![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।
যৌতুক নাকি কনে পক্ষের উপহার
------------------------------------------------------
যৌতুক মানব সমাজে বিরাজমান এক ঘাতক ব্যাধি। যা সমাজের শান্ত পরিবেশ নষ্ট করে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে, কিছু অনাকাংখিত ঘটনার জন্ম দেয়। যৌতুকের প্রভাবে প্রভাবিত আজ সমাজের উঁচু-নীচু সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। হিন্দু সমাজ থেকে এ প্রথার আবির্ভাব, বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম পাশাপাশি বসবাস থেকেই মুসলিম সমাজেও যৌতুক প্রথা অনুপ্রবেশ ঘটেছে। জানা দরকার হিন্দু সমাজে বিয়ের পর মেয়েদের মা-বাবার সম্পত্তিতে তাদের কোন অধিকার থাকে না,তাই বিয়ের সময় মেয়ের বাবা সাধ্যানুযায়ী প্রয়োজনীয় সামগ্রী যৌতুক হিসেবে একেবারে দিয়ে দিত। এর প্রসারতা এত ব্যাপক আকার ধারণ করেছে, যা প্রতিটি মানব সমাজের সাথে মিশে তাদের সংষ্কৃতিতে স্থান করে নিয়েছে, যৌতুকের প্রধান আক্রমনের শিকার হত দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবার।
অশিক্ষা,ধর্মান্ধতা,বেকারত্ব,লোভ,হীনমন্যতা,কৃপনতা,সন্তানের জন্য ব্যয়কৃত অর্থ পুষিয়ে নেয়ার প্রবণতা থেকে যৌতুকের সৃষ্টি।সমাজের কিছু উচ্চ বিলাসী ধনী লোকেরা স্ব-ইচ্ছায় বর পক্ষকে যৌতুক দিলেও, গরীবদের তা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যা দিতে অপারগ হলে, তার বিবাহযোগ্য মেয়েকে পাত্রস্ত করতে পারছেন না, ফলে অনিচ্ছা সত্বেও বাধ্য হয়ে যৌতুক দিতে হয়। অনেক মেয়ের বাবা মেয়ের সুখের জন্য নিজের শেষ সম্বল বাপ-দাদার ভিটে মাটি বিক্রি করে বর পক্ষের চাহিদা মিটায়। তবুও মেয়ে শশুড় বাড়িতে সুখী হতে পারে না, কারণ তাদের চাওয়ার কোন শেষ নেই, বর পক্ষ যৌতুককে তাদের অধিকার মনে করে, শুধু বিয়ের সময় যৌতুক দিলে শেষ হয়ে যায় না।বিশেষ করে বিয়ের ১ম বছর সারা বছর বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন জিনিস দ্বারা যৌতুক দেয়া হয়,যেমন ঈদের সময় মেয়ের শশুর বাডির লোকদের জন্য নতুন জামা-কাপড় (মেয়ে-মেয়ের জামাই,মেয়ের শশুর-শাশুড়ি,দেবর-ননদ,বরের বড় ভাই-ভাবী,তাদের ছেলে-মেয়ে,এমনকি বরের বোন-ভগ্নিপত্নীসহ সবাইকে) দিতে হয়, ইফতার সামগ্রী,কুরবানি ঈদের সময়, গরু-ছাগল,মহিষ,ভেড়া ইত্যাদি দিতে হয়,বছরের বিভিন্ন ফলের মৌসুমে ফল-ফলাদি (আম,জাম,কাঁঠাল,লিচু,
আনারস,তরমুজ ইত্যাদি) দিতে হয়। ১ম সন্তান হলে আকিকা সহ যাবতীয় খরচ (বর্তমানে হাসপাতালে সন্তান প্রসব হলে হাসপাতালের বিল) মেয়ে পক্ষকে দিতে হয়। প্রত্যেকের জানা দরকার সন্তানের আকিকা পিতা-মাতার দায়িত্ব(অনেকের ধারনা ননার বাড়ি থেকে দিতে হয়)।
প্রাচীন সমাজ থেকে আজ পর্যন্ত যৌতুক একই প্রকৃতির নয়, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এর পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।আগে যৌতুক হিসেবে উপটৌকন নেয়া হতো রেডিও,চার্জ লাইট,লেপ-তোষক,ঘড়ি,গরু-ছাগল,নগদ ১/২ হাজার টাকা ইত্যাদি। যুগ পাল্টানোর সাথে সাথে রঙিন টেলিভিশন , ফার্নিচার , ৫০/৬০হাজার টাকা দাবি উঠে। কিন্তু বর্তমানে যৌতুক প্রথা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা আজ আর ঐ সনাতন দাবি দাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন যৌতুক হিসেবে চাওয়া হয় গাড়ি,বাড়ি,৫/১০ লক্ষ নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার,ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশন,সরকারী/বেসরকারি চাকুরী,বিদেশ গমনের খরচ।অনেক কন্যা দায়গ্রস্থ পিতাকে দেখেছি তার কন্যাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্যর হাত পাততে। এর চেয়ে লাজ্জা একজন পিতার জন্য আর কি হতে পারে।
পুরুষদের বলতে চাই যার সাথে উপহার উপহার খেলা খেলতেছেন। তিনি তো কঠোর পরিশ্রম করে আপনাকে শিক্ষিত স্ত্রী ও আপনার সন্তানের জন্য শিক্ষিত মা তৈরী করে দিয়েছেন। এর চেয়ে বড় উপহার আপনার কাছে আর কি হতে পারে ? ভেবে দেখুন, সেই মানুষটিকে আপনি কতটুকু সন্মান দিলেন ? যৌতুক প্রথার মূল উৎপাটনের জন্য দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশা ও ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে সকলের সু্স্থ মানসিকতা সুন্দর জীবনবোধ এবং সমাজ কল্যাণ মূলক গঠনশীল দৃষ্টিই পারে যৌতুক প্রথা নির্মূল করতে। যৌতুক প্রথারোধে বর্তমান তরুণ সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালান করতে পারে। তরুণরাই পারে যৌতুক প্রথাকে পৃথিবী থেকে চিরতরে মুছে দিতে।
সবাইকে একসাথে একই সুরে বলতে হবে আমরা যৌতুক চাইনা, শিক্ষিত,যোগ্য সঙ্গীনি চাই । আমরা যৌতুক চাইনা, সন্তানের শিক্ষিত মা চাই। আমরা যৌতুক চাইনা,শিক্ষিত জাতি চাই। আমরা যৌতুক চাই না ক্ষণজম্মা এই পৃথিবী সুখের জীবন চাই। হে পুরুষ- আপনারাই পারেন যৌতুক মুক্ত সমাজ গড়তে। একটা অশিক্ষিত মানুষ এবং শিক্ষিত,সচেতন মানুষের পার্থক্য থাকা দরকার। যৌতুকের কুফলতা সম্পর্কে, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করে গড়ে তুলবে প্রতিরোধ। তাই তরুণদের কাছে আমার আহ্ববান মানবতার কল্যানে এগিয়ে আসুন। মানবতার কল্যাণে যৌতুকে না বলুন। আসুন শুধু কথায় নয়,নতুন প্রজন্মকে কলহমুক্ত সুন্দর পরিবার উপহার দিতে যৌতুক মুক্ত সুন্দর মানসিকতাই আমাদের বেশি প্রয়োজন। এ ব্যাধির মূলউৎপাটনে সমাজের আগে পারিবারিকভাবে সবাই প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:২৫
মার্কো পোলো বলেছেন:
কিছু কিছু এলাকায় আছে এটি একপ্রকার নিয়ম হয়ে গেছে। বললেও দিবে, না বললেও দিবে। জাতি এ ভয়াবহ অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৫০
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এগুলো নীচু আর গ্রাম্যদের মধ্যে হয়। শিক্ষিত সমাজে এসব নেই। তবে উপহার আছে। সেটা দোষের কিছু না।