![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।
আমরা যদি না জাগি মা?
------------------------------------------
বর্তমান পৃথিবীতে যত জটিল ও মারাত্মক সমস্যা রয়েছে, তন্মধ্যে মাদকদ্রব্য ও মাদকাশক্তি হ’ল সবকিছুর শীর্ষে। যুদ্ধবিগ্রহের চেয়েও এটা ভয়ংকর। কারণ কোন যুদ্ধের মাধ্যমে একটি জাতি-গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে চাইলেও একেবারে তা নির্মূল করা সম্ভব নয়; যা কিনা মাদকতার মাধ্যমে সম্ভব। বাংলাদেশ মাদকতার হিংস্র ছোবলে এখন আক্রান্ত এবং দেশটি দ্রুত ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ এ জাতির এখনও হুঁশ হচ্ছে না। অন্যভাবে বলা যায়, আমাদের সমাজ এখন মাদক ক্যান্সারে আক্রান্ত। যার শেষ পরিণতি অনিবার্য মৃত্যু। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতবর্ষে উৎপাদিত আফিম দিয়ে চীনকে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে পর্যুদস্ত করার প্রতিক্রিয়ায় ১৮৩৯ সালে চীনের সম্রাট মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ব্রিটেনের সঙ্গে চীনের এই যুদ্ধই ইতিহাসে প্রথম আফিম-যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়েই চীন আধুনিক যুগে প্রবেশ করে এবং উন্নতির পথে যাত্রাও সূচিত হয়।
বাংলাদেশেও এখন মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক ও আইনি যুদ্ধ প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা-সাংসদ এই ব্যবসায় জড়িত। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও কেউ কেউ এসবে জড়িত রয়েছেন।মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালে ৩৬ হাজার ৫৪৩টি, ২০০৯ সালে এক লাখ ২৯ হাজার ৬৪৪, ২০১০ সালে আট লাখ ১২ হাজার ৭১৬, ২০১১ সালে ১৩ লাখ ৬০ হাজার ১৮৬, ২০১২ সালে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৩৯২ এবং ২০১৩ সালে ২৮ লাখ ২১ হাজার ৫২৮টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার হয়েছে। ২০০৮ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে ইয়াবা উদ্ধারের পরিমাণ বেড়েছে ৭৭ গুণ। আগে শুধু ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকায় ইয়াবার ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন গ্রামগঞ্জের পান দোকানেও এটি পাওয়া যায়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে এ সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
অধিদপ্তরের হিসাবে, বাংলাদেশে মাদক সেবনে বছরে ব্যয় হয় প্রায় চার হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা। দেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মাদক সেবন করছে।এখন বাংলাদেশের মোট মাদকসেবীর ৫০ ভাগের বেশি ইয়াবা ব্যবহার করছে। বাংলাদেশে ইয়াবা আসছে শুধু মিয়ানমার থেকে।
কক্সবাজারের সরকারদলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদিসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিবেদন দিয়েছে। কিন্তু তবুও আমাদের টনক নড়ছে না।আমরা যেন এখনো জেগেই ঘুমাচ্ছি। অধিদফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট মাদকাসক্তের ৯০ শতাংশই কিশোর, যুবক ও ছাত্র-ছাত্রী। যাদের ৫৮ ভাগ ধূমপায়ী এবং ৪৪ ভাগ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। মাদকাসক্তদের গড় বয়স এখন ১৩ বছরে এসে ঠেকেছে। আসক্তদের ৫০ শতাংশের বয়স ২৬ থেকে ৩৭ বছরের মধ্যে। সেই সাথে বিস্ময়কর তথ্য হ’ল যে, দেশের মোট মাদকসেবীর মধ্যে অর্ধেকই উচ্চশিক্ষিত। দিন-মজুর, রাজমিস্ত্রী, রড মিস্ত্রী, বাস-ট্রাক, বেবী ট্যাক্সী ও রিক্সা চালকদের মধ্যেও বহু মাদকাসক্ত রয়েছে। আর এটা জানা কথা যে, মাদকাসক্তি ও সন্ত্রাস অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বর্তমান বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি তামাক সেবীর মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ হ’ল নারী। আবার বাংলাদেশের ৪৩ ভাগ লোক তামাক সেবী। সবচাইতে মূখ্য কথা হলো মাদকের এই ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে এখনই আমাদের সামাজিকভাবে সোচ্চার হয়ে হবে।শুধু প্রশাসনের উপর সকল দায়ভার চাপিয়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারি না।যতোদিন আমাদের ঘুম না ভাঙ্গবে ততদিন পর্যন্ত এই সমস্যা নির্মূল করা মোটেও সম্ভব নয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: জেগে জেগে ঘুমালে জাগানো যায় না।
ব্যক্তিগত পর্যায়েই এটার বিরুদ্ধে কিছু করার কথা চিন্তা করা উচিত