নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............
গান
সর্বত মঙ্গল রাধে: মেহের আফরোজ শাওন ও চঞ্চল চৌধুরীর গাওয়া গানের কপিরাইট নিয়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়া দ্বিধাবিভক্ত, চলছে তুমুল বিতর্ক, তখন আমরা জানার চেষ্টা করেছি, কেন তৈরি হলো কপিরাইট নিয়ে এমন বিভ্রান্তি।
নাট্যাভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর গাওয়া কণ্ঠে গাওয়া 'সর্বত মঙ্গল রাধে' শিরোনামের গানটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। একদল বলছে, গানটি কপিরাইট ভঙ্গ করে গাওয়া হয়েছে। আরেকদল প্রশ্ন তুলছে, লোকসঙ্গীতের আবার কপিরাইট হয় কি করে?
গানটির একটি ভিডিও কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পর ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়, সেটিতে গানের কথার ক্রেডিটে বলা হয় 'লোকজ সঙ্গীত ও সংগৃহীত গান'। কিন্তু সরলপুর নামের একটি ব্যান্ডের দাবি, এই লিরিক্স তাদের লেখা এবং তাদের কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনও রয়েছে।
এমন দাবি ও মামলা করার হুমকির প্রেক্ষাপটে গানটির প্রযোজনা সংস্থা 'আইপিডিসি আমাদের গান' ভিডিওটিকে ইউটিউব থেকে নামিয়ে নেয়, কিন্তু তাতে বিতর্ক না থেমে বরং বেড়েই চলে।
অনেকেই এই গানটিকে প্রাচীন লোকগানের সংকলন 'ময়মনসিংহ গীতিকা'র অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করেন এবং গানটির কপিরাইট আনুষ্ঠানিকভাবে সরলপুর ব্যান্ডের হওয়া উচিৎ না বলেও অভিযোগ তোলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
তথ্যসূত্র ঃবিবিসি বাংলা।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সহমত।
লোকজ গানের আবার কপিরাইট কি ?
একটি গানের গীতিকারই হন সত্ত্বাধিকারী তারপর সহযোগী হিসেবে সুরকার ও গায়ক পান কপিরাইট পান।
লোকজ গানের যেহেতু মূল লেখক বা গীতিকার পাওয়া যায় না অনেক সময় যুগ যুগ বা শত বছর ধরে তা চলতে থাকে। ভালবাসা বা ভক্তির জায়গা থেকে লোকজগানের মূল লেখক অনেক সময় দাবী দাওয়া তোলেন না কিন্তু আমাদের নৈতিকা আজ কোথায় জনপ্রিয় হওয়া বা করার জন্য লোকজ গান কে আমরা নিজের কপিরাইটের আওতায় আনছি। কি লজ্জা লোকজ সম্পত্তি নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া।
আইনের প্রয়োগ যথাযথ হওয়া উচিৎ।
ধন্যবাদ।
২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:০৯
পদ্মপুকুর বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু স্যারের মন্তব্যে সহমত। এই পোস্টে ব্লগার সোনাবীজ অথবা ধুলোবালিছাই এর মন্তব্য প্রয়োজন। গানের বিষয়ে তিনি খুবই ভালো জানেন।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৩৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: একটি গানের গীতিকারই হন সত্ত্বাধিকারী তারপর সহযোগী হিসেবে সুরকার ও গায়ক পান কপিরাইট পান
অথচ লোকজ গানটি শত বছর ধরে চলে আসছে একটু সুর বা শব্দ পরিবর্তন করে নিজের নামে দাবী করা হাস্যকর।
সোনাবীজ অথবা ধুলোবালিছাই ভাই এর মন্তব্য কাম্য।
ধন্যবাদ।
৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পদ্ম পুকুর বলেছেন: এই পোস্টে ব্লগার সোনাবীজ অথবা ধুলোবালিছাই এর মন্তব্য প্রয়োজন। গানের বিষয়ে তিনি খুবই ভালো জানেন। সোনাবীজের জন্য তো বিব্রতকর অবস্থা আসলেই।
বহুল আলোচিত এই গানটা আসলে আমি কোনোদিনই শুনি নাই। কয়েকদিন আগে একটা টিভি রিপোর্টিঙে চঞ্চল চৌধুরীর ভাষ্য শোনার পর গানটা খুঁজেছিলাম, সেদিন পাই নি। কারণ, গানের টাইটলে জানা ছিল না সঠিক মতো। আজ সার্চ দিতেই পেয়ে গেলাম স্বয়ং শাওন ও চঞ্চল চৌধুরীর গাওয়া গানটিই। চঞ্চল উল্লেখ করছিলেন সুমি মির্জার কথা। লেজার ভিশনের চ্যানেলে সুমির গানটা পাওয়া যাচ্ছে। ওখানে লিরিসিস্ট হিসাবে সুমি মির্জার নামই লেখা আছে।
চঞ্চল চৌধুরীর ভাষ্যমতে, সুমি মির্জা ৩০ ভাগ নিয়েছেন ময়মনসিংহ গীতিকা থেকে, বাকি ৭০ ভাগ নিজে লিখেছেন। চঞ্চলের প্রশ্ন, বাকি ৭০ ভাগ সুমি মির্জা নিজে লিখলেও কনসেপ্টটা তো নিজের না, ময়মনসিংহ গীতিকারই, তাহলে সুমি মির্জা সেটা নিজের বলে দাবি করেন কীভাবে?
চঞ্চল আরো বলেন যে, তিনি (চঞ্চল) প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গান বিষয়ে তার অত জ্ঞানও নাই। প্রচলিত গান হিসাবে ওটা তিনি গেয়েছিলেন।
অন্য শিল্পীর গান 'কাভার সং' হিসাবে আমরা গেয়ে থাকি। তাতে কাভার সিঙ্গারের সাথে মূল শিল্পী, গীতিকার ও সুরকারের নাম উল্লেখ থাকে। চঞ্চল-শাওনের গানের ক্রেডিট লাইনে কি সুমি মির্জার নাম ছিল না? 'প্রচলিত' হিসাবে উল্লেখ করায় কি সুমি মির্জা বা সরলপুর ব্যান্ড ক্ষেপেছিল?
সুমি মির্জা যদি এটার কপিরাইটধারী হয়ে থাকেন, তাহলে তার গানের লেবেলে ময়মনসিংহ গীতিকা থেকে অনুপ্রাণিত কথাটা লেখা নৈতিক দায়িত্ব, তবে এটা লেখার জন্য আইনগতভাবে তিনি বাধ্য নন, কারণ, কপিরাইটের আবেদনে নিশ্চয়ই তিনি ময়মনসিং গীতিকার কথা উল্লেখ করে থাকবেন।
আমি দেখেছি, শুধু ইউটিউব না, প্রকাশিত অনেক অ্যালবামেই অনেক গানকেই 'প্রচলিত' হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যেগুলোর গীতিকার, সুরকার ও মূল শিল্পীর স্পষ্ট অস্তিত্ব/উল্লেখ পাওয়া যায়। নির্মাতারা কষ্ট করে না খুঁজে সহজভাবে 'প্রচলিত' লিখে দিয়েই খালাস। কষ্ট ও রাগ লাগে যখন দেখি বাংলাদেশের গানগুলো ভারতীয় চ্যানেলে 'প্রচলিত' হিসাবে দেখানো হয়, যার গীতিকার ও সুরকারের উল্লেখ পাওয়া যায়।
একটা গান কখন 'প্রচলিত' হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়? যখন একটা গানের কিছু অংশ কোনো এক ব্যক্তি নিজে নিজে বানিয়ে গাইলেন, সেটা শুনে হয়ত আরেকজন গাইলেন। এরপর ঐ কথাগুলো সামান্য পরিবর্তন করে আরেকজন গাইলেন। কিছুকাল পরে তার সাথে আরো কিছু কথা অন্য একজন যোগ করলেন। কেউ হয়ত সুরে একটু পরিবর্তন আনলেন। এভাবে যুগ যুগ ধরে চলার পর দেখা গেল- কে যে এই গান শুরু করেছিলেন তার কোনো হদিসই নাই, তখন ওটাকে 'প্রচলিত' বলা হয়। এইজন্য সব লোকগীতিই প্রচলিত না। যারা ইইটিউবে আমার ভ্লগ ফলো করেন এবং ভিডিও দেখেন, একটা বিষয় নিশ্চিতভাবে দেখেছেন যে, গীতিকার, সুরকার ও মূল শিল্পী ছাড়া আমি কোনো ভিডিও তৈরি করি না। গীতিকার, সুরকারের নাম খুঁজতে খুঁজতে দিনের পর দিন, মাস পার হয়ে যায় আমার। যেটা না পাওয়া যায়, তার জন্য 'অজানা' কথাটা লিখে রাখি।
আজকাল নতুন করে কোনো 'প্রচলিত' গান তৈরি করা সম্ভব না। কারণ, সব এলিমেন্ট ধারণ/রেকর্ড করে রাখার যাবতীয় ডিভাইস এখন হাতের কাছে। ফেইসবুক, ব্লগ, ভ্লগে সার্চ দেয়া মাত্র সবকিছু হাতের কাছে চলে আসে।
চঞ্চল-শাওনের গানটা খুব শিল্প-সম্মত, গায়কী ভালো, সুরেলা। সুমি মির্জার গাওয়া ভালো হয় নি, প্রদর্শনীও দৃষ্টিনন্দন নয়। চঞ্চল জুটি হয়ত সুমির গানকে ছাপিয়ে যাচ্ছিল, তাই রিপোর্ট করে থাকবেন এটা রিমুভ করার জন্য।
কিন্তু এই গান এখন ইউটিউবে প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে।
বড়ো কমেন্ট হয়ে গেল। রিভিশন দিতে পারলাম না। কিছু বুঝাইতে পারলাম কিনা জানি না।
যারা গানটা দেখতে চান, Sorboto mongolo radhe binodini rai|Chanchal Chowdhury|Shawon লিখে সার্চ দিলেই ইউটিউবে দেখতে পাবেন।
ধন্যবাদ পদ্ম পুকুরকে এ অধমের নাম উচ্চারণ করার জন্য। সম্মানিত বোধ করলাম অনেক।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
পদ্ম ভাই ঠিকই বলেছেন। আপনার এমন মূল্যবাদন মন্তব্যই আশা করছিলাম।
ধন্যবাদ তথ্যবহুল মন্তব্যে।
৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এইটাতো বেশ কয়েক দিনের পুরান খবর।
এখন এই গাণের নানান লাইন নানান পুরনো বইতে পাওয়ার খবর আসতেছে।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
খবরটা পুরোনো হলেও এটা ব্লগে আসেনি তাই এ নিয়ে পোস্ট দেওয়া।
ধন্যবাদ
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:০৫
অধীতি বলেছেন: এখন কত কিছুই হচ্ছে এটুকু বাদ যাবে কেনো। কবে শুনবেন লালনের গানও অমুক তমুক ব্যান্ডের।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
হতে পারে ভায়া যা দিনকাল পড়েছে-লালনের গান এ ২ লাইন চেঞ্জ করে অমুকে বা অমুক ব্যান্ডের বলে চালিয়ে দেওয়াটা অসম্ভব নয়। কোন যাচ্ছে আমাদের নৈতিকতা ও সংস্কৃতি।
৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ফেসবুকে তো এ বিষয়টা নিয়ে ঝড় বয়ে গেছে।
আমি কোনো ঝড়ে অংশ নিই নি। তবে গান খুব উপভোগ করেছি।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
গানটা বেশ হয়েছে বলা যায়।
ধন্যবাদ।
৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:১০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: উপরে ৩ নাম্বার কমেন্টে চঞ্চল চৌধুরী সরলপুর ব্যান্ডের কথা উল্লেখ করেছেন ধরে নিতে হবে। সরলপুর বলেছে তাদের লেখা ৭০%, বাকি ৩০% ময়মনসিং গীতিকার। ওদিকে সুমি মির্জা আবার পুরোটার গীতিকার নিজেকে ঘোষণা দিয়ে বসে আছেন।
নীচের ভিডিওটা খুব তথ্যবহুল।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
মূল বিষয়টা তো ধার করা এবং ৩০ বা ৭০% বুঝিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর দিন শেষ।
আবারও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:১১
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: ৭০% নিজে লিখলে সুমি মির্জা কষ্ট পেতেই পারে। কারন ৩০% মাত্র তার নিজের লেখা না।
চঞ্চল বা শাওনের বা যারা গানটি বানিয়েছেন তারা তার নামটা স্মরণে নিলেই আর সুমি মির্জার কষ্ট হত না।
আমার ওদের দুজনের গান খুবই ভালো লেগেছে এবং আমি সার্বিক পরিবেশনা সাজ গোজ এবং গানের সাথে অভিনয় অনবদ্য। যা সুমি গাইলে কখনই মানুষ হয়ত জানতো না। তবুও সুমির জন্য আমার সমর্থন রইলো। গায়কীতে না হোক সুন্দর এই সৃষ্টির জন্য।
ক্রেডিট না পেলেও তার আনন্দিত হওয়া উচিৎ শুধু যারা তার আশেপাশে মানুষেরাই জানেন কে এর রচিয়িতা তাদের জন্যও।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আসলে এতদিন গানটা আলোচনায় ছিলনা যেইনা চঞ্চল ও শাওন হিট করলো অমনি সুমি ও সরলপুর উদয় হলো। সৃজনশীলতাকেও কলুষিত করে ফেলছে কিছু লোক দুঃখজনক।
৯| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:২১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রহর ব্রো@
আমার একটু ভুল হয়ে গেছে। সুমি মির্জা আলোচনায় ছিলেন না, আমিই বোধহয় ভুল করে তাকে নিয়ে এলুম। চঞ্চল জুটির সাথে দ্বন্দ্ব হলো সরলপুর ব্যান্ডের। চঞ্চল বোধহয় কোথাও উল্লেখ করেছেন যে, এটা তো সুমি মির্জাও গেয়েছেন। তো, তা থেকেই আমার মগজে সুমি ঢুকে গেছেন। সুমি মির্জার গানেও এখন প্রচুর ভিড় হচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন সরলপুর ও সুমি মির্জা।
সুমি মির্জার থ্রেডে এখন নেগেটিভ কমেন্টে ভরে গেছে। আমিও কমেন্ট করতাম, কোনোরকমে টেম্পটেশন কন্ট্রোল করেছি।
আশা করি ব্যাপারটা বোঝাতে পারলাম।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:২৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুমি নিজেও ওই মংমনসিংহ গীতিকা থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে লিখেছে তারও এটা স্বীকার করা উচিৎ সহজ সরলভাবে।
ধন্যবাদ।
১০| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:২৯
পদ্মপুকুর বলেছেন: @ সোনাবীজ....
উত্তম না অধম; তার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা (প্রচলিত).... আবার প্রচলিত বলে মামলা খেয়ে যাই কি না
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কেচো খুড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে এলো অবস্থা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
১১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পদ্ম পুকুর বলেছেন: @ সোনাবীজ...
সেই
---
একটা ভালো তথ্যপূর্ণ লেখা পেলাম। কপি এবং পেস্ট করলাম নীচে।
---
সম্প্রতি ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’/‘যুবতী রাধে’ গানটি গেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও শিল্পী মেহের আফরোজ শাওন। সংগীতায়োজন করেছেন পার্থ বড়ুয়া। গানটি ‘আইপিডিসি আমাদের গান’ ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। কিন্তু পরমুহূর্তেই প্রশ্ন ওঠে গানের কথা ও সুর নিয়ে। ইউটিউবে দেয়া ক্রেডিট লাইনে গানটির কথা ও সুর ‘সংগৃহীত’ উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু সরলপুর ব্যান্ড থেকে দাবি করা হয়: গানটি তাদের। তাদের কাছে কপিরাইট সনদও রয়েছে। এমন দাবির মুখে ফেসবুক থেকে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান গানটি সরিয়ে নেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, নিন্দা, বাক্যবাণ পক্ষে-বিপক্ষে কম হয়নি।
আমাদের এ লেখার উদ্দেশ্য ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ বা ‘যুবতী রাধে’ গানটির উৎস সন্ধান করা। তথ্য-উপাত্ত, গ্রন্থের আলোকে জানা গানটি প্রকৃত অর্থে কার লেখা, এটি সত্যিই কি লোকসংগীত, না কি সরল ব্যান্ডের সৃষ্টি? এ আলোচনা শুরুর পূর্বে এ বিষয়ে দুটি পক্ষেরই মন্তব্য জেনে নেয়া যাক। চঞ্চল-শাওনের গাওয়া গানটি প্রকাশের পর ফেসবুক লাইভে এসে সরলপুর ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট মারজিয়া আমিন তুরিন বলেছেন, ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানটি তাদের। তাদের কাছে কপিরাইট সনদও আছে। ২৪ অক্টোবর একাত্তর টিভির অনুষ্ঠানে সরলপুর ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, ভোকালিস্ট তরিকুল ইসলাম তপন বলেন, ‘এ গানটি আমাদের। আমরা এ গানটি লেখা শুরু করি ২০০৬-২০০৭ সাল থেকে। সর্বপ্রথম গানটি প্রকাশ করি ২০১০-এর দিকে।’ গানটি তাদের ‘মৌলিক গান’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা রাধা-কৃষ্ণের যে গান, গল্পগুলো শুনেছি, সেখান থেকে তথ্য, শব্দচয়ন, ভাবধারা সংগ্রহ করেছি ৩০ ভাগ। আমরা সেখান থেকে হুবহু কোনো লাইন সংগ্রহ করিনি। আমরা রাধা-কৃষ্ণের গান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। পুরো গানটি আমরা আমাদের মতো করে লিখেছি। আমরা কোথাও থেকে হুবহু নিইনি।
অন্যদিকে পার্থ বড়ুয়া, চঞ্চল চৌধুরী, মেহের আফরোজ শাওন বলেছেন, গানটিকে তারা লোকসংগীত হিসেবে জানতেন। ফলে ক্রেডিট লাইনে কথা ও সুর ‘সংগৃহীত’ বলা হয়েছে। সরলপুর ব্যান্ডের কপিরাইট বিষয়ে তারা অবহিত ছিলেন না। তারা বিষয়টি নিয়ে ‘বিস্মিত’, ‘বিব্রত’, ‘বিভ্রান্ত’।
আলোচনার সুবিধার্থে সরল ব্যান্ডের ‘যুবতি রাধে’ গানটিও এখানে উপস্থাপিত হলো:
‘সর্বত মঙ্গল রাধে বিনোদিনী রাই
বৃন্দাবনের বংশীধারী ঠাকুর কানাই।
একলা রাধে জল ভরিতে যমুনাতে যায়
পেছন থেকে কৃষ্ণ তখন আড়ে আড়ে চায়।
জল ভর জল ভর রাধে ও গোয়ালের ঝি
কলস আমার পূর্ণ কর রাধে বিনোদী।
কালো মানিক হাত পেতেছে চাঁদ ধরিতে চায়
বামন কি আর হাত বাড়ালে চাঁদের দেখা পায়।
কালো কালো করিস্ না লো ও গোয়ালের ঝি
আমায় বিধাতা করেছে কালো আমি করব কি।
এক কালো যমুনার জল সব লোকই খায়
আগে কালো আমি কৃষ্ণ সকল রাধে চায়।
এই কথা শুনিয়া কানাই বাঁশি হাতে নিল
সর্প হয়ে কালো বাঁশি রাধেকে ধংশিল ।
বামপায়ে ধংশিল রাধের বামপায়ে ধরিল
মরলাম মরলাম বলে রাধে জমিনে পরিল।
মরবে না মরবে না রাধে মন্ত্র ভাল জানি
দু-একখানা ঝাড়া দিয়ে বিষ করিব পানি।
এমন অঙ্গের বিষ যে ঝাড়িতে পারে
সোনার এই যৌবনখানি দান করিব তারে।
এই কথা শুনিয়া কানাই বিষ ঝাড়িয়া দিল
ঝেড়ে-ঝুড়ে রাধে তখন গৃহবাসে গেল।
গৃহবাসে গিয়ে রাধে আড়ে পেঁচায় চুল
কদম ডালে থাইক্কা কানাই ফিক্কা মারে ফুল।
বিয়া নাকি কর কানাই বিয়া নাকি কর
পরের রমনি দেখে জ্বালায় জ্বলে মর।
বিয়াতো করিব রাধে বিয়াতো করিব
তোমার মত সুন্দর রাধে কোথায় গেলে পাব।
আমার মত সুন্দর রাধে যদি পেতে চাও
গলায় কলস বেঁধে যমুনাতে যাও।
কোথায় পাব হার কলসি কোথায় পাব দড়ি
তুমি হও যমুনা রাধে আমি ডুবে মরি।
দুই.
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের উল্লেখযোগ্য কবি দ্বিজ কানাই। তাঁর রচনা ‘মহুয়া’ পালা। এটি ১৬৫০ সালে রচিত। ড. দীনেশচন্দ্র সেন ‘মহুয়া’ পালাটি ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’য় গ্রন্থভুক্ত করেছেন। বইটির ভূমিকায় ড. সেন লিখেছেন, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আনুকূল্যে চন্দ্রকুমার দে মৈমনসিংহের গাথা সংগ্রহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নিযুক্ত হন। তিনি তাঁকে ‘মহুয়া’সহ মোট ২১টি পালা সংগ্রহ করে দিয়েছেন। সুতরাং ‘মহুয়া’ পালার প্রাচীনত্ব নিয়ে প্রশ্ন নেই। মৈমনসিংহ-গীতিকার তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৫৮ সালে। বইটি থেকে ‘মহুয়া’ পালার ৫ নং পর্বটির চার লাইন হুবহু তুলে ধরছি। দ্বিজ কানাই লিখেছেন:
‘লজ্জা নাই নির্লজ্জ ঠাকুর লজ্জা নাইরে তর।
গলায় কলসী বাইন্দা জলে ডুব্যা মর ’
‘কোথায় পাব কলসী কইন্যা, কোথায় পাব দড়ী।
তুমি হও গহীন গাঙ্ আমি ডুব্যা মরি ’
অন্যদিকে সরল ব্যান্ড তাদের ‘যুবতী রাধে’ গানটিতে লিখেছে:
‘আমার মত সুন্দর রাধে যদি পেতে চাও
গলায় কলস বেঁধে যমুনাতে যাও।
কোথায় পাব হার কলসি কোথায় পাব দড়ি
তুমি হও যমুনা রাধে আমি ডুবে মরি।’
দ্বিজ কানাইয়ের সঙ্গে সরল ব্যান্ডের ভাব, বাক্য ও শব্দের কী ঘনিষ্ট মিল! এ থেকে কি মনে হয় গানটির কথা মৌলিক?
তিন.
শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য্যের লেখা ‘বাংলার লোক-সাহিত্য’ (২য় খণ্ড) গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬২ সালে। প্রকাশক ক্যালকাটা বুক হাউজ। বইটির ২১২ ও ২১৩ নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে:
‘নিম্নোদ্ধৃত ছড়াটিতে সুপরিচিত পল্লী গীতিকার সুর শোনা যায়-
...
ছান করিয়া আইস্যা রাধে মেইলা দিলেন চুল,
পিছন হইতে কিষ্টঠাকুর মেইলা মারলেন ফুল।
“অমন ক্যানে কর কিষ্ট, অমন ক্যানে কর?
যমুনার জলে গিয়া তুমি ডুইব্যা মর।”
“কোথায় পাইমু হাড়ি কলসী, কোথায় পাইমু দড়ি?
রাধে, তুমি হও যমুনার জল, আমি ডুইব্যা মরি।”
-ঢাকা”
উপর্যুক্ত উদ্ধৃতি দেয়ার পরপরই আশুতোষ ভট্টাচার্য্য মন্তব্য করেছেন, এই পদগুলোর মধ্যে ‘মৈমনসিংহ-গীতিকা’র মহুয়া পালার সুপরিচিত কয়েকটি পদের প্রভাব রয়েছে।
আশুতোষ ভট্টাচার্য্যের সংগ্রহ করা পঙক্তিগুলো পাঠের পর এবার সরলপুর ব্যান্ডের গানটির আরও কয়েক লাইন উদ্ধৃতি করছি। দেখুন মিল পাওয়া যায় কি না:
“গৃহবাসে গিয়ে রাধে আড়ে পেঁচায় চুল
কদম ডালে থাইক্কা কানাই ফিক্কা মারে ফুল।
বিয়া নাকি কর কানাই বিয়া নাকি কর
পরের রমনি দেখে জ্বালায় জলে মর।
বিয়াতো করিব রাধে বিয়াতো করিব
তোমার মত সুন্দর রাধে কোথায় গেলে পাব।
আমার মত সুন্দর রাধে যদি পেতে চাও
গলায় কলস বেঁধে যমুনাতে যাও।
কোথায় পাব হার কলসি কোথায় পাব দড়ি
তুমি হও যমুনা রাধে আমি ডুবে মরি।”
উপর্যুক্ত উদ্ধৃতি দুটি পাঠের পর সাধারণ পাঠকও বুঝতে পারবেন আশুতোষ ভট্টাচার্য্যের সংগ্রহের সঙ্গে সরল ব্যান্ডের গানটি কতটা সাযুজ্যপূর্ণ। পাশাপাশি একটু সচেতন দৃষ্টি দিলেই চোখে পড়বে সরল ব্যান্ড গানটিতে নতুন কিছু বাক্য যোগ করেছে এবং দু-এক জায়গায় ভাব ও বিষয়কে ভিন্নরূপ দিয়েছে। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ বাক্যের মধ্যে মিল লক্ষ্যণীয়।
চার.
বিমলকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘বাঙলার গ্রাম্যছড়া’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে। প্রকাশক স্বারস্বত লাইব্রেরি। এ গ্রন্থের ১৬-১৭ পৃষ্ঠায় রাধা-কৃষ্ণের আলোচ্য পর্বটি সঙ্কলিত হয়েছে। সেই পর্বটির প্রায় সবটুকুই পত্রস্থ করা হলো:
“সর্বমঙ্গলে রাধে বিনোদিনী রাই।
বৃন্দাবনে বন্দী পীর ঠাকুর কানাই
....
তুমি তো কালুয়া কানাই তাইতে তোমার এত।
সুন্দর হইলে পদ ভূমে না পড়িত
কালো কালো করিস না লো ও গোয়ালের ঝি
বিধাতা করেছে কালো আমি করব কী?
এক কালো যমুনার জল সর্বলোকে খায়।
কালো মেঘের ছায়ায় বসে শরীর জুড়োয়
....
পরের রমণী দেখে অমন কেন কর।
পালের গাভী বেচে বিয়ে না কেন কর
বিয়ে করিব রাধে বিয়েতো করিব।
তোমার মত সুন্দর রাধে কোথায় গিয়ে পাব?
আমার মতো সুন্দর রাধে কানাই যদি চাও।
গলায় কলসী বেঁধে যমুনাতে যাও
কে বা দেবে কলসী রাধে কে বা দেবে দড়ি।
তুমি রাধে হও যমুনা আমি ডুবে মরি
এই কথা বলিয়ে রাধে সোজা চলে যায়।
কানুর হাতের বাঁশি তখন সর্প হয়ে ধায়
ডান পায়ে জড়ায়ে সর্প দংশিল বাম পায়।
মলাম মলাম রব করিয়ে ঢলে পড়ল রাই
এই সর্পের বিষ যে জন ভালো করিতে পারে।
এই রূপ যৌবন আমি দান করিব তারে
কানাই উঠিয়া বলে মহামন্ত্র জানি।
বার চার পাঁচ ঝাড়লে পরে বিষ হইবে পানি
একবার ঝাড়িতে বিষ রাধা কইল কথা।
কী না সাপের বিষ রে বাবা ধরল বুকের ছাতা
আর একবার ঝাড়িতে বিষ হয়ে গেল পানি।
রাধাকৃষ্ণের যুগলমিলন বল শিবের ধ্বনি ”
এই অংশটুকু সম্পূর্ণ দেয়ার চেষ্টা আমার ছিল। কিন্তু বইটির হার্ড কপি এত দ্রুত জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। উপরোক্ত উদ্ধৃতি গুগুল বুকস্-এর প্রদর্শনী থেকে নেয়া হয়েছে।
পাঁচ.
১৯৬৬ সালে আশুতোষ ভট্টাচার্যের ‘বঙ্গীয় লোক-সঙ্গীত রত্নাকর’ বইটির তৃতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থের ৫৭৫-৭৬ পৃষ্ঠায় সংকলিত হয়েছে ২২ লাইনের একটি ঝাপান গান। এ গানটির সঙ্গেও সরল ব্যান্ডের গানটির বেশ মিল রয়েছে। চাইলে পুরোটাই উদ্ধৃতি দেয়া যেত, স্থান সীমাবদ্ধতায় কেবল প্রথম চার লাইন উদ্ধৃতি করা হলো:
“সর্ব জয় মঙ্গলা রাধে বিনোদিনী রায়।
বৃন্দাবন মন্দিরে গাইব ঠাকুর কানাই
আজকে রাধে কুম্ভ কক্ষে জল ভরিতে যায়।
ধীরে ধীরে চিকন কালা পিছে পিছে যায় ”
উল্লিখিত তথ্য-উপাত্তের বাইরেও দে’জ পাবলিকেশন্স থেকে ১৯৯১ সালে প্রকাশিত গিরিবালা দেবীর ‘রায়বাড়ি’ গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ১০৯ নম্বর পৃষ্ঠায়; বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘লোকসাহিত্য সঙ্কলন’ ২৫তম খণ্ডের ১৮ পৃষ্ঠায়সহ বিভিন্ন গ্রন্থে রাধা-কৃষ্ণের উল্লেখিত চরণসমূহ স্বল্প পরিসরে রয়েছে।
ছয়.
সরলপুর ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা তরিকুল ইসলাম তপন যে বলেছিলেন, গানটি ২০০৬-০৭ সালে লেখা, তাদের মৌলিক গান এবং তারা সেখান থেকে হুবহু কোনো লাইন সংগ্রহ করেননি-উপর্যুক্ত তথ্য-উপাত্তের আলোকে বলা যায়, তার দাবিটি যথাযথ নয়। বরং প্রতীয়মান হয়, গানটি লোকসাহিত্য, লোকসংগীতের অংশ। সরলব্যান্ড গানটিকে সংযোজন, পরিমার্জন করেছে, ভাষাকে সমকালীন রূপ দিয়েছে। কিন্তু গানটি নিঃসন্দেহে তাদের মৌলিক সৃষ্টি নয়। এক্ষেত্রে গানটির কপিরাইট পুনঃবিবেচনা করা জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।
শিল্প-সংস্কৃতির স্বার্থেই তর্ক-বিতর্ক হবে, তবে সেটি হোক প্রমিত। আমাদের আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের লক্ষ্য হোক যথাসম্ভব সত্যে পৌঁছানো। সবার কল্যাণ হোক।
লেখক: মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, কবি ও কথাসাহিত্যিক
লিংক : এখানে ক্লিক করুন
আরেকটা লিংক : সাইমন জাকারিয়ার বক্তব্য - যেসব কারণে এ গানের মালিকানা কারো হতে পারে না
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ব্লগে গানের মানুষ হিসেবে আপনার পক্ষেই সম্ভব এমন বিশ্লেষণী মন্তব্য করা। যা মূল পোস্টকে ছাপিয়ে আরও আরও চমকপ্রদ তথ্য উপস্থাপন করেছে, দিয়েছে জানার সুযোগ।
১২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিনীত অনুরোধ@ আমার আলোচনা থেকে সুমি মির্জার অংশটা বাদ দিয়ে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। ইউটিউবে সার্চ দেয়ার ফলে তার গানটাও চলে আসে। ধরে নিয়েছিলাম তার গানটার সাথেও বিরোধ আছে। একটু স্টাডি করে দেখলাম তার কন্টেন্ট অনেক আলাদা, যদিও থিমেটিক মিল আছে অনেক। নীচে সুমি মির্জার লিরিক দেখুন।
--
রাধে রাধে প্রেমো রাধে বিনোদিনী রাই
কৃষ্ণ প্রেমে মজে রাধে জল ভরিতে যায়।
কোমলো যৌবনও রাধের মেঠো পথের পানে
কৃষ্ণ তখন ছল করিয়া রাধের আচল টানে
আচলও ধরিয়া রাধে নদীর ঘাটে যায়
কালো কৃষ্ণ ছল করিয়া রাধেরে জ্বালায়
ওমনও ছল বুঝে রাধে ফিরে না তাকায়
জল আনিতে যায়গো রাধে জল আনিতে যায়।
কালো কালো করিসনে লো কৃষ্ণ ভানুরঝি
বিধাতা করেছে কালো আমি করবো কি?
চুল কালো কাজল কালো, কালো চোখের মণি
তাহার অধিক কালো রাধে তোমার মাথার বেণী
আমি কানাই কালোই ভালো প্রেমের মন্ত্র জানি
সকল রাধে আমার পানে প্রেমে জলাঞ্জলি
এই কথা শুনে কৃষ্ণ বাঁশিটা বাজালো
কালসাপ হয়ে কালো বাঁশি রাধেকে দংশিলো
কোথায় আছো কৃষ্ণ তুমি ভালো করো আমায়
যাহা চেয়েছিলে তুমি দেবো আমি তোমায়
রাধের কথা শুনে কৃষ্ণ বিষ ঝাড়িতে এলো
সত্যে করে বলো রাধে বিষ কোথায় গেলো।
বিষ নাইকো রাধের গায়ে কৃষ্ণ যখন বলে
ছল করিয়া নদীর ঘাটে যায়গো রাধে চলে।
প্রেম তুমি করো কৃষ্ণ অন্যের সাথে করো
রাধের রুপ দেইখা কেনো জ্বলে পুড়ে মরো?
প্রেম আমি করবো রাধে প্রেমতো করিবো
তোমার মতো রুপের রানী কোথায় গেলে পাবো
লজ্জা নাই লজ্জা নাই কৃষ্ণ লজ্জা নাইরে তোর
গলাই কলসি বাইন্ধ্যা জলে ডুইবা মর।
কোথায় পাবো কলসি রাধে কোথায় পাবো দড়ি
তুমি হও গহীন যমুনা আমি ডুইবা মরি।
--
কত অজানা!!! এই কিছুক্ষণ আগে পৃথিবী তোলপাড় করা এই গান সম্পর্কে আমি বলা যায় কিছুই জানতাম না। আর এখন কত্ত কিছু জেনে গেলাম। আশ্চর্য লাগে।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
জানা গলে অনেক কিছু। এবার দেখা যাক কেউ চ্যালেঞ্জ করে কিনা সুমি বা সরলপুরকে ?
১৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৩
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: জল ভর সুন্দরী কন্যা
জল ভরো সুন্দরী কইন্যা
ছোট থেকে এই নাচ করে বুড়ি হইসি মানে অনেকেই হইসে........
মহুয়া সুন্দরী নৃত্যনাট্যেও এই গান আছে।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
গান আর নাচ মিলেমিশে একাকার হলে সেই শিল্পের সাথে তুলনীয় আর হতে পারেনা।
মনে পড়লো বুঝি নৃত্যেঝড় তোলা সেইদিনগুলো।
১৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: ছাইরা দে কলসী আমার যায় বেলা
এই গানের সাথে সবই সিমিলার.....
যখনই শুনেছিলাম এই গানটাই মনে পড়েছিলো আমার।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
গান আর নাচ মনে হয় আপনার সঙ্গী। ধন্যবাদ।
১৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: এম্নে কি আর আপ্নেরে আইতে কইছিলাম....
আপ্নেরে আননের লাইগ্যা এই ব্লগের লেখক, পাঠক এবং মন্তব্যকারীগো সামনের ব্লগ ডেতে আমারে কাচ্চি খাওয়াতে হইবো। সুলতান ডাইনেরটা ছাড়া খামুনা কয়্যা দিলাম।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
একদিন দেখা হয়ে গেলে খুব অবাক হবনা।
অনেক কথা হবে নিশ্চয়। আর খাওয়া সেতো হবেই হা হা হা..................।
ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
১৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৮
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: চুপ কর নির্লজ্জ পুরুষ লজ্জা নাই রে তোর
গলাতে কলসী বাইন্ধা জলে ডুইবা মর
কোথায় পাইবাম কলসী কইন্যা কোথায় পাইবাম দড়ি
তুমি হও গহীন গাঙ আমি ডুইবা মরি....
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
লজ্জা সেতো নারীর ভূষণ তারেই তা মানায়
পুরুষ তারে দেইখা অবাক চোখে মনের কথা জানায়
ভাললাগার প্রহরগুলো হয়তো এমনই হয়
প্রেমিক যখন বলে বল-তুমি কি আমাতে নয়।
১৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪৯
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: স্যরি গানের লাইনগুলি আরেক কমেন্টে এসে গেছে। আপনারে বলি নাই কিন্তু মাইদুলভাই।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:১৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সে আমি জানি। আপনার করা গানের কমেন্টের প্রতিউত্তর কবিতার মাধ্যমে দিয়েছি এই আরকি ?
১৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:১৭
নীল আকাশ বলেছেন: যখন আমার নবীকে অপমান করে তুচ্ছ তাচ্ছল্য করে যাচ্ছে কাফিররা তখন এইদেশের মুসলিমরা নবীর অপমানের কথা ভুলে যেয়ে সামান্য গান কার কোনটা সেটা নিয়ে মেতে আছে! মরার পর এরা কি জবাব দেবে আল্লাহই জানে! হৃদয় এত শক্ত হয় কিভাবে?
২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:২৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
যে যার মত প্রতিবাদ তো করছেনই, মনে, অন্তরে, পোস্টে, মন্তব্যে, কথায়, ইশায়, বাক্যে, কাব্যে, মিটিং-এ, মিছিলে, স্লোগানে.....
তাই অন্য বিষয় নিয়ে ভাবতে হয়তো খারাপ লাগছে না। আর সবার প্রতিবাদের ধরণ এক নয়।
ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
১৯| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:১৯
আমিন রবিন বলেছেন: কপিরাইট নিয়ে তর্ক চলতে থাকুক। সাইড টপিকে কিছু বলি।
গানটা প্রথম শুনি ২০১৬ তে যাযাবর রাসেলের কাভার সং হিসেবে এবং আমার কাছে এখনও ঐ ভার্সনটাই সেরা। সরলপুর ২০১২ তে শেরপুরের কনসার্টে যেটা গেয়েছিল, সেখানে কোন ফিমেল সিঙ্গার ছিলোনা। পুরুষ একজন সিঙ্গার মেয়েদের মত গলা করে রাধার অংশগুলো গাচ্ছিল, তাই এই ভার্সনটা ভালো লাগেনি। পরে তারা বিভিন্ন টিভির লাইভে ফিমেল সিঙ্গার সহ পরিবেশন করলেও টেম্পো বাড়িয়ে হাই পিচ মিউজিকে গাওয়ার কারণে ভালো লাগেনি। এদিকে চঞ্চল-শাওন জুটির গানটা আবার উলটা। টেম্পো অনেক ঝুলিয়ে দিয়েছে, কম্পোজিশনেও কোন নতুনত্ব নেই। আর শাওনকে মনে হয়েছে গান গাওয়ার চেয়ে অভিনয়ে বেশি আগ্রহী!
০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
নিন্তু শাওন ও চঞ্চলের গাওয়ার কারণেই হিট হয়েছে গানটি তাইতো এতো আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ধন্যবাদ।
২০| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:০৩
ঢুকিচেপা বলেছেন: আমার যে বক্তব্য তা মোটামুটি এরকমঃ
সংগৃহীত গানঃ যে গানের গীতিকার, সুরকার বা অনেক সময় মূল শিল্পী কে জানা না যায়, সেক্ষেত্রে এ গানগুলোকে সংগৃহীত গান হিসাবে গন্য করা হয়। এ ধরনের গান এক শিল্পী থেকে অন্য শিল্পীর কাছে পৌঁছায়।
লোকজ সঙ্গীত বা ফোক সঙ্গীত (folk Song): এই শাখায় অনেক ধরনের গান অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকে। যেমন-লালন গীতি, হাসন রাজা, পল্লী গীতি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারি গান, শাহ আব্দুল করিম, আব্দুল আলীম এধরনের প্রচুর আছে।
এখন কথা হলো লালনগীতি থেকে একটা গান যদি আমি আমার নামে কপিরাইট করি তাহলে কি কেউ মানবে?
দ্বিতীয়তঃ মৌলিক গানের ক্ষেত্রে কার নামে কপিরাইট হবে সেটা ক্যাসেট/সিডি বের হওয়ার আগে ক্যাসেট কোম্পানী গীতিকার এবং শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে নেয়।
তৃতীয়তঃ এখানে একটা প্রসঙ্গ এসেছে যে, ৭০% চেঞ্জ করা হয়েছে। যদি চেঞ্জ করা হয়ে থাকে তাহলে, যে চেঞ্জ করে কম্পোজিশন করেছে তার নামেই করিরাইট হওয়ার কথা। উদাহরণ হিসাবে ২টি লিঙ্ক দিচ্ছি, এসডি বর্মনের গান “নিটোল পায়ে” থেকে প্রথম ৪ লাইন নিয়ে ফুয়াদ একটি গান কম্পেজিশন করেছে। ফুয়াদ যে গান করেছে সেটা অবশ্যই তার নামে কপি রাইট হওয়ার কথা।
এসডি বর্মন
ফুয়াদ
০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। এ পোস্টে আপনার কমেন্টের আশায় ছিলাম।
পেলাম।
সহমত।
ধন্যবাদ।
২১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
গানটা বেশ হয়েছে বলা যায়।
ধন্যবাদ।
একটা ভালো জিনিস উপভোগ করাই উত্তম আর উত্তম ঝামেলা থেকে দূরে থাকা।
০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আবারও ধন্যবাদ দাদা।
২২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৪৯
শাহ আজিজ বলেছেন: ভালো মৌলিক আলাপ। মোবাইলে অনেক টাইপ করা যায় না । কাল মেস্তরী আসিবেক । সারাই এর পর আলাপ চলিবেক ।
০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ঠিক বলেছেন। মোবাইলে টাইপ যুতসই নয়। কম্পিউটার/লেপটপ -এ সুন্দর করে টাইপিং করা যায়।
গানটা নিয়ে আলোচনা ভাললাগছে।
ধন্যবাদ।
২৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩
শাহ আজিজ বলেছেন: চঞ্চল - শাওনের গান চমৎকার হয়েছে । গোটা পরিবেশনের উচ্চমানের শিল্পমাত্রা যোগ হয়েছে । শাওন বাংলাদেশে শীর্ষ ক'জনের মধ্যে একজন । গানটি আরও হাজার হাজার ফোক গানের থেকে নেওয়া বিধায় কাউকেই আমি কৃতিত্ব দিতে রাজি নই। সুমির গানের একটা অংশ পুরো লোক সঙ্গীতের ভাবে গাওয়া হয়েছে কিন্তু ওই সরলমনএর উদ্বাস্তু বালকেরা গানটির একদম মেরে দিয়েছে । চঞ্চল-শাওন এর গানে নির্দেশনা কে দিয়েছে ? মঞ্চ পরিকল্পনা অসাধারন ।
০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
শাওন ও চঞ্চলের গানের সাথে হালকা অভিনয় অভিব্যক্তি অন্য মাত্রা যোগ করেছে।
সবমিলিয়ে অসাধারণ হয়েছে।
ধন্যবাদ ফিরতি মন্তব্যে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:২০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সরলপুরের সাথে সাথে কপিরাইট অফিসের লোকজনকেও বিচারের আওতায় আনা উচিত!
এত বহুল প্রচলিত একটা লোকজ গান যা রাধা রমনের নামেই ব্যাপক প্রচলিত তা একটা অখ্যাত ব্যান্ডের নামে কপিরাইট দেয় কি করে?! ৭০% লোকজ ৩০ পার্সেন্ট স্বরিচত হয়ইবা কি করে। আর হলেও তা একক কপিরাইট পায় কিনা?
তাদের বিচার বুদ্ধি, সাধারন জ্ঞান, কপিরাইট আইন জানে কিনা তা নিয়েই ব্যাপক সংশয় জাগছে এখন।