নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যেই সুন্দর সুন্দরই আমার সৌন্দর্য

মো: মেহেরুল ইসলাম

আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।

মো: মেহেরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ নামক জনদূর্ভোগ

২৫ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৫

ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ নামক জনদূর্ভোগ
------------------------------------------------------

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঘরে ঘরে আলো জ্বালব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশের একটি ঘরও আর অন্ধকারে থাকবে না।তার ভাষ্য মতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করে বর্তমানে ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পেরেছে বর্তমান সরকার। কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সমগ্র এলাকায় বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হবে। যেসব জায়গায় গ্রিড লাইন যাওয়া কষ্টকর, সেখানে সোলার প্যানেল বসানো হবে।আমরা আগেই বলেছি যে, প্রধানমন্ত্রীর এমন বিপুল আশ্বাস পেয়ে জনগণ বিপুলভাবে আশান্বিত হয়েছে। তবে বিভিন্ন জাতীয় বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর কিছুটা হলেও আমাদের হতাশ করে।খবরে বলা হয়েছে যে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বাংলাদেশ এখন এশিয়ায় শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে। বলা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় প্রতি মাসে গড়ে ৬৫ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ক্ষেত্রে শীর্ষ তিনে থাকা অপর দুটি দেশ হলো যথাক্রমে নেপাল ও পাকিস্তান। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত ‘মিটিং এশিয়া’স ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিডস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি কেমন সেটা জানার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, আবাসিক ও কলকারখানা কতটা নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ পায় সেটা জানা। এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এক মাসে গড়ে ৬৫ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। নেপালে এক মাসে এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে ৫১ বার, পাকিস্তানে ৩১ বার। এছাড়া আফগানিস্তান ও ভারতে মাসে গড়ে ১০ বারের বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। বিদ্যমান এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে আমাদের আশাবাদ হোঁচট খায়।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, তার আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। একথা সত্যি। কিন্তু পাশাপাশি এটিও সত্য যে, তার সরকার বিগত নয় বছর ক্ষমতায় আছে। এই নয় বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন যেমন বেড়েছে তেমনি বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়েছে। এটি একটি চক্রের মতো কাজ করে। একদিকে উৎপাদন বাড়ে, অন্যদিকে চাহিদা বাড়ে। আবার উৎপাদন বাড়ে, ফের চাহিদাও বাড়ে। এই কারণে কেউ সঠিকভাবে বলতে পারে না যে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কত এবং উৎপাদন কত।"বাংলাদেশ পাওয়ার সেল" এর সর্বশেষ তথ্য মতে (জুন ২০১৭) বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ
উৎপাদন ক্ষমতা (মেঃওঃ): ১৫,৩৭৯। আর সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন (মেঃওঃ): ৯,৪৭৯ (০৭ জুন ২০১৭)।এদিকে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ২ কোটি ৪৯ লক্ষ এসে পৌছেছে।বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্ত জনগোষ্ঠী: ৮০% ছাড়িয়ে যাচ্ছে।এ কথা সত্য যে বর্তমান সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌছে দিতে আপ্রান প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।এবং এই সেবা পৌছে দেয়ার ঘোষনাটি সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরাও তাদের নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন জনসমাবেশে বেশ জোড়েসোড়েই প্রাচার করে চলেছেন।ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়াটা সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারও বটে।আর যেহেতু সামনেই জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে তাই সরকার দলীয় সাংসদরাও চাইছেন যে করেই হোক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এর সঞ্চালন লাইন পৌছাতে।আর এখানেই মূলত বিপত্তিটা দেখা দিয়েছে।এলাকা ভিত্তিক বিদ্যুৎতের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকলেও শুধু নির্বাচনী ওয়াদা পূরনের তাগিদে সংসদ সদস্যদের অলিখিত চাপে বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সংযোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।কিন্তু যেখানে বর্তমান চাহিদা মেটাতেই বিদ্যুৎ বিভাগ নাস্তানাবুদ সেখানে নতুন নতুন সংযোগ প্রদান আমার কাছে একটি অযৌক্তিক বিষয় ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না।সে জন্যই বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, সরকারের উচিত একটি সময়সীমা বেঁধে দেয়া। সেই সময়সীমার মধ্যে চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন এমন হারে বাড়বে যে ঐ নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যে উৎপাদন হবে সেটি যেন চাহিদা মিটাতে পারে এবং প্রয়োজনে চাহিদার চেয়েও উৎপাদন যেন কিছুটা উদ্বৃত্ত থাকে।গত ২৩শে জুন ২০১৭ সোনাতলা থেকে প্রকাশিত অনলাইন পত্রিকা "বগুড়া বার্তা ২৪ ডটকম" এ সোনতলার বর্তমান বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে খানিক হতাশ হলাম।সংবাদ অনুযায়ী গড়ে নাকি ৭/৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে।একথা কিন্তু আমাদের মানতেই হবে তথ্য প্রযুক্তির যুগে স্থানীয় প্রত্যন্ত এলাকার ব্যবস্যা বানিজ্যও কিন্তু এই বিদ্যুৎ সেবার উপর নির্ভরশীল। যদি দিনে গড়ে ৭/৮ ঘন্টা লোডশেডিং হয় তবে সেখানকার স্থানীয় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিরূপ ক্ষতি সাধিত হবে সেটা সাধারন চিন্তাতেই অনুমান করা যায়। যদি অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষটি বাদও দেই তবুও জনদূর্ভোগ যে চরমে পৌছে গেছে সেটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।সাংসদ রা বলছে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দিবো আর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দিচ্ছেন ও তাই কিন্তু নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার কোন নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না।আর মূলত এখানেই শুভঙ্গকরের ফাকিটি লুকিয়ে আছে।সরকার বা সরকারের পক্ষে দলীয় সাংসদরা কিন্তু একবারও বলছেন না ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এবং নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ দিবো।তারা শুধু ঐ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দিবো এই কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। এখানেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে যে হিসাব তাতে যে একটা বিশাল ফাকফোকর থেকেই যাচ্ছে তা স্পষ্ট।
আরও একটি কথা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোই যথেষ্ট নয়, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করাও জরুরি। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিদ্যুৎ পরিষেবার দুর্বলতাই প্রমাণ করে। বিদ্যুৎ সরবরাহও নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.