![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার আগের আলোচনা গুলো দুটি অংশে উপস্থাপন করেছিলাম,প্রথম অংশে ছিলো স্বাধীনতাকামী রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে এবং দ্বিতীয় অংশটি ছিলো স্বধীনতাউত্তর রাষ্ট্র বা সরকার পরিচালনামূলক রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে।আমার আলোচনার বর্তমান অংশটিও দ্বিতীয় অংশের বিষয়বস্তুর উপর আরও বিস্তৃত ও কিছুটা সুক্ষ্ম বিশ্লেষণমূলক।
আমি আমার আলোচনায় বার-বার একই কথা প্রমান করার চেষ্টা করছি যে,আমাদের দেশের রাজনীতি যুগে যুগে লক্ষ্য পরিবর্তন করেছিলো- কখনও এজাতি স্বাধীনতার জন্য লড়েছে,কখনও একমুটো ভাত বা মানবিক অধিকারের জন্য লড়েছে,কখনও তার ধর্মীয় অধিকারের জন্য,আবার কখনও তার সামাজিক অবস্থানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে।আর এই সংগ্রাম এখনও অব্যাহত আছে,শুধু লক্ষ্য ভিন্ন ও নেতৃত্ব ভিন্ন।যেমন- ১৭৫৭ সালে বৃটিশদের হাতে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা হারানোর প্রক্রিয়া যখন শুরু হলো বা স্বাধীনতা হারালাম,তখন থেকে যে সংগ্রাম শুরু হলো তা ছিলো স্বাধীনতা পূণরূদ্ধারের সংগ্রাম এবং তৎকালীন নেতৃত্ব তাঁদের রাজনীতি সেই লক্ষ্যেই পরিচালিত করেছিলেন।বৃটিশ বিরোধি আন্দোলন যখন পরিণতির দিকে যাচ্ছিলো অর্থাৎ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিলো তখন আমাদের বাঙালি্র তৎকালীন নেতৃত্বের মোসলমান নেতারা যে স্বপ্ন দেখলেন,যে লক্ষ্যে তাঁদের রাজনীতি পরিচালিত করলেন তা হলো, পূর্ববঙ্গের মোসলমান বাঙ্গালিদের জন্য সতন্ত্র আবাসভূমী।সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে তাঁরা কৌশলগত কারণে হোক,আর তৎকালীন রাজনৈতিক গতীধারায় বাধ্য হয়ে হোক পাকিস্থানের অংশ হয়ে “নামাজ ছাড়াতে রোজা গলায় লাগালেন”।কিন্তু,তাঁরা ভারতবর্ষের জাদরেল রাজনীতিবিদদের সাথে সফল রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে এজাতীকে অর্থাৎ পূর্ববঙ্গের তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা ্মুসলিম একটি জনগোষ্ঠীকে “আপাতত ভাড়া বাসায়”স্বাধিনভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেন,তাই তাঁদের রাজনীতি সঠিক ছিলো এবং এজাতি শ্রদ্ধার সহিত সেসকল নেতাদের অবদান স্বীকার করবে।এভাবে আমরা ‘ভাড়া বাসায়’ স্বাধিন হলাম অর্থাৎ বৃটিশভারতীয় থেকে পাকিস্থানী হলাম।লাভ হলো,আপাততঃ স্বাধীন হলাম এবং হিন্দু বৈষম্যবাদিদের অত্যাচার থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ধর্মীয় জাতিয়তার ভিত্তিতে (জীন্নার,দ্বিজাতি তত্ব)স্বতন্ত্র জাতি গঠনের নিশ্চয়তা পেলাম।কিন্তু সপ্নের পরিপূর্ণতা পেলাম না,অধিকার গুলো নিশ্চিত হলোনা,অবহেলা-অত্যাচার গেলোনা।কাজ রয়ে গেলো,লক্ষ্য পরিবর্তিত হলো,প্রতিপক্ষও পরিবর্তিত হলো,নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নিলেন,নতুন রাজনৈতিক ধারার শুরু হলো।১৯৪৮ সালের রাষ্ট্র ভাষার প্রশ্নে আবার পূর্ববাংলার বাঙ্গালির মুক্তির লক্ষ্যে সংগ্রাম শুরু হয়ে গেলো,যেনো এজাতি নিজের প্রতিটি নায্য অধিকার শুধু রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হবে।পুর্ববাংলার বাঙালি সেই অসম্ভব কাজটিই বার বার সম্ভব করে এগিয়ে গেলো।আমাদের তৎকালীন নেতৃত্ব শক্ত হাতে এবং সুকৌশলে চুড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন অর্থাৎ পুর্ববাংলার অধিবাসিদের জন্য স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন।এলো একাত্তর,চুড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের সংগ্রাম।এখানেও বাঙালি সফল,আমাদের নেতৃত্ব সফল,এর প্রমাণ আমরা স্বাধিনতা পেয়েছি,আমরা স্বাধীন সার্বভৌম জাতি।কিন্তু বিভিন্ন প্রতিকূলতা,প্রতিবন্ধকতা ও পারিপার্শ্বিকতার কারণে স্বাধীনতাউত্তর রাষ্ট্র গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় তৎকালীন নেতৃত্বের ব্যর্থতা ছিলো;তবে শুধু সেই ব্যর্থতা তাঁদের সকল অর্জন ও সকল অবদানকে ম্লান করে দেবে?এটি স্বাভাবিক ও যৌক্তিক চিন্তা হতে পারেনা।যাইহোক,১৯৭৫ সালে এই নেতৃত্বের অবসান হলো এবং অবসান হলো একটি রাজনৈতিক ধারার।শুরু হলো আরেকটি রাজনৈতিক ধারা অর্থাৎ দেশগড়ার বা উন্নয়নের রাজনীতির নতুন একটি পর্ব।এই পর্বের নেতৃত্বে আসলেন জিয়াউর রহমান।অর্থাৎ আমি বলতে চাই- ১।জাতিয় নেতারা যাঁর যাঁর চিন্তা-ভাবনা,নীতি-আদর্শ,পরিবেশ-পরিস্থিতি,সময়-কাল অনুযায়ী নিজস্ব রাজনীতিকে পরিচালিত করেছেন।কখনও তাঁরা হয়তো ভুল করেছেন;কিন্তু জনগণের অকল্যাণ হোক এমন চিন্তা হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী,শেরে বাংলা এ,কে,ফজলুল হক,মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানের মত নেতারা কখনও করেননি ইতিহাস সেই সাক্ষ্যই দেয়। ২।সেই সকল মহান নেতারা অবশ্যই এখন সকল সমালোচনার উর্ধ্বে,কারণ তাঁদের অবদান ও আদর্শই আমাদের জাতি স্বত্বার অস্থিত্ব ও ঐক্যের অবলম্বন। ৩। তাঁদের কারো সাথে কারো তুলনা বা দ্বান্দ্বিক বিভাজন সৃষ্টি করা জাতির জন্য কোনো ভাবে কাম্য হতে পারেনা। ৪। বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমানের মধ্যে না কোনো তুলনা চলে,না কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টির যুক্তি আছে;কারন বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির যখন সারা জিয়াউর রহমানের রাজনীতির শুরু। (চলবে)
©somewhere in net ltd.