![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।
পৈত্রিক সম্পত্তি
----------------------------
(পর্ব-০২)
আসগর আলী একমনে গপ্প করতেই থাকে।
বুড়ি নিচ থেকে চেচিয়ে বলে - এক গপ্প আর কতো করো।এবার থামো দেখি।বাপ দাদার এতো আছিলো সেল্লে ধরে থুবার পাও নি কে? তোমার বাপ দাদা কি কয়া গেছিলো সব বেচে নাতিগুলোক খালি গপ্প শুনোবু।
বুড়ো আসগর এতে বেশ অসস্তিবোধ করে, কিন্তু বুড়ি কে ধমক দেবে সে সাহস তার হয় না।বুড়িও যে তার সাথে মেলা কষ্ট করিচে।দিনের পর দিন না খায়া থাকিচে, কুনদিন মুখ ফুটে কয় নি তোমার এই দুখের সংসার থুয়ে বাপের বাড়ি গেলেম।তার বাপের কি কম আছিলো নাকি?
তার বাপ তো গৃহস্থ, জমি জিরাত, গাই বাছুর দেখেই বিয়া দিছিলো। তখন তার বয়স কতোই বা হবি এই এগারো কি বারো।এরকমই হবি মনে হয় ওতো কি আর মনে থাকে।
অনেক আদরের। বাপের একমাত্র বেটি আছিলো পরিবানু।চেহাড়া সুরতখান দেখতে ঠিক পরির লাগান দেইখা তার দাদী তার নাম রাখছিলো পরিবানু।
বিয়ের সময় মহা ধুমধাম করে সানাই বাজিয়ে প্যান্ডেল সাজিয়ে মাইক টাঙ্গিয়ে বিয়ে দিয়েছিলো আসগর আলীর সাথে।বর হিসেবে পরিবানুর মামাতো বোনের অবশ্য আসগর আলীকে পছন্দ ছিলো না।কবুলের আগে সে পরিবানুর কানে কানে ফিসফিস করে সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলো। এ কথা পরিবানু নিজেই আসগর কে বিয়ের ঠিক একমাস পর পুকুর পাড়ে বসে বলেছে।
বিয়েতে পরির বাপে সাত সাত টা গরু, কমকরে হলেও দশ এর বেশি খাসি জবাই করে সাত গায়ের মানুষ খাইয়েছে।আসগর আলীর বাড়ি থেকেও জনা তিনশো লোক তো হবে বিয়েতে গিয়েছিলো।
সেকি ধুমধাম!
সেকি ইলাহী কান্ড! দানধেন ও পেয়েছিলো অনেক।দশটা গরুর গাড়িতে করে সেই দানের জিনিসপত্র আনতে হয়েছিলো।
সবচাইতে মজার ঘটনা ঘটেছিলো বিয়ের রাতে মানে বাসর ঘরে।সে কথা আজও মনে করে বুড়ো বুড়ি হেসে গড়াগড়ি খায়।
হয়েছিলো কি?
রাত তখন বাদ এশা হবে।খাওয়া দাওয়া শেষে নতুন বউকে বাসর ঘরে বসিয়ে সবাই যে যার মতো চলে গেছে। একটু পর আসগর ঘরে ঢুকেছে।কিন্তু লাজ্জায় সে পরিবানুর সাথে কোন কথাই বলছে না, শুধু ভেবে যাচ্ছে কি বলা যায়।ও দিকে পরিবানু লম্বা ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢেকে চৌকিতে বসে আছে সেও কিছু বলছে না।
নতুন বউদের নাকি বাসর রাতে আগবাড়িয়ে কিছু বলতে নেই।শুধু স্বামী যেভাবে আদেশ নির্দেশ করবে সেভাবেই সব পালন করাটা নাকি নিয়ম।এ কথা গরুর গাড়িতে ওঠার আগেই তার দাদি তাকে কানে কানে বলে দিয়েছে।
দরজার ওপাশে কে যেন একটু হেসে বলে গেলো-
কি গো মিয়া দুয়ার না দিয়াই করবা নাকি? হি হি হি হি
আসগর আলী প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে মুখ ফসকে শুধু একবার বলেই দিলো
ইস রে---।
এই কামডাই আমার কেন মনে আছিলো না।বলেই এগিয়ে গিয়ে দরজার খিল ভালো করে এটে দিলো।
চৌকির মাঝখানটা তে পরিবানু বসা।আর এক কোনায় বসে আছে আসগর।কিন্তু মুখে তার তখনো কোন কথা নাই।কি দিয়া শুরু করবে এই ভাবতে ভাবতেই রাত প্রায় ফজরের কাছাকাছি।
ওদিকে পরিবানুর বিরক্ত ধরে গেছে।সে ভাবছে - এই মানুষডা এমুন ক্যা।বুকাসুকা
কিছুই দেখি কয় না, ড্যাব ড্যাব কইরা এদিক ওদিক কি দেখে এ্যা!
পরির দুই চোখজুইড়া ঘুমের ডামাডোল। কিন্তু দাদি যে মানা কইরা দিছে স্বামীর কথা আদেশ ছাড়া কিছুই করবি না।
সে আবার দাদিকে খুব ভক্তি করে।
কিন্তু আসগর আলি ভেবে পাচ্ছে না কি দিয়ে কিভাবে সে পরিবানুর সাথে কথা শুরু করবে।তার চোখেও যে ঘুম এসে যাচ্ছে, বার বার হাই সেও তো তুলছে।
ভাবতে ভাবতেই কাজি বাড়ির মসজিদে আযান দিয়ে দিলো।আযান শেষ হতে না হতেই চৌকির নিচ থেকে বুলু বাইর হইয়া কয় -
ঐ মামু তুমি এমুন ক্যা? পাইছো ডা কি তুমি? মামীরে কিছু কইবা না কিছু করবা না সে কথাখান আগে কইলেই পারতা।খালি সারাডা রাত আমারে হুদাই মশার কামুড় খাওয়াইলা। তোমরা এইডা কুনো কাম করলা কও দেখি।
এ্যা?
ভ্যাপাচেকা খেয়ে আসগর ঠিক কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না।
এই বদমাইশ ছেলেটা এখানে থাকবে সে এটা কল্পনাও করে নি।
এই বদমাইশ তুই চৌকির নিচে কখন ঢুকছিলি এ্যা কখন ঢুকছিলি?
কেন আমার যখন মুন চাইছে তখন ঢুকছি।সারারাত আমারে এমনিতেই জাগাইলা কামের কাম তো কিছুই করতে পারলা না।দেখো তো মশা আমার কি সর্বনাশ করছে।মশার কামুড়ে চিল্লাইতেও পারি নাই।
দাড়া দেখতাছি-
বলেই বুলুরে দাবড়ানি দিতেই সে দরজার খিল খুলে ভো দৌড়।তারে আর পায় কে।
এতক্ষনে হাসতে হাসতে পরিবানু চৌকিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে।
ও মাগো, ও দাদি গো কি বদমাইশ পোলা গো।হা হা হা হি হি হি তুমি যদি দেখতা গো দাদি? কি বদমাইশ পোলা গো --- হি হি হি হা হা হা হা।
আসগর আলীর হঠাৎ হাসি পায়। সেও জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে।
নিচ থেকে বুড়ি খেকিয়ে বলে উঠে -
কি গো হাসো কে? এতো রাইতে কি ভিমরতি ধরছে?
নারে পরিবানু এমনিতেই হাসি।কিছু হয় নাই।তুই চুপ থাক।
কিছু হয় নাই তো এই রাত বিরাতে বুইড়া মানুষ খিল খিল কইরা হাসো কে?
এইবার আসগর আলী বুড়িরে একটু ধমক দিয়ে- আমি হাসি তাতে তোর বাপের কি? আমার ইচ্ছা হইছে হাসতেছি তুই চুপ যা।
ইতিমধ্যে গেন্দুর ছোট তিন বছরের ছেলেটা ছেরছের করে মেশিন ছেড়ে দিয়েছে।মেশিনের মুখখান ঠিক বুড়োর কপালের দিকে তাক করানো।
ধুরমুড় করে বুড়ো আসগর-
এ্যা এ্যা এইডা কি? এ্যা এই ছেড়া এইডা কি করলি।এ্যা? হারামজাদা মুতার আর জায়গা পাইলি না, শেষ পর্যন্ত আমার গায়েই। এ্যা?
নিচ থেকে পরিবানু -
কি হইছে এ্যা কি হইছে আবার চিল্লাও কে?
কি হইছে দেইখা যা। তারাতারি বাতি জ্বালা।এই ছেড়া মুইতা আমারে ভিজা দিলো।
এদিকে গেন্দুর ছেলে মেশিন চালিয়েই যাচ্ছে।থামার কোন লক্ষনই নেই।
(চলবে)
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫০
মোঃ আক্তারুজ্জামান ভূঞা বলেছেন: হাহাহ।।। মজা পেলাম...