই ভাষাবিজ্ঞানীর সবটুকু অবধান স্বীকার করছি।আমি কাওকে দোষ দিতে পারি না,আমি বলতে পারি না যে,দিন-তারিখ পাল্টে গেলেই চেতনা পাল্টে যায়।সময় আছে চলুন ব্যাকরণ শিখি,বাঙ্গালী হই।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫
মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন বলেছেন: ভাই পোস্ট আপডেট করেছি..
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০২
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: কি বুঝাতে চাইলেন ঠিক বুঝলাম না সর্যি। একটু বুঝিয়ে বলুন!