নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যেই সুন্দর সুন্দরই আমার সৌন্দর্য

মো: মেহেরুল ইসলাম

আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।

মো: মেহেরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রমিক ঐক্য জিন্দাবাদ

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৮

শ্রমিক ঐক্য জিন্দাবাদ
--------------------------------------------

আজ থেকে ১৩০ বছর ১১ মাস ২৯দিন  আগের কথা। তখন দেশে দেশে পৃথিবীর শ্রমজীবী মানুষের কষ্টের সীমা ছিল না। মালিকেরা নগণ্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে দরিদ্র মানুষের শ্রম কিনে নিতেন। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাড়ভাঙা শ্রম দিয়েও শ্রমিক তার ন্যায্য মূল্য পেতো না। মালিকেরা উপযুক্ত মজুরি তো দিতোই না, বরং তারা শ্রমিকের সুবিধা-অসুবিধা, মানবিক অধিকার ও দুঃখ-কষ্ট পর্যন্ত বুঝতে চাইতেন না। সুযোগ পেলেই মালিকেরা শ্রমিকের ওপর চালাতেন নানা শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন। বলতে গেলে শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকারও তখন রক্ষিত হতো না।

 পরিবার-পরিজন নিয়ে শ্রমিকের জীবন ছিল দুর্বিষহ। তখন শ্রমিকের জন্য কাজের নির্দিষ্ট সময় যেমন ছিল না, তেমনি ছিল না নির্দিষ্ট কোন মজুরির ব্যবস্থা, নিয়ম-কানুন। ফলে শ্রমিকের শ্রমকে যথেচ্ছ ব্যবহার করে মালিক অর্জন করতেন সীমাহীন সম্পদ। শোষণ-নিপীড়ন ও বঞ্চনাই শ্রমিকের ভাগ্যের লিখন হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে মালিকের সীমাহীন অনাচার, অর্থলিপ্সা ও একপাক্ষিক নীতির ফলে শ্রমিকদের মনে জমতে শুরু করে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও দ্রোহ। ১২ ঘণ্টা কাজ করেও যখন শ্রমিকের সংসার চলতে চায় না, স্বজনের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেয়া সম্ভব হয় না, তখন শ্রমিকেরা সুযোগ পেলেই প্রতিবাদী হওয়ার চেষ্টা করে। তবে এ রকম বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ প্রায়শই মালিকের পশুতুল্য ও আগ্রাসী হামলায় ভন্ডুল হয়ে যায়। এমতাবস্থায় জীবনের আশঙ্কা যেমন ছিল, তেমনি শ্রমের সুযোগও হাতছাড়া হতো। ফলে শ্রমিকেরা আরো কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতেন।

 এভাবে চলল বেশ কয়েক যুগ। এমতাবস্থায় আমেরিকার “ফেডারেশন অব লেবার” ১৮৮৪ সালের ৭ অক্টোবর প্রথমবারের মতো প্রতিদিন আট ঘণ্টা কাজের দাবি তুলে ধরে, তবে এতে তেমন কাজ হলো না।মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবি তো মানলেন-ই না, বরং তারা শক্ত অবস্থান নিলেন। ফলে এক সময় শ্রমিকের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বিস্ফোরণের আকার ধারণ করে। আর সেটা ঘটলো আজকের সভ্যতার অহঙ্কারী দেশ আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে। কাজের সময় ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ, মজুরির পরিমাণ বৃদ্ধি ও কাজের উন্নত পরিবেশ তৈরি করাসহ শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে ১৮৮৬ সালের পয়লা মে হে মার্কেটের শিল্পশ্রমিকেরা ধর্মঘটের ডাক দিলেন। এ ধর্মঘটে যোগ দেন ৩ লাখ শ্রমিক। তারা কলকারখানা বন্ধ রেখে নেমে এলেন রাজপথে। এতেও মালিকেরা নতি স্বীকার করলেন না। তারা শ্রমিকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে পিছু হটানোর কৌশল গ্রহণ করলেন। এদিকে পুলিশও কঠোরহস্তে সে ধর্মঘট দমন করার জন্য শ্রমিকদের ওপর চড়াও হলো। পুলিশি অ্যাকশনের প্রতিবাদে ৩ মে ধর্মঘট শ্রমিকেরা এক সমাবেশের ডাক দিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকেরা এসে এতে যোগ দেন। সেদিন হে মার্কেটের বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন শ্রমিক নেতা অগাস্ট স্পিজ। এই সময় মালিকপক্ষের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা সমাবেশস্থলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ সদস্য মারা যায়। এতে বিক্ষুব্ধ পুলিশ বাহিনী সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরীহ শ্রমিকদের ওপর। এতে মুহূর্তের মধ্যেই মারা যান ১১ জন শ্রমিক। এ সময় শ্রমিকদের ন্যায়ানুগ দাবিকে দাবিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে মালিকেরা আরো কঠোর হন। এদিকে শ্রমিক ধর্মঘট সংঘটিত করার অপরাধে শ্রমিক নেতা আগস্টসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের প্রহসনমূলক বিচারের মুখোমুখি করে সরকার। তারপর ১৮৮৭ সালে সাজানো মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। প্রহসনমূলক এই বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির মঞ্চে আরোহনের পূর্বে অগাস্ট স্পিজ বলেছিলেন, “আজ আমাদের এই নি:শব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে”।

 ২৬শে জুন, ১৮৯৩ ইলিনয়ের গভর্ণর অভিযুক্ত আটজনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা দেন এবং হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। লুইস লিং নামের এক শ্রমিক ফাঁসির আগের দিন কারাগারের ভেতর আত্মহত্যা করেন। আরেকজনের ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এত কিছুর পরও শ্রমিক আন্দোলন দাবিয়ে রাখা যায় নি। বরং সারা দুনিয়ায় শিকাগোর রক্তাক্ত ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকায়ও এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী শ্রমিক আন্দোলনের প্রভাব ধীরে ধীরে প্রসার লাভ করে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানায় ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের “দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার” দাবি অফিসিয়াল স্বীকৃতি পায়। আর পহেলা মে বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবি আদায়ের দিন হিসেবে।
১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে পহেলা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


১৩০ বছর আগে মানুষজন খারাপই ছিলো, সস্তায় শ্রম কিনতো!

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.