নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের বিপরীতে পার করে এসেছি সহস্রকাল, হঠাৎ এক উদ্ভ্রান্ত অবয়বে বেঁচে থাকি এপার ওপার।
ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে বসে আছেন ওসি সাহেব ।
সামনের চায়ের কাপ নিশ্চুপ , সেখান থেকে কোনো ধোয়া উঠছে না, কয়েকটা মাছি উড়ে উড়ে চায়ের স্বাদ নিচ্ছে । তিনি একবার পিছনে হেলে যাচ্ছেন আবার সামনে এসে দেখছেন রিপোর্ট। কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়নি রিপন কে। সম্ভবত টেনে ছিড়ে ফেলা হয়েছে তার দুই হাত আর মাথা। এক ভয়ঙ্কর ভাবে তাকে খুন করা হয়েছে। মানুষের পক্ষে মানুষ কে টেনে ছিড়ে ফেলা একটু কষ্টকর অথবা অনেকটা না পারার কাছাকাছি। শরীরের ভেতরে কোথাও বিশেষ কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তার পরনের যে শার্ট ছিল সেটাও কোনো কাটা ছিল না। চিরে যাওয়ার মতো অনেকটা। শরীর থেকে একটা বিদঘুটে ধোঁয়াটে গন্ধ আসছিলো আর হলদে হলদে ভাব।
গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলেন ওসি সাহেব।মিনিট বিশেক চুপচাপ থেকে হঠাৎ কি যেন ভেবে কনস্টবল কে বললো, মিন্টু কে তার সামনে নিয়ে আসতে। মিন্টু মিয়া এসে ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে সামনে দাঁড়ালো। তার চোখমুখে এক আতঙ্কের ছায়া। ওসি জিজ্ঞেস করলেন ,
মিন্টু মিয়া , ভুত ভয় পাও ?
-জ্বি ছার্ , অনেক।
তা, কখনো দেখেছো ভুত ?
ছার্ , আমার যে ছুপড়ী দোহান ডা আছে ,হুনছি আলা হেনো কি জানি আছে , মাজে মদদেই খারাপ খারাপ স্বপ্ন দ্যাক্তাম , বুবাই দরতো। তয় চোখে কিছু দেহি নাই , খুব ডরায় ছার্ , খুব ডরায়।
ওসি সাহেব উঠে কি জানি মনে করে মিন্টু কে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।
- ছার্ আমারে ছাইড়া দ্যান, আমি কিছুই জানিনা, কিছুই দেহি নি।
ওসি সাহেব আবার কনস্টবলকে মিন্টুকে ভিতরে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দিতে বললেন। মিন্টু বিড়বিড় করে কি যেন বলতে বলতে চলে গেলো ভিতরে।
আগরবাতি জ্বালানো হয়েছে, গন্ধ বেশ কড়া।
দোকান মালিক আর আশেপাশের কয়েকজনের সহযোগিতায় মিলাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রিপন খুন হওয়ার তিনদিন পর এই মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। হুজুর সুর করে আরবিতে কিছু পড়ে সবাইকে তিনবার সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাস, আর কয়েকবার দরূদ শরীফ পাঠ করতে বললেন। এর মাঝখানে একজন গোলাপ জল ছিটিয়ে দিচ্ছিলো। সবাই মাথা নিচু করে পড়তে লাগলো , কিছু ছোট ছেলেরা বসে ছিল একদম জিলাপির ঠোঙার কাছাকাছি,ওরা কোনো কিছু পড়তে পারে না মনে হয় , অন্য কথা বলছিলো সবাই। হুজুর মুনাজাত ধরলেন, রিপনের আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করা হলো , সকল প্রকার জীন ভুতের অনিষ্ট থেকে অত্র এলাকার সবাইকে যেন আল্লাহ হেফাজত করেন সেই দোয়াও করা হলো। মিলাদ শেষে সবার মাঝে তবারক মানে জিলাপি বিতরণ করে দেওয়া হলো। কয়েকজন জটলা হয়ে জিলাপি খেতে খেতে আসতে আসতে কি যেন আলোচনা করতে লাগলো। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে লাগলো চৌরাস্তার মোর। সবাই আগের মতো স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করতে লাগলো আবার।
সকাল বেলা অফিসের কাজবাজ সবার মাঝে বুঝিয়ে দিয়ে ফেসবুকে স্ক্রলিং করছিলেন ইয়াসিন সাহেব। দেখতে বেশ সুন্দর, সুঠাম গড়নের দেহ। উচ্চতায় প্রায় ৬ ফিট হবেন। তিনি এখানে ম্যানেজার হিসেবে আছেন দীর্ঘদিন। সখিবানুর ওসি সাহেবকে দেওয়া কাগজে লেখা ঠিকানা অনুযায়ী এই অফিসেই আসা হয়েছে খোঁজ খবর নিতে। মগবাজার থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাথে ডিবির কয়েকজন লোকজন এসেছে এই অফিসে কথা বলতে , জাস্ট রিপনের ব্যাপারে ইনফরমেশন নিতে।
তাদেরকে অফিসের কনফারেন্স রুম এ বসতে দেওয়া হলো। কিছু বিস্কুট আর সাথে লাল চা দিয়ে গেলো একজন।
ইয়াসিন সাহেব এলেন ,বসলেন। নিজের পরিচয় দিয়ে চুপ করলেন।
ডিবি অফিসার জিজ্ঞেস করলেন ,
রিপন এখানে কি হিসেবে চাকরি করতো ?
- অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি কন্ট্রাকচুয়াল।
আচ্ছা , ছোট্ট করে চায়ে চুমুক দিয়ে নিলেন অফিসার।
কতদিন থেকে এখানে চাকরি করতো ?
- ১ বছর ৩ মাস।
রিপন খুন হয়েছে তা আপনি জানেন ?
-জ্বি জানি , অনলাইন নিউজ রিপোর্ট এ দেখেছিলাম, পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সে আমাদের অফিসের রিপন।
ঘটনার দিন রিপন অফিস করেছিল ?
-জ্বি ,তবে অফিস ছুটি হওয়ার ২ ঘন্টা আগে তার জরুরি কাজের কথা বলে বের হয়ে গিয়েছিলো।
অফিস এ কোন বিষয়টা নিয়ে রিপন বেশি আলোচনা করতো বলে আপনার মনে হয় ?
- সে আমার সাথে সেইভাবে কোনো আলোচনা করতো না তবে অন্যদের সাথে করতে পারে।
এবার বাকিদের এক জন একজন করে ডেকে প্রয়োজন মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। জুবিয়া নাম এক মেয়ে আছে সে বললো , রিপন বেশ কয়েকদিন কি সব কালোজাদু , প্ল্যানচেট এসব নিয়ে তার সাথে আলোচনা করতো। সে এসবে ভয় পায় বলে আলোচনা বাড়াতো না। অফিসার রিপনের ডেস্ক একবার ঘুরে দেখলো। অফিসার সবার উদ্দেশে বললো, যদি কখনো ডাকা হয় তবে যেন থানায় যায়, যে কাউকে ডাকা হতে পারে। ইয়াসিন সাহেবের থেকে অফিসের সবার নামের একটা তালিকা এবং সেদিনের সবার এটেন্ডেন্সের শিট নিয়ে বেরিয়ে গেলেন সবাই ।
চলবে ।
আগের পর্ব গুলো পড়ুন এখানে
ধোয়া (সিজন -১)
ধোয়া (সিজন ২)
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৫
মায়াস্পর্শ বলেছেন: মাইর দিতে ইচ্ছে করছে
দিন, তবুও যদি শেষ হয়।
পরবর্তী পর্বে শেষ করে দিবো। যেমনই হোক। আমার নিজেরও আর ভালো লাগছে না।
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৮
মিরোরডডল বলেছেন:
সিরিজ তারাতারি শেষ করার কোনো উপায় থাকলে জানাবেন।
করোনার মতো এক মহামারী অথবা ভুমিকম্প দিয়ে সকল চরিত্রকে মেরে ফেলতে হবে।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫১
মায়াস্পর্শ বলেছেন: বুলডোজার চালাবো তবে সবগুলোর উপর দিয়ে।
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৩
মিরোরডডল বলেছেন:
কাহিনী কোথাও যাচ্ছে না, দুইটা সিকোয়েন্সে পর্ব শেষ, এভাবে হলে সিরিজ ১০০ পর্বে যাবে।
একটু বড় করে লিখবে, ওখানে একটা কাহিনী থাকবে, অনেক ক্লু আসবে খুনটা কে করতে পারে, আরও অনেক চরিত্র আসবে।
ভিকটিম কে, কি তার পরিচয়, সেটারও একটা ব্রিফ থাকবে।
মার্শ কবিতা লেখায় যত ভালো, সিরিজ লেখাতে ততটাই ...... থাক না বলি।
পরে কান্না করবে।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৩
মায়াস্পর্শ বলেছেন: পরবর্তী সিজন এ শেষ হয়ে যাবে।
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
মিরোরডডল বলেছেন:
আরেহ না তা কেনো!
You do what you're supposed to do.
বুঝেছি কমেন্টে মন খারাপ, একটা গান দিয়ে যাচ্ছি।
গানটা শুনলে মনটা ভালো হয়ে যাবে।
good night!
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৫
মায়াস্পর্শ বলেছেন: বাহ, সুন্দর তো গান টা।
৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২০
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: সুন্দর গল্প। শেষ পর্বের অপেক্ষায়...
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০১
মায়াস্পর্শ বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা, জানিনা শেষ অবধি গল্পটা সুন্দর থাকবে কিনা।
৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: লিখতে থাকুন।
চালিয়ে যান। সাথে আছি।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪১
মায়াস্পর্শ বলেছেন: সাহস পাচ্ছি তবে। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১
মিরোরডডল বলেছেন:
মাইর দিতে ইচ্ছে করছে