নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারণ। এটা আমার অভ্যাস। একা থাকতে আমার খুব ভালো লাগে। তাই একাকিত্ব আমার জীনবনের সঙ্গী।

মিনহাজ রিয়াজ

প্রকৃতির মাঝে থাকি, কিন্তু, প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাই, আবার, প্রকৃতিতে ফিরে আসি।

মিনহাজ রিয়াজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা ছেলের গল্প বলবো, একদম বাস্তব জীবনের গল্প!

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:২১




ছেলেটার জন্ম হয় প্রচন্ড অভাবের এক সংসারে। ১৯৮৪ সালে পেটের দায়ে ছেলেটার বাবা পরিবার নিয়ে চলে আসেন ঢাকার সামান্য বাইরে “ধামালকোট” নামক বস্তিতে।

বাবা কখনো ট্যাক্সি চালাতেন,কখনো বা চালাতেন অটোরিকশা। এভাবেই কাটছিল দিনগুলো। বস্তির ঐ জায়গাটা ভালো ছিল না। এর মাঝেই বড় হচ্ছিল ছেলেটা। বাবা-মা খুব দুশ্চিন্তায় থাকতো, ছেলেটা বখে না যায়। না, ছেলেটা বখে যায় নি! দেখতে দেখতে স্কুলে ভর্তি হলো সে। ছেলেটা তখন ক্লাস টুতে পড়ে। পাশের বাড়ির এক ছেলের সাথে একদিন চুপি চুপি চলে যায় ঢাকার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে। ধামালকোটের বস্তি থেকে মাইলখানেক দূরে ছিল কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব। সেনাবাহিনীর সদস্যরা গলফ খেলতো, আর ছেলেটা বল কুড়িয়ে আনতো। দিন শেষে ৩০ টাকার মত পেতো সে। এইভাবে বল কুড়াতে কুড়াতেই সে ঢুকে যায় অন্য এক জগতে! ছেলেটার ছিল গলফ খেলার প্রতি তীব্র ভালোবাসা। একদিন বাসায় গিয়ে সে চিন্তা করতে থাকলো, কীভাবে গলফখেলা যায় ? গলফ তো বড় লোকের খেলা। তারাতো দামি জুতা, দামি গলফ খেলার সরঞ্জাম- কিছুই নেই। ছেলেটা হাল ছাড়ে না। লোহা লক্কড়ের দোকানে গিয়ে রড দিয়ে গলফ খেলার স্টিক বা ক্লাব এর মত বানিয়ে ফেলে সে। ছেলেটা পড়াশুনা চালাতে থাকে, পেটের দায়ে গলফারদের সরঞ্জামও টানতে থাকে আর লোহার রডের সেই ক্লাব দিয়ে গলফ খেলতে খেলতে নিজের স্বপ্নের পিছুও ছুটতে থাকে। সেদিন স্কুল থেকে এসে গলফ ক্লাবে দৌড়াচ্ছিলো সে। মা বললো, “বাবা! ঘরে তো খাওন কিছু নাই !!” ছেলেটা একটুও মন খারাপ করলো না। বললো, “সমস্যা নাই, আম্মা” এভাবেই ছেলেটার স্বপ্ন পূরনের দিন চলে আসলো। তার কঠোর অনুশীলন ও প্রবল আগ্রহ দেখে বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশন থেকে গলফ খেলার সুযোগ দেয়া হলো।

সবাইকে সকাল ৮ টায় চলে আসতে বলা হতো। কেউ ৯টায় আসতো, কেউবা ১০ টায় আসতো। কিন্তু ছেলেটা সাড়ে ৭ টায় এসে বসে থাকতো। স্বপ্ন ছুঁতে হবে না তার ? এর পরের কাহিনীটা সবারই কমবেশ জানা। একটার পর একটা শিরোপা জিততে থাকলো ছেলেটা। ১২ টার মত অপেশাদার টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে ফেললো ছেলেটা !! ২০১০ সালের আগস্টের ১ তারিখ ইতিহাস গড়ে ফেললো ছেলেটা। প্রথমবারের মত এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জিতে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরলো ছেলেটা। ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর আবারো আরেকটা ইতিহাস গড়ল ছেলেটা। জিতে গেলো ইন্ডিয়ান ওপেনে চ্যাম্পিয়ন। সবাইকে পিছনে ফেলে এই লাল সবুজ পতাকাটা উপরে তুলে ধরলো।

ছেলেটার নাম ‘সিদ্দিকুর রহমান’ বাংলাদেশ নামক এই ছোট্ট দেশটাকে সারা বিশ্বে হেয় করা হয় গরীব দেশ কিংবা অভাবের দেশ বলে । আমরা গরীব আমাদের অনেক অভাব আছে। এত অভাবের মধ্যেও আমাদের মাঝে দুইটা জিনিসের অভাব নেই। একটা হলো আবেগ আরেকটা হলো স্বপ্ন ছোঁয়ার অদম্য ইচ্ছা ।সেদিনের ঐ দরিদ্র ছেলে সিদ্দিকুর রহমানের আজকে কোন অভাব নেই। এরকম কয়েকটা সোনার টুকরা ছেলে থাকলে আমাদের দেশে আসলেই আর কোন অভাব থাকবে না ।

এই সিদ্দিকুর রহমান শুধুমাত্র একজন খেলোয়ার নয়। সে হাজার হাজার মানুষের অনুপ্রেরনাও। আমি নিশ্চিত, সিদ্দিক ভাইয়ের জীবনের গল্প পড়ার পর অনেক হতাশ হয়ে যাওয়া মানুষও আবার নতুন করে স্বপ্নের পিছু ছুটবে !!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:১৪

অদৃশ্য বলেছেন:



সিদ্দিকুর রহমানের জন্য শুভকামনা...

সাথে আপনার জন্যও শুভকামনা...

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:১২

মিনহাজ রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ
আপনার জন্য ও ভালোবাসা রইলো।

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এমন গল্প শুনে অনেকেই নতুন করে স্বপ্নের পিছু নিবে। আশাকরি এমন গল্প নিয়মিত শোনাবেন

১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:২৯

মিনহাজ রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ, আশা করি দিবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.