নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসি লিখতে ও কবিতা আবৃত্তি করতে। ফেবু: facebook.com/mahzabeenalam.maria

মাহজাবীন আলম মারিয়া

মাহজাবীন আলম মারিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মা পিঁপড়ের মৃত্যু

০৫ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩


জামাল সাহেবের ৬-তলা বিল্ডিং এর ৩ নং ফ্ল্যাটের দু-নম্বর বেড রুমের সুন্দর ও আরামদায়ক বেডটির পিছনের দিকটাতেই এক মা পিঁপড়ে তার বাচ্চা পিঁপড়েকে নিয়ে সুখের বাসা বেধেছে। নুন আনতে পান্তা ফুরয় স্বরূপ অবস্থা থাকলেও মা পিঁপড়ে আর বাচ্চা পিঁপড়ে মিলে বেশ সুখি!

হেমন্ত শেষ হয়ে শীতকাল এই চলে এলো বলে। মা পিঁপড়ের তাই বাঁচার তাগিদে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টার কোন কমতি নেই। নইলে শীতের সময়ে খাবার ফুরিয়ে গেলে তার বাচ্চা পিঁপড়ে যদি খিদেয় কান্না জুড়ে দেয় তখন মা পিঁপড়ের সহ্য হবেনা! তা তখন নিজের যা নয় তা হোক গিয়ে। বাচ্চা পিঁপড়েকে নিয়েই তার যত চিন্তা-ভাবনা।

সন্ধ্যা বেলায় নাস্তার জন্য চা বানিয়ে নিয়ে এলেন মিসেস জামাল। চায়ে চিনি দিতে যেয়েই চামচ থেকে খানিকটা চিনি মেঝেতে পরে গেলো। জামাল সাহেবের একমাত্র ছেলে এক দৃষ্টিতে টেলিভিশনে ক্রিকেট খেলা দেখছে। অন্য কোন দিকে তার হুশ নেই। খেলা প্রায় শেষের দিকে, রম রমে এক অবস্থা! যেন বাঁচা-মরার লড়াই এখানেই।
ওদিকে মা পিঁপড়ে চিনির সন্ধান পেয়ে পিলপিলিয়ে লেগে পড়লো চিনি সংগ্রহের কাজে। হঠাৎ হুংকার দিয়ে সোফা থেকে লাফিয়ে উঠল জামাল সাহেবের ছেলে। আফসোস! তার প্রিয়দল জিতে যেতে যেতে জিততে পারেনি। সে হয়ে উঠল ক্ষিপ্ত-হিংস্র! যা হোক, মা পিঁপড়ের সেদিকে কান নেই। সে বেশ ব্যস্ত খাবার সংগ্রহের কাজে। চিনি নিয়ে ঘরে ফিরেই বাচ্চা পিঁপড়ের সঙ্গে খেলবে সে! মা পিঁপড়ের তাই জলদি কাজ শেষ করার তাড়া।

ক্ষণেক বাদেই জামাল সাহেবের বিষম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠা ছেলের চোখ গিয়ে পড়লো মেঝেতে ঐ মা পিঁপড়ের ওপর। কয়েক সেকেন্ড দেরি করেই তার ডান পা চালিয়ে দিলো মা পিঁপড়ের গাঁয়ে। পা পিষিয়ে মেরে দিলো মা পিঁপড়েটিকে আর সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল “ধুর!” মৃত্যু ঘটলো একটি মা পিঁপড়ের!

-আচ্ছা, মা পিঁপড়ের কি কোন দোষ ছিল? বা বাচ্চা পিঁপড়ের কোন দোষ? প্রিয় দলের পরাজয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠা ছেলেটি কি চিনতো মা পিঁপড়েটিকে? তার প্রিয় দলের পরাজয়ের সাথে কি কোন প্রকার যোগসূত্র ছিল মা পিঁপড়ের?

-উপরোক্ত চারটি প্রশ্নের জবাব কেবল একটিই শব্দ "না।"

-তবে কেন মরতে হলো মা পিঁপড়েকে? কেন মারা হলো তাকে? হত্যার বিচার হবে?!
-আরেহ, পিঁপড়ে তার আবার হত্যার বিচার! জীবনে দেখেছেন?!

দুর্বলের প্রতি সবলের বল প্রয়োগের ধারা চিরকাল চলমান। সবল তার বল দেখাবে দুর্বলের বল দমিয়েই। তা হোক সে ইচ্ছেতে বা অনিচ্ছেতে। হোক সে শত্রু বা মিত্র, বা সম্পর্কহীন, অথবা যে কোন কিছু! তাতে লাভ থাকুক আর নাই থাকুক। সবল আর দুর্বলের মধ্যকার বলের পার্থক্যটা এটাই।

-আচ্ছা, বাচ্চা পিঁপড়েটার কি হবে বলতে পারেন?
-কী আর হবে! মা পিঁপড়ের মতো বাঁচার তাগিদে জীবীকা নির্বাহ করতে করতে সবলের বল প্রয়োগে তারও হয়তো একদিন মৃত্যু ঘটবে। আর নাহয় বেঁচে যাবে কোনমতে! এদের হিসেব কেউ রাখেনা

-৫ ই মে, ২০১৮

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:২৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: বাহ!!! চমৎকার লেখা। +++ দিলাম। শুভ কামনা আপনার জন্য।

০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:২৫

মাহজাবীন আলম মারিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য! :)

২| ০৬ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


এখানে মানুষের তেম হাত নেই

০৬ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০

মাহজাবীন আলম মারিয়া বলেছেন: এখানে সাধারণ একজন খেঁটে খাওয়া মানুষকে একটি পিঁপড়ের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যারা সমাজের উচ্চবিত্তদের দ্বারা নানা ভাবে নির্যাতিত হয়েও কোন বিচার পায়না।

৩| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১:২৬

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: ভালো হয়েছে মোটামুটি.. রুপক অর্থ বিবেচনায়...

১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ২:০৭

মাহজাবীন আলম মারিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য!

৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.