![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলা রূপান্তর © হামিদ
বড়শির দড়িগুলি খুবই মজবুত। এগুলো বড় বড় মাছ ধরার কাজে বেশ উপযোগী। একপ্রান্ত নিজের পিঠের সাথে পেঁচিয়ে বড়শির দড়িটি শক্ত হাতে ধরে আছে বুড়ো। দড়ির অপর প্রান্তে বড়শিটি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কোনো একটি মাছ । দড়িটি এখন এমন টান টান হয়ে আছে যে এর থেকে পানির ফোঁটা ছিটকে বের হচ্ছে এবং শোঁ শো করে এক ধরনের আওয়াজ বের হচ্ছে। পাটাতনে বসে নৌকার পাশে পিঠ ঠেকিয়ে শক্ত করে বসে বুড়ো।
ধীরে ধীরে নৌকা এগিয়ে চলছে উত্তর-পশ্চিম দিকে। কারণ, এই মুহূর্তে সমুদ্রের নিস্তরঙ্গ জলরাশি কেটে কেটে মাছটি বড়শিটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেদিকে। অন্য বড়শিগুলোও তখন পানিতে। কিন্তু এখন সেদিকে দৃষ্টি দেবার সময় নেই বুড়োর।
'ছেলটা যদি এখন সঙ্গে থাকত ! একটা মাছ আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি হলাম ওর দড়ির খুঁটা। ইচ্ছে করলে দড়িটা আমি নৌকার সাথে বেঁধেও রাখতে পারি। কিন্তু তখন মাছটা হেচকা টানে দড়িটা ছিঁড়ে ফেলতে পারে। তারচেয়ে এই ভাল যে, যতক্ষণ সম্ভব দড়িটা ধরে রাখি। এতে সুবিধা হলো দরকার মতো দড়িতে ঢিল দেয়া যাবে। তবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, মাছটা কেবল সামনের দিকে যাচ্ছে। নিচের দিকে যাচ্ছে না' - এসব এলোমেলো ভাবনায় ডুবে আছে বুড়ো।
'মাছটি যদি সত্যি নিচের দিকে যেতে থাকে তাহলে কী করবো আমি জানি না। কিংবা দেখা গেলো মাছটি গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে মরে গেলো। তখন কী করবো তাও জানি না। তবে কিছু একটা তো আমাকে করতেই হবে' - এসব চিন্তা বুড়োর মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
তীর্যক ভাবে পানির গভীরে নেমে যাওয়া বড়শির দড়িটির একপ্রান্ত বুড়োর পিঠের সাথে পেঁচিয়ে ধরে আছে। এঅবস্থায় নৌকাটি ভেসে যেতে থাকল উত্তর-পশ্চিম দিকে।
'মাছটা তো মনে হয় আমাকে মেরেই ফেলবে। এভাবে আর কতক্ষণ!' - ভাবছে বুড়ো। মাছটা বড়শির টোপটি কামড়ে ধরে চার ঘন্টা যাবৎ বহিঃসমুদ্রে সাঁতার কেটেই চলছে আর বড়শির দড়ির আরেক প্রান্ত পিঠের সাথে পেঁচিয়ে শক্ত করে ধরে আছে বুড়ো।
'সেই দুপুর বেলায় মাছটিকে বড়শিতে আটকালাম। এতক্ষণেও একবার তার চেহারাটা দেখলাম না' - ভাবছে বুড়ো।
©somewhere in net ltd.