নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক কথার কিছু কথা

মালেক চৌধুরী

মালেক চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা বানান প্রসঙ্গে কিছু কথা-

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৬


বানান নিয়ে আমাদের দেশে বহু ধরনের বিতর্ক ও বিভ্রান্তি আছে।অনেকে বানান ভুল হওয়ার ভয়ে বাংলায় লেখালেখি না করে ইংরেজিতে লেখেন।অনেকে বানান ভুলের ভয়ে ডিকশনারি খুলে লিখতে বসেন।অ্নেকে অন্যের লেখার সমালোচনার হাতিয়ার হিসেবে ভুল বানান খোঁজেন।অনেক লেখার ও লেখকের গুরুত্ব পাঠকের কাছে কমে যায় ভুল বানানের কারণে।এছাড়া কোনো বিষয় লিখতে গেলে লেখার প্রতি ও বিষয়ের প্রতি মনযোগ দেওয়ার চেয়ে বানানের দিকে বেশি মনযোগ দিতে হয়।শুধু বানান ভুল হওয়ার ভয়ে অনেক ভালো লেখক লেখালেখি থেকে দূরে থাকেন,এতে অনেক অভিজ্ঞ মানুষ তাঁদের অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞানের প্রকাশ না করে চুপচাপ বসে থাকেন এবং এক সময় হারিয়ে যান।জটিল সব বানানের কারণে বাংলা ভাষা আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না।বাংলা আন্তর্জাতিক ভাষা হলেও এর মান ঐ পর্যায় এখনো পৌঁছেনি।বাংলা ভাষার বানানের জটিলতার কারণে পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরা অন্যান্য ভাষা শিখতে পারলেও নিজের ভাষা অন্যকে শিখাতে পারছেননা।বিশেষ করে কম্পিউটারের এই যুগে আন্তর্জাতিক সব ভাষাতেই কম্পিউটারের সকল প্রোগ্রাম ও সকল বিষয় বিস্তৃত ভাবে পরিচালিত হলেও শুধু বাংলা ভাষার সঠিক ও সহজ কোনো ব্যবহার নেই।যা আছে তা আজব এক ধরনের বাংলা যা বাঙালিরাই বুঝেন না।এইসব বিষয়কে ভাবনায় রেখে বাংলা ভাষার ব্যাবহারিক সংস্কার,বিশেষ করে বানান রীতি আরো সহজ এবং অপ্রয়োজনীয় বর্ণের ঠাঁসাঠাসি থেকে বর্ণমালাকে হালকা করা এখন একটি যৌক্তিক দাবি।




বানানকে সহজ করার প্রয়োজনীয়তা থেকে একটি বানান রীতি বাংলা একাডেমি কর্তৃক চালু করা আছে তবে বর্তমান যুগের চাহিদা অনুযায়ী এই বানান রীতি আরও সহজ করা যেতে পারে এবং করা উচিত। কারণ বাংলা একাডেমি বা বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ডের বানান রীতিতে ‘ঈ’ ‘ঊ’ ও ‘ী’ ‘ূ’ এবং ‘ণ-ত্ব’ ‘ষ-ত্ব’ বিধি তৎসম শব্দের বেলা অক্ষুণ্ন থাকবে এবং অতদ্ভব,দেশি-বিদেশি শব্দের বেলা এই নিয়ম মানা হবেনা অর্থাৎ তৎসম শব্দ ছাড়া বাকি সকল শব্দ যদি ‘ই’ ‘উ’ ও ‘ি’ ‘উ’ দ্বারা বানান করা যায় তাহলে শুধুমাত্র তৎসম শব্দের জন্য এই বর্ণমালার বোঝা বহন করার দরকার কি?তাছাড়া ‘ঈ’ বর্ণটি ‘ঈদ’ ও ‘ঈগল’ সহ হাতে গুণা কয়েকটি শব্দে এবং ‘ঊ’ ‘ঊষা’ ও ‘ঊর্ধ্ব’ সহ কয়েকটি শব্দে স্বাধিন ভাবে ব্যবহৃত হয়, ‘ঊষা’-ও এখন ‘উ’ দিয়ে লেখা হচ্ছে।তাহলে এই দুটি বর্ণ ও তাদের ‘ইকার’ তুলে দিলে কি এমন অসুবিধা?একই কথা ণ-ত্ব,ষ-ত্ব বিধির ক্ষেত্রেও।তৎসম শব্দ অবিকৃত সংস্কৃত শব্দ আর সংস্কৃত হলো বাংলা ভাষার উৎস।আরেক কারণে সংস্কৃত আমাদের কাছে ‘পুজ্য’ যে কারণে আরবি,ফারসি,উর্দু একশ্রেণীর মোসলমান বাঙালির কাছে ‘আদবের’।ঐ সেই একি কারণ।যে কারণে কেউ বলি ‘পানি’ কেউ বলি ‘জল’।কেউ বলি ‘দাদা’ কেউ বলি ‘ভাই’ এসবের মাঝে আমরা ধর্ম আর দলাদলির সুখ পাই।কিন্তু আসলে আমাদের বাঙালি জাতিসত্বার সাথে কোনো ধর্মেরই বিরোধ নেই।আরবি ভাষাতে মোসলমানের ধর্ম গ্রন্থ লেখা,সংস্কৃতে সনাতনি শ্লোক লেখা তাতে আমার ভাষা বাংলা আজীবন সেই বোঝা বা সেই স্মৃতি বহন করে যাবে এধরনের চুক্তি বাংলা ও বাঙালি কার সাথে কোন দিন করেছিলো?বাংলার সকল নদি হিমালয়ের কাছে ঋণি তাই আমাদের কি করা উচিত?যাইহোক,এই বোঝা গুলো বর্ণমালা থেকে বিদায় করতে পারলে প্রায় অর্ধেক বানানের জটিলতা দূর হবে,বাকি অর্ধেক দূর করার জন্য আরো কিছু বর্ণ ছাটাই করা দরকার।যেমন- ‘ঙ’ ‘ঞ’।ব্যাঙ বানান করতে ‘ঙ’ এবং বিড়ালের ডাক ‘মিঞ’ আর যুক্তাক্ষরের কন্ডাক্টরের হেল্পার ছাড়া এরা জীবনে তেমন কোনো কাজে লেগেছে? আরো কিছু ‘চামচা’ টাইপের অক্ষর আছে,যেমন- ‘ৎ’ এর কি দরকার?নাসিকা বর্ণ হিসেবে ‘ং’ এটা থাকতে পারে পরবর্তী সংস্কারের আগ পর্যন্ত।‘ঁ’ ‘তাঁর’ ‘যাঁর’ ইত্যাদি সম্মান সুচক শব্দের অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা করে, ‘হাঁস’ ‘বাঁশ’ আর ‘চাঁন্দেরে’ নাসিকা দিয়ে হাস্যকর ভাবে উচ্চারণ না করে ‘হাস’ ‘বাশ’ ‘চাদ’ লিখলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হবে?আর বাকি থাকলো ‘ঃ’।এই ‘দুঃখ বিলাসি’ বর্ণের নাকি কাজ হলো শব্দে যে অক্ষরটি তার পরে বসবে সেই অক্ষরটির উচ্চারণ ডবল করা অর্থাৎ অর্ধেক ‘দুখ’-কে ডবল ‘দুখখ’ বানিয়ে ছাড়া-তাই এই পোড়াকপালি চলে গেলে কি এমন ‘দুখখ’?আরেকটি কথা- বলতে পারেন এদের সব গুলো বাদ দিয়ে দিলে যুক্তাক্ষর কিভাবে গঠন হবে?উত্তর হলো যুক্তাক্ষর গুলোকে ‘উপ’ থেকে ‘পূর্ণ’ বর্ণের মর্যাদা দিয়ে দিলেইতো হয়ে গেলো।তবে সব যুক্তাক্ষরের প্রয়োজন নেই,যেসব যুক্তাক্ষর জরুরী শুধু তারা থাকবে। (চলবে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.