নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যেই সুন্দর সুন্দরই আমার সৌন্দর্য

মো: মেহেরুল ইসলাম

আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।

মো: মেহেরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশ্ন টি নীতি ও নৈতিকতার

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৪

প্রশ্ন টি নীতি ও নৈতিকতার
-------------------------------------------




আমাদের স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে স্থানীয় রাজনীতির দৌরাত্ব  বিগত শতক থেকেই আছে এবং কালের ধারাবাহিকতা ও অন্ত:সার শুণ্য রাজনীতির অত্যাধিক ব্যাপকীকরনের অংশ হিসেবে তা আরো দিন দিন প্রকোপ আকার ধারন করছে।আর এর মধ্যে দিয়ে অন্ত:সার শুণ্য রাজিনীতির বলির পাঠাতে পরিনত হচ্ছে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠান গুলোতে চলছে যেমন নিয়োগ বানিজ্য,শিক্ষার নামে রাজনীতি,উন্নয়নের নামে লুটপাট।আর এর সুফল ভোগ করছে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা(বেশ মজার)।

অন্ত:সার শুণ্য রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিচালনাকারী (যারা কিনা আধুনিক সুশীল নামে বর্তমানে নিজেদের জাহির করতে রংবেরঙ মুখোশ পরিধান করে চলেছেন) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে বানিয়ে চলেছেন তাদের রাজনৈতিক দপ্তর ও কর্মসূচীর অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র।
সাথে অবশ্য তাদের একটি সুবিধা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক কর্মসূচী দেয়ায় আয়োজন সফল করার দায়িত্বটুকু থাকছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী থেকে শিক্ষার্থীদের উপর। আর সেই সাথে আয়োজক হিসেবে সকল আর্থিক ব্যবস্থাপনাও করতে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে।
এতে করে অবশ্য তাদের যেমন বিনা খরছে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে তেমনি আয়োজনের নামে অর্থের ও কিছুটা অংশ পকেটে আসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
অথচ উন্নয়নের নামে শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া উন্নয়ন ফি ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কাজে ব্যয় হওয়ার কথা।
কিন্তু আমরা আজকাল কি দেখছি নিজস্ব অর্থায়নে একটি কম্পিউটার কেনার সামর্থ্য ও নেই প্রতিষ্ঠান গুলোর। সব কিছুর জন্য তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারস্থ হচ্ছেন।আর এই সুযোগে জনপ্রতিনিধিও তার কাজের কাজ সম্পূর্ন করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন।

আমার প্রশ্ন কেন? সব বিষয়ে জনপ্রতিনিধির কাছে ধরনা ধরতে হবে? তাহলে শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া যেসব ফি আপনারা আদায় করেন সেগুলো কোন কাজে ব্যয় করেন। আপনাদের বেতন ভাতা থেকে শুরু করে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা (বিধি অনুযাযী যা আপনাদের প্রাপ্য) তার সবই সরকার বহন করে।তাহলে অসুবিধাটা কোথায় আপনাদের?

উদাহরন হিসেবে বলি কিছুদিন আগে আমার বোন কে জিজ্ঞেস করেছিলাম স্কুলে যাস না যে, এখন না বছরের শুরু। ওর উত্তর ছিলো যে স্কুলে নাকি ক্লাস হয় না। পালটা প্রশ্ন করেছি ক্লাস হয় না মানে?
বছরের শুরুতে যদি ক্লাস না হয় তবে কখন হবে তোরা কিছু বলিস না। ওর উত্তর বলি তো। কিন্তু বলে কোন লাভ নেই উলটা আমাদের ধমক খেতে হয়। স্যার রা বলে আমাদের কি শুধু তোমাদের ক্লাস নেয়াই কাজ নাকি অন্য কোন কাজ আছে।আমাদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়।আমি আর ওকে পালটা প্রশ্ন করিনি।

এখন কথা হচ্ছে একজন শিক্ষকের শ্রেনী কক্ষে পাঠদান ছাড়াও আরো বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয় সেটা মানছি। কিন্তু শিক্ষক কে কিন্তু নিয়োগ দেয়া হয়েছেই শিক্ষার্থীদের পাঠদানের উদ্দেশ্য। আর সে জন্য সরকার দৈনিক হিসাবে তাকে সম্মানীও দিয়ে থাকে।আর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্যও তিনি প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা সম্মানী প্রাপ্য হন।নিয়ম অনুসারে কিন্তু শ্রেণী কক্ষে পাঠদান শেষে একজন শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার কথা। এখন তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনেই বেশি আগ্রহ দেখাবেন নাকি পাঠদানে আগ্রহ দেখাবেন সে প্রশ্নটি একান্তই তার নীতি আর নৈতিকতার প্রশ্ন, আর উক্ত
 প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার প্রশ্ন।

এবার আসি সেই প্রশ্নে (মানে যে প্রতিষ্ঠানে আমার বোন পড়াশুনা করছে) ক্লাস কেন হয় না বা শিক্ষক কেন ক্লাসে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না সেখানে।
খোজ নিয়ে দেখলাম একটু। আর যা জানতে পারলাম তাতে তো চক্ষু চরকগাছ!
সে যাই হোক সেসব বলে কারো রোষানলে পড়তে চাই না, যে যার মতো করে ভালো থাকুক।

তো ফিরে আসি আগের কথায়।ইদানিং আমরা লক্ষ্য করছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে মা সমাবেশের নামে চলছে মহাসমারোহ। একমাস আগে থেকে চলে আয়োজনের সফল করার নানা প্রস্তুতি।আর আয়োজন কে ঘিরে বেড়ে যায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আনাগোনাও।প্রতিষ্ঠান প্রধান সহ শিক্ষকগন ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাকে আপ্যায়ন বা অভ্যর্থনার জন্য। সে প্রসঙ্গে উক্ত শিক্ষকের কথাই যথার্থ যে ক্লাসের বাইরেও তাদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়।

মা সমাবেশ করবেন খুবই ভালো কথা বা এমন উদ্যাগ সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। কিন্তু কথা হচ্ছে মা সমাবেশে শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা অভিবাবকদের নানা অভিযোগ কতটুকু বলার সুযোগ থাকে বা অদৌ কেউ শোনেন কি না?
আমার মনে হয় অবিভাবকদের নানা অভিযোগ না বলার আক্ষেপ যেমন নিভৃতে কাদে ঠিক তেমনি শিক্ষার্থীদের সমস্যার ও কোন সমাধান হয় না। তবে একটা কাজ হয় আর সেটা হলো কিছু দু চারতলা পাকা বিল্ডিং পাওয়া যাচ্ছে যা কিনা প্রতিষ্ঠানের নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে খালি হাতে ভিক্ষার অর্থ পাওয়ার সমতুল্য।
আর সেই সাথে থাকে বড়বড় নেতাদের ঝাঝালো রাজনৈতিক বক্তৃতা, বন্দনা আর  স্তুতি।শিক্ষার্থীদের সমস্যা, অভিভাবকদের অভিযোক কোন কিছু নিয়েই থাকে না আলোচনার সুযোগ।




আর এসব আয়োজনে প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ভূমিক তো
কৌতুক অভিনেতা টেলিসামাদ, দিলদার আফজাল শরীফ কেও হার মানাবে।
সঙ্গে থাকে জনপ্রতিনিধির ফায়দা হাসিলের নানা কৌশল প্রয়োগের অপতৎপরতা।আর স্কুলের অর্থে ভূরিভোজের কথা নাই বা বললাম।

একজন অভিবাবক যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে থেকে সমাবেশের দাওয়াত পত্র হাতে পান তখন তিনি অনেক আশা  নিয়ে সেই প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় পদার্পন করেন।শিক্ষার্থীরাও অধীর আগ্রহে বসে থাকে তাদের নানাবিধ সমস্যা আলোচনা ও সমাধানের প্রত্যাশায় । কিন্তু সকাল ১০.০০ ঘটিকার অনুষ্ঠান যখন সময় বাড়তে বাড়তে দুপুর ২.০০টা বা বিকাল ৩.০০ টায় পৌছায় তখন পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা আর বিরক্তি নিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে যখন কিনা মাইকে নেতা বন্দনারই ঘনঘটা শুনতে পান তার বিপরীতে তাদের বলার কোন সুযোগ থাকে না, তখন প্রদেয় খাদ্যকেও অখাদ্য এবং দিনশেষে হতাশার ঝুড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। আর বিরক্তির স্বরে বলেন" ধুর বাল সারাদিনের কাজ কাম ফাইলা এই বাল শুনতে আসছি।এর চাইতে যদি জমিতে হাল ডা দিতাম?"

অথচ এই সমাবেশটি তাদের তথা শিক্ষক, শিক্ষার্থী,সুধিজন, অভিবাবকদের মিলনের তীর্থক্ষেত্র হওয়ার কথা ছিলো।

এখন হয়তো বলতে পারেন যে,  প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা আছে।
আমি সে কথা অস্বীকার করছি না।জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় প্রতিষ্ঠান গুলোর খোজ খবর রাখবেন এটাই স্বাভাবিক বা এটা তাদের দায়িত্বের ও অংশ।আমি বলছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক রাজনীতির ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতা বন্ধের কথা।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে যে যার মতো করে পরিচালিত হতে দিন না তাতে সমস্যা তো নেই, সাথে শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন বা অবকাঠামো উন্নয়নে আপনার ভূমিকা যতোটুকু রাখার আপনি রাখুন না। তাতেও সমস্যা নেই বরং আপনার অবদান শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিবাবক সবাই শ্রদ্ধাভরে স্বরন করবে। কিন্তু রাজনীতির কলাকৌশল প্রয়োগের হাতিয়ার বানাতে গিয়ে আপনি নিজেই না আবার ফেলনা বস্তুতে পরিনত হন।

অবকাঠামো উন্নয়নে যে শুধু সরকারি অনুদান বা জনপ্রতিনিধিদের প্রচেষ্টা থাকতে হবে একথা কিন্তু সর্ব সত্য নয়। বরং নীতি নৈতিকতা আর সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে পারলে এমনিতেই নিজস্ব অর্থায়নে ব্যাপক উন্নয়ন করা সম্ভব।তার জন্য কর্ম প্রচেষ্টা থাকতে হবে।আমি একটি প্রতিষ্ঠান কে জানি যে প্রতিষ্ঠান কোন সরকারি বা জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা ছাড়াই ব্যাপক উন্নয়ন থেকে শুরু করে সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় পর্যাযে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে সক্ষম হয়েছে শুধুমাত্র সুষ্ঠ কর্ম ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে।তাদের ওখানেও যে কিছুটা অব্যবস্থাপনা নেই তা কিন্তু নয় কিন্তু তা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের থেকে কয়েক হাজার গুন কম।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২

আহমেদ জী এস বলেছেন: মো: মেহেরুল ইসলাম ,




ভালো লিখেছেন ।
ঐসব স্কুলগুলোতে নিয়োগ বানিজ্য যা আবার রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত , তার কারনেই শিক্ষাব্যবস্থা রসাতলে গেছে । সাত - আট লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে এখানে যারা চাকুরী নেন ( এদেরকে শিক্ষক বলা ঠিক নয় ) তাদের কাছ থেকে আপনি আর যা-ই আশা করেন , শিক্ষা নয় । এসব কারনের যোগফলেই আমাদের বোনগুলো স্কুলে যেতে অনীহা প্রকাশ করে ।

আর প্রথমদিকে লিখেছেন- "যার ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠান গুলোতে চলছে যেমন নিয়োগ বানিজ্য,শিক্ষার নামে রাজনীতি,উন্নয়নের নামে লুটপাট।আর এর সুফল ভোগ করছে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা(বেশ মজার)।" এই কথাটি । এখানে বোল্ড করা শব্দটি ঠিক আছে তো না কি " কুফল " হবে ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.