নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাম্প্রদায়িক ও দ্বিচারী মানুষেরাই শান্তি ও সহাবস্থানের মূল শত্রু

০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:১৬

দিল্লিতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় মুসলমান নির্যাতন ও হত্যায় এই দেশে বেশ কয়েকদিন ধরে ভালই প্রতিবাদ ও সমালোচনা হচ্ছে। বেশ ভাল কথা এবং প্রশংসা যোগ্য। অন্তত সংখ্যালঘুদের দুঃখ, দুর্দশা এবং ন্যায়, অন্যায়ের ফারাকটা যদি উপলব্ধিতে আসে তাহলে এর চেয়ে ভাল কিছু নাই। কিন্তু এই দেশে যারা দিল্লির সমালোচনায় প্রতিবাদমুখোর হয়েছেন সেই একই ব্যক্তিগণ কি এই দেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের সময় প্রতিবাদী হয়েছেন? যেমন রামু এবং নাসিরনগরের বেলায়? হিন্দুদের মন্দির এবং প্রতিমা যখন ভাঙ্গা হয়? প্রতিবাদী হয়েছিলেন এই দেশে কাদিয়ানিদের মসজিদ ও বাড়িঘরে যখন হামলা হয়েছিল? আচ্ছা, বাদ দিলাম হিন্দু আর কাদিয়ানিদের কথা। এরা সব বিধর্মী আর কাফের। এই একই যুক্তিতে কিন্তু গেরুয়াবাদিরা দিল্লিতে মুসলমানদের উপর তাণ্ডব চালিয়েছে! মানতে পারছেন না কেন? ওরাই তো আপনার (চোরে চোরে) মাস্তুতো ভাই!

আচ্ছা, সৌদি আরব যে তার দেশের শিয়া মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেয়, ভেঙ্গে দেয় এবং তাদের ধরে ধরে শিরোচ্ছদ করে প্রতিবাদ করেছেন? পাকিস্তানে শিয়াদের উপর প্রায় হামলা করে উগ্র সুন্নীরা, মারাও যায় অনেকে। মসজিদেও হামলা করে উগ্র সুন্নীরা। প্রতিবাদ করেছেন কখনও? ও আচ্ছা, শিয়ারা তো আবার মুসলমানই না। শুধু মুসলমানদেরই বাঁচার অধিকার আছে আর কারও নাই। কিন্তু সৌদি আরব যে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইয়েমেনিদের নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে কোনদিন প্রতিবাদ করেছেন? সৌদি অবরোধের কারণে ইয়েমেনিরা খাদ্যের অভাবে ঘাস, গাছের পাতা, বাকল সেদ্ধ করে খাচ্ছে। পোঁকা মাকড় খেয়ে বেঁচে আছে। প্রতিবাদ করেছেন? ও আচ্ছা, ইয়েমেনিরা তো আবার হাফ মুসলমান মানে শিয়া। না, না শিয়া না জাইদি শিয়া। জাইদি শিয়াদেরকে সুন্নীরা অর্ধেক না পুরো মুসলমানই মনে করে। তবুও কি প্রতিবাদ করেছেন? করেন নাই কারণ হামলাকারী সৌদি আরব। নবীর দেশ বলে কথা। আচ্ছা, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কেউ কেউ বলে এই যুগের ইমাম মাহদি তার নির্দেশে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে শ্বাসরুদ্ধ করে জীবিত অবস্থায় করাত দিয়ে কেটে হত্যা করল। সারা পৃথিবীর বিবেকবান মানুষ শিহরিত হয়েছিল! প্রতিবাদ করেছিলেন? সৌদি যুবরাজের সমালোচনা করেছিলেন? জামাল খাশোগি কিন্তু হিন্দু, শিয়া বা কাদিয়ানি নন, ওহাবি মুসলমান মানে পাক্কা সহিহ মুসলমান। প্রতিবাদ করেছেন? সৌদি বাদশাহ বা যুবরাজ যদি বাংলাদেশ সফরে আসে প্রতিবাদ করবেন যেমনটা মোদির বেলায় করতে যাচ্ছেন? আমার মনে হয় না।

কিছুদিন আগে তুরস্ক যে কুর্দিদের পাইকারি হারে হত্যা করল। হাজার হাজার কুর্দি ঘর বাড়ি ছেড়ে পালালো। তখন প্রতিবাদ করেছিলেন? কুর্দিরা কিন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সুন্নী ও হ্যাঁ, ভুলেই গিয়েছিলাম হামলাকারী এখানে তুরস্ক আর অটোমান সাম্রাজ্যের খলিফা হলেন সুলতান এরদোগান। সুলতান এরদোগানের জন্য সব জায়েজ। তিনি সিরিয়ার একটা প্রদেশ দখল করে নিতে পারেন। সিরিয়ানদের পাখির মত গুলি করে মারতে পারেন। প্রতিবাদের কিছু নাই; সমালোচনার কিছু নাই। যারা প্রতিবাদ করে, সমালোচনা করে তারা ইহুদি, নাসারার দালাল (অবশ্য আমেরিকা, ইসরায়েলের সাথে এরদোগানের তুরস্কেরই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং তিনি সিরিয়ায় পশ্চিমাদের দাবার গুটি হিসাবে ব্যবহার হচ্ছেন)।

আচ্ছা, এরদোগান যে অজুহাতে সিরিয়ার একটা প্রদেশ ইদলিব দখল করে আছে এবং সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। একই কাজ যদি ভারত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনের অজুহাতে অথবা যেমনটা বিজিপির নেতারা প্রায় বলে আসছেন যে বাংলাদেশের বৃহত্তর খুলনা দখল করে ভারতে অনুপ্রেবেশকারী বাংলাদেশিদের পুনর্বাসন করা হবে। ভারতকে সমর্থন করবেন? অবশ্যই করা যাবে না। আমরা যে কোন মূল্যে সেটা প্রতিহত করব। তাই না? তাহলে সিরিয়ার ক্ষেত্রে তুরস্ককে কেন সমর্থন করছেন? তুরস্ক মুসলমান রাষ্ট্র আর সুলতান এরদোগান অটোমান খলিফা বলে?


আপনি আপনার যে যুক্তিতে ভিন্ন ধর্ম বা ভিন্ন বিশ্বাসী লোকজনের উপর নির্যাতন করেন বা তারা নির্যাতিত হলে আপনি খুশি হন, নির্যাতন ও অন্যায়, অবিচারের পক্ষে নানা অদ্ভুত যুক্তি হাজির করেন ঠিক অন্য কোথাও তারাও একই কাজটা করে আর তখন আপনি প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেন, সমালোচনামুখোর হন। এটাই সাম্প্রদায়িকতা। মুসলমান মুসলমান দ্বারা নির্যাতিত হলে চুপ থাকেন বা হত্যাযজ্ঞের পক্ষে নানান যুক্তি হাজির করেন আবার অন্য কারো দ্বারা নির্যাতিত হলে ফুঁসে উঠেন। এটাই দ্বিচারিতা। আপনি মোদি, অমিত শাহ ও তাদের গেরুয়া বাহিনীর সমালোচনার অধিকার রাখেন না। আপনার উদ্দেশ্য শান্তি ও সহাবস্থান নয়, অন্যকিছু।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: দ্বিচারী মানুষ আসলে দ্বিধাদ্বন্দে থাকে। তাই বারবার ভুল করে।

২| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুচিন্তিত মনোভাবের প্রকাশ, ভালোই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.