নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যেই সুন্দর সুন্দরই আমার সৌন্দর্য

মো: মেহেরুল ইসলাম

আমি খুবই সাধারন একটা মানুষ।জ্ঞানের দিক থেকেও অতি ক্ষুদ্র ও নগন্য।তবে স্বপ্ন দেখি অনেক বিশাল।কারন স্বপ্ন দেখতে কোন খরচাপাতি লাগে না।আমি ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।তবে ধর্মান্ধ নই।

মো: মেহেরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী বৈষম্যর পেছনে বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯






“ বিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি চির-কল্যানকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর”
কবির এই চির অমোঘ বাণীর মাধ্যমে এ কথাই প্রমানিত যে, সৃষ্টির সব কিছুতেই নারী পুরুষের সমান অবদান রয়েছে । কবিতার পঙতিতে যিনি চির এই সত্য কথাটি স্বীকার করেছেন তিনি নিজেও একজন পুরুষ । সুতরাং আমরা নির্দ্বিধায় এক বাক্য এ কথা কখনোই বলতে পারি না যে, নারীদের বৈষম্য,পশ্চাৎপদতার জন্য পুরুষই একমাত্র দায়ী । কেননা পুরুষ নারী একে অন্যর পরিপূরক হিসেবেই বিশ্ব সাজিয়ে চলেছে । বরং নারী পুরুষের বৈষম্যর ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক মনোভাব,চিন্তাশীলতা ও মননের ক্রিয়াশীলতাই দায়ী । তবে এ কথা অস্বীকার করবার কোন উপায় নাই যে, সমাজে নারী পুরুষের সর্বক্ষেত্রে বৈষম্যর চিত্র একাবারেই অ-প্রতুল ।
হ্যাঁ আছে,
সমাজের সর্ব ক্ষেত্রেই এই বৈষম্যর চিত্র বিদ্যমান । তবে তার জন্য পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব বা পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থা একমাত্র কারন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না । এই বিভেদ বিভাজনের পশ্চাতে নারী সমাজের পিছিয়ে থাকার মানসিকতাও বহুলাংশে দায়ী ।
ক-দিন আগে এল এল বি পরিক্ষা দিতে যাচ্ছিলাম । খুব সকাল, মানে ভোর ৬ টার আগেই আমাকে বাড়ি থেকে বেরোতে হয় । বেটারিচালিত অটোরিকশায় চেপে যাচ্ছিলাম । ওখানেই এক মধ্যে বয়সী নারীর সাথে দেখা ও আলাপ । আলাপের মাধ্যমেই জেনেছি সে একজন স্থানীয় হোটেল শ্রমিক । খুব সকাল সকাল মানে ফজরের সাথে সাথে তাকে কাজে যেতে হয় । আর রাতে বাড়ি ফেরে কখনো ১০ টা আবার কখনো ১২ টার পর । সকালে যাবার একটা নির্দিষ্ট সময় থাকলেও কাজ শেষে বাড়ি ফেরার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই তার জন্য । দীর্ঘ ১৬/১৭ ঘন্টা কাজ করে শ্রমের মজুরি পায় মাত্র ২০০/- টাকা আর সাথে তিনবেলা খাবার । পক্ষান্তরে তার সহকর্মি পুরুষ শ্রমিক সকাল ৮ টায় এসে ফেরে রাত ৮ টার আগেই । খবার সেও তিনবেলাই পায় । আর মজুরি নির্ধারন করা আছে ৩৮০/- টাকা । অথচ শ্রম ঘন্টা হিসেবে নারী শ্রমিকের মজুরিই বেশি হবার কথা । কিন্তু সেটা হচ্ছে না । বরং পুরুষ শ্রমিক শ্রম ঘন্টা হিসাবে নারী শ্রমিকের চাইতে ১৮০/- টাকা মজুরি বেশিই পাচ্ছে এবং একজন নারীই তাকে সেটা প্রদান করছে । মালিক একজন নারী বলেই কিন্তু নারী শ্রমিক মজুরি বেশি পাচ্ছে না । এখন নারী শ্রমিক যদি তার অতি নিকটে দৃশ্যমান এই বৈষম্য থাকা স্বত্তেও তার শ্রম উক্ত দামে বিক্রি করতে আপত্তি না করে বা ইচ্ছুক থাকে তবে সেখানে শুধু শুধু পুরুষ কে দোষারোপ করাটা নিতান্তই অনর্থক বলে মনে করি ।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে এখানেই তো পুরুষ নারীর বৈষম্য । এখন কথা হচ্ছে কিভাবে পুরুষ এখানে নারীর প্রতি বৈষম্য ঘটাচ্ছে বা কারন হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে । কারন হোটেল মালিক মজুরি নির্ধারন করেছে কোন পুরুষ এখানে মজুরি নির্ধারন করেনি । আর হোটেল মালিক একজন নারী । নারী হয়ে সে যদি মজুরী নির্ধারনে এমন বৈষম্য কে স্বীকার করে নেন তবে , সেখানে পুরুষ কিভাবে নারীর মজুরি নির্ধানে বৈষম্যর একমাত্র কারন হিসেবে দায়ী হতে পারে ? কেননা বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী নারী-পুরুষের আলাদা আলাদা মজুরি নির্ধারনের কোন বিধান নেই । বরং শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির কথা বলা আছে । কে নারী বা কে পুরুষ তা আইনের দৃষ্টিতে মূখ্য নয় ।মজুরি নির্ধারনে মূখ্য হচ্ছে শ্রমিকের কাজের ধরন ও শ্রম ঘন্টা । এখানে ঢালাওভাবে কেন আমরা নারী বৈষম্যর পেছনে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবকে একমাত্র কারন হিসেবে চিহ্নিত করবো ?
বরং এখানে নারীর মেনে নেয়ার মানসিকতাই বৈষম্য রোধে প্রধান বাধা

আরো একটা উদাহরন দিয়ে বলি । আজকাল শহর-গ্রামের সর্বত্রই নানা বয়সের নারীরা হিজাব পড়া শুরু করেছে । এই হিজাব পড়াটা যতোটা না ধর্মের নিয়ম রক্ষার কারনে তার অধিক হালের ফ্যাশন হিসেবে নিয়েছে সবাই । এখন কথা হলো বাংলাদেশ সহ দক্ষিন এশিয়ার কোন দেশেই নারীদের হিজাব পড়ার ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই । এক্ষেত্রে বিশেষ করে নারীরা কি ধরনের পোষাক পড়বে সেটা একান্তই তাদের রুচিশীলতার বিষয় এবং পোষাক পড়ায় তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন । কিন্তু নারীরা হিজাব পড়ছে , জেনে পড়ুক আর না জেনে বা বুঝেই পড়ুক । তারা নিজেদের আবদ্ধ করে ফেলছে নিজে থেকেই । এই প্রচন্ড গরমের মধ্যেও তারা পুরো শরীর এমন ভাবে ঢেকে রাখছে যেন সামান্য হাওয়া-বাতাস ও শরীরে প্রবেশের সুযোগ না থাকে । এখানে কোন পুরুষ তাকে বাধ্য করেনি হিজাব পড়তে ।
আমি নিজেই মনে করি নারীদের হিজাব নামক ব্যাধি থেকে অতি দ্রুত বেরিয়ে আসা উচিত । তাদের এই সংক্রামক ব্যাধির জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন । কেন তারা এই প্রচন্ড গরমে এমন পোষাকে নিজেদের আবদ্ধ রেখে কষ্ট করবে ?
কিন্তু না ,
তারা সেটা করছে না । তাদেরকে হিজাব পড়ার ক্ষেত্রে কেউই বাধ্য করছে না, কিন্তু তারা হিজাব পড়ছে আর নিজেদের এই প্রচন্ড গরমে ধান সিদ্ধের পাতিলে তুলে সিদ্ধ করছে । আর যদি ধর্মীয় নিয়মের কথা বলেন তবে ধর্মীয় নিয়ম শুধু হিজাব না , আরো অনেক বিষয়েই থাকে ।পুরুষ তো কোনভাবেই নারীকে হিজাব পড়ায় বাধ্য করছে না । বরং হাল ফ্যাশানের অংশ হিসেবে নারীরা নিজ উদ্যাগে নিজেদের সৌন্দর্য কে ঢেকে রাখছে ,আবদ্ধ করছে । কিন্তু অনেক নারীবাদি সংগঠনকে বলতে শুনি এখানেও নাকি পুরুষ দায়ী । এখানেও পুরুষ দায়ী কিভাবে আমার বোধগম্য নয় ।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে বাইরে বা ঘরে পুরুষের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির হাত থেকে বাঁচতে নারীদের এমন উদ্ভট পোষাকে নিজেদের আড়াল করতে হচ্ছে । আমি এমন অভিযোগ একবাক্য অ-স্বীকার করবো । কেননা এমন উদ্ভট পোষাক পড়লেই যে তারা ভিন্ন দৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পাবেন তা কিন্তু নয় । কেননা নারী-পুরুষের একে অপরের প্রতি যে আকর্ষন সেটা প্রকৃতি প্রদত্ত । এটা আপনি যে পোষাকই পড়ুন না কেন তাতে কিছুই আসে যায় না । এমন উদাহরন ভুরি ভুরি আছে । বরং একপেশী মনোভাব বা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে বহুমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার । আর নারীদের বৈষম্য নিরোধের পেছনে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব যতোটা না দায়ী তার অধিক দায়ী নারীদের মেনে নেয়ার মানসিকতা । সুতরাং আমরা বলতেই পারি নারী বৈষম্যর পেছনে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব নয় বরং বহুমাত্রিক মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি দায়ী ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: ♥

২| ১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:০০

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: আপনি সম্পূর্ণ পোস্টে আপনি নিজেই দুইহাতে তালি বাজিয়েছেন। যাইহোক সেটা নিয়ে কিছু বলবনা। তবে হিজাব টাকে উদ্ভট বলাটা একেবারেই উচিৎ হয় নি বলে আমি মনে করি। এমন তা বলতে পারেন যে হিজাব তারা যেই দৃষ্টিভঙ্গি (ফ্যাশন) নিয়ে পরছে সেটা উদ্ভট। কিন্তু হিজাব পড়াটা কখনোই উদ্ভট প্রকৃতির হতে পারেনা।

নারী পুরুষ একে অপরের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করবে এটা প্রকৃতি প্রদত্ত, তারা যেই পোশাক ই পড়ুক না কেন। দুইটা চুম্বকের মাঝে একটা মোটা বস্তু রাখলে দেখবেন উরা একে অপরকে আকর্ষণ করতে পারে কিনা? এক্সপেরিমেন্টটা করে দেখবেন!

সেলারির ব্যপারটা যদি বলেন তাহলে বলব, হোটেল জগতে কাজের অভিজ্ঞতা দেখে। যারা বাবুর্চির ম্যাট উরা ৫-৬ গুণ বেশি কাজ করে কিন্তু বেতন পায় এক চতুর্থাংশ বা তার থেকেও কম। এখানে নারী পুরুষটা ফ্যাক্টর না। ফ্যাক্টর হলো কাজের মান।

৩| ১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মই তো নারীদের পিছিয়ে রেখেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.