নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জনপ্রিয় ঋনাত্মক ব্যাক্তি

মলয় দত্ত

মলয় দত্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমার নীল বাড়ি

১৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৮

আমি সপ্তাহে একবার করে তোমার বাড়ি যাই।
এক লম্বা বিকেল কাটাই।
তোমাদের পারিবারিক আলোচনায় সঙ্গী।
এত্ত রঙ।
এত্ত বেরঙ।
নীল রঙের ঝুলি।
আধারের খনি।
জন চারেক মানুষের মাঝে আমি তোমায় আলাদা করে দেখি।
নয়ন ভরে দেখি।
তৃষ্ণা মিটিয়ে।
কপালে জমে ওঠা ঘাম মুছে চায়ে চুমুক লাগাই।
আমি তাকাই।
বারবার তাকাই।
ভিতরে বড় আকাল চলে আমার।
তুমি শব্দটার ভিতরে ঢুকে যাই।
মস্তিস্কের অলিতে গলিতে তোমাকে নাচাই।
দেখি এক নিস্পাপ পবিত্র জীবনের স্বপ্ন।
মুখোমুখি তুমি আমি।
ছিপছিপ দেহ, খোলা চুলের মায়াবীনি তুমিতে হারাই।
যেন এই ঘরে আর কেউ নাই।
আমি তুমি দুজনে অনন্ত কাল ধরে।
আমি চেয়ে আছি তোমার কথা বলার অসহ্য সুন্দর ভঙ্গিপানে।
হৃদয়ের গভীর ক্ষত আমি তৎক্ষনাত হারাই।
হৃদয় পাচিল ভেঙে ছুটে আসা কথা চাপা দেই।
আমি মগ্ন নীরব।
কবিতা শুনে তোমার বাবার ঝিমুনি।
তোমার কক্ষত্যাগ।
হঠাৎ ফিরে আসা।
লাল ফোলা চোখ।
সাদা ওড়না।

আমি গত আট বছর তোমার নীল বাড়িতে যাই।
তোমার বাবার প্রিয় ছাত্র বলে।
তোমার কেউনা বলে।
স্যার এখন অবসর প্রাপ্ত বলে।
আমি এখন বেকার বলে।
তোমার কেউনা বলে।
আমি আর ও একযুগ,
হয়তো আরো কয়েক যুগ তোমাদের বাড়ি যাব।
তোমার কেউনা বলে।
তোমায় কবিতা শুনাব বলে।
তোমার চুল বাধা ফিতের মায়ায়।
ময়লা জমা লাল ফিতেগুলোতে দামী স্বপ্ন ঘুমায়।
তোমার নুপুরের শব্দে নেশা হওয়ায়।
তোমার কানের দুলে।
তোমার পায়ের ছেড়া চটিজোড়ায় ও আমার ভীষন ভাললাগা।
আমার হাস ফাস লাগে,তোমার বাড়ি আসি।
কি মধুর জটিলতায় আমি বাধা বলে।
একখানি মায়াময় মুখের টানে।
সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে হঠাৎ পিছু ফিরে তাকাতেই তোমার ভিজে যাওয়া শান্ত আয়ত চোখ।
অসহায় চাহনির ভীড়ে আগামীর আনন্দ রেনু।
নিহিত "কাল এসো কিন্তু "।
তোমার বাসার অন্ধকার গলির মাথায় ঝিমানো নেড়ি কুকুরের অবিরাম লালা ঝড়ানো দৃশ্য।
আধো আলোয় চায়ের দোকান।
পুরনো দিনের স্মৃতিময় গান।
একটু সামনেই মহা শশ্মান।
এই ভেঙে আমি আগাই।
আমি আরো কয়েকযুগ আসব প্রিয় নারী।
যাবার কালে তুমি এসে দাড়াও সিড়িঘেষে।
লোডশেডিং এ মোমবাতি নিয়ে।
কয়েক শতাব্দী তোমাদের বাড়ি এলেও জানবেনা "ভালবাসি "
প্যান্টের পকেটে রাখা রুমালে জড়ানো আধার নিঙরে নেবেনা জানি।

জানি কোন একদিন,
আমি তোমার বাড়িতে যাব।
তোমায় বিয়ের শাড়িতে দেখব।
তুমি সাতপাকে জড়াবে।
বাহুডোরে বাধার স্বপ্ন আকবে।
আমি দুর থেকে বিলীন হব।
আজ তোমারে শরীরে পুরুষের প্রবেশ বৈধ করার ক্ষন।
আজ তোমার বিবাহ।
কতকাল
মহাকাল আমি আসি।
আমি যাই।
আজ তোমার শুভ বিবাহ।
কাধে ঝোলান নোংরা ব্যাগ থেকে বের করি তোমায় ভেবে সস্তা কাগজ বোঝাই করা শত তিনেক কবিতা।
বের করি, তোমায় ভেবে কাটানো নির্ঘুম রাতগুলির কঙ্কাল।
আজ তোমার বাড়ির সবাই ভীষন ব্যাস্ত।
কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার এক অপার আনন্দ।
আজ তোমার বিয়ে।
আমায় কবিতা পড়তে দেয়া হয়না।
অনুষ্ঠান সুচীতে নেই বলে একথা।
নিয়ম বড্ড কড়া।
আমি হেটে আসি।
রাত বাড়ে।
আমার মানব জীবন ডুবিয়ে মারার রাত।
চায়ের দোকান,তোমার নীল বাড়ি, বারান্দা, অন্ধকার গলি ফেলে।
নেড়ি কুকুরের লালায় মিশে ঝরতে ইচ্ছে হয় গলিপথে।
কিছুক্ষন বাদে দামী জুতোয় মাড়িয়ে যাবে তুমি এই আশায়।
আমি তাও পারিনা,
আমি আসি হেটে , মহাশশ্মান গেটে
তোমাদের পৌরসভা আজই দেয়ালে লিখে গেছে "কবি নিষিদ্ধ "।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:১৭

কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন:
দারুন প্রকাশ.....!
ভলো থাকবেন, শুভকামনা।

২| ২০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:১৯

মানুষ বলেছেন: সুন্দর হয়েছে :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.