ভালবেসে যে আজ পাগল

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৩

কৌতুহল বশত সেদিন কোর্ট এ গেছিলাম। ঘুরতে ঘুরতে এক বন্ধুর সাথে দেখা। প্রায় ১২/১৩ বছর পর দেখা হওয়ায় সব বন্ধু বান্ধবীদের প্রসংগ উঠল, কে কেমন কোথায় আছে। কেও ডাক্তার, কেও উকিল, কেও বিসিএস ক্যাডার, কেও বা কোম্পানীর বড় অফিসার। ওর কাছ থেকেই শুনতে পেলাম আলাউদ্দিনের কথা। ভালবেসে যে আজ পাগল।


আলাউদ্দিন বেশ সচ্ছল পরিবারের ছেলে। আর একই সাথে লেখাপড়া করতো হিন্দু মেয়ে উমা রানী পাল। এক সময় ওরা দুজন দুজন কে ভালবেসে গোপনে বিয়ে করে। মাস খানিক পরে উমাদের পরিবার জানতে পেরে রাতের আধারে ইন্ডিয়া নিয়ে যেয়ে বিয়ে দিয়ে দেই উমাকে। সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য, উমা আলাউদ্দিনকে ছেড়ে কিছুতেই যাবেনা, কিন্ত তার পরিবার চুল ধরে টেনে হিচড়ে গাড়িতে তুলেছিল। তার সেই হৃদয় বিদারক চিৎকার এখনো মনে হলে কেপে উঠি।

যাহোক এদিকে আলাউদ্দিন ছুটে যায় ইন্ডিয়া উমাকে উদ্ধার করার জন্য। কিন্ত সেখানে উমার চাচাতো ভাইয়েরা অস্ত্র নিয়ে তাড়া করে।
ওখান থেকে আলাউদ্দিনরা পালিয়ে আসে। আস্তে আস্তে আলাউদ্দিন অসুস্থ্য হতে থাকে। আলাউদ্দিনের পরিবার বিদেশ পাঠাতে চাই। কিন্ত তার আগেই আলাউদ্দিন পাগল হয়ে যায়। আজ সে মানষিক রুগী।

আর উমা? সে ২ সন্তানের মা ইন্ডিয়ায় সংসার করছে। হইতো সে পাগল হয়নি, কিন্ত সেও সুখী নয় হইতো, তবু জীবনের প্রয়োজনে মেনে নিতে হয়েছে বাকিটা চলার পথকে।

ওদের নিয়তি শুনে খুব খারাপ লাগলো। নিজেকে একটু অপরাধী ও মনে হলো। আমি ইচ্ছে করলে পারতাম উমাকে তার পরিবার থেকেও বের করে আলাউদ্দিনের হাতে তুলে দিতে।

কিন্ত সেদিন আমি প্রেম ব্যাপারটার ছিলাম ঘোর বিরোধী। আর ছেলেদের প্রতি আস্তা ছিলনা মোটে, (অবশ্য আজ ও নেই)। বাবা মা এর অবাধ্য হওয়াটা ছিল আমার কাছে কল্পনার ব্যাপার, মহাপাপ। এক কথায় খুব ভদ্র আর ভাল মেয়ে হিসেবে খ্যাত, সুতরাং ভাল মেয়ে হয়ে অন্য মেয়েকে তার পরিবার হতে বের করে আনা, এটা ছিল আমার জন্য বড় জঘন্য একটা কাজ।
তাই সেদিন পারেনি সহযোগীতার হাত বাড়াতে।

ভাগ্য বড় নির্মম হয় কিছু মানুষের জন্য।

২ টি +০/-০