নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষআজিজ

মানুষআজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুড়ির সন্দেশ

১৫ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:২২

অরুন আমার ক্লাসের বন্ধু ছিল । ওদের বাড়ি আমাদের বাড়ি কাছাকাছি ছিল , আমাদের ঘরের দুয়ার থেকে ওদের বাড়িটা দেখা যেত ! তবুও যেন কাছে নয়, ফাকাঁ দিগন্ত তাই ওমন দেখা যায় । পুজোতে ও আমাকে প্রায়ই দাওয়াত করতো , কোনদিন না গেলে বাসায় নিতে আসতো । অরুনের বড়দি শিপ্লাদি দারুন সব খাবার তৈরী করে রেখে দিত , আমি গেলেই একত্রিত হয়ে খেতুম । উপোসের ঈদে ওকে আমি দাওয়াত করতুম ও আসতো এসে সেমাই খেত আর সারাদিন ঘুরে বেড়াতাম । একবার ঝগড়া করে ওর কান ছিলে দিছেলেম, সেবার পুজোঁতে অরুন এলো না মনে মনে ভাবছিলাম অরুনের সাথে ঝগড়া না করলেই পারতুম ! যেয়ে তো ওদের বাসায় খাবার খেতে পারতুম । কিছুক্ষনপর দেখি অরুনের দিদি শিপ্লাদি আসলো আমাকে নিতে , অরুনদের বাসায় গেলাম ও আমার সাথে তেমন কথা বললো না । পরের বছর শিপ্লাদির বিয়ে হয়ে গেছিলো । অরুদের সাথে দুরত্বটা থেকেই গেছিলো , আর পুজোঁতে পেটভরে খাওয়া হতো না । কিসব লাড়ু, সন্দেশের ঘ্রাণ,মুড়ির বড় বড় মোয়া আহ ! অরুনের সাথে মেশার ট্রাই করছিলেম অরুন একদিন বলেদিল, বাবা বলেছে তোদের সাথে কম মিসতে ?
আমি: কেনরে অরুন ?
অরুন: বাবা বলেছে , তোরা যদি নিয়ে গিয়ে আমাকে মুচলমান বানিয়ে ফেলিস ? আমার ছোট্ট কাকেও নাকি তোরা করেছিস ?
আমি চুপ হয়ে গেলাম । এমন কথা বলবে বুঝতে পারিনি । অরুদের সাথে আর সম্পর্ক টিকলো না । তিন বছর পর স্কুল ছুটির পর প্রাইভেট টিউশনে যাচ্ছিলুম , এমন সময় মোটা করে এক মেয়ে বললো ,কিরে মানুষ ? বড় হয়েগেছিস তো । আমি অভাগ হয়ে চেয়ে রইলেম তার দিকে । সে বললো, আমি তোর শিপ্লাদিদিরে ! অরুনের দিদি । দিদি কত সুন্দর ছিল, হঠাত দেখে চমকেই উঠছিলাম ! কেমন কালো মোটা হয়ে গেছে , সম্ভবত স্বামীর বাড়ি অনেক খাটায় । শুনিচি কোন এক গেরস্থ বাড়িতে তার বিয়ে হয়েছিল । দিদি বললো, বিকেলে আয় আমাদের বাসায় কতদিন পর দেখলুম তোকে । পর বিকেলে তাদের বাসার পিছন নারকেল বন দিয়ে ঘুরছিলুম যদি দিদিকে দেখতেই পাই তাহলেই যাবো শুধু । কিছুক্ষন হাটাঁর পর দিদিই আসলো , আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে গেল , স্বামী বাড়ি থেকে কত ধরনের খাবার দিল । শুধু সন্দেশটা বুকের ভেতর গিয়ে আটঁকে গিয়েছিল , কতদিন দিদির হাতের বানানো সন্দেশ খাইনি । কত রাত্রি ,কতদিন এই সন্দেশের জন্য অপেক্ষা করেছি, অরুনের সাথে নুতন করে মিসতে চাইছি । সন্দেশটা আর শেষ করতে পারলুম না । দ্রুত খেয়ে উঠে গেলুম । পর দিদিও ওর স্বামীর বাড়ি চলে গেল, আমিও শহুরে চলে এলুম আর ওমন সন্দেশ খাওয়া হয়নি কোনদিন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:১৩

ম্যাড ফর সামু বলেছেন: জিভে জ্বল আনা পোষ্ট, সন্দেশ আমারও অনেক ভালো লাগে।

২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলা সাহিত্যে একমাত্র পূর্ণাঙ্গ নারীবাদী নারী চরিত্র অধ্যাপক শিরিন।উপন্যাস 'ফালি ফালি করে কাটা চাঁদ'।লেখক হুমায়ুন আজাদ।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৪৫

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: পোস্টের সাথে হয়তো বিয়োগান্ত মন্তব্য।

প্রাইমারী স্কুলে যখন পড়তাম তখন কত যে সন্দেশ খেতাম।

শুভ রাত্রি । ভাল থাকবেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.