নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কেবলই ফুরিয়ে যায়।

মোঃ মাইদুল সরকার

একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............

মোঃ মাইদুল সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শির কাটালি

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮



ভরা বর্ষার শেষ বিকালে বৃষ্টি নেই দেখে হানিফ ও সুবল দু’জনে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে বেরিয়েছে। চারদিকে পাটক্ষেত আর ধানক্ষেত। অপেক্ষাকৃত নীচু জমিগুলো খালি পড়ে আছে। কিছু জলজ উদ্ভিদ ও শেওলায়, কচুরিপানায় মাখামাখি। মাছ অল্পই পাওয়া গেল। আরও পাবার আশায় অনেকটা দূরে চলে এলো তারা।

জোড়া হিজল গাছ এর কাছে আসতেই তারা ভাল মাছ পেতে শুরু করল। এই হিজল গাছের পাশেই পুকুর । এখন বর্ষা কাল বলে বুঝা যাচ্ছেনা। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা নেমে এলো। সবুল বলল-রাত হয়ে যাচ্ছে, চল চলে যাই। এদিকে আর বেশিক্ষণ থাকা ঠিক হবো না।

হানিফ বলল- আরেকটু পড়ে যাই। ভালইতো মাছ উঠছে জালে। বেশি মাছ পেলে ঘরের জন্য রেখে বিক্রিও করা যাবে। মাছের নেশায় বুদ হয়ে রইল দুজনে। ক্রমে ক্রমে রাত বাড়তে লাগলো। অন্ধকার রাত। আকাশের চাঁদ ঢাকা পড়ে আছে মেঘে। হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। লন্ঠনের আলো ক্ষীণ হয়ে আসছে তেল ফুরিয়ে যাওয়াতে।

না আর দেরি করা ঠিক হবেনা। নৌকা ঘুরিয়ে ওরা ফিরতি পথ ধরলো। আরও তখনই দেখতে পেল একটা আলোর গোলা যেন আস্তে আস্তে অনেক দূর থেকে এগিয়ে আসছে। প্রথমে কিছু মনে না হলেও আলোটা যতই এগিয়ে আসছে ততই একটা ভয়ের স্রোত যেন শরীরে বয়ে যাচ্ছে।

তাদের আর বুঝতে বাকি রইলনা এটা কি ? ছোটকাল থেকে শুনে আসা সেই ভয়াল শির কাটালির গল্পটা যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো। যতই নৌকা বাইছে দুজনে প্রাণ পনে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। নৌকা যেন গোলকধাধার মত একই জায়গায় আটকে গেছে।

সেই আলোর গোলাটা অনেক কাছে চলে এসেছে । এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সুবল প্রথমে পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো- মানুষের মতই কিন্তু আরও লম্বা-চওড়া একটা বিদঘুটে শরীর শূণ্যের উপর ভাসছে । গলার উপর থেকে মাথাটা যেন কেউ কেটে আলাদা করে ফেলেছে। কাটা গলা দিয়ে শুধু আগুন বেরুচ্ছে। গলার উপর শির না থাকায় এর নাম হয়েছে শির কাটালি।

ভয়ে আর আতঙ্কে ওমাগো বলে সুবল মূর্ছা গেল। ভাগ্য ভাল সে পানিতে পরে নাই। তার শরীরটা পড়েছে নৌকার উপর। সুবলের চিৎকার ও পতনের শব্দে হানিফ পিছনে তাকালো এবং দেখলো সেই অশরীরীটা হিজল গাছের উপর পাক খাচ্ছে। ভয় পেলেও মুখে অনবরত সুরা পড়ে যাচ্ছে-হানিফ। কোনরকমে নৌকাটা পাট ক্ষেতের ভিতরে ঢুকিয়ে হামাগুড়ি দয়ে সে সুবলের সামনে এসে হাফাতে লাগলো।

পিপাসায় বুকের ছাতী যেন ফেটে পড়ছে। শরীরের কম্পন এতটাই বেড়েছে যে সুবলকে ধরেও কাপতে লাগলো। এভাবে কতক্ষণ কেটে গেছে সে বলতে পারবেনা। এক সময় চোখ খুলে দেখে চারদিকে অন্ধকার। সে কোথায় আছে পৃথিবীতে না অন্য কোথাও বুঝতে একটু সময় লাগলো। তারপর সবকিছু মনে পড়ল। ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকলো। না কিছু নেই। আগুনের গোলাটাও নেই।

সুবলের চোখে মুখে পানি ছিটানোর অনেকক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরলো। কেন মতে জান আর নৌকা নিয়ে তারা বাড়ি ফিরলো। কিন্তু তারা যা দেখলো সেটা কোন রূপকথা নয়। গল্পের পিশাচটা এভাবে বাস্তবে তাদের কাছে দেখা দেবে সেটা তারা কনও দিন ভাবেনি।

এর পর থেকে কেউ ওখানে পারত পক্ষে যায় না। এখনো অন্ধকার রাতে আচমকা কাটা মাথার আগুনের গোলাটা জোড়া হিজলতলায় দেখতে পাওয়া যায়.............

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৬

নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় ভাই,
চমৎকার হরর গল্প লিখেছেন। ভর বিকাল বেলা বেশ ভালোই ভয় পেলাম। :`>
গল্পের মাঝে বোল্ড করে শির কাটালি শব্দটা বড়ই বিদঘুটে লাগছে। বাদ দেয়া যায় না?
শেষ দিকে শব্দটা পিচাষ হবে না, হবে পিশাচ। কনো দিন ভাবেনি হবে না, হবে কোন দিনও।

এর পর থেকে .......।কোন কোন আন্ধার রাতে... না হয়ে যদি হতো,
এর পর থেকে কেউ ওখানে পারত পক্ষে যায় না। এখনো অন্ধকার রাতে হঠাৎ হঠাৎ আচমকা কাটা মাথার আগুনের গোলাটা জোড়া হিজলতলায় দেখতে পাওয়া যায়.............

আমিও ভাবছিলাম কয়েকদিন ধরে একটা হরর লিখবো। আমি লিখলে সবার খবর আছে! ;)
ধন্যবাদ আর শুভ কামনা রইল।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:০৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ নীআ ভাই।

ঠিক করে দিয়েছি।

শেষের লাইনটাও আপনারটাই রাখা হয়েছে।

দুজনের ভাবনায় মিল আছে দেখছি। লিখুন হরর গল্প। আমারাও একটু ভয় টয় পাই গল্পটা পড়ে।

ভাল থাকুন।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:১৪

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই,
তাড়াহুড়া করে লেখার সময় ডাবল হয়ে গেছে। বেশ লজ্জা নিয়ে বলছি। আচমকা শব্দটা কেটে দিন। ডুপ্লিকেট হয়ে গেছে। হঠাৎ হঠাৎ / আচমকা - একই মিনিং।
আমার লাইন দেবার জন্য অসংখ্য কৃতগ্গতা.....

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:২৮

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আবার ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ গল্পকার আপনাকে।

পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:০৩

আরোগ্য বলেছেন: ধুর! ভুল হয়ে গেল। রাতে পড়লে বেশি ভালো লাগতো।
দেখি রাতে আবার পড়ার চেষ্টা করবো।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:১১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
বেশ বলেছেনতো । তাহলে রাতে আরেকবার পড়ুন।

দেখুন ভয় পান কি না ? এখন মানুষের ভয় ডর কমে গেছে।


ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমি কোনো দিন মাছ ধরতে পারলাম না বরশি দিয়া।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:১২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আপনি বহুরে পোলা। তাই মাছ ধরতে পারেন ন কোন দিন।

অবশ্য চেষ্টা করলে শিখা যায়।

ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫১

সুমন কর বলেছেন: ছোট কিন্তু ভালো হয়েছে। +।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:১২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অণু গল্পতো তাই।

ভাললাগায় ধন্যবাদ।

৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:২১

হাবিব বলেছেন: অনেক মাছ ধরেছি বরশিতে........
কি যে ভালো লাগে.......

আপনার গল্পও ভালো লেগেছে

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:০৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
মাছ ধরার স্মৃতিগুলো এখন কেবলই ছবি।

গল্প ভাল লাগায় ধন্যবাদ কবি।

৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৫০

নজসু বলেছেন:



এই সাত সকালেই আমার গা ছমছম করে উঠলো।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:১০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ।

গল্পের কাহিনিটা যে বাস্তব থেকে নেয়া তাই হয়তো গা ছম ছম করে উঠেছে।

ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.