নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ আহসানুল হক বিশ্বাস

ভালবাসি - আড্ডাবাজি করতে, গান শুনতে, উপন্যাস-কবিতা। ফুল ভালবাসি পাখি ভালবাসি, আকাশ ভালবাসি, গ্রাম ভালবাসি। ভালবাসি মাটি, মানুষ, দেশ। যতটা আড্ডাবাজি পছন্দ ঠিক ততটা একা থাকতে ভালবাসি। বিশ্বাস করি- আল্লাহ পাকে, স্বাধীনতায়, ভালবাসায় ও সততায়। পছন্দ করি- ফুটবল, ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন খেলতে। টুইন্টি নাইন আমার অনেক প্রিয় একটা খেলা। হুমায়ূন আহমেদ, সমরেশ মজুদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হেলাল হাফিজ, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, নির্মলেন্দু গুন, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎ চন্দ্র, মহাদেব সাহ আমার প্রিয় লেখক ও কবি। এনাদের আমার ঘরের মানুষ বলেই মনে হয়! প্রিয় গায়ক বা গায়িকা বলে আমার কেউ নাই। যার গায়িকি ভাল লাগে তার ভক্ত হয়ে যাই। প্রিয় খাবার বলে কিছুই নাই। ক্ষুধা পেলে সবই অমৃত! প্রিয় রং বলে কিছু নাই ,সব রঙ্গের একটা আলাদা সৌন্দর্য আমার চোখে ধরা দেয়। সহ্য করতে পারিনা- মিথ্যা কথা, অন্যায়, প্রিয়জনের অবহেলা আর বাঁকা কথা ও নোংরামি। মানুষ হিসেবে খুব জেদী, ভীষন অভিমানি, বদরাগী। কষ্ট দেয়- শিশুদের কান্না, ধর্ষিতার আহাজারি, অসহায়ের আদ্র চোখ। কম বুঝি- রাজনীতি, সামাজিকতা ও আধুনিকতা। অক্ষমতা- অভিনয় করতে পারি না। স্ট্রেইট কাট চলি ও বলি। ভয় করি- আল্লাহকে এবং ভালবাসার মানুষগুলোর নীরবতা। নেশা- লেখালেখি করা, সিগারেট ও চা। এক কথায় বলতে গেলে আমি স্বাধীনতা প্রিয় মানুষ। আমার স্বাধীনতার সঙ্গা হলো- অন্যের ক্ষতি না করে নিজে ভাল থাকার নাম স্বাধীনতা। অন্যের প্রতি অহেতুক কৌতুহল আমার নেই। কেউ অযথা তা আমার প্রতি দেখালে ভাল লাগে না তবে প্রিয় মানুষ ছাড়া। অন্যের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটি করা আমা কাছে সবচেয়ে বড় নোংরামি মনে হয়।

মোঃ আহসানুল হক বিশ্বাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্নত বিশ্বাস

১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫১

প্রেমার বুকের ভিতরটা কাঁপছে খুব। সকাল থেকেই চুড়ই পাখির মত ছটফট করছে ওর বুকের ভিতরটা। ঠান্ডা পানির ঝাপটা মুখে দিয়ে আয়নায় চোখ রাখে প্রেমা। শিশির ভেজা পদ্মের মত স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে ওর মুখ। ঘন কালো ভুরু দুটিতে যেন বৈশাখীর মেঘ পরম মমতায় ঘুমিয়ে আছে। ছোট্ট কপালটাতে অরণ্যের স্নিগ্ধ ছায়া। ঘন কালো চোখ দুটিতে দীপ্তি চিকচিক করছে। অনেক্ষন আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকে প্রেমা। না, নিজেকে খুঁটিয়ে দেখছে না সে, আনমনেই তাকিয়ে আছে আয়নার দিকে। এক অজানা শঙ্কা ভর করে আছে ওর মনে।

দেয়ালের ঘড়িটির দিকে চোখ পড়তেই বুকের ভিতরটা কেমন যেন লাফিয়ে উঠল ওর। সুঢৌল বুক স্ফিত হয়ে একটা গাঢ় নিশ্বাস বের হয়ে আসল ওর বুক চিরে। অনেকটা হালকা লাগলো নিজেকে ক্ষনিকের জন্য। আবার হৃদপিন্ডটা লাফিয়ে চলেছে।

আজ সৈকতের সাথে প্রথম দেখা করতে যাবে প্রেমা।ফেসবুকে বন্ধুত্ব সেখান থেকেই কখন যেন সম্পর্কটা প্রনয়ে গড়িয়ে গেছে। খুব চমৎকার করে কথা বলে সৈকত। ওর সেন্স অফ হিউমার, কেয়ারিং কেমন যেন এক অন্যরকম ভাল লাগার জন্ম দিত প্রেমার বুকে। সেখান থেকেই ভালবাসাটার জন্ম।

ওয়ারড্রপে ভাজ করে তুলে রাখা জামাগুলোতে হাত বোলায় প্রেমা। তার প্রিয় রঙ্গ নীল। নীল জামাটা পরলে ওর মনে হয় আকাশটা নেমে এসেছে ওর অঙ্গে। আজ কি সে আকাশ হয়ে সৈকতে মিলবে নাকি গোধুলীর গোলাপী রং হয়ে? ঠোঁটে আলতো কামড় দিয়ে ভাবতে থাকে প্রেমা। বসন্তের রংটা গায়ে ছড়িয়ে দিলে কি খুব মন্দ মন্দ হয়?

কাঁচা ঘিয়ের মত গায়ের রঙ্গ প্রেমার। নীল জামাটা গায়ে জড়িয়ে নেয় প্রেমা। যত্ন করে চোখে কাজল তুলে ও। মেঘ চুমু দেয়া চুলে আলতো করে চিরুনি দিয়ে পিঠের উপর ছড়িয়ে দেয় চুলগুলো। একটু সুক্ষ্মভাবে তাকালে মনে হবে, নীল আকাশে দম্ভে ছড়িয়ে আছে কালো মেঘ। হালকা করে লিপিস্টক ছোঁয়ায় উষ্ণ ঠোঁটে প্রেমা। স্বচ্ছ জলে চাঁদের আলোর ঝলকানির মত স্নিগ্ধ রশ্মির ছটা ওর ঠোঁটে। না ছোট, না বড় অনিন্দ্য সুন্দর পায়ে রুপার নুপুর জড়িয়ে কিছুক্ষন আনমনে তাকিয়ে থাকে সেদিকে প্রেমা। এক অন্য আলো ঠিকরে বের হচ্ছে ওর পা থেকে। খুব যত্ন করে নীল টিপ কপালে জড়িয়ে দেয় প্রেমা। বসন্তের আগমনী বার্তা যেন ওর চুড়ির রঙ্গে।

ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে আবার বুকে চাপ ধরে প্রেমার। সময় বেশি নেই এক্ষুনি বের হতে হবে। হঠাৎ প্রেমার মুঠোফোনটা বেজে উঠল। সৈকত ফোন দিয়েছে।মোবাইল স্ক্রীনে সৈকতের নামটা দেখেই নিজের অজান্তে একটি হাসি ফুটে উঠল প্রেমার ঠোঁটে।

ফোন রসিভ করেই প্রেমা দুষ্টামি করে বলল,
‘সরি, আজ যেতে পারব না। বাসায় একটু সমস্যা হয়ে গেছে।‘
সৈকত একটু স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে বলল,
‘যাক বাঁচা গেল। আমিও আজ কাজে আটকা পড়েছি। সেজন্যই ফোন দিয়েছি।‘

প্রেমার হঠাৎ খুব কান্না পাচ্ছে। তার চোখ ভিজে উঠছে। কাজলের শাসনের বাঁধ ভেঙ্গে জল গড়িয়ে যাচ্ছে। কোথায় এটা নিয়ে সৈকত হট্টগোল করবে, তাকে আসার জন্য অনুনয় বিনয় করবে! অথচ সে না আসতেই ফোন করেছে। প্রেমা নিজেকে সামলিয়ে কোন রকম বলল,
আচ্ছা, তুমি কাজ কর। আমি এখন রাখি। পরে কথা বলব।
সৈকত শুষ্ক কন্ঠে বলল,
আচ্ছা। ঠিক আছে, রাখ।

প্রেমা চোখ মুছে আবার চোখে কাজল আঁকছে। ভেজা চোখে কাজল বসছে না তবুও সে আঁকছে। প্রেমা এক্ষুনি বের হবে। যেখানে দেখা হবার কথা ছিল সেখানে যাবে। কিছুটা সময় এক কাটাবে। সৈকত না আসুক সে যাবে।

ঐ দিকে, সৈকত সেই নয়টা থেকে বকুল ফুলের মালা হাতে নিয়ে প্রেমার জন্য অপেক্ষা করছে। বকুল ফুলের সৌরভে তার দু'টি হাত বকুল ফুল হয়ে উঠেছে। সে অপেক্ষা করবে আজ সারাদিন। সে জানে প্রেমা আসবে তাকে যে আসতেই হবে......

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.