নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন বড় চঞ্চল

মিমমা সুলতানা মিতা

কি লিখবো?

মিমমা সুলতানা মিতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রকৃতির কি খেলা? মৃত্যুর পর প্রকৃতি পরিচয় করিয়ে দিলেন তার আর এক বন্ধু মিতার কাছে।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪

আজ মাত্র ৫ দিন বয়স আমার ব্লগে আসা। কয়েকদিন আগেও ভাবেনি যে ব্লগে এসে আমি ৪ বছর আগের এক প্রশ্নের উত্তর খুজে পাবো। আবার খোজ পাবো ৪ বছর আগের ১ দিনের জন্য ঘুরে বেড়ানো এক ট্রাভেলসঙ্গীকে। কিন্ত তা যে এতটা হৃদয় ছুয়ে যাবে বা করুন হবে ভাবতে পারিনি। দুচোখ ভরে কান্না এলো মানুষটার জন্য।
২০১১ সালের কথা। তখন আমি চাকুরী করতাম প্রাইভেট এক এনজিওতে। মাঝে মাঝেই মন ছুটে যেত দূর দুরান্তের পাহাড়, পর্বত, ঝর্না নদী সাগর বন জঙ্গল ঘেরা প্রকৃতির অদম্য টানে। কিন্ত এনজিও এর চাকুরী, ছুটি ছিল না বললেই চলে। তাই মনকে প্রশ্রয় দিতে বেছে নিতাম ঈদ সংক্রান্ত ছুটি গুলোতে। বাধন বিহীন মানুষ আমি মন যেখানে ছুটে যায়, সেখানেই ছুটে চলি। তেমনি এক কুরবানীর ঈদের ছুটিতে বেরিয়ে পড়লাম রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে। পথে কিছু সূভাকাংখী ভয় দেখালো রাঙ্গামাটির আকে বাকে অনেক বিপদ লুকিয়ে আছে। একা মেয়ে যাচ্ছেন এটা ঠিক হচ্ছেনা। সাহস ছিল দুর্দান্ত, অনেকটা ডোন্ট কেয়ার মাইন্ড, পরোয়া করিনা কিছুতে, ভাবি আল্লাহ আছেন সংগী, আর কিসে ভয় আমার। ঈদের দিন খুব ভোরে নামলাম রাঙ্গামাটি। পাশেই ছিল একটা নদীর বাক। প্রথম সূর্যদ্বয়ের ছবি তুলবো বলে বাস থেকে নেমে এগিয়ে গেলাম। ২/১ জন স্থানীয় বাচ্ছা দেখে ওদের ডেকে কয়েকটা ছবি তুললাম পটাপট।
হটাত লক্ষ্য করলাম গায়ের রঙ শ্যামলা কালো তামাটে, ছোটখাট দেখতে একটা ছেলে ১০০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে ফলো করছে। এক সময় উনি এগিয়ে এলো, পরিচয় হলো। খুব ই সাদামাটা পরিচয়। নাম কি? বাড়ি কোথায়? কি করা হয়? তিনিও একা ঘুরতে এসেছেন। তাই সঙ্গী হয়ে গেলাম আমরা স্বল্পসময়েই। ঠোটকাটা স্পষ্টভাষি মুখে শুরুতেই পরিচয় এভাবে আপনাকে দেখে ভদ্রলোক বলেই মনে হচ্ছে আশা করি আমাকেও ভদ্র মহিলা ভাববেন। তারপর শুরু বেড়ানো। শুরুতে গেছিলাম ঝুলন্ত ব্রীজ।

অনেক ছবি তুলে দিলেন তিনি, আমিও উনার ছবি তুলে দিলাম। যথেষ্ট চুপচাপ ছেলেটি। গম্ভীর রাশভারী চেহারা, তবে হাসলে মানিয়ে যায় বেশ। সে অনুযায়ি আমি ছিলাম চপলা চঞ্চলা। কারন আমি সাগর নদী পাহাড় জঙ্গল দেখলে মাথা ঠিক রাখতে পারিনা, লাফিয়ে ঝাপিয়ে ছোট্ট কিশোরী হয়ে যায় অনায়াসে, ভুলে যায় সব দুঃখ কষ্ট যন্ত্রনা জীবনের বাস্তবতা। তখন যেন আমি এক বনের পাখি, উড়ন্ত চিল, ঝূলন্ত ব্রীজ দেখা শেষ করে গেলাম বোদ্ধ মন্দীর।



তারপর গেলাম সুভলং। সুভলং এ আমাদের সঙ্গী সফর হলেন এক পুলিশ পরিবার। সুভলং এর ঝর্নায় পা ডুবিয়ে ভিজে ছবি উঠে গেলাম পেদা টিং টিং রেস্টুরেন্ট এ। সকালের নাস্তার ব্যয় আমি করলেও দুপুরে খাবার সময় উনি কিছুতেই রাজি হলেন না তাই দুপুরে উনার নিমন্ত্রিত অতিথী হয়ে গেলাম। তারপর সন্ধ্যা হতেই ফিরে এলাম রাঙ্গামাটি। সারাদিন আমাদের আর কোনো পরিচয় হয়নি, উনার সম্পর্কেও আর কিছুই জানা হয়নি, উনিও আমার সম্পর্কে কিছুই জানেন নি। এমনকি যোগাযোগের প্রয়োজনটাও বোধ করিনি সেদিন। কিন্ত ঐদিন আমরা ঠিক অচেনা 'বন্ধু হয়ে গেছিলাম, শুধু স্মৃতির পাতা পর্যন্ত ই সীমাবদ্ধ থেকে গেছিল সেদিনের বন্ধুত্বটা।
সেদিন একটা প্রশ্ন ছিল মাথায় আমি না হয় পাহাড় ঝর্না কে আপন করে নিয়ে এই ঈদ কাটাতে এসেছি সেই আপন জনের সাথে, উনি কেন এসেছেন এই ঈদে আপনজন ছেড়ে এই পাহাড়ের চুড়ায়? "

আজ ৪ বছর পর সেই প্রশ্নের উত্তর পেলাম এই ব্লগ এ উলসিত তটিনীর "পাহাড় বেড়ানো মুনির" লেখাতে।
উনি ছিলেন মুনির ভাই, নারায়নগঞ্জ বাড়ি। উনি বিয়ে করেন এবং স্বলপ সময়ে ডিভোর্স হয়, মা ছিল অসুস্থ, তিনি ভেঙ্গে পড়েছিলেন, জীবনের প্রতি মায়া দয়া ছিলনা তার। আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন। একসময় তিনি আনন্দ খুজে নেন প্রকৃতির মাঝে, প্রকৃতিকে বন্ধু করে ঘুরে বেড়াতেন তিনি প্রকৃতির মাঝে, আজ জানলাম তিনিও আমার মতন প্রকৃতির সাথে ঈদ করতে এসেছিলেন প্রকৃতিকে আপনজন ভেবে।
প্রকৃতির কি খেলা? মুনির ভাইএর মৃত্যুর পর প্রকৃতি পরিচয় করিয়ে দিলেন তার আর এক বন্ধু মিতার কাছে। এমন সময় পরিচয় পেলাম যখন আর একবারো সুযোগ পেলাম না বলার হাই মুনির ভাই কেমন আছেন?
হে আল্লাহ আমার সেই এক দিনের বন্ধুটিকে শান্তি দিও তোমার কাছে। উনার মরে যাওয়া ঠিক হয়নি। একেবারেই না।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৯

উলসিত তটিনী বলেছেন: আপু,,তোমার সাথে যোগাযোগ করা যায় কিভাবে?? মাঝে মাঝে আমারো ঘুরতে ইচ্ছা হয়...কিন্তু ঘুরে বেড়াবার মানুষ পাইনা সাথে...সময় সুযোগ মিলে গেলে মাঝে মধ্যে একটু আধটু সবুজ দেখে আসতাম......

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯

মিমমা সুলতানা মিতা বলেছেন: তুমি ছেলে নাকি মেয়ে, বুঝতে কষ্ট হয়েছে, আমার ফেসবুক আইডি আমি মিতা এ্যাড করিও কথা হবে

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:০৮

nirjoyণ বলেছেন: nirjoyণ বলেছেন: এম এ ছাড়া
হবে না??? আমার খুব দরকার,,,
ইংরেজি ভালো আছি,,, আচ্ছা এত
বড়ো না হলে ছোট দেখে
একটা দেখো, আমার খুব দরকার
আমার পড়ালেখার মাঝে,, চাকরি না করলে আমার পরিবারটা শেষ হয়ে যাবে,,, আমি তো ওই দরনের হাতের কাজ জানি না, আপনি বলেছেন ট্যাক্সি চালাতে কিন্তু আমি তো পারি না

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ বোন একসময় আমিও একা একা সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াতাম। এটা আমার নেশা ছিল। এখন কর্মস্থলে ছুটির অভাবে পারি না। আপনার লেখা ভাল লাগল।

৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৩

মিমমা সুলতানা মিতা বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাইয়া

৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৩

সাইফুর রহমান পায়েল বলেছেন: একা একা ঘোরেন!!!! খারাপ লাগে না?

মেয়ে বলে বলছিনা, বলছি একা একা ঘুরে আমি মজা পাইনা। সাথে সফরসঙ্গী থাকলে ভাল লাগে।
ভালো হয় ৪ জন হলে। কার্ড খেলার সুযোগ থাকে। ;) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.