![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।
বিকট শব্দে আধুনিক শব্দ যন্ত্রের বাদ্য-বাজনা ছাড়া আমার প্রজন্মের তরুনের কাছে বৈশাখের আগমন অনেকটা লবন ছাড়া একপ্লেট পান্তা ভাতের মতোই স্যাপস্যাপা।অথচ বছর দশেক আগেও ঢাক-ঢোলের বাদ্য,তালপাতার বাঁশি,বাঁশের বাঁশির প্যা-পু শব্দ ছাড়া বৈশাখের আগমন বড়োই নিরান্দময় ছিলো।ঢাক-ঢোলের বাদ্য আজও বাজে, তবে আধুনিক শব্দ যন্ত্রের কাছে তা বড়োই অসহায়, রসহীন।
বৈশাখ মানেই মেলা, কাঠ পুতুলের মেলা,মণ্ডামিঠাই, আর মুড়ি-মুড়কির মেলা।চিনির ছাচের হাতি-ঘোড়া, মাটির হাড়ি-কড়াই,টাট্টু ঘোড়ার মেলা।বাতাসা,জিলাপী,নাড়ু সন্দেশ,খই-খাগরার মেলা।নাগরদোলা, হাতপাখা,বাঁশের বাঁশি, সঙ -যাত্রার মেলা। মেলা আর মেলা হরেক রকম জিনিসের মেলা।
এমনটাই দেখে দেখে বড় হয়েছি,গা গতরে ফুলে-ফেপে বড়ো হয়েছি খানিকটা। বৈশাখ মানেই মেলা,আর মেলা মানেই নানী বাড়িতে দীর্ঘ ছুটি।নানার সাথে, মামাদের সাথে প্রতিদিন মেলায় যাওয়া।পুতুল কেনা,টমটম গাড়ি কেনা,সার্কাস দেখা,যাত্রা দেখা,হুন্ডা খেলা,কার খেলা, সাপ খেলা দেখা।মণ্ডামিঠাই, মুড়ি-মুড়কি,রসগোল্লা,জিলাপী-বাতাসা সের দরে কিনে মাটির হাড়িতে সন্ধ্যার আগে গা-গতরে বিনে পয়সার পাউডার লাগিয়ে বাড়ি ফেরা।
আজ সব পাল্টিয়েছে।সের দরের জায়গা যেমন কেজির হিসাব দখল করেছে,ঠিক তেমনি মাটির হাড়ির জায়গাতে রঙ্গিন নঁকশার কাগজের প্যাকেট স্থান করে নিয়েছে অনায়াসে।
এ স্থান দখলে অবশ্য তাকে কোন যুদ্ধে জড়াতে হয়নি।আপনা আপনিই মানুষ তার রুচিবোধ পাল্টিয়েছে। মাটির বাঘ-ভাল্লুক, পুতুলের জায়গা একচেটিয়া দখল করে এখন প্লাস্টিকের বাহারি সব খেলনার জয়জয়কার।ছেলেপুলে কেনেও দেদারছে এসব খেলনা।মাটির বাঘ-ভাল্লুকে তাদের কোন মোহ নেই।মোহ এখন মিলেমিশে একাকার পিস্তল-গুলিতে।যাত্রা-সার্কাসেও আগ্রহ নেই বিন্দুমাত্র।সহজেই অনুমান করা যায় আমার গা-গতরে বয়সের ছাপ যেমন দিনদিন বেড়েই চলেছে,ঠিক তেমনি সংস্কৃতির রঙ ও বদলেছে অনেকটা। সংস্কৃতির নিয়মই এমন।কারন সংস্কৃতির কোন নির্দিষ্ট অঞ্চল নেই,রাজ্য নেই,দেশ নেই।সে কোন দেশের সীমারেখায় আবদ্ধ থাকতে নারাজ।
সংস্কৃতি পালটায়, পরতে পরতে পালটায়।যুগের সাথে, সময়ের সাথে, অঞ্চলের সাথে সে নিজেকে খুব সহজেই খাপ খাইয়ে নেয় অত্যান্ত সুন্দরভাবে। সংস্কৃতির ধারাটাই এমন।আর এই পরিবর্তনের আবর্তে সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ে কিছু অপ-সংস্কৃতির উপাত্ত।ঠিক সিধেল চোরের মতো।সিন্দুকের কাঠামো যদি শক্ত না হয়,মজবুত না হয় তবে সহজেই সিধেল চোর সিন্দুক ভেঙ্গে নিজের কর্ম সম্পাদন করে চলে যায়।সংস্কৃতি ও তেমন।এর কাঠামো যদি শক্ত না হয় তবে অতি সহজেই অপ কিছু ঢুকে পরে।
কোনভাবেই সংস্কৃতির বিকশিত, আবর্তিত,পরিবর্তিত হবার বিপক্ষে আমার অবস্থান নয়।আমার অবস্থান শুধু যা কিছুর সম্মুখভাগে অপ কিছু যুক্ত করে সহজেই সমালোচনার বেড়াজালে আবদ্ধ করা যার তার বিপক্ষে।
আমিও চাই সংস্কৃতি বিকশিত হোক,পরিবর্তিত হোক,আবর্তিত হোক, পরিচিত করুক আমার আমিকে বিশ্ব দরবারে।বহন করুক,বিনিময় করুক, তুলে ধরুক আমার নিজস্বতাকে,আমার আপন স্বত্তা কে,আমার আমিত্বকে।
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫৮
কানিজ রিনা বলেছেন: সত্যি এটা যুগের পরিবর্তন নাকি মানুষের
পরিবর্তন। যুগ আসে যুগ যায় যুগের কি
দোশ। মানুষের দোশে যুগের বাতাস বয়।
আমরা ছোটকালেই বৈশাখের প্রথম দিন
পান্তা ইলিশ খেয়েছি ঘরে বসেই। এখন
সেটা রাস্তায় কিনে খায় বিশেষ করে ঢাকা
শহরে। ফুলবানুরা ফুলপরী হয়ে রাস্তার নাচন
কচনে ব্যস্ত হয়ে পরে।
সাথে প্রেমিক ছোটে ফুলবানুদের পিছে, এই
যুগ সেই যুগ নয় এই যুগেরে নেবেনা সেই
যুগের কাছে। অপসাংস্কৃতি তো আছেই সেই
সাথে পাশ্চাত্যর অপার স্বাধীনতা আমাদের
গ্রাম শহর ঝড় হাওয়ার গতিতে বয়ে যাচ্ছে
যা আমাদের কালচারে ভিষন বেমানান।
ধন্যবাদ সত্যটা তুলে ধরার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩০
শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: সময়ের সাথে সাথে সংস্কৃতিও পাল্টায়