![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অধ্যয়নরত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
নাক ডাকাকে অতীতে তেমন একটা গুরুত্ব দেওয়া না হলেও বর্তমানে একে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখা হচ্ছে। রাতে ঘুমের ঘোরে নাক ডাকলেও তা আপনার দিনের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে। আপনার যদি নাক ডাকার পাশাপাশি দুর্বল লাগে কিংবা শারীরিক কোনো সমস্যা অনুভূত হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।
আমেরিকান একাডেমি অফ স্লিপ মেডিসিনের ডাক্তার এম. সাফওয়ান বদর বলেন, ‘ঘুমের সময় নাক ডাকলে আপনি নিঃশ্বাসের জন্য অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করেন।’
কোনো কারণে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ সংকীর্ণ হলে বাতাসের চাপে সেখানকার নরম টিস্যুগুলো কম্পিত হয়। এ কারণে নাক ডাকা শুরু হয়।
ডাক্তার বদর আরও বলেন, ‘নাক ডাকা কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়।’
নাক ডাকার এক পর্যায়ে নিঃশ্বাসও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অনেকের ঘুমের সময় প্রতিদিন কয়েক শ বার এ ঘটনা ঘটে। ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ নামের এ সমস্যা হলে সঠিক চিকিৎসা করা প্রয়োজন। এ সমস্যার কারণে হার্ট অ্যাটাক, বিষণ্ণতা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
তবে সবার নাক ডাকার চিকিৎসা এক নয় বলেও জানান তিনি। কেউ নাক ডাকার সমস্যায় তার কাছে আসলে ডা. বদর এর কারণ নির্ণয় করে তার পর তা সমাধানের দিকে গুরুত্ব দেন। অনেকের অ্যালার্জি ও নাক সংকীর্ণ হওয়ার কারণেও এ সমস্যা হতে পারে।
নাক ডাকা প্রতিরোধে প্রচলিত কয়েকটি সামগ্রী ও পদ্ধতি এবং সেগুলোর কার্যকারিতা এখানে উল্লেখ করা হলো।
নাকের স্ট্রিপের প্রয়োজন নেই
ডা. বদর বলেন, এসব স্ট্রিপ সাধারণত কোনো কাজে লাগে না। এসব নাকে লাগানো হলে তা নাকের বায়ু চলাচলের পথ আরও সংকীর্ণ করে ফেলতে পারে। কিন্তু নাক চেপে ধরায় এগুলো নাকের কম্পন কমিয়ে দেয়। ফলে শব্দ কম হতে পারে। কিন্তু এর ফলে মূল সমস্যা কমার বদলে বেড়ে যেতে পারে।
ওজন কমান
নাক ডাকা কমানোর জন্য কার্যকর একটি বিষয় হতে পারে ওজন কমানো। বায়ু চলাচলের পথে থাকা অতিরিক্ত টিস্যু বায়ু চলাচলের বাধা দেয়। ফলে নাক ডাকা হতে পারে। শরীরের ওজন কমিয়ে ফেললে এসব টিসু কমে যেতে পারে। ফলে বায়ু চলাচল সহজ হবে এবং নাক ডাকাও কমে যেতে পারে। এ ছাড়াও শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারলে আরও কিছু শারীরিক সুবিধা পাওয়া যাবে।
কাত হয়ে ঘুমান
আপনার যদি চিৎ হয়ে ঘুমানো অভ্যাস থাকে তাহলে তা আপনার গলার ওপর কিছু চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু কাত হয়ে ঘুমালে এ চাপ কমে যাবে। এর ফলে অনেকের নাক ডাকা কমে যায়। তবে অনেকের পক্ষে ঘুমানোর অভ্যাস ত্যাগ করা কঠিন। তাদের জন্য একটা সমাধান হলো আপনার পোশাকের পিঠে একটি পকেট তৈরি করে সেখানে একটি টেনিস বল রাখা। এতে আপনি চিত হয়ে ঘুমাতে পারবেন না।
হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন
ডা. বদর বলেন, আপনার যদি সর্দির জন্য নাকের বায়ু চলাচলের পথ বন্ধ হয় তাহলে হিউমিডিফায়ার নামে যন্ত্রটি বিছানার পাশে রাখতে পারেন। এ যন্ত্রটি বাতাসের আর্দ্রতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে অনেকের নাকে সর্দি হয় না। এতে নাক ডাকাও কমে যায়।
ঘুমানোর আগে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় নয়
অনেকের ঘুমানোর আগে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পান করা অভ্যাস থাকে। এ অভ্যাস ত্যাগ করলে অনেকের নাক ডাকার সমস্যা দূর হতে পারে।
সুন্দর বালিশ বাদ দিন
বালিশের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান দেহের বায়ু চলাচলের পথ সংকীর্ণ করে দিতে পারে। এ কারণে কোনো সুন্দর বালিশ কিনে ব্যবহার শুরু করলেই আপনি যে নাক ডাকা দূর করতে পারবেন, তার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
নাসাল ভালভ ব্যবহার করতে পারেন
নাক ডাকা দূর করার জন্য মার্কিন এফডিএ অনুমোদিত একটি পদ্ধতি নাসাল ভালভ। তবে ডা. বদর বলেন নাক ডাকা দূর করার জন্য এগুলো কার্যকর হতে পারে। নাসাল ভালভ বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তবে এগুলো মাত্র একবার ব্যবহার করা যায়। আর এর দামও কম নয়।
ওরাল ডিভাইস ব্যবহার করতে পারেন
নাক ডাকা প্রতিরোধী কিছু ডিভাইস পাওয়া যায়। কারো যদি স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো মারাত্মক সমস্যা থাকে, তাহলে এটা ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এর বদলে অন্য সহজ সমাধানগুলোই দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন ডা. বদর।
সার্জারিতে দূর হয়
আপনার নাক ডাকা যদি খুবই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তার স্থায়ী সমাধানের জন্য সার্জারির সাহায্য নিতে পারেন। তবে এ সমাধানটি খুব সহজ নয়। দক্ষ চিকিৎসকের সাহায্যেই এ সার্জারি করানো উচিত।
মো: মাসুম বিল্লাহ রুবেল
©somewhere in net ltd.