নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কেবলই ফুরিয়ে যায়।

মোঃ মাইদুল সরকার

একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............

মোঃ মাইদুল সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৌন্দর্য নাকি বাবার টাকা, কোনটা কাল হলো ছয় বছর বয়সী পুতুলের মত সুন্দর মেয়েটির

৩০ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪




মা প্যাটসি রামসে ছিলেন সাবেক মিস ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া এবং মিস আমেরিকার একজন প্রতিযোগী। ছোটবেলা থেকেই তাই নানারকম সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ প্রদান করেন তিনি জনবেনেটকে। আর সেগুলোর প্রায় সবগুলোই জিতে নেয় মিষ্টি মেয়েটি। লিটল মিস কলোরাডো উপাধি জিতে নেয় সে। সেইসাথে আরো আছে লিটল মিস চার্লিভয়েক্স, কলোরাডো স্টেট অল-স্টার কিডস কভার গার্ল, ন্যাশনাল টাইনি মিস বিউটি, আমেরিকা’স রয়্যান মিস সহ আরো অনেক খেতাব।


১৯৯৬ সালের কথা। সেই বছরটা চমৎকারভাবে শুরু করেছিল রামসে পরিবার। জন রামসের প্রতিষ্ঠান অসম্ভব ভালো করেছিল সে বছর। ৯ বছর বয়সী বড় ভাই বার্কের সাথে প্রতিটি বড়দিনের মতো সেই বড়দিনটিও আনন্দে পার করে জনবেনেট। বাবার সাথে সাইকেল চালানোর চেষ্টা চালায় কিছুক্ষণ। এরপর বাবা-মা সন্ধ্যায় রাতের খাবারের দাওয়াতে চলে গেলে বেশ খানিকক্ষণ খেলাধুলা করে মেয়েটি। বড়দিন উৎযাপন শেষে রামসে পরিবার ফিরে এসে মেয়েকে গভীর ঘুমে দেখে। তাই আর জাগানোর চেষ্টা করেনি তারা। জন রামসে মেয়েকে কোলে করে বিছানায় শুইয়ে দেন। আর তাকে সাহায্য করেন স্ত্রী প্যাটসি রামসে। সেই শেষবার দেখেন তারা মেয়েকে জীবন্ত অবস্থায়। সেই রাতটাই ছিল জনবেনেট রামসের শেষ রাত।

প্রতিরাতেই ঘুম থেকে একবার বা দুবার জেগে ছেলে মেয়ে ঠিক মত ঘুমাচ্ছে কিনা তা দেখার অভ্যাস ছিল প্যাটসির। সেই রাতেই ও একবার ঘুম থেকে জেগে ছেলে মেয়ের রুমে যায়, দেখে ছেলে ঠিকই গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে কিন্তু মেয়ে জনবেনেট রামসে নেই বিছানায়। তাকে ডাকা হয়, খোঁজা হয় কিন্তু কোন সাড়া মিলেনা। বাধ্য হয়ে স্বামীকে জানায় প্যাটসি। স্বামী ও স্ত্রী দুজন মিলে মেয়েকে পুড়ো বাড়ি তন্ন তন্ন করে খোঁজে কিন্তু পায়না। বাধ্য হয়ে পুলিশকে জানায় তারা ঘটনাটা।

বাড়ির বেজমেন্ট-এ যাওয়ার কড়িঠোরে প্রায় ০৩ পৃষ্ঠার একটি চিঠি পায় প্যাটসি। সেটা লিখা ছিল, জনবেনেটকে ফিরে পেতে মোট ১,১৮,০০০ ডলার মুক্তিপণ দিতে হবে। পুলিশকে জানানো যাবেনা তাহলে মেয়েকে আর জীবিত পাবেনাসহ নানা রকম কথা বার্তা। কাকতালীয় কিংবা আশ্চর্যজনকভাবে এই টাকার পরিমাণটা ছিল জনের সেবারের বোনাসের সমান। আরও বলা হয়েছিল, পরদিন সকাল ১০টার দিকে কল আসবে রামসের কাছে। জন ও প্যাটসি অপেক্ষা করেন। তবে সেই কল আর আসেনি। সারাদিন ধরে নিজের বন্ধুদের নিয়ে মেয়ের খোঁজে ঘোরাঘুরি করেন জন। তাই বাড়ির ভেতরে খুব একটা খোঁজা হয়নি।

একসময় তদন্তকারী অফিসার লিন্ডা আর্ন্ডট অনুরোধ করেন বাড়ির ভেতরটা ভালো করে খুঁজে দেখতে। কথামতন বাড়ির সবখানে খুঁজতে শুরু করেন জন ও তার বন্ধুরা। বাদ পড়েনি বাড়ির বেজমেন্টটাও। সেটা একসময় কয়লার ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হত। সেটার দরজা খুলতেই সবাই দেখতে পান জনবেনেটকে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তারা। যাক, পাওয়া গিয়েছে হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে! তবে খানিক পরেই বুঝতে পারেন তারা, জনবেনেট আর বেঁচে নেই। তাকে দড়ি দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছিল।

জনবেনেটের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার পর প্রশ্ন ওঠে, কেউ জনবেনেটকে মেরে ফেললে মুক্তিপণ কেন চাইবে? প্যাটসি ও জনের হাতের লেখা মেলানোর জন্য তাদের নোটপ্যাড চাওয়া হয়। প্যাটসির নোটপ্যাড থেকে কাগজ ছিঁড়েই মুক্তিপণ দাবী করা হয়েছিল। কী হয়েছিল সেদিন? কে খুন করেছিল মিষ্টি মেয়েটিকে তাহলে?

পরিবারের মা, বাব, ভাইসহ অন্যান্য কাজের লোকদের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখা হয়, জেড়া করা হয় কিন্তু কোন উত্তর মিলেনা।

হত্যার পর বাড়িতে এত মানুষ আসা-যাওয়া করেছে যে, সেখানে কোনো সূত্র পাওয়া সম্ভব ছিলো না।

জনবেনেটের মৃত্যুর কারণটাও পরিষ্কারভাবে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। মনে করা হয়, খুলিতে চাপ পড়ার কারণেই এই মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার দুই বছর পর, সবকিছু যখন প্রায় চাপা পড়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় বোল্ডারের এক জেলা আইনজীবী এক গ্র্যান্ড জুরি আহ্বান করেন। পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় আবার জায়গা করে নেয় জনবেনেট। জনসাধারণকে ভেতরের কোনো খবর জানাতে রাজী ছিল না এবার কেউ। তবে শেষপর্যন্ত জনবেনেটের হত্যাকে শিশু নির্যাতন এবং ফার্স্ট ডিগ্রী মার্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এরপর বেশকিছু ব্যাপার নিয়ে কথা চলতে থাকে। জনবেনেটের অন্তর্বাসে পাওয়া এক পুরুষের ডিএনএ প্রশ্ন তোলে সবার কাছে। পরিচিত কারো ডিএনএর সাথেই মেলেনি সেটা। সেদিন কিনে আনা নতুন অন্তর্বাস হওয়ায় যুক্তি দেওয়া হয় এভাবে যে, ঐ ডিএনএ অন্তর্বাস তৈরি কারখানার কোনো শ্রমিকের হতে পারে। ২০০৬ সালে আবার সামনে চলে আসে জনবেনেট হত্যা রহস্য।

থাইল্যান্ডের এক আমেরিকান শিক্ষক নিজেকে জনবেনেটের হত্যাকারী হিসেবে স্বীকার করেন। জোন মার্ক কার নামের সেই মানুষটিকে বোল্ডারে নিয়ে আসা হলেও তার ডিএনএর সাথে সেই পুরুষের ডিএনএ মিলে না যাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। মনে করা হয়, মানুষের কাছে পরিচিত হতে এমনটা করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে জনবেনেটের শরীরে থাকা অন্য সব কাপড় থেকে টাচ ডিএনএ (কোনোকিছু ছোঁয়ার সাথে সাথে যে ডিএনএ পাওয়া যায়) সংগ্রহ করা হয়। সেখানেও জনবেনেটের অন্তর্বাসে পাওয়া পুরুষের ডিএনএ পাওয়া যায়।

কিন্তু আজও উত্তর পাওয়া যায়না এই সুন্দর পুতুলের মত মেয়েটির হত্যাকারী কে । বছরের পর পর পার হয় যায় কিন্তু খুনী কে তা আর ধরা পড়েনা।

ছবি ও তথ্য- https://bn.cril17.org/, রোর বাংলা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.